ঢাকা, সোমবার, ১৮ আগস্ট ২০২৫ ৩ ভাদ্র ১৪৩২
 
শিরোনাম

হার্ভার্ডে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি-বন্ধ করল ট্রাম্প প্রশাসন

অনলাইন ডেস্ক
২৩ মে, ২০২৫ ১৩:২২
অনলাইন ডেস্ক
হার্ভার্ডে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি-বন্ধ করল ট্রাম্প প্রশাসন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করার অনুমতি বাতিল করেছে এবং বর্তমানে ভর্তি থাকা শিক্ষার্থীদের অন্যত্র স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছে। অন্যথায় তারা যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ অবস্থান হারাতে পারে বলে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ (ডিএইচএস)। হার্ভার্ড এই সিদ্ধান্তকে অবৈধ ও প্রতিশোধমূলক বলে আখ্যা দিয়েছে।

ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সচিব ক্রিস্টি নোয়েম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রাম (এসইভিপি) প্রত্যয়ন বাতিলের নির্দেশ দেন।

ডিএইচএস-এর বিবৃতিতে বলা হয়, হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ বিদেশি শিক্ষার্থীদের বিষয়ে আগেই চাওয়া কিছু তথ্য সরবরাহে ব্যর্থ হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নোয়েম বলেন, 'এই প্রশাসন হার্ভার্ডকে জবাবদিহির আওতায় আনছে—যেহেতু তারা সহিংসতা ও ইহুদিবিদ্বেষ ছড়াচ্ছে এবং ক্যাম্পাসে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সমন্বয় করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ কোনো অধিকার নয়, বরং একটি সুবিধা, যা তারা অধিক টিউশন ফি নিয়ে বহু বিলিয়ন ডলারের তহবিল ফুলিয়ে তোলার কাজে ব্যবহার করে।'

হার্ভার্ড পাল্টা বিবৃতিতে জানায়, 'সরকারের এই পদক্ষেপ অবৈধ। আমরা হার্ভার্ডে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ও গবেষকদের উপস্থিতি বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিশ্বের ১৪০টিরও বেশি দেশ থেকে আসা এসব মানুষ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও পুরো জাতিকে অসামান্যভাবে সমৃদ্ধ করেন।'

হোয়াইট হাউস এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।

এই সিদ্ধান্তকে ট্রাম্প প্রশাসনের হার্ভার্ড-বিরোধী অভিযানের একটি বড় ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই ম্যাসাচুসেটসের এই আইভি লিগ বিশ্ববিদ্যালয়টিকে ‘বামপন্থী’ বা ‘মার্কসবাদী’ আদর্শ ছড়ানোর অভিযোগে অভিযুক্ত করে আসছেন।

গত মাসে হার্ভার্ড একটি ২.২ বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল তহবিল বরাদ্দ স্থগিতাদেশের মুখে পড়ে, কারণ তারা হোয়াইট হাউসের দেওয়া একগুচ্ছ শর্ত প্রত্যাখ্যান করে।

এসব শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কাঠামো, নিয়োগ নীতি ও ভর্তি পদ্ধতিতে পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছিল, যার মধ্যে ছিল বৈচিত্র্য সংক্রান্ত দপ্তরগুলো বন্ধ করা এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের স্ক্রিনিংয়ে অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করা।

হার্ভার্ড পরে এই বরাদ্দ স্থগিতাদেশ ঠেকাতে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করে।

প্রাসঙ্গিক
    মন্তব্য

    প্রতিদিনই যুদ্ধাপরাধ করছে ইসরায়েল: সাবেক ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী ওলমার্ট

    অনলাইন ডেস্ক
    ২২ মে, ২০২৫ ১২:৪৭
    অনলাইন ডেস্ক
    প্রতিদিনই যুদ্ধাপরাধ করছে ইসরায়েল: সাবেক ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী ওলমার্ট

