একনেকের বৈঠক শেষে
১৯ উপদেষ্টার সঙ্গে ড. ইউনূসের রুদ্ধদ্বার বৈঠক চলছে

চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা।
শনিবার (২৪ মে) বেলা ১২টা ২০ মিনিটের দিকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষ হওয়ার পরই এই অনির্ধারিত বৈঠক শুরু হয়।
এর আগে এনইসি সম্মেলনকক্ষে বেলা ১১টায় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শুরু হয়। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে একনেক সভা শেষ হয়। বৈঠকে ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে বৈঠকে এ অনুষ্ঠিত হয়। এইদিকে সম্মেলনকক্ষের বাইরে পতাকাবাহী ১৯টি গাড়ি দেখা গেছে।
সভাসূত্রে জানা যায়, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উপদেষ্টাদের বাইরে আর কাউকে রাখা হয়নি। একনেক বৈঠক শেষে একে একে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, পরিকল্পনাসচিবসহ সব সরকারি কর্মকর্তাকে এনইসি কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে দেখা গেছে। চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় উপদেষ্টা পরিষদের এই বৈঠককে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হচ্ছে।
এছাড়া আজ বিকালে বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে প্রধান উপদেষ্টার।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের নিয়মিত বৈঠক শেষে অনির্ধারিত আলোচনায় তার পদত্যাগের ভাবনার কথা বলেন। জানা যায়, এ সময় তিনি সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগে নানা প্রতিবন্ধকতার কথা বলেন। প্রায়ই সড়ক আটকে আন্দোলন, সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না হওয়া, রাষ্ট্রীয় কাজে নানা পক্ষের অসহযোগিতাসহ দেশের বিরাজমান পরিস্থিতিতে ক্ষোভ ও হতাশা ব্যক্ত করেন তিনি। অধ্যাপক ইউনূসের পদত্যাগের ভাবনার কথা জানাজানি হওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই বিভিন্ন মহলে নানা আলোচনা ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়।
এর আগের দিন বুধবার ঢাকা সেনানিবাসে ‘অফিসার্স অ্যাড্রেস’ অনুষ্ঠানে দেওয়া সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের কিছু বক্তব্য জনসমক্ষে প্রকাশ পায়। তাতে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান, তার মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠাসহ জাতীয় নিরাপত্তা-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বক্তব্য ছিল।
ক্ষোভ ও হতাশা থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করতে চাইছেন, এমন খবর তীব্র আলোড়ন সৃষ্টি করেছে সারা দেশে। এ নিয়ে বিএনপিসহ গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের মধ্যে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকেই আলাপ-আলোচনা শুরু হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, অধ্যাপক ইউনূস পদত্যাগ করুন, কোনো দলই সেটা চায় না। তবে দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময় চায়।
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে একনেক সভা অনুষ্ঠিত

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রাজধানীর আগারগাঁও এনইসি সভাকক্ষে আজ শনিবার এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বাসসকে এ তথ্য জানান।
সভায় উপদেষ্টা পরিষদের অন্য সদস্যরা যোগ দেন।
অনুমোদনের জন্য ১০টি প্রকল্প আজকের সভায় উপস্থাপন করা হয়।
অন্তর্বর্তী সরকার পুনর্গঠন করতে হলে যেসব আইনি প্রশ্ন সামনে আসবে

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস যদি পদত্যাগ করেন, এরপর আইনি জটিলতা কী হতে পারে, তা নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ। খবর বিবিসি বাংলা।
আইনগত দিক থেকে অন্তর্বর্তী সরকার পুনর্গঠনের সুযোগ কতটা আছে, সরকার পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে আইনি কোনো বাধা আছে কিনা, এসব প্রশ্ন উঠছে ।
প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের ভাবনা নিয়ে আলোচনার শুরু জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের দেওয়া বক্তব্যের মাধ্যমে।
নাহিদ ইসলাম বৃহস্পতিবার বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, তিনি ওইদিন সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করতে পারেন, এমন খবর পেয়েই তার সঙ্গে দেখা করেছেন উল্লেখ করে নাহিদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগের বিষয়ে ভাবছেন।
সুতরাং, স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে যে অধ্যাপক ইউনূস যদি পদত্যাগ করেন, তাহলে দেশের সরকার ব্যবস্থা কোন পথে চলবে? এটি কী পুনরায় গঠন করা যাবে?
