আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে সারাদেশে বিক্ষোভ
সন্ধ্যায় উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠক

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন চলছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সন্ধ্যায় জরুরি বৈঠকে বসছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ
শনিবার (১০ মে) বিকেলে অন্তর্বর্তী সরকারের একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে জরুরি বৈঠকটি নির্দিষ্ট কোন বিষয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সে ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যায়নি।
আরও পড়ুন
বৈঠকের সময় ও স্থানের বিষয়েও কোনো তথ্য এখনো গণমাধ্যমকে জানানো হয়নি।
তবে ধারণা করা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিসহ সাম্প্রতিক কয়েকটি ইস্যু নিয়ে আলোচনা হতে পারে বৈঠকে।
পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত
সচিবালয় ও যমুনার আশপাশে সভা-সমাবেশে নিষিদ্ধ ঘোষণা

সচিবালয় এবং প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
শনিবার (১০ মে) ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, জনশৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং প্রধান উপদেষ্টার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স (অর্ডিন্যান্স নং- III/৭৬) এর ২৯ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে এ আদেশ জারি করা হয়েছে।
শনিবার (১০ মে) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত, বাংলাদেশ সচিবালয়, প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় (হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়, কাকরাইল মসজিদ মোড়, অফিসার্স ক্লাব মোড়, মিন্টু রোড) যে কোনো প্রকার সভা-সমাবেশ, গণজমায়েত, মিছিল ও শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করা হলো।
আরও পড়ুন
‘শাহবাগে খালেদা জিয়ার অপেক্ষায় সারা বাংলাদেশ’

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে উত্তাল রাজধানীর শাহবাগ। সেখানে ‘ব্যান করো ব্যান করো, আওয়ামী লীগ ব্যান করো’সহ নানা স্লোগান দিচ্ছেন আন্দোলনকারীরা।
এদিকে শুক্রবার (৯ মে) সন্ধ্যা ৭টায় নিজের ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সেখানে উপস্থিত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি।
তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের বেগম জিয়া, শাহবাগে হাজারো শহিদ পরিবার ও সারা বাংলাদেশ আপনার অপেক্ষায়।’
ফেসবুকে দেওয়া আরেকটি পোস্টে হাদি বলেন, ‘যেই শাহবাগে ফ্যাসিবাদের উত্থান, সেই শাহবাগেই তার কবর রচিত হবে। ইনশাআল্লাহ্।’
এদিন বিকেলে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের পার্শ্ববর্তী সড়ক থেকে সমাবেশ শেষে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করলে এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এই অবরোধে যেন ফিরে এসেছে ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ের উত্তাল দিনগুলো, যা ‘জুলাই আন্দোলন’ নামে পরিচিত।
এ সমাবেশে জাতীয় নাগরিক পার্টির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক তালাত মাহমুদ রাফিসহ এনসিপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন
এদিন বিকেল সাড়ে ৪টার পর থেকেই জামায়াত-শিবির, হেফাজতে ইসলাম, গণঅধিকার পরিষদ, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ ছাত্র-জনতা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিতে শুরু করেন। তাদের কণ্ঠে ছিল আওয়ামী লীগ বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান।
যেন ফিরে এসেছে ‘জুলাই’, আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল শাহবাগ