    ইসরায়েল প্রতিদিনই গাজা ও দখলকৃত পশ্চিম তীরে যুদ্ধাপরাধ করছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কান নিউজ-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

    এমনকি গাজায় যুদ্ধাপরাধ নতুন কিছু নয় বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। বুধবার (২১ মে) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

    কান নিউজ-কে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে সাবেক ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট বলেন, “গাজায় যুদ্ধাপরাধ হচ্ছে—এটি নতুন কিছু নয়। কিন্তু পশ্চিম তীরেও প্রতিদিন ইসরায়েলিরা এমন অপরাধ করছে, যেখানে পুলিশ বা সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করে না, বরং অনেক সময় চোখ বুজে থাকে।”

    ওলমার্ট ইসরায়েলের বর্তমান ডানপন্থি সরকারের নেতাদের বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচের সেই বক্তব্যকে ‘গণহত্যার আহ্বান’ হিসেবে আখ্যা দেন, যেখানে তিনি (স্মোটরিচ) উত্তর পশ্চিম তীরের হুওয়ারা গ্রামটি পুড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

    ওলমার্ট বলেন, “যদি কেউ গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়ার ডাক দেয়, সে মূলত গণহত্যারই ডাক দিচ্ছে।”

    ২০০৬ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ওলমার্ট বলেন, গাজায় ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধ কোনও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যহীন রাজনৈতিক যুদ্ধ। এই যুদ্ধ গাজায় আটক থাকা বন্দিদের ফিরিয়ে আনবে না বরং আরও ইসরায়েলি সেনার প্রাণহানি ঘটাবে।

    ইসরায়েলের হিসাব অনুযায়ী, গাজায়িএখনও ৫৮ জন ইসরায়েলি বন্দি রয়েছে, যাদের মধ্যে ২০ জন জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হয়। হামাসের ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের অভিযানে প্রায় ২৫০ জনকে আটক করে গাজায় নেওয়া হয়েছিল, যাদের অনেককে পরে মুক্তি দেওয়া হয়।

    এদিকে, ১০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি এখনও ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি রয়েছেন। ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, এসব বন্দিকে নির্যাতন, অনাহার এবং চিকিৎসা অবহেলার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে।

    ওলমার্ট আরও বলেন, “পশ্চিম তীরের সামারিয়া কাউন্সিলের প্রধান যখন গণহত্যার ডাক দেয় কিংবা কোনো মন্ত্রী যখন বলে, ‘গাজায় একটি শিশুকেও বাঁচিয়ে রাখা যাবে না’—তখন আর কেউ বিস্মিত হয় না। এটা কতটা ভয়াবহ পরিণতির দিকে যাচ্ছে, তা সরকার অনুধাবন করতে পারছে না।”

    তিনি আরও বলেন, “সরকারের সামরিক নীতির জন্যই বহু নিরীহ মানুষ মারা যাচ্ছে।”

    প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েল গাজায় ভয়াবহ হামলা চালিয়ে আসছে, যাতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৩ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

    প্রাসঙ্গিক
      মন্তব্য

      ভারতের ছত্তিশগড়ে ভয়াবহ সংঘর্ষ, নিহত অন্তত ২৫

      অনলাইন ডেস্ক
      ২১ মে, ২০২৫ ১৭:৫৪
      অনলাইন ডেস্ক
      ভারতের ছত্তিশগড়ে ভয়াবহ সংঘর্ষ, নিহত অন্তত ২৫

      ভারতের মধ্যাঞ্চলীয় ছত্তিশগড় রাজ্যে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সঙ্গে দেশটির মাওবাদী বিদ্রোহীদের তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে। এই সংঘর্ষে অন্তত ২৫ মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন। বুধবার ছত্তিশগড়ের নারায়ণপুর জেলার গভীর বনাঞ্চলে মাওবাদী বিদ্রোহীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সংঘর্ষের এই ঘটনা ঘটেছে।

      ছত্তিশগড় পুলিশ বলেছে, ভারতীয় কমান্ডোরা গুলি চালিয়ে কমপক্ষে ২৫ মাওবাদী বিদ্রোহীকে হত্যা করেছেন। 

