ঢাকা, সোমবার, ১৮ আগস্ট ২০২৫ ৩ ভাদ্র ১৪৩২
 
শিরোনাম

ড. ইউনূসের নিজস্ব কোনো সম্পত্তি নেই : প্রেস সচিব

অনলাইন ডেস্ক
১২ মে, ২০২৫ ২০:০
অনলাইন ডেস্ক
ড. ইউনূসের নিজস্ব কোনো সম্পত্তি নেই : প্রেস সচিব

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নিজস্ব কোনো সম্পত্তি নেই বলে দাবি করেছেন তাঁর প্রেস সচিব শফিকুল আলম। 

তিনি বলেন, আমার জানা মতে উনার ব্যক্তিগত কোনো সম্পত্তি নেই। তিনি নিজে একটা গাড়িও ওন (ব্যক্তিগত গাড়ি নেই) করেন না।

সোমবার (১২ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মিট দ্যা রিপোর্টার্স অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হওয়ার পর ড. ইউনূস গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয়, গ্রামীণ এমপ্লয়মেন্ট এজেন্সিসহ বেশ কিছু সুবিধা নিয়েছেন-- এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, আপনি দেখুন এখানে (এসব প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন পাওয়ার ক্ষেত্রে) অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ বা ভূমিকা আছে কি না আর যেসব প্রতিষ্ঠানের কথা বলছেন সেগুলোর কোনোটাই ড. ইউনূসের ব্যক্তিগত কি না? এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তার কোনো শেয়ার আছে? এসব প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি কোনো সুবিধা পান? আসলে কি এগুলো ড. ইউনূসের প্রতিষ্ঠান? গ্রামীণ নামটা না হয় ড. ইউনূস দিয়েছেন। তিনি এসব প্রতিষ্ঠানের একটা শেয়ারের মালিক কি না? উনার ব্যক্তিগত কোনো সম্পত্তি আছে কোথাও? কেউ দেখাতে পারবে?

তিনি আরও বলেন, আপনারা বের করে দেখান যে এসব প্রতিষ্ঠান পাওয়ার ক্ষেত্রে আমরা বা সরকার কোনো ভূমিকা রেখেছে। আমি সবাইকে এসব বিষয়ে তদন্ত করার অনুরোধ জানাই।

গ্রামীণ এমপ্লয়মেন্ট এজেন্সি ২০০৯ সালে আবেদন করেছিল। ওই সময়ে ড. ইউনূস সৌদি আবর গিয়েছিলেন, সেখানে সৌদি ও জার্মানের একটা হাসপাতাল চেইন তাকে বলেছেন আপনি নার্স এবং হাসপাতাল স্টাফ পাঠান। তারা বাংলাদেশের নিয়মিত কর্মী পাঠানো এজেন্সির মাধ্যমে নেবে না। কারণ ড. ইউনূসের মাধ্যমে নিলে খরচ একদম সীমিত পর্যায়ে থাকবে। সেই আলোকে শেখ হাসিনার সরকারের আমলে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তারা অনুমোদন দেয়নি। এখন ২০২৪ সালের পর যদি লাইসেন্সের অনুমোদন পায় তাহলে দোষ কী? বাংলাদেশে এরকম সাড়ে ৩ হাজার এজেন্সি আছে।


তিনি আরও বলেন, তিনি গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয় করতে চেয়েছিলেন ২০১২-১৪ সালের মধ্যে। ২০১৪ সালে পূর্বাচলে তার ২-৩ শত বিঘা জমি কেনা হয়েছিল। তখন যতবারই বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছে আবেদন নিয়ে গিয়েছিলেন, ততবারই তারা বলেছিলেন আবেদন জমা দিয়েন না। আমরা অনুমতি দিতে পারব না। এখন গত ৬ মাস অডিট করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

শফিকুল আলম বলেন, তিনি এখানে পুরো বিশ্বের বিখ্যাত অধ্যাপকদের আনতে চেয়েছিলেন, যেন একটা বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় হয়।

মন্তব্য

ঈদযাত্রায় ‘যাত্রীপ্রতি ২০০ টাকা’ অতিরিক্ত ভাড়া চান বাস মালিকরা!

