পাক-ভারত যুদ্ধ
ভারতের বিপজ্জনক পরিস্থিতির গোয়েন্দা তথ্য পেয়ে মোদিকে যুদ্ধ বন্ধে চাপ দেয় যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ আলোচনার পর ভারত ও পাকিস্তানের মাঝে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়েছে। দীর্ঘ ৪৮ ঘণ্টা ধরে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের প্রচেষ্টায় এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
তবে পরমাণু অস্ত্রধারী এই দুই দেশের যুদ্ধবিরতির নিয়ে সামনে এসেছে নতুন তথ্য। মূলত ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে ভীতিকর তথা উদ্বেগজনক গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার পর ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরুর আহ্বান জানান—এমনটাই জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
সিএনএন জানায়, মার্কিন প্রশাসনের একটি কেন্দ্রীয় দল — ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মার্কো রুবিও এবং হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ সুজি ওয়াইলস — ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সংঘাত ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছিলেন।
প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতের মধ্যেই শুক্রবার সকালে যুক্তরাষ্ট্র এমন কিছু গোয়েন্দা তথ্য পায় যা পরিস্থিতিকে বিপজ্জনক বলে ইঙ্গিত দেয়।
প্রভাবশালী এই মার্কিন সংবাদমাধ্যম বলছে, ওই তথ্যের ভিত্তিতে ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্স প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পুরো পরিকল্পনার ব্যাপারে অবহিত করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুরে তিনি (জেডি ভ্যান্স) সরাসরি নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করেন।
মার্কিন এই ভাইস প্রেসিডেন্ট ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্পষ্ট করে বলেন, হোয়াইট হাউসের মতে, এই সংঘাত আরও মারাত্মক রূপ নিতে পারে এবং সপ্তাহান্তে বড় ধরনের সংঘর্ষ হতে পারে। ভ্যান্স এসময় মোদিকে উৎসাহ দেন যেন ভারত সরাসরি পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং উত্তেজনা কমানোর বিভিন্ন পথ বিবেচনা করে।
ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা ছিল, দুই দেশের মধ্যে কোনও ধরনের কূটনৈতিক আলোচনা চলছে না। তাই তাদের মূল লক্ষ্য ছিল দুই পক্ষকে আবারও আলোচনায় ফিরিয়ে আনা। সূত্র জানায়, ভ্যান্স এসময় মোদিকে এমন একটি শান্তিপূর্ণ বিকল্প পথের কথাও জানান, যেটি পাকিস্তান গ্রহণ করতে পারে বলে আমেরিকার ধারণা ছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই তথ্যের প্রকৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো না হলেও, তা এতটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে, এই তিন শীর্ষ কর্মকর্তাকে বিষয়টিতে যুক্তরাষ্ট্রকে আরও সক্রিয় হবার প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে সাহায্য করে।
সিএনএন বলছে, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে আলাপের পরেই মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা— যার মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওও ছিলেন— ভারত ও পাকিস্তানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে রাতভর যোগাযোগ চালিয়ে যান।
আরও পড়ুন
যদিও মার্কিন প্রশাসন যুদ্ধবিরতির খসড়া তৈরি বা আলোচনায় সরাসরি যুক্ত হয়নি, তবে তারা বিষয়টিকে আলোচনার সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার অংশ হিসেবে দেখেছে। প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেন, মোদির সঙ্গে ভ্যান্সের ফোনালাপ ছিল যুদ্ধবিরতির এই প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়।
