এটিএম আজহার সৌভাগ্যবান, তিনি ন্যায়বিচার পেয়েছেন: শিশির মনির

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ের পর আইনজীবী শিশির মনির বলেন, আজকে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ টি এম আজহারুল ইসলামকে সকল অভিযোগ থেকে বেকসুর খালাস দিয়েছে। আজকে থেকে, এখন থেকে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলাম একজন নির্দোষ ব্যক্তি। এই রায়ের মাধ্যমে আমরা মনে করি সত্য জয়ী হয়েছে, মিথ্যা পরাজিত হয়েছে। ইতোপূর্বে জামায়াতের এবং বিএনপির ছয়জন শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। এ ছাড়া অন্ততপক্ষে পাঁচজন জেলে মৃত্যুবরণ করেছেন। দুনিয়ার ইতিহাসে এটা নজিরবিহীন নির্যাতনের সামিল।
এটিএম আজহারুল ইসলাম সৌভাগ্যবান, তিনি ন্যায়বিচার পেয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা তাকে বাঁচিয়ে রেখেছিল বলে। আমরা এটাও মনে করি এ রায়ের মাধ্যমে সিন্ডিকেটেড ইনজাস্টিজের অবসান হয়েছে। আমরা এটাও মনে করি- এই রায় ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের আদালতের মর্যাদা সমুন্নত হয়েছে।
আজকে রায়ে আদালত চারটি পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। প্রথমটি হলো- বাংলাদেশেসহ এই ভারতীয় উপমহাদেশের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা বদলে দেওয়া হয়েছিল এটা ছিল সবচেয়ে বড় ভুল।
দ্বিতীয়টি হলো: আদালতের সামনে উপস্থাপিত সাক্ষ্যপ্রমাণ কোন অ্যাসেসম্যান্ট ছাড়াই এ টি এম আজহারুল ইসলামকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল। পৃথিবীর ইতিহাসে এটি ছিল বিচারের নামে অবিচার।
যেসমস্ত তথ্য প্রমাণ আদালতের সামনে হাজির করা হয়েছিল, অতীতের আপিল বিভাগ এটা সঠিকভাবে বিবেচনা করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলশ্রুতিতে আজকে এ টি এম আজহারুল ইসলামকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়েছে। শুধু বাংলাদেশে নয় পৃথিবীর ইতিহাসে এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা হয়ে থাকবে। এর মাধ্যমে আমরা মনে করি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সত্য বিজয়ী হয়েছে, মিথ্যা পরাভূত হয়েছে।
আজকে আমরা আদালতের কাছে একটা সংক্ষিপ্ত আদেশ চেয়েছি। আদালত আমাদের আবেদন মঞ্জুর করেছেন। আদালত বলেছেন, আমরা চেষ্টা করব। আজকে এবং কালকের মধ্যেই এই সংক্ষিপ্ত আদেশ প্রস্তুত হয়ে এ টি এম আজহারুল ইসলাম যেন মুক্তি পেতে পারেন সেই জন্য সকল আইনি ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করব।
আরও পড়ুন
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শিশির মনির বলেন, আমরা মনে করি পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হওয়ার পর মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলায় অতীতের অনেক রায় সম্পর্কে এই রায়ে অনেক পর্যবেক্ষণ থাকবে। আমরা মনে করি সরকারের উচিত হবে- এই পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হওয়ার পরে একটা রিভিউ বোর্ড গঠন করে অতীতের রায়গুলোকে পুনর্বিবেচনা করা, যেন মৃত্যু পরবর্তীতে হলেও যাদের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে, অবিচার করা হয়েছে, তাদের পরিবার, তাদের দল এবং এদেশের মানুষ যেন ন্যায়বিচার পেতে পারে।
এ সময় আদালতে জামায়াত নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম,সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসেন,মাওলানা আব্দুল হালিম, অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান, মাসুদ সাঈদী, জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির ড.হেলাল উদ্দিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।
জামায়াত নেতা আজহারকে খালাস দিলেন আপিল বিভাগ

