ভারতীয় রাফাল যুদ্ধবিমানের নারী পাইলটকে কি আটক করেছে পাকিস্তান?

চারদিনের সামরিক সংঘাতের সময় ভারতের বিমানবাহিনীর একজন পাইলটকে পাকিস্তান আটক করে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। ভারতীয় অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান রাফালের ওই নারী পাইলটকে আটকের গুঞ্জনের বিষয়ে কথা বলেছে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
পাকিস্তানের আইএসপিআরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেছেন, প্রতিবেশী ভারতের বিরুদ্ধে নতুন লড়াইয়ের সময় পাকিস্তান ভারতীয় কোনও পাইলটকে আটক করেনি।
ভারতে পাকিস্তানের পাল্টা হামলার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভারতীয় পাইলটকে আটকের বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের গুঞ্জন ও একাধিক ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দাবি করা হয়েছে, ‘‘ভারতীয় বিমান বাহিনীর নারী পাইলট শিবাঙ্গী সিংকে আটক করেছে পাকিস্তান। ভারতীয় যুদ্ধবিমানে পাকিস্তানি সৈন্যরা গুলি চালানোর পর সেটি বিধ্বস্ত হয়। পরে সেই বিমানের পাইলট শিবাঙ্গী আটক করে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী।’’
তবে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র আহমেদ শরিফ চৌধুরীর কাছে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। এ সময় এক সাংবাদিক তার কাছে জানতে চান ভারতীয় কোনও পাইলট পাকিস্তানের হেফাজতে আছে কি না এবং যদি থাকেন তাহলে তাকে ফেরত পাঠানো হবে কি না?
জবাবে জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেন, ‘‘আমি একেবারে পরিষ্কারভাবে এটা নিশ্চিত করতে পারি যে, ভারতীয় কোনও পাইলট আমাদের হেফাজতে নেই। এটা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অতিরঞ্জন। ভুয়া সংবাদ এবং প্রচারণার একাধিক উৎস থেকে এই ধরনের গুজব ছড়ানো হয়েছে।’’
পাকিস্তানে ভারতীয় পাইলটের আটবের বিষয়টিকে ভুয়া বলে উড়িয়ে দিয়েছে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। একই সঙ্গে দেশটির জনগণকে অপতথ্য বিশ্বাস না করার আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।
সূত্র: জিও নিউজ।
অবশেষে নিজেদের বিলুপ্ত ঘোষণা করল কুর্দিরা; এরদোয়ানের সাফল্য

চার দশকের সশস্ত্র সংঘাতের অবসান ঘটিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)। সোমবার এক বিবৃতিতে এই ঘোষণা দেয় সংগঠনটি। খবরটি প্রকাশ করেছে পিকেকে ঘনিষ্ঠ ফিরাত নিউজ এজেন্সি।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা সব ধরনের সামরিক কার্যক্রম বন্ধ করছি। তুর্কি-কুর্দি সম্পর্ককে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করার সময় এসেছে।
সংগঠনটি আরও জানায়, এখন থেকে কুর্দি রাজনৈতিক দলগুলো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও একটি গণতান্ত্রিক কুর্দি জাতি গঠনের দায়িত্ব গ্রহণ করবে। পিকেকে তাদের ‘ঐতিহাসিক মিশন’ শেষ করেছে।
এখনো তুর্কি সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি।
পিকেকের এই সিদ্ধান্ত তুরস্ক ও ইরাকের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে প্রায় ৪০ বছর ধরে চলা রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান টানল। এই সংঘর্ষে ৪০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়।
উল্লেখ্য, পিকেকে প্রধান আবদুল্লাহ ওজালান। তিনি ১৯৯৯ সাল থেকে তুরস্কে যাবজ্জীবন সাজা ভোগ করছেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এক বিবৃতিতে সব সশস্ত্র গ্রুপকে ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি। এর ধারাবাহিকতায় এল এই বিলুপ্তির ঘোষণা। সূত্র: শাফাক নিউজ, আলজাজিরা
ভারতের বিরুদ্ধে ৬-০ ব্যবধানে জয়লাভ করেছে পাকিস্তানি বিমানবাহিনী

