ঢাকা, সোমবার, ১৮ আগস্ট ২০২৫ ৩ ভাদ্র ১৪৩২
 
শিরোনাম

ভারতের ছত্তিশগড়ে ভয়াবহ সংঘর্ষ, নিহত অন্তত ২৫

অনলাইন ডেস্ক
২১ মে, ২০২৫ ১৭:৫৪
অনলাইন ডেস্ক
ভারতের ছত্তিশগড়ে ভয়াবহ সংঘর্ষ, নিহত অন্তত ২৫

ভারতের মধ্যাঞ্চলীয় ছত্তিশগড় রাজ্যে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির মাওবাদী বিদ্রোহীদের তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে। এই সংঘর্ষে অন্তত ২৫ মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন। বুধবার ছত্তিশগড়ের নারায়ণপুর জেলার গভীর বনাঞ্চলে মাওবাদী বিদ্রোহীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সংঘর্ষের এই ঘটনা ঘটেছে।

ছত্তিশগড় পুলিশ বলেছে, ভারতীয় কমান্ডোরা গুলি চালিয়ে কমপক্ষে ২৫ মাওবাদী বিদ্রোহীকে হত্যা করেছেন। 

কয়েক দশক ধরে চলা মাওবাদীদের বিদ্রোহে দেশটিতে মাওবাদী বিদ্রোহী, সেনা এবং বেসামরিক নাগরিকসহ ১২ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। মাও বিদ্রোহীরা ভারতের খনিজ-সমৃদ্ধ মধ্যাঞ্চলীয় ওই রাজ্যের প্রান্তিক আদিবাসীদের অধিকারের জন্য বছরের পর বছর ধরে সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

চীনা বিপ্লবী নেতা মাও সেতুংয়ের কর্মকাণ্ডে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৬৭ সালে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করেন ভারতের মাওবাদী বিদ্রোহীরা। আদিবাসী অধিকার বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর পক্ষে লড়াইয়ের দাবি করা মাওবাদীরা নকশাল নামেও পরিচিত।

২০০০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে ভারতে মাওবাদীদের বিদ্রোহ চরমে পৌঁছায়। ওই সময় দেশটির প্রায় এক তৃতীয়াংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ ১৫ থেকে ২০ হাজার মাওবাদী যোদ্ধার হাতে ছিল।

ছত্তিশগড় রাজ্য পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বিবেকানন্দ সিনহা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, বন্দুকযুদ্ধে ২৫ জনের বেশি মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন। মাও বিদ্রোহীদের শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত রাজ্যের নারায়ণপুর জেলার প্রত্যন্ত ও গভীর এক জঙ্গলের ভেতরে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে মাওবাদীদের সংঘর্ষ হয়েছে।

সিনহা বলেন, মাওবাদী বিদ্রোহীদের শীর্ষ নেতাদের ওই জঙ্গলে উপস্থিতির বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে বিদ্রোহীরা গুলি চালালে পাল্টা গুলি ছোড়ে নিরাপত্তা বাহিনী।

তবে এই সংঘর্ষে আসলে কারা নিহত হয়েছেন, সেটি পরিষ্কার নয়। তিনি বলেন, সংঘর্ষে নিহতদের পরিচয় এখনও শনাক্ত করা যায়নি।

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত বছরের সেপ্টেম্বরে মাওবাদী বিদ্রোহীদের ‘আত্মসমর্পণ’ অথবা ‘সর্বাত্মক হামলার’ মুখোমুখি হওয়ার বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার ২০২৬ সালের মার্চের মাঝেই মাওবাদী বিদ্রোহ দমনের আশা করছে।

সূত্র: এএফপি।

প্রাসঙ্গিক
    মন্তব্য

    খাবার না পেলে

    অনাহারে ৪৮ ঘণ্টায় গাজায় মারা যাবে ১৪ হাজার শিশু : জাতিসংঘ

    অনলাইন ডেস্ক
    ২০ মে, ২০২৫ ২০:৯
    অনলাইন ডেস্ক
    অনাহারে ৪৮ ঘণ্টায় গাজায় মারা যাবে ১৪ হাজার শিশু : জাতিসংঘ

    অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় জরুরি মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে না পারলে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ১৪ হাজার শিশুর জীবনহানি হতে পারে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। আজ মঙ্গলবার (২০ মে) জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল টম ফ্লেচার বিবিসি রেডিও ৪-এর ‘টুডে’ প্রোগ্রামে এ আশঙ্কার কথা জানান।

    ফ্লেচার বলেন, ‘আমরা নিশ্চিতভাবে জানি, শিশুদের জরুরি জীবন রক্ষাকারী খাবার প্রয়োজন। কারণ তাদের মায়েরা নিজেরাই পর্যাপ্ত পুষ্টি পাচ্ছেন না। আর যদি তারা প্রয়োজনীয় পুষ্টি না পায়, তবে তারা মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়বে।’

    এই বিপুল শিশু মৃত্যুর আশঙ্কা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে টম ফ্লেচার বলেন, ‘আমাদের শক্তিশালী দল মাঠে কাজ করছে এবং দুর্ভাগ্যবশত তাদের অনেকেই নিহত হয়েছেন। তবে এখনও অনেক কর্মী মাঠে রয়েছেন, তারা মেডিকেল সেন্টার, স্কুলগুলোতে আছেন। তারা চাহিদা নিরূপণের চেষ্টা করছেন।’

    গাজার বর্তমান পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে টম ফ্লেচার বলেন, ‘এই ১৪ হাজার শিশুর মধ্যে যত বেশি সম্ভব, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমরা বাঁচাতে চাই। আমাদের গাজা উপত্যকাকে মানবিক সহায়তা দিয়ে ভাসিয়ে দিতে হবে।’

    টম ফ্লেচার আরও বলেন, ‘কিন্তু এটাই (মানবিক সহায়তা প্রদান) আমাদের কাজ, আমরা চালিয়ে যাব। এটা হতাশাজনক হবে, আমরা বাধাগ্রস্ত হব এবং বিশাল ঝুঁকি নেব। কিন্তু আমি এই শিশুর খাবার পৌঁছে দেওয়ার চেয়ে ভালো কোনো উপায় দেখছি না।’

    এই উদ্বেগজনক সতর্কবার্তা এমন এক সময় এলো যখন গাজায় মানবিক পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করেছে। অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে খাদ্য, পানীয়, চিকিৎসা সামগ্রী ও জ্বালানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে, যা শিশুদের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক পরিণতি নিয়ে আসছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইসরায়েলের ওপর গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে, তবে এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি উদ্বেগজনকই রয়ে গেছে।

    দীর্ঘ তিন মাস পর গতকাল সোমবার মাত্র পাঁচ ট্রাক খাদ্য সরবরাহের অনুমতি দিয়েছিল ইসরায়েল। আজ আরও ১০০ ট্রাক খাদ্য ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী প্রবেশের আশা জাতিসংঘের।

    সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজার পরিবারগুলো প্রয়োজনীয় খাবার না থাকায় পশুখাদ্য, মেয়াদোত্তীর্ণ ও বালি মিশ্রিত আটা খেতে শুরু করেছে। অন্যদিকে শিশুরা ক্ষুধাজনিত অসুস্থতা, যেমন ডায়রিয়া ও পুষ্টিহীনতায় ভুগছে।

    প্রাসঙ্গিক
      মন্তব্য

      ‘শখের বশে’ গাজায় শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে : ইসরায়েলের বিরোধী নেতা

      অনলাইন ডেস্ক
      ২০ মে, ২০২৫ ১৯:৫৯
      অনলাইন ডেস্ক
      ‘শখের বশে’ গাজায় শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে : ইসরায়েলের বিরোধী নেতা

      ইসরায়েলি সেনারা অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ‘শখের বশে’ ফিলিস্তিনি শিশুদের হত্যা করছে এবং ইসরায়েল দেশটি দ্রুত একটি ‘অযোগ্য ও একঘরে’ রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির বিরোধী দলের শীর্ষ নেতা ইয়ার গোলান।

      স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২০ মে) এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের বিরোধী দলের এই শীর্ষ নেতা।

      সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইসরায়েলের পাবলিক ব্রডকাস্টার কেএএন-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বামপন্থি বিরোধীদল ডেমোক্র্যাটস পার্টির প্রধান ইয়ার গোলান বলেন, যদি আমরা সুস্থ রাষ্ট্র হিসেবে আচরণে ফিরতে না পারি, তবে ইসরায়েল দক্ষিণ আফ্রিকার মতো একটি বিচ্ছিন্ন রাষ্ট্রে পরিণত হবে।

      তিনি বলেন, একটি সুস্থ রাষ্ট্র কখনো সাধারণ নাগরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে না, শখের বশে শিশুদের হত্যা করে না এবং জনগণকে জোরপূর্বক বিতাড়নের লক্ষ্য গ্রহণ করে না।

      ইসরায়েলি সরকারের কঠোর সমালোচনা করে গোলান বলেন, এই সরকার প্রতিহিংসাপরায়ণ ও নীতিহীন লোকদের দ্বারা পূর্ণ, যাদের সংকট মোকাবিলার কোনো যোগ্যতা নেই। তাদের নেতৃত্বে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে।

      বিরোধী নেতা গোলানের বক্তব্য প্রকাশিত হওয়ার পর ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন মহলে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গোলানের মন্তব্যকে ‘রক্তপাতের অপবাদ’ ও ‘বন্য উসকানি’ বলে আখ্যায়িত করেন।

      এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, আমি ইসরায়েলের সাহসী সেনা ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ইয়াইর গোলানের এই উগ্র উসকানির তীব্র নিন্দা জানাই। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বিশ্বের সবচেয়ে নৈতিক বাহিনী।

      চরম ডানপন্থি জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেনগাভির গোলানকে ‘ইহুদিবিরোধী রক্ত-অপবাদ ছড়ানো’ ব্যক্তিত্ব হিসেবে অভিহিত করে দাবি করেন, তিনি ‘ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের ন্যায়’ কথা বলছেন।

      এছাড়া যোগাযোগমন্ত্রী শ্লোমো কারহি গোলানকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে অভিহিত করেন এবং অভিযোগ করেন, তিনি ইসরায়েলের সেনাদের নিরাপত্তা ও গণতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করছেন।

      প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সরকারের প্রাক্তন মিত্র এবং বর্তমান বিরোধী জোটের অন্যতম নেতা বেনি গ্যান্টজ গোলানের বক্তব্যের বিরোধিতা করেন। তিনি গোলানকে বক্তব্য প্রত্যাহার ও দুঃখ প্রকাশের আহ্বান জানান।

      গোলানের এই মন্তব্য এমন এক সময় এসেছে, যখন চরমপন্থি ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা এবং গাজায় যুদ্ধ বন্ধের বিপক্ষে থাকা কিছু ইসরায়েলি জনগণ আরও উগ্র ভাষায় কথা বলছে।

      ইসরায়েলের প্রভাবশালী পত্রিকা হারেটজ এক প্রতিবেদনে জানায়, দখলকৃত পশ্চিম তীরে অবৈধ একটি বসতিতে বসবাসকারী রিভকা লাফেয়ার নামের এক চরমপন্থি নারী প্রকাশ্যে গাজা উপত্যকার লাখ লাখ মানুষকে ধ্বংস ও উৎখাত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

      এক বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা প্রতিশোধ নিতে এবং গাজাকে ধ্বংস করতে বদ্ধপরিকর- শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ নারী পর্যন্ত কাউকেই ছাড়া হবে না।

      তিনি আরও বলেন, গাজা ধ্বংসের জন্য তিনি বাইবেলের ‘আমালেক’ জাতির ধ্বংসের কাহিনি উল্লেখ করেছেন- যেটি ছিল একটি পুরনো ধর্মীয় কাহিনি যেখানে একটি জাতিকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করার কথা বলা হয়েছিল।

      এই ধরনের বক্তব্য ইসরায়েলের ভেতরে যুদ্ধকে আরও সহিংস ও নিষ্ঠুর করে তুলছে। একইসঙ্গে এসব চরমপন্থী মতাদর্শ গাজায় সাধারণ মানুষের জীবনের জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করছে।

      প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের বর্বর হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৩,৫০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। বিশ্বব্যাপী যুদ্ধবিরতির আহ্বান উপেক্ষা করে ইসরায়েল তাদের অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।

      ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।

      এছাড়া, গাজায় গণহত্যার অভিযোগে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলাও চলছে।

      প্রাসঙ্গিক
      মন্তব্য

      ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে আসল বিজয়ী চীন?