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডের রায় বাতিল করে সর্বোচ্চ আদালত এ রায় দেন।
মঙ্গলবার (২৭ মে) সকাল ৯টা ৫২ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অন্য ছয়জন হলেন- বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি ইমদাদুল হক, বিচারপতি মো. আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুব। বেঞ্চের সাত বিচারপতি সর্বসম্মতিক্রমে এ রায় দিয়েছেন। রায়ে আপিল বিভাগ অবিলম্বে এটিএম আজহারুল ইসলামকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন।
এর মাধ্যমে বাংলাদেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে এই প্রথম মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি আপিল বিভাগের রায়ে খালাস পেলেন। এই রায়ের ফলে জামায়াত নেতা আজহারুল ইসলামের মুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আদালতে জামায়াত নেতা আজহারের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির, ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, ব্যারিস্টার ইমরান আবদুল্লাহ সিদ্দিক, ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন। রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও প্রসিকিউশনের পক্ষে প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম।
জামায়াত নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের, জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসেন, মাওলানা আব্দুল হালিম, অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান, জামায়াতের ঢাকা উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিন, মাসুদ সাঈদী, জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির ড. হেলাল উদ্দিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলোয়ার হোসেনসহ প্রমুখ।
এর আগে গত ৮ মে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি শেষ হয়। এ বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য ২৭ মে দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ।
২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। তখনকার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ রায় দেন। পরে এই রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করেন জামায়াত নেতা আজহারুল ইসলাম।
২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আজহারকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর অঞ্চলে ১২৫৬ ব্যক্তিকে গণহত্যা-হত্যা, ১৭ জনকে অপহরণ, একজনকে ধর্ষণ, ১৩ জনকে আটক, নির্যাতন ও গুরুতর জখম এবং শতশত বাড়ি-ঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের মতো নয় ধরনের ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয় এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগের মধ্যে ১ নম্বর বাদে বাকি পাঁচটি অভিযোগে তাকে ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ড দেন। যদিও এটি প্রহসনের রায় বলে আখ্যায়িত করে আসছে জামায়াতে ইসলামী।
২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি ১১৩ যুক্তিতে জামায়াত নেতা আজহারকে নির্দোষ দাবি করে খালাস চেয়ে আপিল করেন তার আইনজীবীরা। আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় ৯০ পৃষ্ঠার মূল আপিলসহ ২৩৪০ পৃষ্ঠার আপিল দাখিল করা হয়।
আদালতে টয়লেটে পড়ে রক্তাক্ত সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম

আদালতে হাজিরা দিতে এসে হাজতখানার টয়লেটে পড়ে মাথা ফেটে রক্তাক্ত হয়েছেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। এরপর তাকে মাথায় প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে ব্যান্ডেজ লাগানো হয়।
সোমবার (২৬ মে) সকালে দুদকের একটি মামলায় হাজিরার জন্য কামরুল ইসলামকে ঢাকার কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানায় আনা হয়। এরপর তিনি প্রসাব করতে হাজতখানার টয়লেট ব্যবহার যেতে চান। পুলিশ সদস্যরা তাকে টয়লেটে যেতে অনুমতি দেন। পরে মাথা ঘুরে টয়লেটে পড়ে যান অসুস্থ কামরুল। পড়ে মাথার পেছনে কেটে রক্তাক্ত হন তিনি। এরপর হাজতখানায় তাতে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কামরুলের আইনজীবী নাসিম মাহমুদ বলেন, আজ কামরুল ইসলামকে দুদকের মামলায় আদালতে হাজতখানায় আনা হয়। গত নভেম্বর থেকে উনি জেলহাজতে আটকে আছেন। বিভিন্ন মামলায় রিমান্ড শেষে কারাগারে আছেন। তিনি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। বিশেষ করো পাকস্থলীর ক্যান্সারে আক্রান্ত। দিন দিন ওনার ওজন কমে যাচ্ছে। এজন্য শরীর দুর্বল। আজকে আদালতের হাজতখানার টয়লেটে পড়ে গিয়ে পড়ে মাথার পেছনের সাইডে আঘাত পাওয়ার পর রক্তাক্ত হয়েছেন তিনি। এরপর পুলিশ সদস্যদের সহায়তায় তাকে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়। হাজতখানায় মাথায় ব্যান্ডেজ দিয়ে কেরাণীগঞ্জ কারাগারের হাসপাতালে পাঠানো হয়।
তিনি আরও বলেন, দুদকের মামলাটি তদন্তাধীন আছে। এজন্য আদালতের এজলাসে না তুলে হাজতখানা থেকে হাজিরার স্বাক্ষর নিয়ে আবার কারাগারে পাঠানো হয়।
এদিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) তারেক জোবায়ের বলেন, হাজতখানায় আনার পর আসামি কামরুল ইসলাম টয়লেটে যান। উনি হাই প্রেসারের রোগী। হাই প্রেসার থাকায় উনি মাথা ঘুরে টয়লেটে পড়ে যান। পড়ে আঘাত প্রাপ্ত হন তিনি। আমরা আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। তাকে কেরানিগঞ্জ কারা হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আজকের মধ্যেই শপথ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে ইশরাক হোসেনের চিঠি

