আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল ইবি

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১০ মে) বিকেল সাড়ে ৩টায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন।
মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক হয়ে শেখপাড়া বাজার ঘুরে প্রশাসনের সামনে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘আবু সাঈদের বাংলায়, আওয়ামী লীগের ঠাঁই নাই’, ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর, আওয়ামী লীগ নো মোর’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘আওয়ামী লীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘চব্বিশের বাংলায়, সন্ত্রাসের ঠাঁই নাই’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ক্ষমতা না জনতা, জনতা জনতা’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
আরও পড়ুন
এসময় সমন্বয়ক এস এম সুইট'এর নেতৃত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সহ-সমন্বয়ক তানভীর মন্ডল ও ইয়াসিরুল কবির সৌরভ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তলাবায়ে আরাবিয়ার সাধারণ সম্পাদক শামিমসহ প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী।
সমাবেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, জুলাই আন্দোলন যেভাবে ধৈর্যের সাথে আমাদের চালাতে হয়েছে তেমনি আরেকটি আন্দোলন চালাতে হচ্ছে। যা আমাদের আবার ধৈর্যের সাথে চালিয়ে যেতে হবে। আমরা দেখছি কিছু চাওয়া পাওয়া, বুঝা পোড়ার কারণে আওয়ামী প্রশ্নে অনেকে নমনীয়তা দেখাচ্ছে। আমরা আশা করি জুলাই আন্দোলনে তারা যেভাবে কাঁধে কাধ মিলিয়ে আন্দোলন করেছে সেই কাজটিই করবে। আসলে ৫ আগস্টে আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধ হয়ে গেছে শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতা বাকি। জুলাই গণহত্যা চালিয়ে তারা তাদের বেঁচে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে। তাই ইন্টেরিমকে অতিদ্রুত আমাদের তিন দফা দাবি মেনে নিতে হবে। আমাদের দাবি আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করতে হবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে আওয়ামী লীগের দলগত বিচারের বিধান যুক্ত করতে হবে। জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে।
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন

জিএসটি (সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি) গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ‘এ’ (বিজ্ঞান) ইউনিট এবং আর্কিটেকচার ব্যবহারিক (ড্রইং) ভর্তি পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
শুক্রবার (০৯ মে) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত এ ইউনিট এবং বেলা ৩ টা থেকে ৪ টা পর্যন্ত আর্কিটেকচার ব্যবহারিক (ড্রইং) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
ভর্তি পরীক্ষা শুরু হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম কেন্দ্রের বিভিন্ন কক্ষ পরিদর্শন করেন। এ সময় ভিজিল্যান্স উপ-কমিটির সদস্য প্রফেসর ড. জয়নুল আবেদীন সিদ্দিকী, কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইমদাদুল হুদা, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এ.এইচ.এম. কামাল, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. সাখাওয়াত হোসেন সরকার, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. বখতিয়ার উদ্দিন, চারুকলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. তপন কুমার সরকার, আইন অনুষদের ডিন মুহাম্মদ ইরফান আজিজ, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মো. মিজানুর রহমান এবং শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. তুষার কান্তি সাহা উপস্থিত ছিলেন। তবে শিক্ষার্থীদের সুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে ভিজিল্যান্স টিমের অন্য সদস্যবৃন্দ পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতরে প্রবেশ করেন নি।
আরও পড়ুন
ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ ভবনের সামনে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন। এসময় তিনি বলেন, ‘নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সি ও বি ইউনিটেরপর সবশেষ এ ইউনিটের পরীক্ষাও অত্যন্ত সুন্দর পরিবেশে গ্রহণ করা হয়েছে। এই পরীক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি ভবনের ১২৭ টি কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। এই পরীক্ষা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, স্বেচ্ছাসেবক, রোভার স্কাউট, জেলা প্রশাসন, গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশ প্রশাসনসহ আপনাদের সকলের সহযোগিতা পেয়েছি।’
এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান, ব্যবসায় প্রশাসন, নতুন কলা ভবন এবং পুরাতন বিজ্ঞান ভবনে ‘এ’ (বিজ্ঞান) ইউনিটের এবং বিকালে নতুন কলা ভবনে আর্কিটেকচার ব্যবহারিক (ড্রইং) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ভর্তি পরীক্ষার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছিল।
পরীক্ষাকেন্দ্র ও তার আশেপাশে ১৪৪ ধারা কার্যকর ছিল। ক্যাম্পাসে আগত অতিথিদের বসার ব্যবস্থা প্রশাসন থেকে করা হয়েছিল। রাস্তার যানযট নিয়ন্ত্রণ ও নিরবিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছিল। এছাড়া অন্যান্য ইউনিটের মতো এ ইউনিটেও ময়মনসিংহ ও ভালুকা হতে পরীক্ষার্থীদের আসা-যাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত বাস সার্ভিস ব্যবস্থা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ৮,৪৩৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ৭,৪৪৬ জন। অনুপস্থিত ৯৯৩ জন। উপস্থিতির হার ৮৮.২৩ শতাংশ। আর্কিটেকচার ব্যবহারিক (ড্রইং) পরীক্ষায় ১৪১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৭৮ জন উপস্থিত এবং ৬৩ জন অনুপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, প্রতিটি ইউনিটের ফলাফল জিএসটি গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দমত তালিকাভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যোগ্যতাসাপেক্ষে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয় তাদের আসন সংখ্যার সামর্থ্যরে উপর ভিত্তি করে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে। এবার জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫টি বিভাগে ১,১২৫টি আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।
চবির সমাবর্তনে যোগ দিতে আসছেন ড. মুহাম্মদ ইউনুস, চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আসন্ন ৫ম সমাবর্তন অনুষ্ঠানকে ঘিরে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুস। বিশ্ববিদ্যালয় হতে তাকে ডি-লিট সম্মাননা প্রদান করা হবে।
আগামী ১৪মে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিতব্য সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ২২,৫৬০ জন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী। সমাবর্তনে ড. ইউনুস সমাবর্তন প্রধানবক্তা হিসেবে বক্তব্য প্রদান করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য(প্রশাসন) অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন বলেন, “চবির ইতিহাসে এটি একটি গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। দীর্ঘ নয় বছর পর আমরা সমাবর্তন আয়োজন করতে যাচ্ছি। এটি হয়তো বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমাবর্তন হতে যাচ্ছে। ড. মুহাম্মদ ইউনুসের মতো একজন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ব্যক্তিত্বের উপস্থিতি সমাবর্তনকে বিশেষ মর্যাদায় অভিষিক্ত করবে। আমরা তাকে ডি-লিট ডিগ্রি প্রদান করব। ”
সমাবর্তন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে বর্ণিল সাজসজ্জা। প্রশাসনিক ভবন, মূল ফটক ও অনুষ্ঠানস্থলসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকা সেজেছে বর্ণিল আলোয়। একইসঙ্গে সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে যাতে অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করা যায়।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর হায়দার আরিফ বলেন, গোয়েন্দা সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী, নিবন্ধিত প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীকে একটি বিশেষ পরিচয়পত্র দেওয়া হবে, যা ছাড়া কেউ সমাবর্তনের মূল অনুষ্ঠানে প্রবেশ করতে পারবে না। অনুষ্ঠানের দিন ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন থাকবে।