সিএনএন বলছে, ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর ফোনালাপ সম্পর্কে জানেন এমন একজন মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা দ্রুত বাড়ছিল, তখন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বিষয়টি শান্ত করার জন্য ব্যাপক চেষ্টা চালানো হচ্ছিল।
ওই কর্মকর্তা বলেন, “তখন স্পষ্ট ছিল যে, দুই দেশের মধ্যে কোনও সরাসরি কথা বলা হচ্ছিল না। তাই আমাদের লক্ষ্য ছিল—আমাদের ভারত ও পাকিস্তানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে, তাদের কথা বলায় উৎসাহ দেওয়া এবং যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে উত্তেজনা কমানোর পথ খুঁজে বের করা।”
তিনি আরও জানান, এই আলোচনার ধারাবাহিকতায় মার্কিন কর্মকর্তারা বুঝতে পারেন, উভয় পক্ষের জন্য উত্তেজনা কমানোর ‘সম্ভাব্য পথ’ কী হতে পারে। এরপর তারা সেই বার্তা দুই পক্ষের মধ্যে পৌঁছে দিতে সাহায্য করেন এবং কিছুটা হলেও যোগাযোগের ঘাটতি দূর করতে সহায়ক হন। এর ফলে ভারত ও পাকিস্তান সরাসরি আলোচনায় বসার সুযোগ পায়, যার ফলাফল এখন দেখা যাচ্ছে।
মার্কিন প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যুদ্ধবিরতির কোনও চুক্তি খসড়ায় যুক্ত ছিল না। তাদের ভূমিকা ছিল কেবল দুই পক্ষকে আলোচনায় ফিরিয়ে আনা।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী, ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের প্রধানমন্ত্রী মোদিকে করা ফোনটি ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। প্রশাসনের আরও এক সূত্র জানায়, ভ্যান্স গত মাসে ভারত সফরে গিয়ে মোদির সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করেছিলেন। ট্রাম্প প্রশাসনের বিশ্বাস ছিল, ভ্যান্স ও মোদির ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে ফোনালাপটি আরও কার্যকর হবে।
চুক্তি ভেঙেছে পাকিস্তান?
যুদ্ধবিরতির পরও পাকিস্তানের হামলা : দাবি ভারতের

কয়েকদিনের হামলা পাল্টা হামলার পর যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফের উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক সীমান্ত জুড়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে ভারত।
শনিবার ( ১১ মে) এ তথ্য জানায় ভারতের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা।
এ ঘটনায় ওইদিন গভীর রাতে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এর তীব্র নিন্দা জানান ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্রী। তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তান ফের গোলাগুলি শুরু করেছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এর জন্য সম্পূর্ণভাবে পাকিস্তান দায়ী।
তিনি বলেন, ভারতীয় সেনারাও এর সমুচিত জবাব দিচ্ছে এবং পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ভারত আশা রাখে, পাকিস্তান পরিস্থিতির গুরুত্ব উপলব্ধি করে অবিলম্বে এই চুক্তিভঙ্গ বন্ধ করবে। একইসঙ্গে তিনি পাকিস্তানকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যে-কোনো ধরনের অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘনের মোকাবিলায় ভারতীয় সেনাবাহিনীকে কঠোর পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, যুদ্ধবিরতি হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরের শ্রীনগরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। অঞ্চলটির মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহ মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সে শনিবার (১০ মে) লিখেছেন, যুদ্ধবিরতির কী হলো? শ্রীনগরজুড়ে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