অনলাইন ডেস্ক
১২ মে, ২০২৫ ১৯:১২
অনলাইন ডেস্ক
ঈদযাত্রায় ‘যাত্রীপ্রতি ২০০ টাকা’ অতিরিক্ত ভাড়া চান বাস মালিকরা!

ঈদের সময় যাত্রীর গন্তব্য থাকে একমুখী। ফলে ফিরতি ট্রিপে মালিকদের বাস চালাতে লোকসান হয়। এছাড়া অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের ভোগান্তি থেকে মুক্তি দিতে ঈদে বাসযাত্রায় যাত্রীপ্রতি ২০০ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করেছেন বাস মালিকরা। এমন দাবিতে বাস যাত্রী, যাত্রী কল্যাণ সমিতি এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় অবাক হয়েছেন।

সোমবার (১২ মে) রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে ঈদ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অংশীজন সভায় এ দাবি জানান বাস মালিকরা।

এ বিষয়ে সাধারণ যাত্রী মো. রিপন মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমাদের এমনি ঈদের সময় বাস মালিকরা জিম্মি করে। এই ২০০ টাকা যদি আরও বাড়ায় তবে সেটি জুলুম হয়ে যাবে। এটা আমাদের প্রতি অন্যায় হবে। দিন দিন আমরা সবকিছুতেই হেনস্তা হচ্ছি। এটা কেন হবে?’

এ বিষয়ে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা লিংকন মো. লুৎফরজামান সরকার বলেন, ‘প্রতি ঈদে সরকারের কাছে এ রকম ২০০ টাকা, কিছু টাকা ভাড়া বাড়ানোর দাবি করা হয়। তারপর যে যার মতো ভাড়া নির্ধারণ করেন। এরপর সরকারের আর কোনো তদারকি থাকে না। ফলে যাত্রীদের বাড়তি খরচ গুণতে হয়। এ ছাড়া এসি বাসের ভাড়া নিয়েও সরকারের দৃষ্টি দেওয়া উচিত। কারণ এখানে কোনো নির্দেশনা না থাকায় যে যার মতো করে ভাড়া আদায় করেন। মোটকথা সড়কে শৃঙ্খলা আনার জন্য সরকারের তদারকির বিকল্প নেই।’

অংশীজন সভায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব সাইফুল আলম বলেন, ‘অতিরিক্ত ভাড়া না নেওয়ার বিষয়ে প্রতিটি টার্মিনালে মালিক, শ্রমিক সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া আছে। এজন্য আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি। কিন্তু প্রকৃত বিষয় হলো— ঈদে একমুখী যাত্রী হয়ে যায়। আমাদের হিসাব হচ্ছে বাসে যদি ৭৫ শতাংশ যাত্রী হয়, সেক্ষেত্রে ১০ শতাংশ লাভ হয়। কিন্তু ফেরার পথে ২৫ শতাংশ যাত্রী হলেও তাতে লস হয়। এ কারণে সব নির্দেশনা দেওয়ার পরও ওই সময়ে এই কাজ (অতিরিক্ত ভাড়া আদায়) করা হয়ে থাকে। যেমন- একমুখী যাত্রার বিষয়ে বিমান বেশি ভাড়া নিয়ে খরচ পুষিয়ে থাকে। আমরা সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব দিয়েছি ঈদের বিশেষ দিনগুলোতে যদি বাড়তি ভাড়া ধরে দেওয়া যায় তাহলে এটি রোধ করা সম্ভব হবে।’

