ভারতের দাবি
সেনাদের সীমান্তে আনছে পাকিস্তান, নিচ্ছে হামলার প্রস্তুতি :

পাকিস্তান তাদের সেনাদের সীমান্তের দিকে আনছে এবং হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে দাবি করেছে ভারত। শনিবার (১০ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র কর্ণেল সোফিয়া কোরেশি এমন তথ্য জানান। পাকিস্তানের সেনাদের মুভমেন্টের প্রেক্ষিতে ভারতও যথাযথ প্রস্তুতি নিয়েছে বলে মন্তব্য করেন এ সেনা কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, “আমরা লক্ষ্য করেছি পাকিস্তানের সেনাবাহিনী তাদের সেনাদের সম্মুখ অভিযানে (সীমান্তে) আনছে। যা নির্দেশ করছে উত্তেজনা আরও বাড়াতে আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা।”
সোফিয়া আরও বলেন, “ভারতের সশস্ত্র বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে প্রস্তুত আছে। পাকিস্তানের সব ধরনের বৈরিতার জবাব সফলভাবে দেওয়া হয়েছে। উত্তেজনা হ্রাস না করার যে প্রতিশ্রুতি ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর রয়েছে সেটি আমরা আবারও পুনর্ব্যক্ত করছি, যদি পাকিস্তান সেনাবাহিনী এমন প্রতিশ্রুতি দেয়।”
আরও পড়ুন
ভারতের এমন দাবির পর পাকিস্তান এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করেনি তারা সেনাদের সীমান্তের দিকে নিয়ে যাচ্ছে কি না।
এদিকে শুক্রবার মধ্যরাতে পাকিস্তানের তিনটি বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালায় ভারত। এরপর পাকিস্তানও ভারতের বিরুদ্ধে হামলা চালানো শুরু করে। ‘অপারেশন বুনইয়ানুম মারসুস’ নামে এই অভিযানে ভারতের বিভিন্ন বিমানঘাঁটি এবং সামরিক স্থাপনায় মিসাইল ছোড়ে তারা।
জম্মু-কাশ্মিরের রাজধানী শ্রীনগরের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, পাকিস্তানের হামলার কারণে তাদের মধ্যে বেশ আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ বলেছেন, ‘‘ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আজ পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী সমন্বিত শক্তিশালী হামলা চালিয়েছে।” তিনি জানান, ভারত যেসব সামরিক অবকাঠামো ব্যবহার করে পাকিস্তানের ওপর হামলা চালিয়েছে সেগুলো লক্ষ্য করেই পাকিস্তান হামলা চালিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ আরও বলেন, পাকিস্তান তাদের নিরীহ মানুষের রক্তের বদলা নিয়েছে।
সূত্র: বিবিসি, আলজাজিরা
ভারত ও পাকিস্তানকে সংঘাত বন্ধের আহ্বান জি-৭ দেশগুলোর

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সংঘাত বন্ধ ও আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের জন্য দেশদুটিকে আহ্বান জানিয়েছে বৃহত্তম অর্থনীতির দেশগুলোর জোট জি-৭।
শনিবার (১০ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত ও পাকিস্তানের সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জি-৭ জোট। জোটের দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এক বিবৃতিতে ‘অবিলম্বে উত্তেজনা কমানো’ ও ‘সর্বোচ্চ সংযম’ দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
ভারত ও পাকিস্তানকে সতর্ক করে দিয়ে তারা বলেছেন, ‘আরও সামরিক উত্তেজনা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য গুরুতর হুমকি। দুই দেশেরই শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে সরাসরি সংলাপে বসা উচিত।’
যুদ্ধ প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল অসিম মুনিরের সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এই তথ্য জানিয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুসের জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও আজ সকালে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের সাথে কথা বলেছেন। ’
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘রুবিও উভয় পক্ষকে উত্তেজনা প্রশমনের উপায় খুঁজে বের করার জন্য অনুরোধ করে যাচ্ছেন এবং ভবিষ্যতের সংঘাত এড়াতে গঠনমূলক আলোচনা শুরু করার জন্য মার্কিন সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন। ’
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন প্রাণ হারায়। এই হামলার দায় পাকিস্তানের ওপর চাপিয়ে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে দেশটিতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। এতে পাকিস্তানে বেশ কয়েকজন হতাহতের ঘটনা ঘটে।
ভারতের সেই অভিযানের পালটা জবাব হিসেবে গতকাল শুক্রবার রাতে ‘অপারেশন বুনিয়ান উল মাসরুস’ অভিযান শুরু করেছে পাকিস্তান। দেশটির সামরিক বাহিনী ঘোষণা করেছে, তারা ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র সংরক্ষণাগারগুলোয় অভিযান চালিয়েছে।
ভারত হামলা বন্ধ করলে, ইসলামাবাদও তাই করবে: পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ভারত যদি উত্তেজনাকর পদক্ষেপ বন্ধ করে, তাহলে ইসলামাবাদও তাই করবে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার।
শনিবার (১০ মে) স্থানীয় একটি টেলিভিশন স্টেশনের সঙ্গে কথা বলার সময় ইসহাক দার এ কথা বলেন।
ভারত ও পাকিস্তান শনিবার একে অপরের বিরুদ্ধে নতুন করে সামরিক অভিযান শুরু করার এবং একে অপরের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার অভিযোগ করার পর তার এই মন্তব্য এসেছে।
আরও পড়ুন
ইসহাক দার বলেন, যদি সামান্যতম বিচক্ষণতা থাকে, তাহলে ভারতও থামবে এবং যদি তারা থামে, তাহলে আমরাও থামব।
আমরা সত্যিকার অর্থে কোনো একটি দেশের আধিপত্য ছাড়াই শান্তি চাই, বলেও উল্লেখ করেন দার।
এদিকে, পারমাণবিক শক্তিধর দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সংঘাত বন্ধ ও আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের জন্য দেশ দুটিকে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও বৃহত্তম অর্থনীতির দেশগুলোর জোট জি-৭।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ইসলামাবাদে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে ‘গঠনমূলক আলোচনার’ জন্য সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন।
সূত্র : সিএনএন
পাকিস্তানকে ঋণ দিলো আইএমএফ, ভারতের পেট খারাপ অবস্থা