      কয়েক দশক ধরে চলা মাওবাদীদের বিদ্রোহে দেশটিতে মাওবাদী বিদ্রোহী, সেনা এবং বেসামরিক নাগরিকসহ ১২ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। মাও বিদ্রোহীরা ভারতের খনিজ-সমৃদ্ধ মধ্যাঞ্চলীয় ওই রাজ্যের প্রান্তিক আদিবাসীদের অধিকারের জন্য বছরের পর বছর ধরে সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

      চীনা বিপ্লবী নেতা মাও সেতুংয়ের কর্মকাণ্ডে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৬৭ সালে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করেন ভারতের মাওবাদী বিদ্রোহীরা। আদিবাসী অধিকার বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর পক্ষে লড়াইয়ের দাবি করা মাওবাদীরা নকশাল নামেও পরিচিত।

      ২০০০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে ভারতে মাওবাদীদের বিদ্রোহ চরমে পৌঁছায়। ওই সময় দেশটির প্রায় এক তৃতীয়াংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ ১৫ থেকে ২০ হাজার মাওবাদী যোদ্ধার হাতে ছিল।

      ছত্তিশগড় রাজ্য পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বিবেকানন্দ সিনহা ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, বন্দুকযুদ্ধে ২৫ জনের বেশি মাওবাদী বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন। মাও বিদ্রোহীদের শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত রাজ্যের নারায়ণপুর জেলার প্রত্যন্ত ও গভীর এক জঙ্গলের ভেতরে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে মাওবাদীদের সংঘর্ষ হয়েছে।

      সিনহা বলেন, মাওবাদী বিদ্রোহীদের শীর্ষ নেতাদের ওই জঙ্গলে উপস্থিতির বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে বিদ্রোহীরা গুলি চালালে পাল্টা গুলি ছোড়ে নিরাপত্তা বাহিনী।

      তবে এই সংঘর্ষে আসলে কারা নিহত হয়েছেন, সেটি পরিষ্কার নয়। তিনি বলেন, সংঘর্ষে নিহতদের পরিচয় এখনও শনাক্ত করা যায়নি।

      ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত বছরের সেপ্টেম্বরে মাওবাদী বিদ্রোহীদের ‘আত্মসমর্পণ’ অথবা ‘সর্বাত্মক হামলার’ মুখোমুখি হওয়ার বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। ওই সময় তিনি বলেছিলেন, ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার ২০২৬ সালের মার্চের মাঝেই মাওবাদী বিদ্রোহ দমনের আশা করছে।

      সূত্র: এএফপি।

      প্রাসঙ্গিক
        মন্তব্য

        খাবার না পেলে

        অনাহারে ৪৮ ঘণ্টায় গাজায় মারা যাবে ১৪ হাজার শিশু : জাতিসংঘ

        অনলাইন ডেস্ক
        ২০ মে, ২০২৫ ২০:৯
        অনলাইন ডেস্ক
        অনাহারে ৪৮ ঘণ্টায় গাজায় মারা যাবে ১৪ হাজার শিশু : জাতিসংঘ

        অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় জরুরি মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে না পারলে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ১৪ হাজার শিশুর জীবনহানি হতে পারে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। আজ মঙ্গলবার (২০ মে) জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল টম ফ্লেচার বিবিসি রেডিও ৪-এর ‘টুডে’ প্রোগ্রামে এ আশঙ্কার কথা জানান।

        ফ্লেচার বলেন, ‘আমরা নিশ্চিতভাবে জানি, শিশুদের জরুরি জীবন রক্ষাকারী খাবার প্রয়োজন। কারণ তাদের মায়েরা নিজেরাই পর্যাপ্ত পুষ্টি পাচ্ছেন না। আর যদি তারা প্রয়োজনীয় পুষ্টি না পায়, তবে তারা মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়বে।’