শ্রীনগরের কয়েকজন বাসিন্দা কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছেন, তারা একাধিক বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়েছেন। ওই সময় শহরটির একটি অংশে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে ব্ল্যাকআউট করা হয়।
শ্রীনগরভিত্তিক সাংবাদিক ওমর মেহরাজও আলজাজিরার কাছে নিশ্চিত করেছেন তারা বিস্ফোরণের শব্দ শুনছেন। তিনি বলেছেন, আমরা শ্রীনগরে বিকট বিস্ফোরণ শুনতে পাচ্ছি। শনিবার সকালে এবং বিকেলে একই শব্দ শোনা গিয়েছিল। আমি আকাশে কোনো বস্তু উড়তে দেখেছি। তবে এগুলো মিসাইল নাকি আকাশ প্রতিরক্ষার কিছু তা একদমই স্পষ্ট নয়। একই ধরনের বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে বারামুল্লাহ এবং জম্মুতে।
তিনি আরও বলেন, বিস্ফোরণের পর এখানকার মানুষের মধ্যে বেশ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সবাই নিরাপদ আশ্রয়ে দৌড়ে গেছেন। তবে নতুন বিস্ফোরণে কোনো হতাহত হয়েছে কি না সেটি নিশ্চিত নই।
আরও পড়ুন
জম্মু-কাশ্মিরের মুখ্যমন্ত্রী এক্সে আরেকটি পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন তিনি। এতে স্পষ্ট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছিল। তিনি পোস্টে লিখেছেন, “শ্রীনগরে কোনো যুদ্ধবিরতি নেই। শ্রীনগরের মধ্যাঞ্চলে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়েছে।
লুধিয়ানার ডিসি অবশ্য বলেছেন এ মুহূর্তে আতঙ্কগ্রস্ত হওয়ার কিছু নেই। তবে প্রয়োজন হলে ব্ল্যাকআউট করা হবে বলে জানান তিনি। সরকারি এ কর্মকর্তা বলেন, সশস্ত্র বাহিনী ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।
পাতিয়ালার বিভাগীয় কমিশনার (ডিসি) জানিয়েছেন, যদি কোনো হামলার সংকেত তারা পান তাহলে এ ব্যাপার জনসাধারণকে অবহিত করা হবে। এ মুহূর্তে আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
অপরদিকে পাঞ্জাবের অমৃতসরের ডিসি দাবি করেছেন, সেখানে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে অমৃতসরে ব্ল্যাকআউট কার্যকর করা হবে।
নিজেদের আকাশসীমা খুলে দিলো পাকিস্তান

ভারতের সঙ্গে পূর্ণ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে পাকিস্তান। শনিবার (১০ মে) বিকেলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যম ট্রুথে হঠাৎ করে এ তথ্য জানান। এরপর দুই দেশ আলাদাভাবে বিষয়টি নিশ্চিত করে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা থেকে যুদ্ধবিরতিটি কার্যকর হয়েছে।
এর কিছুক্ষণ পরই পাকিস্তানের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সবধরনের ফ্লাইটের জন্য তাদের আকাশসীমা খুলে দেওয়া হয়েছে।
গত ৭ মে পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মির ও অন্যান্য জায়গায় মিসাইল হামলা চালায় ভারত। এর সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তানের বিমানবাহিনী ভারতের বিমান লক্ষ্য করে হামলা চালায়। ওইদিন ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করতে সমর্থ হয় তারা। এরপর দুই দেশের সীমান্তে গোলাবর্ষণ চলতে থাকে। সঙ্গে চলে ড্রোন হামলাও। গতকাল শুক্রবার মধ্যরাতে ভারত হঠাৎ করে পাকিস্তানের তিনটি বিমানঘাঁটিতে হামলা চালায়। এরপর পাকিস্তান শনিবার সকালে ভারতের বিভিন্ন ঘাঁটি ও সামরিক অবকাঠামো লক্ষ্য করে ব্যাপক হামলা চালায়। এতে হাইপারসনিক মিসাইল ব্যবহার করে ইসলামাবাদ।
আরও পড়ুন
এদিকে যুদ্ধবিরতিটি তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে জানিয়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছেন “পাকিস্তান সবসময় এ অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য সংগ্রাম করেছে। তবে এক্ষেত্রে আমরা আমাদের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা নিয়ে কখনো আপস করিনি।”
