ঢাবিতে গাঁজা প্রস্তুত করা অবস্থায় নারীসহ ৪ জন বহিরাগত আটক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে সামনে গাঁজা প্রস্তুত করা অবস্থায় বহিরাগত চার জনকে আটক করে প্রক্টরিয়াল টিমের হাতে তুলে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী।
রোববার (২৫ মে ) রাত সাড়ে ৮টার দিকে কয়েকজন ঢাবি শিক্ষার্থী তাদের আটক করেন।
পরবর্তী সময়ে প্রক্টরিয়াল টিমের সাহায্য তাদের শাহবাগ থানায় নেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে তাদের নামপরিচয় সংগ্রহ করা না গেলেও তাদের প্রত্যেকের বাসা মোহাম্মদপুর বলে জানা যায়।
আরও পড়ুন
প্রত্যক্ষদর্শী ঢাবি শিক্ষার্থী আব্দুল রউফ খন্দকার বলেন, আমি আমার জুনিয়রদের নিয়ে সিনেটের সামনে আড্ডা দিচ্ছিলাম। এ সময় আমরা দূর থেকে দেখি তিনজন ছেলে ও একজন মেয়ে গাঁজা খাওয়া জন্য প্রস্তুত করছে। আমরা এগিয়ে গিয়ে তাদের নামপরিচয় জানতে চাইলে তারা বহিরাগত বলে জানায়। পরে আমরা প্রক্টরিয়াল টিমকে ফোন করলে প্রক্টরিয়াল টিম এসে তাদের শাহবাগ থানায় নিয়ে যায়।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর বলেন, এক নারীসহ চারজনকে থানায় আনা হয়েছে। তাদের কাছে গাঁজা পাওয়া যায়নি। তবে গাঁজা খেতে এসেছিল। আমরা তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। বিষয়টা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
আন্তর্জাতিক সম্মেলনে স্বশরীরের নেই কোনো আন্তর্জাতিক বক্তা

বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুটেক্স) ২৪ মে ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত তৃতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন (ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন টেক্সটাইল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং -ICTSE 2025) নিয়ে শিক্ষার্থী ও অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। সম্মেলনের মূল লক্ষ্য ছিল ফ্যাশন ইনোভেশন ও টেকসই পোশাক উৎপাদন নিয়ে আলোচনা করা।
অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার Society of Fashion and Textile Industry-এর সভাপতি অধ্যাপক কিউ হি লি এবং Konkuk University-এর অধ্যাপক জুনসিয়োক কোহ।
এছাড়া প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (UGC) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস. এম. এ ফায়েজ এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. বি. এম. ওবায়দুল ইসলাম।
তবে, এই সম্মেলনে আন্তর্জাতিক বক্তাদের শারীরিক উপস্থিতি ছিল না। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে দুইজন অনলাইনে যুক্ত হলেও, সরাসরি আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদের অনুপস্থিতি অনেকের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে।
আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (AIUB) থেকে আগত এক অংশগ্রহণকারী জানান, আন্তর্জাতিক কনফারেন্স কিন্তু আন্তর্জাতিক মান মনে হয়নি। সেশনগুলো ভালো হয়েছে, কিন্তু সরাসরি হলে আরও ইন্টারঅ্যাকটিভ হতে পারতো, আমাদের জন্য আরও ভালো হতো। এছাড়া ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্টরা যদি থাকতো, তারা ইন্ডাস্ট্রিতে কিভাবে গবেষণা ও উন্নয়ন করছে তা আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারতো। অতিথি ও বিচারকদের ক্ষেত্রে এক্সটার্নাল এক্সপার্টদের আরও উপস্থিতি আশা করেছিলাম।