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে রাজধানীর শাহবাগ মোড়।
শুক্রবার (৯ মে) বিকেলে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের পার্শ্ববর্তী সড়ক থেকে সমাবেশ শেষে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করলে এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এই অবরোধে যেন ফিরে এসেছে ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ের উত্তাল দিনগুলো, যা ‘জুলাই আন্দোলন’ নামে পরিচিত।
এ সমাবেশে জাতীয় নাগরিক পার্টির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক তালাত মাহমুদ রাফিসহ এনসিপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এদিন বিকেল সাড়ে চারটার পর থেকেই জামায়াত-শিবির, হেফাজতে ইসলাম, গণঅধিকার পরিষদ, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ ছাত্র-জনতা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিতে শুরু করেন। তাদের কণ্ঠে ছিল আওয়ামী লীগ বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান।
তার মধ্যে ‘ব্যান করো ব্যান করো, আওয়ামী লীগ ব্যান করো’, ‘দিল্লি না, ঢাকা, ঢাকা-ঢাকা’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘গোলামি না আজাদী, আজাদী আজাদী’ ‘নাহিদ, আক্তার আসছে, রাজপথ কাঁপছে’, ‘একটা একটা ছাত্রলীগ ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’, ‘আওয়ামী লীগের আস্তানা, ভেঙে দাও ঘুরিয়ে দাও’, ‘২৪ বাংলায়, আওয়ামী লীগের ঠাঁই নাই’, ‘লীগ ধর, জেলে ভর’, প্রভৃতি বলে স্লোগান দেওয়া হচ্ছে।
আন্দোলনকারীদের হাতে দেখা যায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে লেখা প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন।
আরও পড়ুন
এদিকে অবরোধের ফলে শাহবাগের চারপাশের রাস্তায় যানজট সৃষ্টি হয়েছে। সায়েন্সল্যাব, টিএসসি এবং বাংলামোটরের দিকে যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। তবে আন্দোলনকারীরা তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খালিদ মনসুর বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন। ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
এর আগে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উদ্যোগে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের পার্শ্ববর্তী সড়কে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেই সমাবেশ শেষে এই অবরোধ কর্মসূচি শুরু করে আন্দোলনকারীরা।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনের বিরুদ্ধে জনঅসন্তোষ থেকে জন্ম নেওয়া ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর রাজনৈতিক পালাবদলের এক নতুন অধ্যায় শুরু হয়। তবে সময় গড়াতেই আবারও সরব হয়ে ওঠে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সংগঠন।
অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে ব্যবস্থাপনা চললেও, আওয়ামী লীগের ‘সাংগঠনিক অপরাধ ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের’ অভিযোগ তুলে এবার দলটিকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে রাজপথে নেমেছে এনসিপিসহ বিভিন্ন সংগঠন। ৯ মাস আগের আন্দোলনের সূত্র ধরে নতুন করে গতি পেয়েছে এই প্রতিবাদ, যা রাজধানীর রাজপথে ফের চাঙ্গা করেছে রাজনৈতিক উত্তাপ।
পারভেজ হত্যা: ফারিয়া হক টিনা ৩ দিনের রিমান্ডে

প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী পারভেজ হত্যা মামলার আসামি ফারিয়া হক টিনাকে ৩ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত। শুক্রবার (৯ মে) বিকেলে ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই আদেশ দেন।
এর আগে, আসামি টিনার ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করে বনানী থানা পুলিশ। পরে শুনানি শেষে আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ মে) দিবাগত রাতে রাজধানীর জগন্নাথপুর এলাকার একটি বাসা থেকে টিনাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এখন পর্যন্ত পারভেজ হত্যা মামলার প্রধান আসামি মেহেরাজসহ ৬ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন
গত ১৯ এপ্রিল বিকেলে পরীক্ষা শেষে বনানীর একটি দোকানে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলেন জাহিদুল ইসলাম পারভেজ। এ সময় পাশের দোকানে দুই নারী শিক্ষার্থীকে নিয়ে হাসিঠাট্টার অভিযোগে ঘটে বিপত্তি। প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানায় ওই শিক্ষার্থীরা। পারভেজের ক্ষমা চাওয়ার পরও কয়েকজন যুবক তাকে মারধরের একপর্যায়ে ছুরিকাঘাত করে। এতে পারভেজের মৃত্যু হয়।
ঘটনার পরদিন ২০ এপ্রিল পারভেজের ফুফাতো ভাই হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে বনানী থানায় মামলা করেন। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলবি ও ইংরেজি বিভাগের তিন ছাত্র মাহাথি, মেহেরাব, আবুজর গিফারীসহ আটজনকে আসামি করা হয়। এছাড়া, মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২০-৩০ জনকে আসামি করা হয়।
মন্তব্য