ভারতের তীব্র আপত্তি সত্ত্বেও পাকিস্তানকে ১০০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। শুক্রবার ওয়াশিংটনে বৈঠকে বসে এই ঋণ মঞ্জুর করে আইএমএফের ঋণ সংক্রান্ত বোর্ড। যা নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন ভারতশাসিত জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ।
কাশ্মীর ইস্যুতে চলমান উত্তেজনার মধ্যে আইএমএফ পাকিস্তানকে শত কোটি ডলার ঋণ ছাড় দেওয়ায় এর তীব্র বিরোধিতা করেছেন ওমর আবদুল্লাহ। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে ক্ষোভ ঝাড়েন তিনি।
এক্স অ্যাকাউন্টে কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘আমি বুঝতে পারছি না যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কীভাবে বিশ্বাস করে যে দক্ষিণ এশিয়ার উত্তেজনা কমে যাবে।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘আইএমএফ পাকিস্তানে অস্ত্র ও গোলাবারুদের অর্থায়ন করছে। এসব অস্ত্র তারা ভারতের পুঞ্চ, রাজৌরি, উরি, তাংধর এবং আরও অনেক জায়গায় হামলা চালাতে ব্যবহার করছে।’
আরও পড়ুন
অবশ্য পাকিস্তানকে ঋণ না দেওয়ার তীব্র বিরোধিতা করেছিল ভারত। পাকিস্তানকে ঋণ দেওয়ার ভোটে ভারত অংশগ্রহণই করেনি।
পাকিস্তানের দুর্বল ট্র্যাক রেকর্ডের কথা উল্লেখ করে ভারত আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে পাকিস্তান রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় আন্তঃসীমান্ত সংঘাতের জন্য আইএমএফ তহবিলের অর্থ অপব্যবহার করতে পারে। অবশ্য ভারতের এসব অভিযোগ শেষ পর্যন্ত ধোপে টেকেনি। তীব্র বিরোধিতার পরও নতুন করে পাকিস্তানকে ঋণ দেয় আইএমএফ।
সূত্র: রয়টার্স
পাক-ভারত সংঘাতের মধ্যেই
ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল পাকিস্তান

ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ-উত্তেজনার মধ্যেই ভূমিকম্প হয়েছে পাকিস্তানে। এক বিবৃতিতে দেশটির আবহাওয়া দপ্তর পিএমডি জানিয়েছে, শনিবার সকাল ১০টা ৮ মিনিটে ৫ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে পাকিস্তানে।
এই ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল বা এপিসেন্টার ছিল পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমে হিন্দুকুশ পার্বত্য অঞ্চলে ভূপৃষ্ঠের ২৩০ কিলোমিটার গভীরে। ভূমিকম্পের কম্পণ মূলত অনুভূত হয়েছে রাজধানী ইসলামাবাদ এবং খাইবার পাখুতনখোয়া রাজ্যে। এছাড়া আটক, পেশোয়ার, মারদান, নওশেরা, সোয়াবি, উত্তর ওয়াজিরিস্তিানসহ বিভিন্ন জেলায় টের পাওয়া গেছে কম্পণ।
আরও পড়ুন
তবে এতে এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানির কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ভৌগলিকভাবে পাকিস্তানের অবস্থান ভারতীয় ও ইউরাশীয় টেকটোনিক প্লেটের একটি সংযোগস্থলে। তাই এ দুই টেকটোনিক প্লেটের কোনোটি সামান্য অবস্থান পরিবর্তন করলেই ভূমিকম্প হয় দেশটিতে।
এর আগে ২০১৫ সালে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। এতে প্রাণ হারিয়েছিলেন প্রায় ৪০০ মানুষ।
সূত্র : জিও নিউজ
মন্তব্য