ঢাকা, সোমবার, ১৮ আগস্ট ২০২৫ ৩ ভাদ্র ১৪৩২
 
শিরোনাম

নোয়াখালীতে আদালতের আদেশ অমান্য করে বিএনপি নেতার পাকা দালান নির্মাণ

জেলা প্রতিনিধি
১১ মে, ২০২৫ ১৯:৩১
জেলা প্রতিনিধি
নোয়াখালীতে আদালতের আদেশ অমান্য করে বিএনপি নেতার পাকা দালান নির্মাণ
বিএনপি নেতা মো. নুর উদ্দিন

নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় জেলা জজ আদালতের আদেশ অমান্য করে বিরোধপূর্ণ একটি জমিতে পাকা দালান নির্মাণের কাজ অবহ্যাহত রাখার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতা মো. নুর উদ্দিনের (৫০) বিরুদ্ধে। অথচ আদালতের নির্দেশে কবিরহাট থানার একজন কর্মকর্তা সরেজমিন গিয়ে ওই ব্যক্তিকে বিরোধপূর্ণ জমিতে কোন ধরণের স্থাপনা নির্মাণের চিঠি দিয়ে এসেছিলেন। চিঠি পাওয়ার পর অভিযুক্ত নুর উদ্দিন ভবনের ছাদের ঢালাইও শেষ করেছেন রাতের অন্ধকারে।

গত ১৮ মার্চ নোয়াখালী সদর অতিরিক্ত ১ম আদালতের সহকারী জজ নিশি আক্তার নালিশি জমিতে কোন পক্ষই যাতে কোন ধরণের স্থাপনা নির্মাণ এবং প্রকৃতি পরিবর্তন না করতে না পারে তা পর্যবেক্ষণ ও তদারকির জন্য কবিরহাট থানাকে আদেশ দেন।

অভিযুক্ত নুর উদ্দিন উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ও একই ইউনিয়নের ১নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি প্রার্থী।  

আদালতের আদেশ ও পুলিশের নিষেধ অমান্য করায় অভিযুক্ত নুর উদ্দিনের বিরুদ্ধে আদালতে একটি লিখিত প্রবিদেন দেয় কবিরহাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বিপ্লব বড়ুয়া। ওই প্রবিবেদনে বলা হয়েছে, আদালতের আদেশের বিষয়টি লিখিত ভাবে বিবাদীকে জানানো হয়। পরবর্তীতে আদালতের আদেশ ও থানা পুলিশের নির্দেশ অমান্য করে বিরোধপূর্ণ নলুয়া মৌজার ৩৮৫নং খতিয়ান ভুক্ত ২৬০১/৯০ দাগে ঘর নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখার সংবাদ পাওয়া যায়। প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে ৫এপ্রিল কবিরহাট থানার জিডি নং ১৮৭ মূলে প্রকাশ্যে এবং গোপনে তদন্ত করে আদালতের আদেশ ও থানা পুলিশের নির্দেশ অমান্য করে পাকা ঘর নির্মাণ সামগ্রী মজুত করে ঘর নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। যাহা পেনাল কোডের ১৮৮ ধারায় অপরাধ মর্মে প্রতীয়মান হয়।  

গতকাল শনিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের নলুয়া গ্রামের ল্যাংড়ার দোকান এলাকার একটি কাঁচা সড়কের পাশের একটি নিচু জমির কিছু অংশ ভরাট করে সেখানে ইটের তৈরী পাকা দালান তৈরী সম্পন্ন করা হয়। পাকা ভবনে লাগানো হয়েছে দরজা,জানালা। পাশের জমিতে একটি সেফটি ট্যাংক তৈরী করা হয়। ঘরের ভিতরে বাহিরে ইলেকট্রিকের কাজ চলছে।