সম্মেলনের প্রচার-প্রচারণা যথাযথভাবে না হওয়ায় অনেক বুটেক্স শিক্ষার্থীই অনুষ্ঠান সম্পর্কে অবগত ছিলেন না। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পোস্টার বা ব্যানারের অভাব এবং সামাজিক মাধ্যমে পর্যাপ্ত তথ্যের অনুপস্থিতি এই ঘাটতির অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে নিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবকেরা পর্যাপ্ত নির্দেশনা ও সমন্বয়ের অভাবে কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হন। তাদের মধ্যে অনুষ্ঠানের সম্পূর্ণ সময়সূচি এবং বিভিন্ন সেগমেন্টের স্থান নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা যায়। অনেক সময় দেখা গিয়েছে বিচারকরা চলে এসেছেন কিন্তু স্বেচ্ছাসেবকেরা পরে এসে উপস্থিত হয়েছেন।
আরও পড়ুন
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তাকেও এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তিনি অনুষ্ঠানটির সময়সূচি বা বিস্তারিত কিছুই জানতেন না। জনসংযোগ কর্মকর্তার কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইভেন্টগুলোর প্রচার, মিডিয়া সমন্বয়, এবং অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক যোগাযোগ রক্ষা করা। তাকে অবহিত না করায় এই দায়িত্বগুলো সঠিকভাবে পালন করা সম্ভব হয়নি।
সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী একজন শিক্ষার্থী বলেন, ICTSE-2024 ও ICTSE-2025 এর অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি এবারের সম্মেলনে আন্তর্জাতিক উপস্থিতি তুলনামূলক কম ছিল, তবে এটা বড় সমস্যা মনে হয়নি। আমার মতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংশ্লিষ্টতা খুব কম ছিল, যেটা উদ্বেগের বিষয়। কারণ আমার নিজের কথা বলতে গেলে— আমি গতবার অংশগ্রহণকারী ছিলাম না, কিন্তু প্রোগ্রামে উপস্থিত ছিলাম। সেখান থেকেই আগ্রহ সৃষ্টি হয় এবং এবার কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করি। কিন্তু এবার দর্শকসারিতে শিক্ষার্থী সংখ্যা নগণ্য ছিল, যার প্রভাব আগামী কনফারেন্সে দেখা যেতে পারে। আবার অনুষ্ঠানের সময়সূচি এবং স্থান কিছুটা অস্পষ্ট ছিল, যেমন একটা প্রোগ্রামে আমি অডিটোরিয়ামে গিয়ে বসেছিলাম কিন্তু পরে শুনি ওই সেগমেন্ট আরেক জায়গায় হচ্ছে। যারা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন, তারাও সম্পূর্ণ অবগত ছিলেন না। এছাড়া এবারের সম্মেলনে কিছু টেকনিক্যাল সমস্যা দেখা গিয়েছিল, যা আন্তর্জাতিক মানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
সম্মেলনের পরিচালনা কমিটির প্রধান অধ্যাপক ড. মো. মশিউর রহমান খান বলেন, এই ধরনের ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে আমরা প্রথম। যেহেতু আমাদের ফ্যাকাল্টির প্রথমবার আয়োজন, তাই নানা প্রতিবন্ধকতা পার করতে হয়েছে। সামনে অন্য ফ্যাকাল্টি আয়োজন করবে, আশা করি আরও ভালো করে আয়োজন করবে। তবে আমাদের পক্ষ থেকে আমরা চেষ্টা করেছি, সর্বোচ্চটুকু দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
উল্লেখ্য, এবারের কনফারেন্সে বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ৬০টি গবেষণাপত্র জমা পড়ে, যার মধ্যে ৩৬টি পেপার প্রেজেন্টেশনের জন্য বাছাই করা হয়। গত কনফারেন্সে যার সংখ্যা ছিল প্রায় ১০০টি এবং এসব গবেষণাপত্র এসেছিল ১৮টি দেশ থেকে।
স্বল্প ব্যয়ে চিকিৎসা সেবা
গোবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের জন্য পপুলারে ৩০ ভাগ ছাড়

স্বল্প ব্যয়ে চিকিৎসা সেবা পেতে খুলনার পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (গোবিপ্রবি) প্রশাসন। এই চুক্তির আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফি'তে ছাড় প্রদান করবে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার।