      অনলাইন ডেস্ক
      ২০ মে, ২০২৫ ১৮:২৬
      অনলাইন ডেস্ক
      ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে আসল বিজয়ী চীন?

      চলতি মে মাসের শুরুতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চারদিনের হামলা, পাল্টা হামলা ও সামরিক উত্তেজনা যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে শেষ হয়েছে। দুই দেশই নিজেদের বিজয়ী দাবি করেছে।

      তবে সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সংঘাত থেকে চীনের প্রতিরক্ষা শিল্প অপ্রত্যাশিতভাবে লাভবান হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

      সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গত ২২ এপ্রিল ভারতশাসিত জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এরপর ৭ মে ভারত “অপারেশন সিন্দুর” নামে পাকিস্তানে ও পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মিরে বিমান হামলা চালায়।

      ভারত দাবি করে, হামলায় লস্কর-ই-তৈয়বা ও জইশ-ই-মুহাম্মদ-এর ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে এবং কমপক্ষে ১০০ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করে। এরপর দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্র ও যুদ্ধবিমানের আক্রমণ চলতে থাকে।

      ভারত এই সংঘাতে ফরাসি ও রুশ নির্মিত ফাইটার জেট ব্যবহার করে; অন্যদিকে পাকিস্তান চীনের সহায়তায় তৈরি করা জেএফ-১৭ থান্ডার ও জে-১০ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে। যদিও দুই দেশই দাবি করে, তাদের বিমান সীমান্ত অতিক্রম করেনি—তারা দূর থেকে মিসাইল ছুঁড়েছে।

      সংঘাত শুরুর পর পাকিস্তান জানায়, পাকিস্তান বিমান বাহিনীর জে-১০ যুদ্ধবিমান ভারতীয় বিমান বাহিনীর রাফাল ফাইটার জেটসহ ছয়টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। যদিও ভারত সরকার এই দাবির কোনও সরাসরি জবাব দেয়নি। নয়াদিল্লি কেবল বলেছে, ক্ষয়ক্ষতি যুদ্ধের অংশ।

      ভারতের এয়ার মার্শাল এ.কে. ভরতি বলেছেন, “যুদ্ধে ক্ষয়ক্ষতি হতেই পারে। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য পূরণ হয়েছে এবং সব পাইলট নিরাপদে ফিরে এসেছেন”। এছাড়া কিছু সংবাদমাধ্যম ভারতের পাঞ্জাব ও কাশ্মির অঞ্চলে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার খবর দিলেও ভারত সরকার এ বিষয়ে একেবারেই নিশ্চুপ।

      জে-১০সি : যুদ্ধক্ষেত্রে দাপিয়ে বেড়ানো অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান

      যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, পাকিস্তান সম্ভবত জে-১০ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ভারতের যুদ্ধবিমানের ওপর আকাশ থেকে আকাশে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এতে চীনের অস্ত্রশিল্প একটি বাস্তব যুদ্ধ পরিস্থিতিতে নিজেদের কার্যকারিতা প্রমাণের সুযোগ পেয়েছে, যা এর আগে হয়নি।

      মূলত পাকিস্তান চীনের অস্ত্রের ওপর নির্ভর করে যে সফলতা পেয়েছে, তা চীনের প্রতিরক্ষা শিল্পের জন্য এক বড় সুযোগ বলে অনেকে মনে করছেন।

      পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান দেখে পালাল ভারতের ৪টি রাফাল যুদ্ধবিমান

      চীনা সেনাবাহিনীর সাবেক কর্নেল ঝোউ বো বিবিসিকে বলেন, “এই সংঘর্ষ চীনের অস্ত্রশিল্পের জন্য একপ্রকার বিজ্ঞাপন হয়ে গেছে। চীন এতদিন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে নিজের প্রযুক্তির কার্যকারিতা প্রমাণের সুযোগ পায়নি। এবার দেখা গেল চীনের কিছু সিস্টেম বিশ্বের যেকোনও অস্ত্রের সঙ্গে টক্কর দিতে সক্ষম।”