এমন সময় জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে সড়ক উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে জানানো হয়, ‘গত ঈদুল ফিতরে পর্যবেক্ষণে আমরা দেখেছি কোন পরিবহন, কত টাকা ভাড়া নিয়েছে। আমাদের কাছে সেগুলোর লিস্ট আছে। আপনি চাইলে সেগুলো সরবরাহ করতে পারব। আমরা দেখেছি, নন-এসি বাসের ক্ষেত্রে ১০-৩০ শতাংশ অতিরিক্ত ভাড়া নিয়েছে পরিবহনগুলো। ভাড়ার চার্টের সঙ্গে আমরা তুলনা করেছি। কিন্তু এসি বাসের ক্ষেত্রে কোনো নীতিমালা না থাকায় এটার কোন বাধ ছিলো ন। আমরা দেখেছি এসি বাসে ৫০-১০০ শতাংশ ভাড়া তারা বেশি নিয়েছে।’

পরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি এম এ বাতেন বলেন, ‘আমরা চেয়েছি ঈদের আগে ৭ দিন ও ঈদের পরে ৭ দিন যাত্রীপ্রতি ২০০ টাকা। স্থায়ী ভাড়া বৃদ্ধির কোনো বিষয় এখানে রাখি নাই। কোনো বাস যদি ঢাকা থেকে যাত্রী বোঝাই করে খুলনা নিয়ে যায়, তবে আসার সময় একজন যাত্রীকেও আনতে পারে না। সেক্ষেত্রে যদি আমাদের এমন লস দিতে হয়, তাহলে একটি বাস ঈদের আগে যাবে এবং ঈদের পরে ছাড়া আসতে পারবে না। যদি এটি কনসিডার করা না হয়।’

ঈদে ৬ দিন মহাসড়কে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান চলাচল বন্ধ

এমন সময় বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-ময়মনসিংহসহ অনেক রুটে ঈদের সময়ও উভয়মুখী যাত্রী হয়। এ বিষয়ে একটি সমীক্ষার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি।’

পরে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ভাড়ার বিষয়টি আমরা ঈদের পরে দেখব।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হক, সেতু সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফ, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম প্রমুখ।

মন্তব্য

ঈদুল আজহা : ২১ মে শুরু হবে ট্রেনের আগাম টিকেট বিক্রি

অনলাইন ডেস্ক
১২ মে, ২০২৫ ১৮:১৩
অনলাইন ডেস্ক
ঈদুল আজহা : ২১ মে শুরু হবে ট্রেনের আগাম টিকেট বিক্রি

আগামী ৭ জুনকে পবিত্র ঈদুল আজহার দিন ধরে ট্রেনের টিকিট অগ্রিম বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। বরাবরের মতো এবার ঈদের আগে বিশেষ ব্যবস্থায় ৭ দিনের ট্রেনের টিকিট বিক্রি করবে রেলওয়ে। ঈদ উপলক্ষ্যে ঘরমুখো মানুষের এই ট্রেন যাত্রার টিকিট বিক্রি শুরু হবে আগামী ২১ মে থেকে। যাত্রীদের সুবিধার্থে এবারও শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হবে।

সোমবার (১২ মে) রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে আয়োজিত অংশীজন সভায় এসব তথ্য জানান রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম।

সভায় তিনি বলেন, ৩১ মে থেকে যাত্রা শুরুর ১০ দিন আগের আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট অগ্রিম হিসেবে বিক্রি করা হবে। পশ্চিমাঞ্চলে চলাচল করার সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট সকাল ৮টায় এবং পূর্বাঞ্চলে চলাচল করা সব ট্রেনের টিকিট ২টায় বিক্রি শুরু হবে।

অগ্রিম টিকিট বিক্রির তারিখ ঘোষণা করে তিনি বলেন, ঈদের আগে আন্তঃনগর ট্রেনের ৩১ মে’র টিকিট বিক্রি হবে ২১ মে; ১ জুনের টিকিট বিক্রি হবে ২২ মে; ২ জুনের টিকিট বিক্রি হবে ২৩ মে; ৩ জুনের টিকিট বিক্রি হবে ২৪ মে; ৪ জুনের টিকিট বিক্রি হবে ২৫ মে; ৫ জুনের টিকিট বিক্রি হবে ২৬ মে এবং ৬ জুনের টিকিট বিক্রি হবে ২৭ মে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হক, সেতু সচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফ প্রমুখ।