দালান নির্মাণের কাজ করছিলেন কয়েকজন নির্মাণ শ্রমিক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন, মানুষজনের কাছ থেকে শুনেছেন জমির মালিকানা নিয়ে দালান নির্মাণকারী নুর উদ্দিনের সঙ্গে এক ব্যক্তির বিরোধ রয়েছে। গত (২২ মার্চ) কবিরহাট থানা থেকে পুলিশ এসে কাজ বন্ধ রাখতে বলেছেন। কিন্তু নুর উদ্দিন তাদের কাজ বন্ধ রাখতে বলেননি, তাই তারাও কাজ চালিয়ে গেছেন। গত শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দিবাগত রাতে তারা দালানের ছাদের ঢালাই দিয়েছেন। এরপর মে মাসের শুরু থেকে ঘরের অন্যান্য কাজ করা হয়। আদালতের আদেশের বিষয়ে তারা কিছু জানেন না, যিনি দালান নির্মাণ করাচ্ছেন তিনিও তাদের কিছু বলেননি।

মো. সামছুল হক বলেন, তিনি বিগত ১৯৯০ সালের ২৪ মার্চ তারিখের ৪২৩৭ নম্বর দলিল এবং ১৯৯৫ সালের ৬৬৬০ নম্বর দলিলমূলে দুই একর ৫০ শতাংশ জমি কিনেন। এর পর থেকে তিনি ওই জমি ভোগদখল করে আসছেন। জমির যাবতীয় খাজনাও পরিশোধ করছেন নিয়মিত। কিন্তু বিগত ২০১৮ সালে ওই এলাকার বাসিন্দা নুর উদ্দিন হঠাৎ জমিটি তার বলে দাবি করেন এবং দলবল নিয়ে তার জমির ফসল নষ্ট করেন। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে তিনি অভিযোগ করলে নুর উদ্দিন তার মালিকানার পক্ষে কোন কাগজপত্র উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হন। তখন থেকে এ নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে।  

আদালতের আদেশ অমান্য করে স্থাপনা নির্মাণ অব্যাহত রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে নুর উদ্দিন অভিযোগ নাকচ করে বলেন, আমার পাঁচটি রায় ডিক্রি আছে। আমার রায় ডিক্রির বিরুদ্ধে তাদের কোন কাগজপত্র নেই। ঊনারা শুধু খতিয়ানে মালিক।  

কবিরহাট থানার  ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিন মিয়া বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী থানা থেকে পুলিশ গিয়ে নির্মাণকাজ বন্ধ করেছে এবং উভয়পক্ষকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখাতে নোটিশ প্রদান করে। কিন্তু মামলার বিবাদী নুর উদ্দিন আদালতের আদেশ অমান্য করে বিরোধপূর্ণ ভূমিতে স্থাপনা নির্মাণ অব্যাহত রাখেন। যার সত্যতা পাওয়ায় বিষয়টি প্রতিবেদন আকারে আদালতকে অবহিত করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশনার আলোকে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
 

মন্তব্য

মানববন্ধন, বিক্ষোভ-সড়ক অবরোধ

নোয়াখালীতে আবুল কাশেমের খুনিদের গ্রেপ্তারে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম

জেলা প্রতিনিধি
১০ মে, ২০২৫ ১৯:২৩
জেলা প্রতিনিধি
নোয়াখালীতে আবুল কাশেমের খুনিদের গ্রেপ্তারে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম

নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলায় বৃদ্ধ আবুল কাশেমকে (৬৫) হত্যার প্রতিবাদে এবং হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। তারা এ সময় আগামি ২৪ ঘন্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তারের আল্টিমেটাম দিয়েছেন।

শনিবার (১০ মে) সকাল দশটা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সেনবাগ উপজেলার কানকিরহাট বাজারে সেনবাগ-সোনাইমুড়ী সড়কে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
প্রতিবাদ কর্মসূচিতে স্থানীয় কানকিরহাট কলেজ, কানকিরহাট উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও কর্মসূচির প্রতি একাত্বতা প্রকাশ করেন। সড়ক অবরোধের কারণে এ সময় সড়কের দুই দিকে অসংখ্য যানবাহনবাহন আটকা পড়ে অনেক মানুষ ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। পরে সেনবাগ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তারের আস্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা শান্ত হয়। পরে সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার বিকেলে আম গাছের ঢাল কাটা নিয়ে কেশারপাড় গ্রামের ক্লাবঘর এলাকার আবুল কাশেমের সঙ্গে পাশের বাড়ির মো. হানিফদের ঝগড়া হয়। তখন প্রতিপক্ষের লোকজন নানা হুমকি-ধমকি প্রদান করেন। এরপর পরদিন বুধবার সকাল আনুমানিক ছয়টার দিকে আবুল কাশেম বাড়ির পাশ্ববর্তী ক্লাবঘর নামকস্থানের দোকান থেকে নাস্তা আনতে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে প্রতিপক্ষের লোকজন তাঁর ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়। হামলায় তিনি গুরুতর আহত হন। পরে স্বজনেরা তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আবুল কাশেমকে মৃত ঘোষণার পর এলাকার লোকজন হামলার সঙ্গে জড়িত মোহাম্মদ ওয়াসিম (৩৪) নামে এক জনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। পরে নিহত কাশেমের স্ত্রী পারভীন আক্তার বাদী হয়ে সেনবাগ থানায় মো. হানিফকে প্রধান আসামি করে আটজনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। তবে মামলার বাকি সাতজন আসামির কাউকে পুলিশ এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