      পাকিস্তান ও ভারতের এই সংঘাতের পর চীনের অভিক চেংদু এয়ারক্রাফট কোম্পানির শেয়ারের দাম ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। তবে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, এখনই চীনের প্রযুক্তিকে সেরা বলে বিবেচনা করা যাবে না।

      লন্ডনের কিংস কলেজের অধ্যাপক ওয়াল্টার ল্যাডউইগ বলেন, চীনের যুদ্ধবিমান ভারতের রাফালকে সত্যিই পরাস্ত করেছে কিনা, সেটা এখনও স্পষ্ট নয়।

      চীন এ নিয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনও মন্তব্য করেনি, তবে চীনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি উঠেছে যে জে-১০ যুদ্ধবিমান পশ্চিমা প্রযুক্তি ব্যবহৃত রাফাল বিমানকে নামিয়ে দিয়েছে—এ নিয়ে সেখানে উল্লাসও চলছে। অন্যদিকে ভারত নিজেও বিস্তারিত কিছুই জানায়নি, ফলে আন্তর্জাতিক প্রচারেও ভারত পিছিয়ে গেছে।

      ভারোনার ইন্টারন্যাশনাল টিম ফর দ্য স্টাডি অব সিকিউরিটির চীন বিশেষজ্ঞ কার্লোত্তা রিনাউডো বলেন, “প্রকৃত সত্যের চেয়ে এখন মানুষের ‘ধারণা’ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, এই সংঘাতে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে চীনই।”

      চীনের জন্য পাকিস্তান কেবল কৌশলগত নয়, অর্থনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ মিত্র। ‘চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর’ প্রকল্পে চীন ৫০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে। মূলত ৫ হাজার কোটি ডলারের চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোরই এই সম্পর্কের ভিত্তি।

      পাকিস্তানি নিরাপত্তা বিশ্লেষক ইমতিয়াজ গুল বলেন, “এই সংঘাতে চীনের সমর্থন ভারতের পরিকল্পনাকে চমকে দিয়েছে। ভারত এতো ঘনিষ্ঠ সামরিক সহযোগিতা আশা করেনি। আধুনিক যুদ্ধক্ষেত্রে পাকিস্তান-চীন সহযোগিতার গভীরতা তারা (ভারত) আঁচ করতে পারেনি।”

      চীন সাধারণত মিয়ানমার ও পাকিস্তানের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর কাছে অস্ত্র বিক্রি করে। আগের সময়ে চীনা অস্ত্রের মান ও কারিগরি ত্রুটি নিয়ে সমালোচনা ছিল—মিয়ানমার ও নাইজেরিয়ায় জেএফ-১৭ ও এফ-৭ বিমানের সমস্যা তার উদাহরণ।

      বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সংঘাতে চীনের অস্ত্র ব্যবহারের পারফরম্যান্স পশ্চিমা দেশগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে। এতে বিশ্ব অস্ত্র বাজারে বড় প্রভাব পড়বে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বৃহত্তম অস্ত্র রপ্তানিকারক দেশ, আর তালিকায় চীন রয়েছে চতুর্থ স্থানে।

      অবশ্য পাকিস্তানের হাতে ভারতের যুদ্ধবিমান হারানোর ঘটনা এটিই প্রথম নয়। এর আগে ২০১৯ সালে ভারতের এক মিগ-২১ যুদ্ধবিমান পাকিস্তান সীমান্তে গুলি করে নামানো হয় এবং পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর হাতে ভারতীয় পাইলট বন্দি হন।

      এদিকে চলমান সংঘাতের শেষে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র দেশগুলোর চাপেই মূলত পাকিস্তান ও ভারত যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সংঘাতের এই পর্বটি ভারতের জন্য এক সতর্ক সংকেত। কারণ চীন ইতোমধ্যেই জে-২০ স্টেলথ যুদ্ধবিমান ব্যবহার করছে, যা রাডারে ধরা পড়ে না।