সাম্প্রতিক সংঘাতে ভারতীয় বিমান বাহিনীর বিরুদ্ধে পাকিস্তানি বিমানবাহিনী ৬-০ ব্যবধানে জয়লাভ করেছে।পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফের সাথে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তান বিমানবাহিনীর (পিএএফ) সিনিয়র অফিসার এয়ার ভাইস মার্শাল আওরঙ্গজেব এ ঘোষণা দেন। খবর সামাটিভির।
আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এয়ার ভাইস মার্শাল আওরঙ্গজেব ভারতীয় আগ্রাসনের কার্যকর জবাব দেওয়ার ক্ষেত্রে পিএএফের কর্মক্ষমতার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, শান্তি ও যুদ্ধকালীন উভয় সময়েই পিএএফ পূর্ণ প্রস্তুতি বজায় রেখেছিল। আমরা বিমানবাহিনী প্রধানের নির্দেশ অনুসরণ করেছিলাম এবং পাকিস্তানে আক্রমণকারীদের লক্ষ্য করে আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োগ করেছি। ’
তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানের বিমান প্রতিরক্ষা অভিযানের অংশ হিসেবে সমস্ত ভারতীয় ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ট্র্যাক করা হয়েছিল। পিএএফ সফলভাবে শত্রু ড্রোন জ্যাম করেছে, তাদের ডেটা ট্রান্সমিশন ব্যাহত করেছে এবং সব ধরনের কৌশল প্রয়োগ করেছে। ’
এয়ার ভাইস মার্শাল আরও বলেন, পাকিস্তান বিমানবাহিনী তাদের পূর্ণ অপারেশনাল ক্ষমতা ব্যবহার করেছে। সমস্ত শত্রু ড্রোন সফলভাবে শনাক্ত এবং ধ্বংস করেছে।
তিনি বলেন, ‘উত্তেজনা বৃদ্ধির সময় ভারতের ব্যবহৃত ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্রগুলোকেও আঘাতের আগেই বাধা দেওয়া হয় এবং ধ্বংস করা হয়। এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বের জন্য সরাসরি হুমকি ছিল।
তিনি ভারতের একটি গুরুতর ব্যর্থতা প্রকাশ করে বলেন, অমৃতসর থেকে ছোড়া ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্রগুলো অসাবধানতাবশত তাদের নিজস্ব বেসামরিক এলাকায় আঘাত করেছে। পালটা জবাবে, পাকিস্তানের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন এবং অন্যান্য নির্ভুল-নির্দেশিত সিস্টেম সফলভাবে নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে।
ব্রিফিং শেষে, এয়ার ভাইস মার্শাল আওরঙ্গজেব নিশ্চিত করেন, পিএফ নিজের কোনো ক্ষতি ছাড়াই ছয়টি ভারতীয় বিমান ভূপাতিত করেছে, এবং নিশ্চিত করেছে সমস্ত পাকিস্তানি বিমান যুদ্ধের সময় নিরাপদ এবং কার্যকর থাকবে।
পাক-ভারত যুদ্ধ
ভারতের বিপজ্জনক পরিস্থিতির গোয়েন্দা তথ্য পেয়ে মোদিকে যুদ্ধ বন্ধে চাপ দেয় যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ আলোচনার পর ভারত ও পাকিস্তানের মাঝে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়েছে। দীর্ঘ ৪৮ ঘণ্টা ধরে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের প্রচেষ্টায় এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
তবে পরমাণু অস্ত্রধারী এই দুই দেশের যুদ্ধবিরতির নিয়ে সামনে এসেছে নতুন তথ্য। মূলত ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে ভীতিকর তথা উদ্বেগজনক গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার পর ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি আলোচনা শুরুর আহ্বান জানান—এমনটাই জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
সিএনএন জানায়, মার্কিন প্রশাসনের একটি কেন্দ্রীয় দল — ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মার্কো রুবিও এবং হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ সুজি ওয়াইলস — ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সংঘাত ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছিলেন।
প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতের মধ্যেই শুক্রবার সকালে যুক্তরাষ্ট্র এমন কিছু গোয়েন্দা তথ্য পায় যা পরিস্থিতিকে বিপজ্জনক বলে ইঙ্গিত দেয়।
প্রভাবশালী এই মার্কিন সংবাদমাধ্যম বলছে, ওই তথ্যের ভিত্তিতে ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্স প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পুরো পরিকল্পনার ব্যাপারে অবহিত করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুরে তিনি (জেডি ভ্যান্স) সরাসরি নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করেন।