প্রাসঙ্গিক
মন্তব্য

আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধে প্রজ্ঞাপন জারি

অনলাইন ডেস্ক
১২ মে, ২০২৫ ১৭:৯
অনলাইন ডেস্ক
আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধে প্রজ্ঞাপন জারি

বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ।

সোমবার বিকালে সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি সরকার গঠনের পর থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সদস্য ও ভিন্নমতের মানুষের ওপর হামলা, গুম, খুন, হত্যা, নির্যাতন ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন নিপীড়নমূলক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সারা দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।

এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গ সংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের বিরুদ্ধে গত ১৫ জুলাই থেকে ০৫ আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে গুম, খুন, পুড়িয়ে মানুষ হত্যা, গণহত্যা, বেআইনি আটক, অমানবিক নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাসী কার্য ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে এবং এসব অভিযোগ দেশি ও আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যেহেতু উল্লিখিত অপরাধগুলোর অভিযোগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গ সংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং দেশের ফৌজদারি আদালতে বহুসংখ্যক মামলা বিচারাধীন রয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, যেহেতু এসব মামলার বিচারে প্রতিবন্ধকতা তৈরি, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি, বাংলাদেশের সংহতি, জননিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার লক্ষ্যে গত ০৫ আগস্ট ২০২৪ খ্রি. পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গ সংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন কর্তৃক গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা, উসকানিমূলক মিছিল আয়োজন, রাষ্ট্রবিরোধী লিফলেট বিতরণ এবং ভিনদেশে পলাতক তাদের নেত্রীসহ অন্য নেতাকর্মী কর্তৃক সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অপরাধমূলক বক্তব্য প্রদান, ব্যক্তি ও প্রজাতন্ত্রের সম্পত্তির ক্ষতিসাধনের প্রচেষ্টাসহ আইনশৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ড পরিলক্ষিত হয়েছে। এসব কর্মকাণ্ডে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে, দলটি এবং এর সব অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের মামলার বাদী ও সাক্ষীদের মনে ভীতির সঞ্চার করা হয়েছে ও এভাবে বিচার বিঘ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং সার্বিকভাবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়েছে,​ যেহেতু সরকারের নিকট যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গ সংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল ও অকার্যকর করার লক্ষ্যে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকাসহ জনমনে ভীতি সঞ্চারের উদ্দেশে সন্ত্রাসী সংগঠনের মতো বিভিন্ন বেআইনি কার্যকলাপ ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। যেহেতু সরকার যুক্তিসংগতভাবে মনে করে সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯-এর ধারা-১৮(১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গ সংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দলটি এবং এর সব অঙ্গ সংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা সমীচীন।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে,​ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গ সংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সব অঙ্গ সংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন কর্তৃক যে কোনো ধরনের প্রকাশনা, গণমাধ্যম, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে কোনো ধরনের প্রচারণা, মিছিল, সভা-সমাবেশ, সম্মেলন আয়োজনসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।

গত বছরের জুলাই অগাস্টের আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। শনিবার (১০ মে) রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক থেকে এ সিদ্ধান্ত আসে। বৈঠক শেষে সরকারের সিদ্ধান্তের কথা জানান উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। 

মন্তব্য

মিরপুরে জোড়া খুন

সাইকেল কিনতে এসে টাকা চুরি, দেখে ফেলায় দুই খালাকে খুন করে ভাগনে

অনলাইন ডেস্ক
১২ মে, ২০২৫ ১৬:৫৮
অনলাইন ডেস্ক
সাইকেল কিনতে এসে টাকা চুরি, দেখে ফেলায় দুই খালাকে খুন করে ভাগনে