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, নিবন্ধিতদের তালিকা গোয়েন্দা সংস্থা পর্যবেক্ষণ করছে। যেকোনো সময় পরিচয় যাচাইয়ের জন্য কল করা হতে পারে। সুনির্দিষ্ট কার্ড ছাড়া কেউ সমাবর্তনস্থলে প্রবেশ করতে পারবেন না।
এছাড়া, ৩৬ বছর পর এই সমাবর্তন উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও চবি অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার আগমনকে কেন্দ্র করে চবির শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে বিরাজ করছে আনন্দ ও গর্বের অনুভূতি।
অবহেলার শিকার সরকারি টেক্সটাইল কলেজগুলো, কমছে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর সংখ্যা

বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) অধিভুক্ত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলোতে এবারের ভর্তি পরীক্ষাকে সামনে রেখে কলেজগুলোর শিক্ষার মান, শিক্ষক সংকট এবং তা নিরসনে সরকারের মনোযোগের অভাবের মতো বিষয়গুলো আবারো সামনে উঠে এসেছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রয়োজনীয় শিক্ষক এবং সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে কলেজগুলো আশানুরূপ শিক্ষার্থী আকর্ষণ করতে পারছে না।
নোয়াখালী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্র গোলাম কিবরিয়া বলেন, "আমরা যৌক্তিক ৫ দফা দাবি দিলেও বস্ত্র অধিদপ্তর তা বাস্তবায়ন করেনি। আমাদের নিয়োগ বিধি নিয়ে প্রশ্ন তোলার কথা না, কিন্তু যখন দেখলাম গত প্রায় ১০ বছর ধরে শিক্ষক আর শিক্ষার মান তলানিতে, তখন সবাই গোড়ায় গলদ খুঁজে পেলাম। আমরা উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেন থাকতে এ নিয়ে অনেক দূর কাজ করেছিলাম। কিন্তু বর্তমান উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন দায়িত্ব গ্রহণের পর আমাদের সমস্যাগুলো দেখেননি এবং কাজও করেননি।"
কিবরিয়া আক্ষেপ করে বলেন, "বর্তমান কলেজগুলোতে ব্যাপক শিক্ষক সংকট থাকা সত্ত্বেও শিক্ষক নিয়োগ না দিয়ে উল্টো মাদারীপুর এবং সিলেটে নতুন কলেজ খোলা হয়েছে। বস্ত্র অধিদপ্তর শুধু আশ্বাস দিয়ে যায়। তাঁরা যেহেতু সমস্যা সমাধান করতে পারছেন না, সেক্ষেত্রে সরকারি টেক্সটাইল কলেজগুলোকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ করা হোক। দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে থেকে আমাদের শিক্ষার মান আজ তলানিতে। কিছু দিন পর মাইকিং করে ছাত্র খুঁজতে হবে।"
বস্ত্র অধিদপ্তর হতে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি আবেদন করেছে ৪৭০০ জন। বিগত ২০২৩-২৪ ও ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে যা ছিল যথাক্রমে ৪৬৬৬ জন ও ৯০০৩ জন।
রংপুর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থী মাহমুদ আল হাসান শিশির জানান, “ভুলে ভরা ২০১৪ সালের নিয়োগ বিধির কারণে নতুন কলেজ, বিশেষ করে রংপুর, গোপালগঞ্জ, জামালপুরে একজন করেও স্থায়ী শিক্ষক নেই। এভাবে চলছে বছরের পর বছর। আমরা দীর্ঘদিন আন্দোলন করেও কোনো ফলাফল দেখতে পাইনি। উপদেষ্টা স্যারের সঙ্গে সাক্ষাতের পরও তিনি সমস্যার সমাধান করেননি। তাই চরম শিক্ষক সংকটে নামমাত্র শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে এই কলেজগুলোতে পড়া হাজার হাজার শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।”
সংকট সত্ত্বেও নতুন দুটি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বস্ত্র অধিদপ্তরের শিক্ষা পরিচালক (উপসচিব) হোসনে আরা বেগম বলেন, "নতুন দুই কলেজ করার বিষয়ে উপর থেকে নির্দেশ আছে। আর আমাদের নতুন শিক্ষক আসছেন। আজকেও তিনজন সহকারী অধ্যাপক যোগ দিয়েছেন। আরও ১১ জন শিক্ষক যুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়ায় আছেন। এটা একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা পিএসসিতে রিকুইজিশন দিলে, তারা শিক্ষক নিয়োগ দেয়।"