        এই বিপুল শিশু মৃত্যুর আশঙ্কা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে টম ফ্লেচার বলেন, ‘আমাদের শক্তিশালী দল মাঠে কাজ করছে এবং দুর্ভাগ্যবশত তাদের অনেকেই নিহত হয়েছেন। তবে এখনও অনেক কর্মী মাঠে রয়েছেন, তারা মেডিকেল সেন্টার, স্কুলগুলোতে আছেন। তারা চাহিদা নিরূপণের চেষ্টা করছেন।’

        গাজার বর্তমান পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে টম ফ্লেচার বলেন, ‘এই ১৪ হাজার শিশুর মধ্যে যত বেশি সম্ভব, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমরা বাঁচাতে চাই। আমাদের গাজা উপত্যকাকে মানবিক সহায়তা দিয়ে ভাসিয়ে দিতে হবে।’

        টম ফ্লেচার আরও বলেন, ‘কিন্তু এটাই (মানবিক সহায়তা প্রদান) আমাদের কাজ, আমরা চালিয়ে যাব। এটা হতাশাজনক হবে, আমরা বাধাগ্রস্ত হব এবং বিশাল ঝুঁকি নেব। কিন্তু আমি এই শিশুর খাবার পৌঁছে দেওয়ার চেয়ে ভালো কোনো উপায় দেখছি না।’

        এই উদ্বেগজনক সতর্কবার্তা এমন এক সময় এলো যখন গাজায় মানবিক পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করেছে। অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে খাদ্য, পানীয়, চিকিৎসা সামগ্রী ও জ্বালানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে, যা শিশুদের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক পরিণতি নিয়ে আসছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইসরায়েলের ওপর গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে, তবে এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি উদ্বেগজনকই রয়ে গেছে।

        দীর্ঘ তিন মাস পর গতকাল সোমবার মাত্র পাঁচ ট্রাক খাদ্য সরবরাহের অনুমতি দিয়েছিল ইসরায়েল। আজ আরও ১০০ ট্রাক খাদ্য ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী প্রবেশের আশা জাতিসংঘের।

        সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজার পরিবারগুলো প্রয়োজনীয় খাবার না থাকায় পশুখাদ্য, মেয়াদোত্তীর্ণ ও বালি মিশ্রিত আটা খেতে শুরু করেছে। অন্যদিকে শিশুরা ক্ষুধাজনিত অসুস্থতা, যেমন ডায়রিয়া ও পুষ্টিহীনতায় ভুগছে।

        প্রাসঙ্গিক
          মন্তব্য

          ‘শখের বশে’ গাজায় শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে : ইসরায়েলের বিরোধী নেতা

          অনলাইন ডেস্ক
          ২০ মে, ২০২৫ ১৯:৫৯
          অনলাইন ডেস্ক
          ‘শখের বশে’ গাজায় শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে : ইসরায়েলের বিরোধী নেতা

          ইসরায়েলি সেনারা অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ‘শখের বশে’ ফিলিস্তিনি শিশুদের হত্যা করছে এবং ইসরায়েল দেশটি দ্রুত একটি ‘অযোগ্য ও একঘরে’ রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির বিরোধী দলের শীর্ষ নেতা ইয়ার গোলান।

          স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২০ মে) এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের বিরোধী দলের এই শীর্ষ নেতা।

          সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইসরায়েলের পাবলিক ব্রডকাস্টার কেএএন-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বামপন্থি বিরোধীদল ডেমোক্র্যাটস পার্টির প্রধান ইয়ার গোলান বলেন, যদি আমরা সুস্থ রাষ্ট্র হিসেবে আচরণে ফিরতে না পারি, তবে ইসরায়েল দক্ষিণ আফ্রিকার মতো একটি বিচ্ছিন্ন রাষ্ট্রে পরিণত হবে।

          তিনি বলেন, একটি সুস্থ রাষ্ট্র কখনো সাধারণ নাগরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে না, শখের বশে শিশুদের হত্যা করে না এবং জনগণকে জোরপূর্বক বিতাড়নের লক্ষ্য গ্রহণ করে না।

