ঢাকা, সোমবার, ১৮ আগস্ট ২০২৫ ৩ ভাদ্র ১৪৩২
 
শিরোনাম

নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন প্রস্তাবিত

বিতর্কিত সুপারিশমালা বাতিলের দাবিতে সাতক্ষীরায় সচেতন নারী সমাজের মানববন্ধন

জেলা প্রতিনিধি
২১ মে, ২০২৫ ১৩:৫২
জেলা প্রতিনিধি
বিতর্কিত সুপারিশমালা বাতিলের দাবিতে সাতক্ষীরায় সচেতন নারী সমাজের মানববন্ধন
  • নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের কুরআন সুন্নাহ বিরোধী প্রস্তাবনা বাতিল করতে হবে
  • যৌনকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার প্রস্তাব বাতিল করতে হবে

বুধবার (২১ মে) বেলা ১১টার দিকে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সচেতন নারী সমাজের ব্যানারে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

সচেতন নারী সমাজ সাতক্ষীরার আহ্বায়ক গুলশানারা কামিনির সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব ফজিলা খাতুনের পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নারী নেত্রী জয়নব পারভিন, নুরুন নেছা ইতি, রাজিয়া সুলতানা, ফতেমা খাতুন, রাবেয়া খাতুন প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনে জমা দেয়া যেসব প্রস্তাবনা সরাসরি কুরআনের বিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক তা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। নারী কমিশনের এই সংস্কার প্রস্তাব প্রমাণ করে, এটা পতিত ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারের পক্ষের একটি বিশেষ গোষ্ঠীর এজেন্ডা বাস্তবায়নের দলিল। কাজেই এ প্রস্তাবনা শুধু বাতিলই নয়, পুরো ‘নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন’ বাতিল করতে হবে।

বক্তারা আরও বলেন, কমিশনের বেশ কিছু সুপারিশ বাংলাদেশের সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের সঙ্গে রাষ্ট্রের দ্বান্দ্বিক অবস্থান তৈরি করবে। “সমাজ বনাম রাষ্ট্র”এবং “ধর্ম বনাম নারী”কে মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে এ কন্ট্রোভার্সিয়েল প্রতিবেদন। কমিশনের প্রস্তাবিত প্রতিবেদনের পাতায় পাতায় ধর্মকে নারী বৈষম্যের অন্যতম কারণ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। দেশের সকল সচেতন নারী সমাজ প্রস্তাবিত এ সুপারিশকে ঘৃনাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। এ জন্য বক্তারা এই প্রস্তাবনা বাতিলের পাশাপাশি পুরো কমিশন বাতিলের জোর দাবি জানান।

বক্তারা আরও বলেন, ১৭ টি অধ্যায়ে ৪৩৩ টি সুপারিশ সম্বলিত ৩০০ পৃষ্ঠারও অধিক এ সংস্কার প্রতিবেদন পড়ে মনে হয়েছে যে, নারী সমতা, নারী উন্নয়ন ও নারী ক্ষমতায়নের মুখরোচক শব্দ দিয়ে তারা এদেশের নারী সমাজকে বিভ্রান্ত করতে চায়। নারীদেরকে পুরুষের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়েছে। কমিশনের প্রস্তবনাগুলো জাতিকে চূড়ান্ত বিভাজনের দিকে ঠেলে দেওয়ার সূদুর প্রসারী একটি উদ্যোগ। এই কমিশনে সমাজের সকল শ্রেণি পেশার নারীদের প্রতিনিধিত্ব ও অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত হয়নি।

নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের জমা দেওয়া ১০টির মতো প্রস্তাবনা সরাসরি কুরআনের বিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে মুসলিম উত্তরাধিকার আইন বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে। মুসলিম পারিবারিক আইন সংস্কার করে সব ধর্মের জন্য অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নের প্রস্তাব করা হয়েছে, যেখানে বিয়ে, তালাক, উত্তরাধিকার ও ভরণপোষণে নারী—পুরুষের কথিত সমান অধিকার থাকবে। স্ত্রী স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করতে পারবে। যৌনকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব প্রস্তাবনা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদে অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে কার্যকর করারও প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।