মার্কিন এই ভাইস প্রেসিডেন্ট ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্পষ্ট করে বলেন, হোয়াইট হাউসের মতে, এই সংঘাত আরও মারাত্মক রূপ নিতে পারে এবং সপ্তাহান্তে বড় ধরনের সংঘর্ষ হতে পারে। ভ্যান্স এসময় মোদিকে উৎসাহ দেন যেন ভারত সরাসরি পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং উত্তেজনা কমানোর বিভিন্ন পথ বিবেচনা করে।
ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা ছিল, দুই দেশের মধ্যে কোনও ধরনের কূটনৈতিক আলোচনা চলছে না। তাই তাদের মূল লক্ষ্য ছিল দুই পক্ষকে আবারও আলোচনায় ফিরিয়ে আনা। সূত্র জানায়, ভ্যান্স এসময় মোদিকে এমন একটি শান্তিপূর্ণ বিকল্প পথের কথাও জানান, যেটি পাকিস্তান গ্রহণ করতে পারে বলে আমেরিকার ধারণা ছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই তথ্যের প্রকৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো না হলেও, তা এতটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে, এই তিন শীর্ষ কর্মকর্তাকে বিষয়টিতে যুক্তরাষ্ট্রকে আরও সক্রিয় হবার প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে সাহায্য করে।
সিএনএন বলছে, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে আলাপের পরেই মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা— যার মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওও ছিলেন— ভারত ও পাকিস্তানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে রাতভর যোগাযোগ চালিয়ে যান।
আরও পড়ুন
যদিও মার্কিন প্রশাসন যুদ্ধবিরতির খসড়া তৈরি বা আলোচনায় সরাসরি যুক্ত হয়নি, তবে তারা বিষয়টিকে আলোচনার সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার অংশ হিসেবে দেখেছে। প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেন, মোদির সঙ্গে ভ্যান্সের ফোনালাপ ছিল যুদ্ধবিরতির এই প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়।
সিএনএন বলছে, ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর ফোনালাপ সম্পর্কে জানেন এমন একজন মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা দ্রুত বাড়ছিল, তখন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বিষয়টি শান্ত করার জন্য ব্যাপক চেষ্টা চালানো হচ্ছিল।
ওই কর্মকর্তা বলেন, “তখন স্পষ্ট ছিল যে, দুই দেশের মধ্যে কোনও সরাসরি কথা বলা হচ্ছিল না। তাই আমাদের লক্ষ্য ছিল—আমাদের ভারত ও পাকিস্তানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে, তাদের কথা বলায় উৎসাহ দেওয়া এবং যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে উত্তেজনা কমানোর পথ খুঁজে বের করা।”
তিনি আরও জানান, এই আলোচনার ধারাবাহিকতায় মার্কিন কর্মকর্তারা বুঝতে পারেন, উভয় পক্ষের জন্য উত্তেজনা কমানোর ‘সম্ভাব্য পথ’ কী হতে পারে। এরপর তারা সেই বার্তা দুই পক্ষের মধ্যে পৌঁছে দিতে সাহায্য করেন এবং কিছুটা হলেও যোগাযোগের ঘাটতি দূর করতে সহায়ক হন। এর ফলে ভারত ও পাকিস্তান সরাসরি আলোচনায় বসার সুযোগ পায়, যার ফলাফল এখন দেখা যাচ্ছে।
মার্কিন প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যুদ্ধবিরতির কোনও চুক্তি খসড়ায় যুক্ত ছিল না। তাদের ভূমিকা ছিল কেবল দুই পক্ষকে আলোচনায় ফিরিয়ে আনা।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী, ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের প্রধানমন্ত্রী মোদিকে করা ফোনটি ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। প্রশাসনের আরও এক সূত্র জানায়, ভ্যান্স গত মাসে ভারত সফরে গিয়ে মোদির সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করেছিলেন। ট্রাম্প প্রশাসনের বিশ্বাস ছিল, ভ্যান্স ও মোদির ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণে ফোনালাপটি আরও কার্যকর হবে।
চুক্তি ভেঙেছে পাকিস্তান?