          ইসরায়েলি সরকারের কঠোর সমালোচনা করে গোলান বলেন, এই সরকার প্রতিহিংসাপরায়ণ ও নীতিহীন লোকদের দ্বারা পূর্ণ, যাদের সংকট মোকাবিলার কোনো যোগ্যতা নেই। তাদের নেতৃত্বে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে।

          বিরোধী নেতা গোলানের বক্তব্য প্রকাশিত হওয়ার পর ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন মহলে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গোলানের মন্তব্যকে ‘রক্তপাতের অপবাদ’ ও ‘বন্য উসকানি’ বলে আখ্যায়িত করেন।

          এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, আমি ইসরায়েলের সাহসী সেনা ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ইয়াইর গোলানের এই উগ্র উসকানির তীব্র নিন্দা জানাই। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বিশ্বের সবচেয়ে নৈতিক বাহিনী।

          চরম ডানপন্থি জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেনগাভির গোলানকে ‘ইহুদিবিরোধী রক্ত-অপবাদ ছড়ানো’ ব্যক্তিত্ব হিসেবে অভিহিত করে দাবি করেন, তিনি ‘ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের ন্যায়’ কথা বলছেন।

          এছাড়া যোগাযোগমন্ত্রী শ্লোমো কারহি গোলানকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে অভিহিত করেন এবং অভিযোগ করেন, তিনি ইসরায়েলের সেনাদের নিরাপত্তা ও গণতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করছেন।

          প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সরকারের প্রাক্তন মিত্র এবং বর্তমান বিরোধী জোটের অন্যতম নেতা বেনি গ্যান্টজ গোলানের বক্তব্যের বিরোধিতা করেন। তিনি গোলানকে বক্তব্য প্রত্যাহার ও দুঃখ প্রকাশের আহ্বান জানান।

          গোলানের এই মন্তব্য এমন এক সময় এসেছে, যখন চরমপন্থি ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা এবং গাজায় যুদ্ধ বন্ধের বিপক্ষে থাকা কিছু ইসরায়েলি জনগণ আরও উগ্র ভাষায় কথা বলছে।

          ইসরায়েলের প্রভাবশালী পত্রিকা হারেটজ এক প্রতিবেদনে জানায়, দখলকৃত পশ্চিম তীরে অবৈধ একটি বসতিতে বসবাসকারী রিভকা লাফেয়ার নামের এক চরমপন্থি নারী প্রকাশ্যে গাজা উপত্যকার লাখ লাখ মানুষকে ধ্বংস ও উৎখাত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

          এক বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা প্রতিশোধ নিতে এবং গাজাকে ধ্বংস করতে বদ্ধপরিকর- শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ নারী পর্যন্ত কাউকেই ছাড়া হবে না।

          তিনি আরও বলেন, গাজা ধ্বংসের জন্য তিনি বাইবেলের ‘আমালেক’ জাতির ধ্বংসের কাহিনি উল্লেখ করেছেন- যেটি ছিল একটি পুরনো ধর্মীয় কাহিনি যেখানে একটি জাতিকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করার কথা বলা হয়েছিল।

          এই ধরনের বক্তব্য ইসরায়েলের ভেতরে যুদ্ধকে আরও সহিংস ও নিষ্ঠুর করে তুলছে। একইসঙ্গে এসব চরমপন্থী মতাদর্শ গাজায় সাধারণ মানুষের জীবনের জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করছে।

          প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের বর্বর হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ৫৩,৫০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। বিশ্বব্যাপী যুদ্ধবিরতির আহ্বান উপেক্ষা করে ইসরায়েল তাদের অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।

          ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।

          এছাড়া, গাজায় গণহত্যার অভিযোগে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মামলাও চলছে।

          প্রাসঙ্গিক
          মন্তব্য
          সর্বশেষ সংবাদ
            সর্বাধিক পঠিত