বক্তারা বলেন, ‘আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট যে, দেশ ও ইসলামের স্বার্থে এবং নারীদের স্বার্থে এ কমিশন বাতিল করতে হবে। কারণ, দেশের মানুষের বিশ্বাসের বিরুদ্ধে এ কমিশন দাঁড়িয়েছে। তারা পরিবার ও সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরির অপচেষ্টা করছে।’ বক্তারা আরও বলেন, ইসলামবিরোধী নারী কমিশনের কার্যক্রম দেখে মনে হচ্ছে—তারা পবিত্র কুরআনকে টার্গেট করে কাজ করে যাচ্ছে। নাস্তিকতা প্রতিষ্ঠা করার জন্য দেশকে অস্থিতিশীল বানানোর পাঁয়তারা করে যাচ্ছে। অতএব গোটা কমিশনকেই বাতিল করতে হবে। এদের মধ্যে নাস্তিক্যবাদের সঙ্গে জড়িতদের যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থাপনার মধ্যে আনতে হবে।

বক্তারা নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনায় আপত্তিকরভাবে ধর্মীয় বিধিবিধান, বিশেষ করে ইসলামী উত্তরাধিকার ও পারিবারিক আইনকে নারীর প্রতি বৈষম্যের কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে; এই প্রস্তাবনা বাতিলের পাশাপাশি পুরো কমিশন বাতিলের দাবি জানান।

বক্তারা সকল পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ ও ধর্মীয় স্কলারদের নিয়ে একটি ইনক্লুসিভ কমিটি গঠন করে ন্যায্যতার ভিত্তিতে নারী সংস্কার নীতিমালা প্রনয়নের জোর দাবি জানান।

মন্তব্য

জাতীয় নার্সিং ভর্তি পরীক্ষায় সারা দেশে প্রথম ময়মনসিংহের মৌমিতা আক্তার

থানা প্রতিনিধি
২০ মে, ২০২৫ ২১:১৭
থানা প্রতিনিধি
জাতীয় নার্সিং ভর্তি পরীক্ষায় সারা দেশে প্রথম ময়মনসিংহের মৌমিতা আক্তার

জাতীয় নার্সিং ভর্তি পরীক্ষায় সারা দেশের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে ময়মনসিংহের ত্রিশালের মেয়ে মৌমিতা আক্তার।

তিনি ত্রিশাল পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এমদাদুল হক ও সংরক্ষিত সাবেক নারী কাউন্সিলর মোছা. তাসলিমা আক্তারের মেয়ে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, মৌমিতা শুকতারা বিদ্যানিকেতন থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ২০২২ শিক্ষাবর্ষে এসএসসিতে জিপিএ-৫ ও ত্রিশাল সরকারি নজরুল কলেজ থেকে মানবিক বিভাগ থেকে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে সঙ্গে উত্তীর্ণ হন।

ছোটবেলা থেকেই তার স্বপ্ন ছিল মানুষের সেবা করার। সেই ইচ্ছা পূরণ করতে তিনি ময়মনসিংহ শহরের একটি নার্সিং কোচিং সেন্টারে ভর্তি হন। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে জাতীয় নার্সিং ভর্তি পরীক্ষায় সারা দেশে প্রথম স্থান অর্জন করলেন মৌমিতা।

মন্তব্য

ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের হলে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের হামলা

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
১৯ মে, ২০২৫ ২১:৫২
ক্যাম্পাস প্রতিনিধি
ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের হলে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের হামলা

ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শহীদ খাইরুল ছাত্রাবাসে হামলা চালায় নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ।

আজ বিকেল ৬:০০ ঘটিকায় পূর্বঘটিত মারামারির রেশ ধরে আজ শহীদ খাইরুল ছাত্রাবাসের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়।