শপথ চেয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়কে আবারও চিঠি দিয়েছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। সোমবার (২৬ মে) সকালে ইশরাক হোসেনের পক্ষে আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন এ চিঠি পাঠান।
এর আগে, গত ১৭ মে শপথ চেয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছিলেন ইশরাক হোসেন। চিঠিতে স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন ২০০৯ এর ধারা ৭(২) অনুযায়ী বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক গেজেট প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে ইশরাককে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরশনের নির্বাচিত মেয়র হিসেবে শপথ পাঠ করানোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি জানানো হয়।
আজকের (সোমবার) চিঠিতে ইশরাক হোসেনের আইনজীবী বলেন, আমার মক্কেল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) কর্তৃক মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ‘ধানের শীষ’ প্রতীক নিয়ে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী করেন। নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফজলে নূর তাপস (নৌকা প্রতীক) নানা রকম অনিয়ম, বেআইনি কার্যকলাপ এবং নির্বাচনী আইন ও বিধি লঙ্ঘন করে, ভোটারবিহীন ভোটকেন্দ্রে ইভিএম মেশিন দখলে নিয়ে নৌকা প্রতীকে ভোট সম্পন্ন করে। তৎকালীন নির্বাচন কমিশন এবং রিটার্নিং অফিসারের যোগসাজশে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
নোটিশে বলা হয়, গত ৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী গেজেট প্রকাশিত হওয়ার পর নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল গঠিত হলে ইশরাক হোসেন স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) নির্বাচন বিধিমালা, ২০১০ এর বিধি ৫৫ এর উপবিধি (১) এ বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে উক্ত নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ফজলে নূর তাপসকে মেয়র হিসেবে বিজয়ী ঘোষণা করার গেজেট বাতিল চেয়ে নির্বাচিত মেয়র হিসেবে ঘোষণা করার প্রার্থনা করে নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল মোকদ্দমা নং-১৫/২০২০ দায়ের করেন। ট্রাইব্যুনাল শুনানি শেষে ২৭ মার্চ রায় ঘোষণা করেন। ওই রায়ে ফজলে নূর তাপসকে মেয়র হিসেবে বিজয়ী ঘোষণা করার গেজেট বাতিল করেন এবং ইশরাক হোসেনকে নির্বাচিত মেয়র হিসেবে ঘোষণা করেন।
নোটিশে বলা হয়, এরই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনকে রায়ের অনুলিপি প্রাপ্তির দশ কর্মদিবসের মধ্যে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ প্রদান করেন। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন রায় প্রাপ্তির পর গত ২৭ এপ্রিল ইশরাক হোসেনকে নির্বাচিত মেয়র হিসেবে গেজেট প্রকাশ করেন।
স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) আইন, ২০০৯ এর ধারা ৭(২) এ উল্লেখ আছে, মেয়র বা কাউন্সিলরগণের নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশিত হওয়ার ত্রিশ দিনের মধ্যে সরকার বা তদ্কর্তৃক মনোনীত কর্তৃপক্ষ মেয়র ও সকল কাউন্সিলরকে শপথ গ্রহণ বা ঘোষণা প্রদানের ব্যবস্থা করবেন। এতে স্পষ্ট যে, ওই ধারা অনুযায়ী নির্বাচিত মেয়রকে গেজেট প্রকাশ হওয়ার ত্রিশ দিনের মধ্যে শপথ পাঠ করানোর আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু পরিলক্ষিত হচ্ছে যে, গেজেট প্রকাশের পর ২৯ দিন অতিবাহিত হলেও ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসাবে শপথ পাঠ করানোর কোনরূপ ব্যবস্থাই এখন পর্যন্ত গ্রহণ করা হয়নি।
চিঠিতে বলা হয়, আইনি বাধ্যবাধকতার আলোকে আমার মক্কেল ইশরাক হোসেনকে আজ সোমবার (২৬ মে)-এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শপথ পাঠ করানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় আমার মক্কেলের নির্দেশনা মোতাবেক আপনাদের বিরুদ্ধে আদালতের নির্দেশ অমান্য করার দায়ে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বাধ্য থাকবো।
শেখ হাসিনাকে হাজির করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নোটিশ জারি

আদালত অবমাননার অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনাকে আগামী ৩ জুন হাজির হতে নোটিশ জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার (২৬ মে) দৈনিক যুগান্তর ও ইংরেজি নিউ এজ পত্রিকায় এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আগামী ৩ জুন সকাল ১০টায় শেখ হাসিনাকে স্বশরীরে হাজির হতে বলা হয়েছে।
এর আগে গতকাল আদালত অবমাননার অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে শেখ হাসিনা ও ছাত্রলীগ নেতা শাকিল আলম বুলবুলকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য বহুল প্রচারিত দুটি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আরও পড়ুন
প্রসিকিউশনের আবেদনে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মূর্তজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল আজ এ আদেশ দেন। সেই সঙ্গে আগামী ৩ জুন এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এ সময় অন্য প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন।
‘আমার বিরুদ্ধে ২২৭টি মামলা হয়েছে, তাই ২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি,’ বলে ‘শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যের’ একটি অডিও ভাইরাল হয়। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ওই কথোপকথনের ফরেনসিক পরীক্ষা করে সেটি হাসিনার বলে সত্যতা পায়। পরবর্তী সময়ে এই বক্তব্যের বিষয়ে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয় ট্রাইব্যুনালে। ট্রাইব্যুনাল অভিযোগটি গ্রহণ করে ১৫ মের মধ্যে তাদের জবাব দাখিলের নির্দেশ দেন। কিন্তু ১৫ মে জবাব দাখিল না করায় তাদের ২৫ মে ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে ২৫ মে তারা হাজির না থাকায় প্রসিকিউশনের আবেদনে শেখ হাসিনাসহ দুজনকে আদালত অবমাননার অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য বহুল প্রচারিত দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
মন্তব্য