সাইকেল কিনতে খালার বাসায় এসেছিল ভাগনে (১৪)। খালার অগোচরে মানিব্যাগ থেকে ৩০০০ টাকা বের করার সময় ধরা পড়ে যায়। মাকে বলে দিতে চাওয়ায় টেবিলে থাকা ছুরি দিয়ে প্রথমে বড় খালাকে, পরে তার চিৎকারে ছুটে আসা ছোট খালাকে ছুরিকাঘাত করে এবং শিলপাটা দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে।

রাজধানীর মিরপুরের শেওড়াপাড়ায় জোড়া খুন করে পোশাক বদলে বাসা থেকে বের হয়ে যায় সে। পরে খালাদের জানাজায়ও অংশ নেয়। পুলিশের তদন্ত কাজেও সে সহযোগিতা করে এবং নানাভাবে আড়িপাতার চেষ্টা করে।

পরে ডিবি পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ ও পারিপার্শ্বিক তদন্তের ভিত্তিতে তাকে শনাক্তের পর গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে দুই খালাকে খুন করেছে বলে স্বীকার করে সে।

সোমবার (১২ মে) বিকেল সোয়া ৪টায় ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ডিবি-দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, মামলার বাদী নুসরাত জাহান ভিকটিম মরিয়ম বেগমের মেয়ে ও অপর ভিকটিম সুফিয়া বেগমের ভাগনি। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গত শুক্রবার (৯ মে) রাত ১২টায় গ্রেপ্তার ওই শিশু যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়ার বাসা থেকে প্রাইভেট পড়ার জন্য পাঞ্জাবি পরে বের হয়। কিন্তু সে বাসা থেকে বের হয়ে প্রাইভেট পড়তে না গিয়ে সাইকেল কেনার উদ্দেশ্যে তার বড় খালার (মরিয়ম বেগম) শেওড়াপাড়ার বাসায় যায়।

সিএনজির ভেতরেই সে পাঞ্জাবি চেঞ্জ করে নীল রঙের টিশার্ট পরিধান করে। তারপর শেওড়াপাড়া মেট্রোরেলের নিচে নেমে একটি লাল রঙের ক্যাপ মাথায় ও মুখে মাস্ক পরে আনুমানিক ১২টা ৫০ মিনিটে বড় খালার বাসায় পৌঁছায়। গেটে তালা না থাকায় সে গেট খুলে দ্বিতীয় তলায় তার বড় খালার রুমে নক করলে তিনি চাবি দিয়ে দরজা খুলে দেন।

বাসায় প্রবেশের পর বড় খালা তাকে জিজ্ঞাসা করে তুমি একা আসছ নাকি তোমার মা সাথে আসছে? তখন সে বলে মা আসতেছে, আমি আগে চলে আসছি। তখন তার বড় খালা তাকে আপ্যায়ন করার জন্য শরবত বানানোর কাজে ব্যস্ত থাকেন এবং সেজো খালা (সুফিয়া বেগম) প্লেট বাটি ধোয়ামোছা করে বারান্দার দিকে যান।

এই সুযোগে সে বড় খালার রুমে টিভির পাশে রাখা মানিব্যাগ থেকে পুরাতন সাইকেল কেনার জন্য তিন হাজার টাকা চুরি করে। বিষয়টি তার বড় খালা দেখে ফেললে তাকে গালাগালি ও বকাবকি করেন। বলেন, তোর স্বভাব ভালো হবে না, তুই চুরি করার জন্য আমার বাসায় আসছিস, তোর মাকে এখনই জানাচ্ছি। তখন তার খালা তার মাকে ফোন দেওয়ার জন্য মোবাইল খুঁজতে থাকেন। সেই মুহূর্তে সে ডাইনিং টেবিলে থাকা লেবু কাটার ছুরি দিয়ে প্রথমে বড় খালার পেটে আঘাত করে। তখন বড় খালা আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে মারতে উদ্যত হলে সে পুনরায় আঘাত করে। তার বড় খালার বাচাঁও বাচাঁও বলে চিৎকার করলে শব্দ শুনে সেজো খালা (সুফিয়া) পেছনের অন্য একটি রুম থেকে এসে তাকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। তারপর সে ওই একই চাকু দিয়ে সেজো খালার পেটে একবার আঘাত করলে তিনি মেঝেতে পড়ে যান। বড় খালা তখনো চিৎকার করছিলেন।