এসময় ২ পক্ষের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিল। ছাত্রলীগের নাইম - মেকানিক্যাল - ৭ম ,আরিফ - ইলেকট্রিক্যাল - ৭ম, মিহাদ,প্রত্যয়,আহাদ -ইলেকট্রিক্যাল-৭ম,রাকিন- ইলেট্রোমেডিকেল-৭ম সহ অন্যান্যের নেতৃত্বে ১০/১৫ জন হল গেটে এসে হুমকি,ইট ছোড়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তোলে। পরবর্তীতে হলে শিক্ষার্থীরা হাতে লাঠি নিয়ে প্রতিহত করার জন্য বের হয়ে আসে এবং ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ধাওয়া করে। এসময় ছাত্রলীগের ছোড়া ইটে মতিউর রহমান(৭ম), তানভীর(৩য়),জাওয়াদ(১ম),আসিফ(৩য়) সহ অনেক আহত হয়।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমন চৌধুরী। উনি এ বিষয়ে কোন কথা বলতে চায়নি।

এসময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগ এবং ছাত্রদলের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে। অভিযোগ আছে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কর্মীরা বর্তমানে ছাত্রদলের ছত্রছায়ায় চলাফেরা করছে।

 

মন্তব্য

পলাশবাড়ী পৌরসভায় উন্নয়নের নামে অপরিকল্পিত ড্রেনেজ নির্মাণ, পানি প্রবাহে বিঘ্ন

জেলা প্রতিনিধি
১৯ মে, ২০২৫ ২১:৪৮
জেলা প্রতিনিধি
পলাশবাড়ী পৌরসভায় উন্নয়নের নামে অপরিকল্পিত ড্রেনেজ নির্মাণ, পানি প্রবাহে বিঘ্ন

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী পৌরসভায় অপরিকল্পিত ও অব্যবস্থাপনা ড্রেনেজ এর কারণে একটু বৃষ্টি হলে পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে গিয়ে বাসাবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করেছে। পানি নিষ্কাশনের সঠিক ব্যবস্থা না থাকার ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ জনগণ।

১৯ মে সোমবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, গাইবান্ধা রোড, উপজেলা রোড,বেলেরঘাট রোড ও কালীবাড়ি বাজার রোডে অপরিকল্পিত ড্রেনেজ নির্মাণ, যে কারণে ড্রেনেজ দিয়ে কোন প্রকার পানি প্রবাহ হয় না। ফলে শত শত বাসাবাড়ি পানিবন্দি হয়ে পড়েছে, এবং আকস্মিকভাবে পানি প্রবেশ করায় অনেকের ঘরের মালামাল ও আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পৌরসভার প্রধান ওয়ার্ডগুলোর মধ্যে১,২ ৪,৫,ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। পৌর শহরের কেন্দ্রস্থলে পানি নিষ্কাশনের সঠিক ব্যবস্থা না থাকার কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা দেখা দেয়, এবং শহরের খাল ও ড্রেনগুলো অপরিকল্পিতভাবে ভরাট করার ফলে পানি নিষ্কাশন প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী পৌর বাসিন্দা জাকারিয়া মাসুদ জলিল জানান, পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে পৌরবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যদিও শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষকে বারবার জানানো হয়েছে, কিন্তু কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

পৌরসভার বাসিন্দা মইন উদ্দিন বলেন, নিম্নমানের ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে সবসময় জলাবদ্ধতার সমস্যা হয়।

ব্যবসায়ী ছামছুল সরকার জানান, পানি নিষ্কাশনের সঠিক ব্যবস্থা না থাকায় পানি দোকানে প্রবেশ করে মালামাল নষ্ট করেছে। এ রকম প্রায়ই ঘটে, কিন্তু কেউ দেখে না।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও পৌর প্রশাসক আল ইয়াসা রহমান তাপাদার বলেন, "টানা বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা হয়েছে। ড্রেনগুলো পরিষ্কার করা হচ্ছে, এবং দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রাসঙ্গিক
    মন্তব্য

    ট্রেনের নিচে পড়া ভাইরাল ভিডিওর ব্যক্তিটি বেঁচে আছেন, জানা গেলো আসল ঘটনা

    অনলাইন ডেস্ক
    ১৯ মে, ২০২৫ ১৮:১১
    অনলাইন ডেস্ক
    ট্রেনের নিচে পড়া ভাইরাল ভিডিওর ব্যক্তিটি বেঁচে আছেন, জানা গেলো আসল ঘটনা

    সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিও, যেখানে দেখা যায়, এক ব্যক্তিকে ট্রেনের জানালায় ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। পরে প্লাটফর্মে আসতেই তাকে ফেলে দেওয়া হলে তিনি চলে যান ট্রেনের নিচে। পরে অভিযোগ ওঠে, ওই ব্যক্তি ছিল মোবাইল চোর। তবে এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ওই ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা।