আবুল কাশেম হত্যার ঘটনার তিনদিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ কোন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে না পারায় খুনিদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে আজ শনিবার স্থানীয় কানকিরহাট বাজারে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে স্থানীয় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। তাঁরা এ সময় কাশেমের খুনিদের গ্রেপ্তারে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম ঘোষণা করেন। অন্যথায় সেনবাগ-সোনাইমুড়ী সড়ক বন্ধ করে দেওয়াসহ কঠোর কর্মসূচির হুমকি দেন।

সমাবেশে স্থানীয় বাসিন্দা ও কেশারপাড় ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আবু ইউছুফ মজুমদার, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সানজিদ কামাল, ইউনিয় যুবদলের সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিন ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হানিফ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

নিহত আবুল কাশেমের জামাতা মোহাম্মদ হানিফ বলেন, তার শ্বশুরকে সামান্য বিষয় নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। একজন আসামিকে তাঁরা ধরে পুলিশে দিয়েছেন। আর কোন আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি। অথচ মামলার আসামিরা তাঁদের স্বজনদের মাধ্যমে নানা হুমকি-ধমকি দিয়ে বেড়াচ্ছেন।

সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মিজানুর রহমান বলেন, আবুল কাশেম হত্যার ঘটনায় থানায় আটজনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। একজন আসামি গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা অব্যাহত আছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে স্থানীদের বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধের বিষয়টি স্বীকার করেছেন ওসি।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

বাংলাদেশের সিলেট সীমান্তে ভারতের কারফিউ জারি, রাতের চলাচল নিষিদ্ধ

অনলাইন ডেস্ক
১০ মে, ২০২৫ ১৭:৩৪
অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশের সিলেট সীমান্তে ভারতের কারফিউ জারি, রাতের চলাচল নিষিদ্ধ

সিলেট সীমান্তঘেঁষা ভারতের মেঘালয় রাজ্যে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে রাত্রিকালীন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারতীয় প্রশাসন। ৮ মে থেকে কার্যকর হওয়া এই নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ওইসব এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে।

ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, মেঘালয়ের পূর্ব ও পশ্চিম জয়ন্তিয়া হিলস, পূর্ব খাসি হিলস, দক্ষিণ গারো হিলস এবং পশ্চিম গারো হিলস জেলার সীমান্তসংলগ্ন অঞ্চলগুলোতে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। সীমান্তের শূন্যরেখার ২০০ মিটার থেকে ১ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকাকে ‘নিরাপত্তা সংবেদনশীল’ ঘোষণা করে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

প্রশাসনের জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়েছে, কারফিউ চলাকালীন নিচের কার্যকলাপ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে—পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির জমায়েত, কোনো ধরনের অস্ত্র বা লাঠিসোঁটা বহন, গবাদিপশু ও পণ্য পরিবহন (বিশেষ করে চা পাতা, সুপারি, পানের পাতা, শুকনা মাছ), সীমান্ত পারাপার বা অবৈধ অনুপ্রবেশ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত বৃহস্পতিবার সিলেটের তামাবিল সীমান্তে উভয় দেশের যৌথ জরিপ কার্যক্রম চলাকালে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাধার মুখে পড়ে। স্থানীয় লোকজনের আপত্তিতে জরিপ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, এই ঘটনার পরই ভারতীয় প্রশাসন সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপের সিদ্ধান্ত নেয়।

সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার বাসিন্দা তাওহীদুল ইসলাম (৪০) বলেন, আমরা যারা বৈধভাবে চলাফেরা করি, তাদের জন্য এটা বড় সমস্যা নয়। তবে যারা অবৈধ কাজ করে, যেমন চোরাচালান বা সীমান্ত অতিক্রম করে, তাদের জন্য এটা কঠিন হবে। আইন মেনে চললে আমাদের কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না।

জৈন্তাপুর উপজেলার বাসিন্দা মো. সাজু হোসেন বলেন, সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অবশ্যই প্রয়োজন, তবে এতে সাধারণ মানুষের চলাচলে সমস্যা যেন না হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। এখানে অনেকেই ভোরবেলায় মাঠে কাজ করতে যান। এমন অবস্থায় যদি সীমান্তে কারফিউ থাকে, তাহলে তাদের জন্য এটা কিছুটা সমস্যার হতে পারে। আশা করি, কর্তৃপক্ষ সেই বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সিদ্ধান্ত নেবে, যাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা বাধাগ্রস্ত না হয়।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, ভারতের এই সিদ্ধান্ত তাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাবিষয়ক। আমরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছি। সীমান্তে যাতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে এবং বাংলাদেশি নাগরিকরা যেন নিরাপদে থাকতে পারে, সে জন্য আমাদের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বর্ডার এলাকার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় মাইকিং করানো হয়েছে। স্থানীয় মেম্বার, চেয়ারম্যানরা যাতে সামাজিক সচেতনতা তৈরি করেন সে বিষয়েও জানানো হয়েছে।

মন্তব্য

শেখ হাসিনাসহ ৪৪৭ জনের নামে মামলা করলেন মুশতাকের শ্বশুর

অনলাইন ডেস্ক
৭ মে, ২০২৫ ১৬:১৭
অনলাইন ডেস্ক
শেখ হাসিনাসহ ৪৪৭ জনের নামে মামলা করলেন মুশতাকের শ্বশুর

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে অর্থ যোগান ও ৪৪ জন পুলিশ সদস্যকে হত্যার অভিযোগে জামাই মুশতাক আহমেদ ও শেখ হাসিনার নামে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন সিনথিয়া ইসলাম তিশার বাবা সাইফুল ইসলাম।

তারা দু’জনসহ সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেনসহ ৪৪৭ জন জ্ঞাত এবং অজ্ঞাত ১০ হাজার জনের নামে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (৬ মে) রাত সাড়ে ১১টায় মোবাইল ফোনে ঢাকা পোস্টকে বাদী সাইফুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের উত্তর ঠাকুরগাঁও বকসের হাট বামনপাড়া গ্রামের মৃত ওয়াজেদ আলী ছেলে। বর্তমানে তিনি রাজধানীর উত্তর মুগদায় থাকেন, পেশায় একজন ব্যবসায়ী এবং ৩নং আকচা ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক।

মামলার অভিযোগের সূত্রে জানা গেছে, গত ১ জুলাই ২০২৪ থেকে ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হয়। ছাত্র-জনতার এই আন্দোলনকে দমানোর জন্য আওয়ামী লীগ সরকার দমন-পীড়ন শুরু করে। আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগী, চরম দুর্নীতিবাজ, দলবাজ ও ৪৪৭ জন আসামি এবং ১০ হাজার ২০০ জন অজ্ঞাতনামা আসামির অর্থায়নে, নির্দেশে, পরিকল্পনায় এবং অংশগ্রহণে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে হামলা ও গুলি চালায় এবং পারস্পরিক যোগসাজসে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ৪৪ জন পুলিশ সদস্যকে হত্যা করে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডে অন্তত ১৪০০ জন ছাত্র-জনতা ও ৪৪ জন পুলিশ সদস্য নিহত হন। এ সময় হাজার হাজার মানুষ গুরুতর আহত হয়েছেন ও চিরতরে অন্ধত্ববরণ করেছেন। আসামিরা দেশের বিচার বিভাগকে বুদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বুক ফুলিয়ে চলছে। অভিযোগটি রেজিস্ট্রারভুক্ত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন ১৯৭৩ অনুসারে আসামিদের বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি উল্লেখ্য করা হয়।