এ লক্ষ্যে আজ রবিবার (২৫ মে) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখরের উপস্থিতিতে উপাচার্যের বাসভবনে এই চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। এই চুক্তির ফলে এখন থেকে গোবিপ্রবির শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা পপুলারের খুলনা শাখায় সকল ল্যাব পরীক্ষায় ৩০ ভাগ, সকল ধরনের রেডিওলজি এন্ড ইমেজিংয়ে ২৫ ভাগ এবং বার্ষিক স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ২৭ ভাগ ছাড় পাবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. মোরাদ হোসেন এবং খুলনা পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পক্ষে শাখা ব্যবস্থাপক মো. সিরাজুল কবির।
পবিপ্রবির শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্ত্রী নির্যাতন ও একাধিক বিয়ের অভিযোগ

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্ত্রী নির্যাতন, একাধিক বিয়ে ও অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক রমন বিশ্বাস বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্ট সায়েন্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অনুষদের অধ্যাপক।
তার স্ত্রী শ্রাবন্তী বিশ্বাস অভিযোগ করে বলেন, “২০১১ সালে প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে আমাদের বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের কিছু দিনের মধ্যেই তিনি গোপনে আরেক নারীকে বিয়ে করেন। পরবর্তীতে আরও দুটি বিয়ে করেন এবং ছাত্রীসহ একাধিক নারীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তিনি বিভিন্ন সময়ে আমাকে মারধর করে আহত করেছেন। বর্তমানে তিনি আমাদের তিন সন্তান এবং আমাকে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করছেন।”
শ্রাবন্তী বিশ্বাস তার সন্তানদের ভরণপোষণ ও অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, “একজন শিক্ষকের কাছ থেকে এমন আচরণ আমরা আশা করি না। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়।”
এ বিষয়ে অধ্যাপক রমন বিশ্বাস বলেন, “এটা আমার ব্যক্তিগত বিষয়। এ নিয়ে আমি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে চাই না।”
আরও পড়ুন
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আবুল বাশার খান বলেন, “বিষয়টি মৌখিকভাবে জেনেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে যথাযথ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
রেজিস্টার অধ্যাপক ড. মো. ইকতিয়ার উদ্দিন বলেন, “আমার কাছে এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি।”
এনভায়রনমেন্ট সায়েন্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মহসীন হোসেন খান বলেন, “আমার কাছেও কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। বিভিন্ন মাধ্যমে ঘটনাটি শুনেছি। অভিযোগ পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব।”
মাভাবিপ্রবির শাহজামান দীঘির দখলকৃত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

টাঙ্গাইলে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অবস্থিত ঐতিহাসিক পীর শাহজামান দীঘির অস্তিত্ব আজ হুমকির মুখে। দীঘির ইতিহাস যেমন গৌরবোজ্জ্বল, তেমনি তার বর্তমান চিত্র উদ্বেগজনক। এ প্রেক্ষাপটে দীঘিটি সংরক্ষণ ও সংস্কারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সচেতন মহল।
দীর্ঘ প্রায় সাড়ে তিন শতাব্দী আগে, ১৬৬৮ সালে পীর শাহজামান (রহঃ) দীঘিটি খনন করান। পরবর্তীতে এটি সন্তোষ জমিদারের দখলে চলে গেলেও, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর উদ্যোগে এবং খোশনদপুর ওয়াকফের প্রমাণসহ আদালতে উপস্থাপনার মাধ্যমে দীঘিটি পুনরুদ্ধার হয়। ব্রিটিশ শাসনামলে বিচারক মামলার রায় দেন মওলানা ভাসানীর পক্ষে, ফলে এটি আবার জনসাধারণের কাছে উন্মুক্ত হয়।