    জানা গেছে, ট্রেন থেকে পড়ে যাওয়া ওই ব্যক্তির নাম মতিউর রহমান (৪০)। তার বাড়ি নওগাঁর রানীনগর উপজেলার পারইল গ্রামে। 

    স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার (১৮ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলার নশরৎপুর স্টেশনে বগুড়া থেকে সান্তাহার অভিমুখী একটি কমিউটার ট্রেনে এই ঘটনা ঘটে।

    মতিউর পেশায় একজন অটোরিকশা চালক ছিলেন। দুই বছর আগে দূতাবাস এবং এজেন্সির মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে লোক পাঠানোর কাজ করছেন। ২০ দিন আগে বগুড়ার আদমদিঘি উপজেলার তালশান গ্রামের মোহাম্মদ হেলালের ছেলে সজীব হোসেনকে সাড়ে ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে সৌদি আরবে পাঠিয়েছেন। সৌদি আরবে গিয়ে সজীবের বৈধ কাগজপত্র পেতে দেরি হওয়ায় তার পরিবারের সদস্যরা সাত-আট দিন আগে মতিউরের বাড়িতে গিয়ে কাগজপত্রের বিষয়ে জানতে চায়। এ নিয়ে সেখানে ঝামেলার সৃষ্টি হয়। এরই জের ধরে বগুড়া থেকে ট্রেনে মতিউরকে একা পেয়ে সজীবের ছোট ভাই রাকিব এবং সজীবের শ্যালকরা মিলে মোবাইল চোর এবং ছিনতাইকারী আখ্যা দিয়ে তাকে ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে এবং তার কাছে থেকে ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন বলে অভিযোগ মতিউরের পরিবারের।

    ভুক্তভোগী মতিউর রহমানের ছেলে আহসান হাবিব বলেন, আমার বাবা পেশায় একজন অটোরিকশাচালক ছিলেন। গত দেড় বছর থেকে সৌদি আরবের অ্যাম্বাসির মাধ্যমে লোক পাঠানোর কাজ করছেন। এখন পর্যন্ত তিন-চারজনকে সৌদি আরবে পাঠিয়েছেন। তারা সে দেশে ভালো আছেন। গত ১৫ দিন আগে আমার বাবা বগুড়ার আদমদিঘি উপজেলার তালশন গ্রামের মোহাম্মদ হেলালের ছেলে সজিব হোসেনকে সৌদি আরবে পাঠিয়েছেন। সৌদি আরবে পাঠানো বাবদ তার কাছ থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা নিয়েছেন। কিন্তু সেখানে যেয়ে বৈধ কাগজপত্র পেতে দেরি হওয়ায় সজিব তার বাবাকে আমাদের বাড়িতে পাঠিয়ে গত সাত-আট দিন আগে বিভিন্ন ধরনের হুমকিধমকি দিয়ে যায়। এরই জেরে বগুড়া থেকে ট্রেনে বাড়িতে ফেরার পথে সজিবের ছোট ভাই রাকিব এবং সজীবের শ্যালকরা আমার বাবাকে মোবাইল চোর বলে ট্রেন থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বাবা খুব কষ্ট করে প্রায় চার-পাঁচ মিনিট ট্রেনের সঙ্গে ঝুলে ছিল। বাবার কাছে ব্যবসায়িক কাজের ৫০ হাজার টাকা ছিল সেটিও তারা কেড়ে নেয়। একপর্যায়ে ট্রেনটি আদমদিঘি উপজেলার নশরৎপুর স্টেশনে এলে সেখানকার প্লাটফর্মের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে আমার বাবা ট্রেনের নিচে পড়ে যায়। ট্রেনের নিচে পড়লেও বাবা কোনরকম প্রাণে বেঁচে যান। কিন্তু সেখানকার উৎসুক জনতা বাবাকে মোবাইল চোর এবং ছিনতাইকারী ভেবে বেধরক মারধর করতে থাকেন।