আরও পড়ুন
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের এক শিক্ষকের কাছে শিক্ষক সংকট নিরসনে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে কি না জানতে চাইলে তিনি জানান, “নতুন কলেজগুলোতে বর্তমানে কোনো শিক্ষক নেই। পুরোনো কলেজগুলো থেকে ধার করে কিছু শিক্ষক নিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। আর অনেক শিক্ষক যাঁরা চাকরি ছেড়ে দিচ্ছেন, তাঁদের পরিবর্তে নতুন করে দু-একজন শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে। এতে বর্তমান পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হচ্ছে না।”
এ বছরের ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে এই বিষয়গুলো শিক্ষার্থীদের এবং অভিভাবকদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করছে বলে ধারণা অনেকের। শিক্ষার্থীরা মনে করেন, টেক্সটাইল শিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই শিল্পের জন্য দক্ষ প্রকৌশলী তৈরি করতে হলে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলোর দিকে বিশেষ নজর দেওয়া উচিত। শিক্ষক সংকট সমাধান এবং মান উন্নয়নে সরকারের যথাযথ পদক্ষেপের মাধ্যমে এই কলেজগুলোকে শিক্ষার্থীদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তোলা সম্ভব।
সরকারি বাঙলা কলেজে দ্বিতীয় আন্তঃবিভাগ বিজ্ঞান মেলা অনুষ্ঠিত

“উদ্ভাবনে উন্নয়ন, বিজ্ঞানে আগামীর পথ”—এই প্রতিপাদ্যে সরকারি বাঙলা কলেজে অনুষ্ঠিত হলো দুই দিনব্যাপী দ্বিতীয় আন্তঃবিভাগ বিজ্ঞান মেলা। ৭ ও ৮ মে আয়োজিত এ মেলায় কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন এবং উপস্থাপন করেন প্রায় ৩০টি উদ্ভাবনী ও প্রযুক্তিনির্ভর প্রকল্প।
গতকাল বুধবার(৭ই মে) মেলার উদ্বোধন করেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কামরুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ক্লাবের উপদেষ্টা পরিষদ ও ক্লাবের সদস্যরা।
দুই দিন ব্যাপী চলা এই মেলায় কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের সর্বমোট ২৭ টা দল নিজ নিজ প্রকল্প নিয়ে অংশগ্রহণ করে। প্রকল্প এবং উপস্থাপনা বিবেচনায় অংশগ্রহণকারী দলের মধ্য থেকে সেরা তিনটি দলকে পুরস্কৃত করা হয়।
মেলায় প্রথম স্থান অর্জন করে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ‘বায়ো-ফার্মিং ও পরিবেশবান্ধব কীটনাশক’ প্রকল্প। এই প্রকল্পের উপস্থাপক ছিলেন জাবের, বর্ষা ও মানসুরা।
দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে অর্থনীতি বিভাগের ‘Three sector of Bangladesh economy ( air purity,strong Economy)’ প্রকল্প; যেটি উপস্থাপন করেন অর্থনীতি বিভাগের প্রভা, চাঁদনি, আসমা।
তৃতীয় স্থান লাভ করে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ‘সোলার স্মার্ট হোম’ প্রকল্প যেটায় অংশ নেন রজিন, ফারহান, জিতু ও শাহীন নামের চার শিক্ষার্থী।
মেলায় অন্যতম আকর্ষণ ছিলো আইডিয়া শেয়ারিং বিভাগ। এ বিভাগে শিক্ষার্থীরা নানা উদ্ভাবনী ধারণা উপস্থাপন করেন।
আইডিয়া শেয়ারিংয়ে প্রথম স্থান অর্জন করে টিম ‘Breakers Bridge’ (সাহিদুল, আরিফা, রায়হান)।
দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে ‘The Role of Ice’ (সায়মা, রোকন, মনি)।
এবং তৃতীয় হয় ‘Evaluation of Money’ (মৌ, অহনা, সাবিহা)।
আরও পড়ুন
মেলার অংশ হিসেবে আয়োজিত হয় বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড ২০২৫, যেখানে বিভিন্ন বিভাগ ও শ্রেণি থেকে বিজয়ীরা নির্বাচিত হন।
দ্বিতীয় দিন অনুষ্ঠিত হয় বিজ্ঞান কুইজ, পোস্টার প্রদর্শনী এবং ‘জলবায়ু পরিবর্তন ও টেকসই বিজ্ঞান’ শীর্ষক একটি সেমিনার। সেমিনারে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কামরুল হাসান বিজ্ঞানচর্চার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, “এই আয়োজন শিক্ষার্থীদের চিন্তা, কল্পনা ও গবেষণার দ্বার খুলে দেয়। আমরা চাই এই মেলা নিয়মিত হোক এবং আরও বৃহৎ পরিসরে অনুষ্ঠিত হোক।”
অনুষ্ঠান শেষ হয় পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে।
মন্তব্য