বাদী সাইফুল ইসলাম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অনেক মানুষের প্রাণ গেছে। আবার অনেকেই এখনো পঙ্গু অবস্থায় হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন। এই আন্দোলনে যে শুধু ছাত্র-জনতা নিহত হয়েছে তা কিন্তু নয়। দেশের বিভিন্ন থানায় অনেক পুলিশ কর্মকর্তা ও পুলিশের ৪৪ জন সদস্য প্রাণ দিয়েছে। আমি চাই ছাত্র-জনতার হত্যাকারীদের কঠোর বিচার হোক। সেই সঙ্গে আমাদের ৪৪ জন পুলিশ যে মারা গেল তাদের পরিবার যাতে বিচার পায়।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের প্রায় ১০ মাস হয়ে গেল এখনো পুলিশ হত্যার বিচার চেয়ে কেউ কোনো মামলা করেনি। তদন্ত তো দূরের কথা। এতোগুলো পুলিশ কিভাবে মারা গেল সেটার সঠিক তদন্তে এই মামলা করা। মামলা না হলে তো তদন্ত হবে না। কার নির্দেশে এতোগুলো পুলিশের প্রাণ গেল সেটা অবশ্যই উঠে আসা দরকার। সেই সঙ্গে ছাত্র আন্দোলনে যে সব পুলিশের কর্মকর্তা হাসিনার নির্দেশে নির্বিচারে সাধারণ মানুষের ওপর গুলি চালিয়েছে তাদেরও কঠোর শাস্তি চাই। এমনকি যেই সাংবাদিকরা স্বৈরাচার হাসিনার সঙ্গে আতাত করে সাধারণ মানুষের বিপক্ষে কাজ করেছিল তাদেরও বিচার চাই।

তিনি আরও বলেন, তাদের বিরুদ্ধেও আমি মামলা করেছি। এতো মানুষ প্রাণ দিল আর আসামিরা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াবে আমি তা মেনে নিতে পারছি না। তাই বিবেকের তাড়নায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেছি। নিরপেক্ষভাবে তদন্ত হলে উল্লেখিত আসামিদের সঙ্গে মামলার সংশ্লিষ্টতা ও অজ্ঞানামা আসামিদের নাম উঠে আসবে বলে তিনি মনে করেন।

প্রাসঙ্গিক
    মন্তব্য

    ব্যবসায়ীকে জবাই করে হত্যা, ১১ বছর পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার

    জেলা প্রতিনিধি
    ৬ মে, ২০২৫ ১৮:০
    জেলা প্রতিনিধি
    ব্যবসায়ীকে জবাই করে হত্যা, ১১ বছর পর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার

    নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। লক্ষ্মীপুরের ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া হত্যা মামলায় দীর্ঘ ১১ বছর ধরে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন।

    গ্রেপ্তার মো. জুলফিকার (২৮) লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার সৈয়দপুনর কাশেম ভূঁইয়ার বাড়ির নুরুল ইসলামের ছেলে।

    গতকাল সোমবার (৫ মে) রাতে সোনাইমুড়ী বাইপাস এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

    র‍্যাব-১১, সিপিসি-৩, নোয়াখালী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি কমান্ডার, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মিঠুন কুমার কুণ্ডু এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।  

    প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের ২১ মে রাতে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চরশাহী ইউনিয়নের ব্যবসায়ী আব্দুল মান্নান ভূঁইয়াকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে জবাই করে হত্যা করা হয়। পরদিন তার মরদেহ বাড়ির পাশেই পড়ে থাকতে দেখা যায়। ঘটনার চার দিন পর নিহতের স্ত্রী অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

    প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, লক্ষ্মীপুর সদর থানায় মামলার তদন্ত শেষে জেলা গোয়েন্দা শাখা আটজন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ ও শুনানির পর ২০২০ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি আদালত তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন। মো. জুলফিকার ছিলেন ওই মামলার একজন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি।  ৫ মে রাত ৮টার দিকে র‍্যাব-১১, সিপিসি-৩ এর সদস্যরা নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী বাইপাস সড়ক থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেন। পরে আসামিকে লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়।
     

    প্রাসঙ্গিক
    মন্তব্য
    সর্বশেষ সংবাদ
      সর্বাধিক পঠিত