    আহসান হাবিব কান্নাজড়িত কণ্ঠে আরও বলেন, বাবাকে কোনো রকম সেখান থেকে উদ্ধার করে আদমদিঘি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করাই। এ ঘটনায় আদমদিঘি থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে তারা আমার অভিযোগ নিতে অস্বীকৃতি জানান এবং আদমদিঘি থানার ওসি আমার সঙ্গে অনেক খারাপ ব্যবহার করেন। তারা আমাকে বলেন এটি রেলওয়ের বিষয়, এই অভিযোগ সান্তাহার রেলওয়ে থানায় গিয়ে করুন। আদমদিঘি থানা পুলিশের কথা শুনে সান্তাহার রেলওয়ে থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে তারা বলেন, আপনার বাবা জীবিত রয়েছে। মারা গেলে মামলা নেওয়া যেত। আমরা এখন কোথায় যেয়ে অভিযোগ করব? এ ঘটনার পর থেকে মানুষের সামনে যেতে পারছি না। আমার বাবা তো ছিনতাইকারী না। সে বৈধ পথে ব্যবসা করে আসছিলেন। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

    বগুড়ার আদমদিঘি উপজেলার কুশম্বী গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ হাসান বলেন, মতিউরকে দীর্ঘদিন থেকে চিনি। তার মাধ্যমে আমার দুই আত্মীয়কে বিদেশে পাঠিয়েছি। একজন সৌদি আরবে এবং আরেকজন মালয়েশিয়াতে আছে। এখন পর্যন্ত তাদের কোনো সমস্যা হয়নি। মতিউরের সঙ্গে লেনদেন নিয়ে কখনো কারও ঝামেলা হতে দেখিনি। 

    নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার পারইল গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের একই গ্রামে বাড়ি। মতিউর গত দেড় থেকে দুই বছর ধরে বিদেশে লোক পাঠানোর কাজ করছে। কখনো তাকে কোনো ঝামেলায় পড়তে দেখিনি। ব্যক্তি হিসেবেও সে একজন ভালো মানুষ।

    অভিযোগের বিষয়ে জানতে রাকিব হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

    অভিযোগের বিষয়ে সজীবের বাবা মোহাম্মদ হেলাল বলেন, এক মাস আগে বড় ছেলে সজীবকে মতিউরের মাধ্যমে চার লাখ ৭০ হাজার টাকার বিনিময়ে সৌদি আরবে পাঠিয়েছি। এখন পর্যন্ত মতিউর আমার ছেলেকে কোনো কাজ দিতে পারেনি। এ নিয়ে তার সঙ্গে অনেকবার দেখা করতে চেয়েছি। সে আমার সঙ্গে দেখা না করে বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে বেড়াচ্ছে। গত ৭ থেকে ৮ দিন আগে তার বাড়িতে আমরা গিয়েছিলাম ছেলের বিষয়ে জানতে, তবে সেখানে কোনো প্রকার ঝামেলা হয়নি। 

    মতিউরকে ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার ব্যাপারে ছেলের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বগুড়া থেকে আসার সময় সজীবের শ্যালকরা ট্রেন থেকে ধাক্কা দিয়ে মতিউরকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে। তবে রাকিব সেখানে কিছুই করেনি। ট্রেনে কী হয়েছে এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।

    অভিযোগের বিষয়ে বগুড়া আদমদিঘি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এটি রেলওয়ে পুলিশের বিষয় তাই আমরা কোনো অভিযোগ নেইনি। 

    সান্তাহার রেলওয়ে থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি জিআরপি) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, তারা প্রথমে আদমদিঘী থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়েছিল। সেখানে তাদেরকে জিআরপিতে অভিযোগ জানাতে বলা হয়েছে। তখন তারা আমার থানায় এসেছিল। আসার পরে তাদেরকে নাকি আবার আদমদীঘি থানা থেকে ফোন করা হয় তখন তারা আবারও আদমদিঘী থানায় অভিযোগ জানাতে চলে যায়। পরে তারা আর আমার থানায় আসেনি। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমরা সবসময় অভিযোগ এবং তদন্ত সাপেক্ষে মামলা নেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছি।

    প্রাসঙ্গিক
      মন্তব্য
      সর্বশেষ সংবাদ
        সর্বাধিক পঠিত