আইনে সরকার পুনর্গঠনের সুযোগ কতটা?
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পুনর্গঠনের সুযোগ আইনে কতটা আছে, এই প্রশ্নে ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যা দিচ্ছেন আইনজীবীরা।
আইনজীবীদের কেউ কেউ বলছেন, সুপ্রিমকোর্টের মতামত নিয়ে দলগুলোর সমর্থনে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়েছে। ফলে এখন অধ্যাপক ইউনূস পদত্যাগ করলে কোনো সাংবিধানিক সংকট হবে না; তখন নতুন সরকার গঠনের প্রশ্ন আসবে।
তাদের ব্যখ্যা হচ্ছে, অধ্যাপক ইউনূস চলে গেলে রাষ্ট্রপতি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করে দিতে পারেন, যে সরকার শুধু নির্বাচন করবে।
সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক পরিস্থিতিটাকে ব্যাখ্যা করেন ভিন্নভাবে। তিনি বলেন, আইনে কী বলা আছে, তা এখন ধর্তব্যের মধ্যে পড়ে না। কারণ আইন অনুযায়ী কিছু হচ্ছে না।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। তবে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর গত বছরের ডিসেম্বরে পঞ্চদশ সংশোধনীর আংশিক বাতিল করেছে হাইকোর্ট। যে অংশটি বাতিল করা হয়েছে তার ফলে দেশের সংবিধানে আবারো নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরে আসার পথ তৈরি হয়েছে।
শাহদীন মালিক বলছেন, অধ্যাদেশ দিয়ে সংবিধান পরিবর্তন করা যাবে না এবং পঞ্চদশ সংশোধনীর আংশিক বাতিল করে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরানোর সুযোগ করা হলো, এই সংশোধনী করার ক্ষমতা তো সংসদ ছাড়া কারো নাই। তাই, এখন জোড়াতালি দিয়ে চলতে হবে। এখন আর আইনের ভূমিকা নাই। আইন অনুযায়ী কিছু হচ্ছে না। সব আইনের বাইরে হচ্ছে। আইনের প্রশ্ন এখন অবান্তর।
‘পদত্যাগ করলে নতুন সরকার গঠনের প্রশ্ন আসবে’
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনার শাসনের পতনের পর ৮ আগস্ট মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয় এবং উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা শপথ নেন। এর আগে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের বিষয়ে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের কাছে মতামত চেয়ে রেফারেন্স পাঠান।
তখন আদালত উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ করানোর অনুমতি দেয়। শাহদীন মালিক বলেছেন, রাজনৈতিক বাস্তবতার কারণে সংবিধানের বাইরে গিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। কিন্তু আপিল বিভাগের বড় দুই রায়ে বলা আছে— এটি করা যায় না। কোনো কিছুর দোহাই দিয়ে যা অসাংবিধানিক, তাকে সাংবিধানিক বলা যাবে না।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরসেদও মনে করেন, গণঅভ্যুত্থানের মুখে আ'লীগ সরকারের পতনের পর একটি শূন্যতা তৈরি হয়েছিলো। তখন প্রয়োজনের তাগিদে একটি সরকার গঠন করা হয়েছে এবং সরকারের বৈধতা নিয়ে কেউ কোনো আপত্তি করে নাই, এটির আইনগত প্রশ্নও তখন উত্থাপন হয় নাই।
তবে মুহাম্মদ ইউনূস যদি পদত্যাগ করেন, তাহলে কোনো সাংবিধানিক সংকট হবে না উল্লেখ করে মনজিল মোরসেদ বলেন, উনি পদত্যাগ করলে নতুন সরকার গঠনের প্রশ্ন আসবে। উনি যদি থাকেনও, নির্বাচন করতে গেলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নাম দিয়ে সরকার গঠন করা যাবে।
আরও পড়ুন
আইনজীবী মনজিল মোরসেদের মতে, গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রয়োজন ছিল। এখন তা নাই। এখন নির্বাচন দরকার। তাই, নির্বাচন যদি 'নেসেসিটি' হয়, তাহলে নতুন করে আবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের দরকার নেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করলেই হবে।