তারপর সে রান্নাঘরের চুলার পাশ থেকে শিলপাটা এনে বড় খালার মাথায় একাধিকবার আঘাত করে। পরে সেজো খালাকেও আঘাত করে। তারপর সে বাথরুমে গিয়ে হাত ও মুখে লেগে থাকা রক্ত পানি দিয়ে পরিষ্কার করে। পাশের রুমে গিয়ে সে টিশার্ট ও জিন্স প্যান্টে রক্ত লেগে থাকায় পরিবর্তন করে খালাতো বোন মিষ্টির ব্যবহৃত একটি জিন্স প্যান্ট ও তার ব্যাগে থাকা আরেকটি রঙিন টিশার্ট ও ক্যাপ পরে। সে দরজা বাইরে থেকে তালা মেরে চাবি নিয়ে বের হয়ে শনির আখড়ায় যাওয়ার জন্য রাস্তায় এসে সিএনজিতে ওঠে।

কিছুদূর যাওয়ার পর বাসার চাবিগুলো ও তার পরিহিত ক্যাপ মেইন রোডে রাস্তার পাশে ফেলে দেয়। শনির আখড়া পৌঁছার পর চুরি করা ৩ হাজার টাকা থেকে ৪৫০ টাকা দিয়ে সিএনজি ভাড়া দেয় এবং বাকি টাকায় রক্ত লেগে থাকার কারণে রাস্তার পাশে ফেলে দেয়।

তারপর শনির আখড়ায় সিএনজি থেকে নেমে আয়শা মশার মার্কেটের (ইস্টার্ন শপিং সেন্টার) তৃতীয় তলার মসজিদের ওয়াশরুমে ঢুকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে ব্যাগে থাকা সকালে পরিহিত গোলাপী রঙের পাঞ্জাবি পুনরায় পরিধান করে। তার সঙ্গে থাকা ব্যাগের ভেতর থেকে রক্তমাখা কাপড়গুলো ভেন্টিলেটর দিয়ে ফেলে দেয়। তারপর বাসার সামনে এসে একটা বাড়ি যেখানে কেউ থাকে না, সেখানে তার জুতা জোড়া ছুড়ে মারে। তারপর বাসায় চলে যায়।

যুগ্ম কমিশনার নাসিরুল ইসলাম জানান, পরদিন ১০ মে বিকেলে তার সেজো খালাকে দাফন করার জন্য তার নানুর বাড়ি ঝালকাঠির উদ্দেশে রওয়ানা করে সে। পরে ১১ মে (রোববার) বিকেল সাড়ে ৩টায় ডিবি মিরপুর বিভাগের একটি টিম সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ ও  তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দুই খালা হত্যায় জড়িত শিশু ভাগনেকে ঝালকাঠি সদরের নানুর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে।

পরে তার দেখানো মতে ইস্টার্ন শপিং সেন্টারের পাশের সুয়ারেজ লাইনের ওপর থেকে নীল রঙের রক্ত মাখা টিশার্ট ও ব্লু কালারের রক্ত মাখা দুটি জিন্স প্যান্ট উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে একটি তার ও একটি তার খালাতো বোন মিষ্টির জিন্স প্যান্ট ছিল। তার বাসার সামনে নির্জন বিল্ডিংয়ের ওপর তার ফেলে দেওয়া জুতা জোড়াও উদ্ধার করা হয়।

ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার ওই শিশু আজ সোমবার চুরির ঘটনায় তার আপন দুই খালাকে হত্যা করার বিষয়ে আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে নাসিরুল ইসলাম বলেন, এখানে অন্য কারো সংশ্লেষ ছিল কি না, পারিবারিক সম্পত্তিজনিত কোনো দ্বন্দ্ব ছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

প্রাসঙ্গিক
    মন্তব্য
    সর্বশেষ সংবাদ
      সর্বাধিক পঠিত