যুদ্ধবিরতির পরও পাকিস্তানের হামলা : দাবি ভারতের

কয়েকদিনের হামলা পাল্টা হামলার পর যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফের উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক সীমান্ত জুড়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে ভারত।
শনিবার ( ১১ মে) এ তথ্য জানায় ভারতের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা।
এ ঘটনায় ওইদিন গভীর রাতে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এর তীব্র নিন্দা জানান ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্রী। তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তান ফের গোলাগুলি শুরু করেছে, যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এর জন্য সম্পূর্ণভাবে পাকিস্তান দায়ী।
তিনি বলেন, ভারতীয় সেনারাও এর সমুচিত জবাব দিচ্ছে এবং পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ভারত আশা রাখে, পাকিস্তান পরিস্থিতির গুরুত্ব উপলব্ধি করে অবিলম্বে এই চুক্তিভঙ্গ বন্ধ করবে। একইসঙ্গে তিনি পাকিস্তানকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যে-কোনো ধরনের অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘনের মোকাবিলায় ভারতীয় সেনাবাহিনীকে কঠোর পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, যুদ্ধবিরতি হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরের শ্রীনগরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। অঞ্চলটির মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহ মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সে শনিবার (১০ মে) লিখেছেন, যুদ্ধবিরতির কী হলো? শ্রীনগরজুড়ে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
শ্রীনগরের কয়েকজন বাসিন্দা কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছেন, তারা একাধিক বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়েছেন। ওই সময় শহরটির একটি অংশে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে ব্ল্যাকআউট করা হয়।
শ্রীনগরভিত্তিক সাংবাদিক ওমর মেহরাজও আলজাজিরার কাছে নিশ্চিত করেছেন তারা বিস্ফোরণের শব্দ শুনছেন। তিনি বলেছেন, আমরা শ্রীনগরে বিকট বিস্ফোরণ শুনতে পাচ্ছি। শনিবার সকালে এবং বিকেলে একই শব্দ শোনা গিয়েছিল। আমি আকাশে কোনো বস্তু উড়তে দেখেছি। তবে এগুলো মিসাইল নাকি আকাশ প্রতিরক্ষার কিছু তা একদমই স্পষ্ট নয়। একই ধরনের বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে বারামুল্লাহ এবং জম্মুতে।
তিনি আরও বলেন, বিস্ফোরণের পর এখানকার মানুষের মধ্যে বেশ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সবাই নিরাপদ আশ্রয়ে দৌড়ে গেছেন। তবে নতুন বিস্ফোরণে কোনো হতাহত হয়েছে কি না সেটি নিশ্চিত নই।
আরও পড়ুন
জম্মু-কাশ্মিরের মুখ্যমন্ত্রী এক্সে আরেকটি পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন তিনি। এতে স্পষ্ট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছিল। তিনি পোস্টে লিখেছেন, “শ্রীনগরে কোনো যুদ্ধবিরতি নেই। শ্রীনগরের মধ্যাঞ্চলে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়েছে।
লুধিয়ানার ডিসি অবশ্য বলেছেন এ মুহূর্তে আতঙ্কগ্রস্ত হওয়ার কিছু নেই। তবে প্রয়োজন হলে ব্ল্যাকআউট করা হবে বলে জানান তিনি। সরকারি এ কর্মকর্তা বলেন, সশস্ত্র বাহিনী ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।
পাতিয়ালার বিভাগীয় কমিশনার (ডিসি) জানিয়েছেন, যদি কোনো হামলার সংকেত তারা পান তাহলে এ ব্যাপার জনসাধারণকে অবহিত করা হবে। এ মুহূর্তে আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
অপরদিকে পাঞ্জাবের অমৃতসরের ডিসি দাবি করেছেন, সেখানে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। যদি প্রয়োজন হয় তাহলে অমৃতসরে ব্ল্যাকআউট কার্যকর করা হবে।
মন্তব্য