তিনি পঞ্চদশ সংশোধনীর আংশিক বাতিলের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, নির্বাচন দিতে গেলে এই সরকারের আর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার থাকার সুযোগ নাই। তাদেরকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে। কারণ আদালতের রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়েআনার সুযোগ রাখা হয়েছে। আইনে এভাবেই আছে যে, নির্বাচন করবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার।
এই আইনজীবীর মতে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারে বর্তমানে সরকারের উপদেষ্টা পরিষদও থাকতে পারে। আবার, রাষ্ট্রপতির মনোনয়নক্রমে নতুন করেও পরিষদ সাজানো যেতে পারে।
নিয়ম অনুযায়ী, নির্বাচনের অন্তত ৯০ দিন আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের সময় আদালত থেকে রেফারেন্স আনা হয়েছিলো। তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের ক্ষেত্রে ওই রেফারেন্সের প্রয়োজন নেই বলেও মনে করেন মনজিল মোরসেদ। তবে ড. ইউনূস যদি পদত্যাগ করেন, তাহলে তার উপদেষ্টা পরিষদ কি বহাল থাকবে?
জবাবে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ওনাদেরকে প্রধান উপদেষ্টা মনোনীত করেছেন যে আমার সঙ্গে কাজ করেন। উনি না থাকলে অন্যদেরও থাকার সুযোগ নাই।
একইসঙ্গে তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান যদি অন্য উপদেষ্টাদের রাখতে চান, রাখতে পারেন।
আইনজীবী শাহদীন মালিকও বলেছিলেন, ইচ্ছামতো করলে তো যা ইচ্ছা তা করা যায়।
তবে তিনি মনে করেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করলে পরবর্তী সরকার প্রধান নির্বাচনের জন্য প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে একজন ব্যক্তির ব্যাপারে ঐকমত্যে যেতে হবে।
ঠিক কী কারণে প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করতে চাইছেন, এর ব্যাখ্যা সরকারের কেউ দেয়নি।
তবে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের বক্তব্য থেকে এ বিষয়ক ধারণা পাওয়া যায়।
তিনি মুহাম্মদ ইউনূসের বরাতে বৃহস্পতিবার রাতে বিবিসিকে বলেছেন– প্রধান উপদেষ্টা দেশের চলমান পরিস্থিতিতে কাজ করতে পারবেন না, এমন শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। আমিতো এভাবে কাজ করতে পারবো না। তো রাজনৈতিক দলগুলা তোমরা সবাই একটা জায়গায়, কমন জায়গায় না পৌঁছাতে পারো।
নাহিদ ইসলামের বক্তব্য থেকে এটি স্পষ্ট যে, প্রধান উপদেষ্টা মনে করছেন, বাংলাদেশের চলমান বাস্তবতায় তিনি আসলে কাজ করতে পারছেন না। তাই, পদত্যাগের কথা ভাবছেন।
পদত্যাগ সংক্রান্ত ইস্যুতে এখন পর্যন্ত সরকারের দায়িত্বশীল পর্যায় থেকে কেউ কোনো মন্তব্য করেননি। তবে অধ্যাপক ইউনূস ঢাকাসহ সারাদেশে চলমান একের পর আন্দোলনের কারণে সরকার যে বেকায়দায়, পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসানের বক্তব্যে তা স্পষ্ট।
তিনি আজ শুক্রবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠান শেষে বলেন, আমাদের তিনটা দায়িত্ব; সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন। শুধুমাত্র নির্বাচন করার জন্য আমরা দায়িত্ব নেইনি। তবে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে যার যতো রকম দাবি আছে সব দাবি নিয়ে রাস্তায় বসে রাস্তা আটকে দিচ্ছে, শহর অচল করে ফেলছে।
সন্ধ্যায় বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে বৈঠক প্রধান উপদেষ্টার

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের আলোচনায় রাজনৈতিক অঙ্গনে এক ধরনের গুমট পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি দলের পক্ষ থেকে তাকে পদত্যাগ না করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এই অবস্থার মধ্যে আজ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করবেন ড. ইউনূস।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিএনপিকে সাক্ষাতের সময় দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় হতে যাওয়া এই বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন
বিএনপির মিডিয়া সেলের অন্যতম সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির বৈঠক রয়েছে।
তবে, বৈঠকে কারা কারা অংশ নেবেন জানতে চাইলে শায়রুল কবির বলেন, এই বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
অন্যদিকে, রাত সাড়ে ৮টায় জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে প্রধান উপদেষ্টার। জামায়তের পক্ষ থেকে দলটির আমির ড. শফিকুর রহমান।
দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, দেশে চলমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইতোমধ্যে জামায়াতে ইসলামীর আমির সর্বদলীয় বৈঠক ডাকতে প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সার্বিক বিষয়াদি নিয়ে আলাপ করতে আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে সময় চেয়েছিলাম। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে আমাদের আজকে রাতে সাক্ষাতের সময়সূচি জানানো হয়েছে।
কাল খোলা থাকছে সব সরকারি অফিস

সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামীকাল শনিবার (২৪ মে) খোলা থাকছে সব সরকারি অফিস। গত শনিবারও (১৭ মে) এসব অফিস খোলা ছিল।
এর আগে গত ৬ মে সচিবালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় নির্বাহী আদেশে ১১ ও ১২ জুন (বুধ ও বৃহস্পতিবার) ছুটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া ঈদের আগে দুই শনিবার অফিস চালু রাখারও সিদ্ধান্ত হয়।
নির্বাহী আদেশে দুদিন ছুটির ফলে আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে সব মিলিয়ে টানা ১০ দিনের ছুটি মিলছে সরকারি চাকরিজীবীদের। ছুটি শুরু হবে আগামী ৫ জুন, শেষ হবে ১৪ জুন।
উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত ৭ মে ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে আগামী ১১ ও ১২ জুন নির্বাহী আদেশে ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
একই সঙ্গে আগামী ১৭ ও ২৪ মে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে অফিস খোলা থাকবে বলেও প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অ্যালোকেশন অব বিজনেস অ্যামং দি ডিফারেন্ট মিনিস্ট্রিস অ্যান্ড ডিভিশনস-এর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় অংশের ৩৭ নম্বর ক্রমিকের অনুবলে সরকার আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে ১১ ও ১২ জুন (বুধবার ও বৃহস্পতিবার) নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি এবং দাপ্তরিক কাজের স্বার্থে ১৭ মে (শনিবার) ও ২৪ মে (শনিবার) সাপ্তাহিক ছুটির দিনে অফিস খোলা রাখার ঘোষণা করা হলো। ছুটিকালীন সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে এবং সাপ্তাহিক ছুটির ওই দুই দিন (১৭ ও ২৪ মে) সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস খোলা থাকবে।
এতে আরও বলা হয়, জরুরি পরিষেবা যেমন- বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরগুলোর কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা এবং এ সংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীরা এই ছুটির আওতার বাইরে থাকবেন।
হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এ সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা এই ছুটির আওতার বাইরে থাকবে। চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মীরা এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মীরা এই ছুটির আওতার বাইরে থাকবেন বলেও প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়।
এতে বলা হয়, জরুরি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত অফিসগুলো এই ছুটির আওতার বাইরে থাকবে।
মন্তব্য