বর্তমানে এই ঐতিহাসিক দীঘিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও এর চারপাশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অননুমোদিত দোকানপাট। বিশেষ করে প্রধান ফটক থেকে দ্বিতীয় ফটক পর্যন্ত দীঘির দক্ষিণ সীমানায় খুঁটি ও বাঁশ পুঁতে দোকান নির্মাণ করা হয়েছে, যা একদিকে যেমন পরিবেশ দূষণ বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে দৃষ্টিনন্দন ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য নষ্ট করছে। ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে দীঘির পানি ক্রমেই দূষিত হয়ে উঠছে। ফলে এ জলাধার যেমন পরিবেশগত ভারসাম্য হারাচ্ছে, তেমনি হারাতে বসেছে তার ঐতিহাসিক গৌরবও।
আজ ২৫মে (রবিবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে। বিক্ষোভ মিছিলটি শহিদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে ২য় গেট-১ম গেট হয়ে প্রত্যয় একাত্তরের সামনে এসে শেষ হয়। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা ভাইস-চ্যান্সেলর বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ বলেন, "আমরা আমাদের স্থাপনাগুলো কিভাবে সুন্দর করা যায় সেবিষয়গুলো দেখছি। শিক্ষার্থী এই দাবিগুলোও আমরা দেখবো কিভাবে বাস্তবায়ন করা যায়।"
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো: ফোরকান হোসেন বলেন, "আমাদের মাননীয় ভিসি স্যারের নেতৃত্বে ক্যাম্পাসের শিক্ষার পরিবেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা আশা রাখছি, মাননীয় ভিসি স্যারসহ এর সাথে সংশ্লিষ্ট সবাই আমাদের দীঘিটি সংস্কারে বিশেষ ভুমিকা পালন করবেন। আমরা চাই দীঘিটির দক্ষিণ পাশের দোকান পাটগুলো সরিয়ে এর চারপাশ বাধাই করে হাটার ব্যবস্থা করা এবং গাছপালা দিয়ে পরিবেষ্টিত করে এর সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে।"
আরও পড়ুন
সিপিএস বিভাগের শিক্ষার্থী আখতারুজ্জামান সাজু বলেন, "পীর শাহজামান দিঘি প্রায় ৩৫০ বছরের ঐতিহ্য ও স্মৃতি বহন করে। এলাকাবাসি সেই দিঘির পাশে অবৈধ দোকানপাট স্থাপন করেছে যা দিঘির সৌন্দর্য বিনষ্ট করেছে। দোকান গুলোর বর্জ্য সরাসরি দিঘিতে ফেলে দিঘির পরিবেশ নষ্ট করছে। আমরা চাই এই অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে দিঘির সংস্কার করা হোক।
গণিত শিক্ষার্থী সাইদুল ইসলাম সোহাগ বলেন, "আজকের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী পীর শাহজামান দীঘীর সৌন্দর্যবর্ধন এবং দীঘির পাশে গড়ে ওঠা অবৈধ দোকানপাট অপসারণের জোর দাবি জানাচ্ছি। এই দীঘিটি শুধু একটি জলাধার নয়, এটি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও পরিবেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমরা লক্ষ্য করছি, দীঘির আশেপাশে গড়ে উঠেছে একের পর এক অবৈধ স্থাপনা, যা পরিবেশদূষণ এবং নানাবিধ সমস্যা সৃষ্টি করছে। শিক্ষার্থীদের চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে, প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে এবং ঐতিহ্যবাহী এ দীঘির সৌন্দর্য হারিয়ে যাচ্ছে। আমরা এই অন্যায় অবস্থা মেনে নিতে পারি না।"
স্মারকলিপিতে উল্লেখিত পাঁচ দফাগুলো:
১. দীঘির চারপাশে বাঁধ নির্মাণ করে হাঁটার উপযোগী রাস্তা তৈরি।
২. প্রধান ফটক থেকে দ্বিতীয় ফটক পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানায় প্রাচীর নির্মাণ।
৩. দীঘির চারপাশে পরিকল্পিত বৃক্ষরোপণ ও পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা।
৪. নির্দিষ্ট দূরত্বে একাধিক ময়লা ফেলার নির্ধারিত স্থান স্থাপন।
৫. দীঘির পাশে একটি স্থায়ী প্রচারপত্র বা ফলক স্থাপন, যেখানে এর ইতিহাস ও গুরুত্ব সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস, পরিবেশ এবং নান্দনিকতা রক্ষায় এ ধরনের পদক্ষেপ এখন সময়ের দাবি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে পীর শাহজামান দীঘি যেমন নতুন করে প্রাণ ফিরে পাবে, তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও গৌরবও অটুট থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সবাই।
মন্তব্য