অপরদিকে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, আজ দুপুরে পাকিস্তানের মিলিটারি অপারেশন্সের মহাপরিচালক ভারতীয় মিলিটারি অপারেশন্সের মহাপরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর তাদের মধ্যে একটি চুক্তি হয়।
তিনি বলেন, “তারা সম্মত হন যে দুই পক্ষ লড়াই এবং স্থল, আকাশ ও সমুদ্রে সামরিক কার্যক্রম বন্ধ করবে। যা ভারতীয় সময় বিকেল ৫টা থেকে কার্যকর হবে। এ চুক্তিটি কার্যকরে দুই পক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দুই দেশের মিলিটারি অপারেশন্সের মহাপরিচালকরা আগামী ১২ মে ফের কথা বলবেন।”
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের মালিকানাধীন সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ-এ ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতির কথা জানান। তিনি বলেন, দুই দেশ তাৎক্ষণিকভাবে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে।
সূত্র: আলজাজিরা
যুদ্ধবিরতিতে রাজি ভারত-পাকিস্তান : ট্রাম্প

টানা কয়েকদিনের হামলা পাল্টা হামলার পর যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছেন, তাৎক্ষণিকভাবে এ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।
তিনি আরও বলেন, “পাকিস্তান সবসময় এ অঞ্চলে শান্তি এবং নিরাপত্তার জন্য সংগ্রাম করেছে। তবে এক্ষেত্রে আমরা আমাদের সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতা নিয়ে কখনো আপস করিনি।”
বিস্তারিত আসছে…
ভারতের দাবি
সেনাদের সীমান্তে আনছে পাকিস্তান, নিচ্ছে হামলার প্রস্তুতি :

পাকিস্তান তাদের সেনাদের সীমান্তের দিকে আনছে এবং হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে দাবি করেছে ভারত। শনিবার (১০ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র কর্ণেল সোফিয়া কোরেশি এমন তথ্য জানান। পাকিস্তানের সেনাদের মুভমেন্টের প্রেক্ষিতে ভারতও যথাযথ প্রস্তুতি নিয়েছে বলে মন্তব্য করেন এ সেনা কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, “আমরা লক্ষ্য করেছি পাকিস্তানের সেনাবাহিনী তাদের সেনাদের সম্মুখ অভিযানে (সীমান্তে) আনছে। যা নির্দেশ করছে উত্তেজনা আরও বাড়াতে আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা।”
সোফিয়া আরও বলেন, “ভারতের সশস্ত্র বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে প্রস্তুত আছে। পাকিস্তানের সব ধরনের বৈরিতার জবাব সফলভাবে দেওয়া হয়েছে। উত্তেজনা হ্রাস না করার যে প্রতিশ্রুতি ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর রয়েছে সেটি আমরা আবারও পুনর্ব্যক্ত করছি, যদি পাকিস্তান সেনাবাহিনী এমন প্রতিশ্রুতি দেয়।”
আরও পড়ুন
ভারতের এমন দাবির পর পাকিস্তান এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করেনি তারা সেনাদের সীমান্তের দিকে নিয়ে যাচ্ছে কি না।
এদিকে শুক্রবার মধ্যরাতে পাকিস্তানের তিনটি বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালায় ভারত। এরপর পাকিস্তানও ভারতের বিরুদ্ধে হামলা চালানো শুরু করে। ‘অপারেশন বুনইয়ানুম মারসুস’ নামে এই অভিযানে ভারতের বিভিন্ন বিমানঘাঁটি এবং সামরিক স্থাপনায় মিসাইল ছোড়ে তারা।
জম্মু-কাশ্মিরের রাজধানী শ্রীনগরের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পাকিস্তানের হামলার কারণে তাদের মধ্যে বেশ আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ বলেছেন, ‘‘ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আজ পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী সমন্বিত শক্তিশালী হামলা চালিয়েছে।” তিনি জানান, ভারত যেসব সামরিক অবকাঠামো ব্যবহার করে পাকিস্তানের ওপর হামলা চালিয়েছে সেগুলো লক্ষ্য করেই পাকিস্তান হামলা চালিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ আরও বলেন, পাকিস্তান তাদের নিরীহ মানুষের রক্তের বদলা নিয়েছে।
সূত্র: বিবিসি, আলজাজিরা
মন্তব্য