      যদিও এই যুদ্ধবিমানগুলো এখনও পাকিস্তানকে দেয়নি বেইজিং।

      অন্যদিকে ভারত ও চীনের মধ্যে দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধ রয়েছে এবং এ নিয়ে ১৯৬২ সালের যুদ্ধে চীনের কাছে পরাজয়ের শিকার হয়েছিল ভারত। আর সর্বশেষ ২০২০ সালে সীমান্তে উখয় দেশের সৈন্যদের মধ্যে লাদাখে সংঘর্ষ হয়।

      বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত এখন জানে তাকে দ্রুত দেশীয় প্রতিরক্ষা শিল্পে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অস্ত্র ক্রয়েও গতি আনতে হবে। আর এই মুহূর্তে চীনের প্রতিরক্ষা শিল্প আন্তর্জাতিক আলোচনায় এগিয়ে আছে, বিশেষ করে তাদের তৈরি জে-১০ যুদ্ধবিমানের সাফল্যের কারণে।

      মন্তব্য

      ‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী: ডোনাল্ড ট্রাম্প ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি ফেক

      অনলাইন ডেস্ক
      ১৯ মে, ২০২৫ ২১:২৩
      অনলাইন ডেস্ক
      ‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী: ডোনাল্ড ট্রাম্প ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি ফেক

      ‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী: ডোনাল্ড ট্রাম্প’ শিরোনামে একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওটির মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প শেখ হাসিনাকে নিয়ে এ ধরনের মন্তব্য করেছেন।

      ভিডিওতে ট্রাম্পের কণ্ঠে শোনা যায়-১৫ মে শেখ হাসিনার সঙ্গে বাংলাদেশে সফরে আসছি আমি। চিন্তার কোনো কারণ নেই। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবেই বাংলাদেশে ফিরছেন।

      সোমবার (১৯ মে) রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’ শীর্ষক কোনো মন্তব্য করেননি। বরং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে তার কণ্ঠ নকল করে তৈরি একটি ভিডিওর মাধ্যমে এই দাবিটি প্রচার করা হচ্ছে।

      বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ভিডিওটি পর্যালোচনা করা হয়। এতে দেখা যায়, ট্রাম্পের ঠোঁটের নড়াচড়া ও বক্তব্যের মধ্যে অসঙ্গতি রয়েছে।

      রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ট্রাম্পের একই স্থান ও একই পোশাকে একাধিক বক্তব্যের ভিডিও (১, ২) পাওয়া যায়। তবে আলোচিত বক্তব্যটি কোথাও পাওয়া যায়নি। এমনকি, তার এ ধরনের বক্তব্য লিখিত আকারেও দেশীয় বা আন্তর্জাতিক কোনো গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি।

      1-118-696x392
      ভিডিওতে দাবি করা হয়, ট্রাম্প ১৫ মে বাংলাদেশ সফরে আসবেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বাংলাদেশ সফর করলে, তা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রচারিত হতো।  তবে এই প্রতিবেদন লেখার সময় (১৯ মে) পর্যন্ত ট্রাম্পের বাংলাদেশ সফর নিয়ে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে তথ্য পাওয়া যায়নি।

      পরবর্তীতে ভিডিওটির অডিও অংশ ডিপফেক শনাক্তকরণ টুল ‘Sensity’-এর মাধ্যমে বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথিত বক্তব্যটি ভুয়া হওয়ার সম্ভাবনা ৭৪.৭ শতাংশ।

      এছাড়া, ডিপফেক শনাক্তকরণ টুল ‘ডিপফেক-ও-মিটার’-এর ‘Lip-synced Deepfake Detection’ মডেল অনুসারে, ভিডিওটি ভুয়া হওয়ার সম্ভাবনা ৯৯.৪ শতাংশ।

      সুতরাং এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কণ্ঠ নকল করে তৈরি একটি ভিডিওকে শেখ হাসিনা সম্পর্কে ট্রাম্পের মন্তব্য দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে যা মিথ্যা।

      মন্তব্য
      সর্বশেষ সংবাদ
        সর্বাধিক পঠিত