আমরণ অনশনে চবির ১২ শিক্ষার্থী

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ফিজিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের ১২ শিক্ষার্থী দুই দফা দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন।
আজ শনিবার (২৪ মে) বেলা ১২টা ১৬ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই অনশনে বসেন তারা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, “আমরা স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে সেশনজটে ভুগছি। এ কারণে আমরা একাধিকবার আন্দোলন করেছি এবং প্রশাসনের শরণাপন্ন হয়েছি। কিন্তু আশানুরূপ কোনো সমাধান পাইনি। তাই বাধ্য হয়ে আমরণ অনশন শুরু করেছি।”
তাদের দুই দফা দাবি হলো—
১। সেশনজট নিরসন এবং সর্বোচ্চ চার মাসের মধ্যে ক্লাস ও পরীক্ষা শেষ করে প্রতিটি সেমিস্টার সম্পন্ন করা।
২। অন্তত আগামী ১২ মাস বা তিনটি সেমিস্টারের জন্য একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করা, যাতে ক্লাস শুরুর তারিখ, ফর্ম ফিলআপ ও পরীক্ষার রুটিন স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকবে এবং তা অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনার লিখিত প্রতিশ্রুতি প্রদান করতে হবে।
২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত বলেন, “আমাদের বিভাগ নানামুখী সমস্যায় জর্জরিত। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা যে ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা, তা পাচ্ছি না। এমনকি আমাদের একাডেমিক জীবন কবে শেষ হবে, সেটারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। আমরা অনেকদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি। প্রশাসনের আশ্বাসের পরও বাস্তবায়ন না হওয়ায় বাধ্য হয়ে অনশনে বসেছি।”
আরও পড়ুন
২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী পবিত্রতা রানী বলেন, “আমরা জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের আগেও আন্দোলন করেছি, কিন্তু কোনো সমাধান পাইনি। বর্তমান প্রশাসনের সাথেও কয়েকবার বৈঠক হয়েছে, কিন্তু তারা আমাদের আশ্বস্ত করতে পারেনি। আমাদের পড়াশোনা শেষ হতে হতে চাকরির বয়সসীমা পার হয়ে যাবে কিনা, সেটারও নিশ্চয়তা নেই। এতদিন ক্যাম্পাসে থাকায় যে খরচ হচ্ছে, তা আমাদের বাবা-মা বহন করছেন, যা অনেকের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই আমরা বাধ্য হয়ে অনশনে বসেছি।”
অনশনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন:
২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ক্যাসিং মার্মা ও স্বাধীন বসু মিয়া,
২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ওয়ালিউল্লাহ ও আনাম,
২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের আবু রাজিন মণ্ডল, তারেক মাহমুদ ও হাফসা কাওসার মিশু, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের বখতিয়ারুল ও মোহাম্মদ জাবেদ এবং ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের মিফতাহ জাহান মিম, পবিত্রতা রানী ও শ্রুতি রাজ।
অনশনে থাকা শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তাদের দুই দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা কোনো খাবার গ্রহণ করবেন না। প্রয়োজনে প্রশাসনিক ভবনের সামনেই দিন-রাত অবস্থান চালিয়ে যাবেন। তাদের মৃত্যু কিংবা যেকোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়ী থাকবে বলে জানান তারা।
বুটেক্সের ক্যাম্পাস এবং হলের সামনে অবৈধ স্থাপনা- উচ্ছ্বেদে ব্যর্থ প্রশাসন

বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) চারটি আবাসিক হলের সামনে দীর্ঘদিন ধরে ফুটপাতে রিকশার অবৈধ গ্যারেজ স্থাপন করে রাখা হয়েছে। এসব অবৈধ গ্যারেজের জন্য শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। তাছাড়া গ্যারেজের আড়ালে অনেকেই মাদক সেবন করে যেটি আবাসিক হলের পারিপার্শ্বিক পরিবেশ নষ্ট করছে। বিশেষ করে ছাত্রী হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা সন্ধ্যার পরে চলাচল করতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে।
শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্যোগে কয়েকবার অবৈধ স্থাপনা সরানোর চেষ্টা করলেও বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে তাদের পক্ষে এটি সরানো সম্ভব হয় নি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হলে তারা তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার সহযোগিতায় উচ্ছ্বেদ অভিযান চালায় কিন্তু কিছুদিন পর এই গ্যারেজ আবার দৃশ্যমান হয়। শিক্ষার্থীদের দাবী উচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপ ছাড়া এই কাজ সম্ভব নয়।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়াল সংলগ্ন ফুটপাথে অবৈধ ভাতের হোটেল দেয় স্থানীয়রা। এ নিয়ে বুটেক্স ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তনে শিক্ষার্থীরা সমালোচনা করে এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দাবী জানায়। বুটেক্সের সিকিউরিটি সেকশন হোটেলটি উচ্ছ্বেদ করতে গেলে হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, এটি ঢাকা পলিটেকনিকের একজন রাজনৈতিক নেতার নির্দেশে বসানো হয়েছে এবং তার নির্দেশ ছাড়া এই হোটেল সরানো হবে না।
আরও পড়ুন
পুলিশি পদক্ষেপ নিয়ে জানতে চাইলে জি.এম.এ.জি ওসমানী হলের ছাত্র প্রতিনিধি সৌমিক সাহা জানান, কিছুদিন আগে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা এবং হাতিরঝিল থানা থেকে কিছু পুলিশ এসে আশপাশের এলাকা পর্যবেক্ষণ করেন এবং রিকশার মহাজনদের মৌখিকভাবে জায়গা খালি করতে বলেন কিন্তু চোখে পড়ার মত কোন পদক্ষেপ তারা গ্রহন করেন নি।
বীর প্রতীক ক্যাপ্টেন সিতারা বেগম হলের ৪৯ তম ব্যাচের আবাসিক শিক্ষার্থী নওরিন আমিন বলেন, সন্ধ্যার পরে রিক্সার গ্যারেজের সামনে দিয়ে হাটতে অনিরাপদ বোধ হয়। বেশ কয়েকবার বাজে শব্দ ও ইভটিজিং এর স্বীকার হয়েছি। অন্ধকার জায়গায় রিক্সার স্তুপের কারণে চুরি, ছিনতাই, ইভটিজিংসহ আরো ভয়ানক কিছু হতে পারে। সবমিলিয়ে মেয়েদের হলের সামনে এই রিক্সার গ্যারেজ অপ্রীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে।
শহীদ আজিজ হলের শিক্ষার্থী নুজহাত ইসলাম নির্জন জানান, হলের ঠিক সামনেই কোন ধরনের কোন অবৈধ স্থাপনা না থাকলেও রাস্তার মাথায় এই ধরনের অনেক রিকশা এবং ভ্যানের গ্যারেজ আছে যা যাতায়াতের পথে অসুবিধে সৃষ্টি করে।
এই নিয়ে সিকিউরিটি সেকশনের এসিস্ট্যান্ট টেকনিকাল অফিসার ও সিকিউরিটি ইন্সপেকটর বাবুল আক্তারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, শুধু হল নয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশেও এই ধরনের গ্যারেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করছে। আমরা কয়েকবার চেষ্টা করার পর যখন দেখি এখানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ রয়েছে তখন আমরা বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের নিকট হস্তান্তর করি। তারাই বর্তমানে এটি নিয়ে কাজ করছেন।
গ্যারেজ উচ্ছ্বেদের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মাহবুবুর রহমান এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, এখানে শুধু পুলিশি সম্পৃক্ততা থাকলেই হবে না সিটি কর্পোরেশনকেও যৌথভাবে কাজ করতে হবে। মাননীয় উপাচার্য এই বিষয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। তিনি ব্যাপারটি পর্যবেক্ষনে রেখেছেন এবং খুব শীঘ্রই এই সমস্যার সমাধান হবে।
পুলিশ এবং সিটি কর্পোরেশন যৌথভাবে কাজ সম্পাদন করছে কিনা এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য ড. মো. জুলহাস উদ্দিন বলেন, আমি এ ব্যাপারে সিটি কর্পোরেশন সহ বিভিন্ন ঊর্ধ্বতন প্রশাসনকে জানিয়েছি। তারা বলেছে কেবল ক্যাম্পাস এবং হলই নয় বরং তারা পুরো তেজগাঁও এলাকার সমস্ত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছ্বেদ করবেন। তবে এখানে রাজনৈতিক কিছু ব্যাপার থাকার কারণে তাদের কিছুটা সময় লাগবে।
তেজগাঁও থানার ওসি আসলাম উদ্দীনের সাথে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এখানে নতুন জয়েন করেছি। আমার কাছে এ ধরণের কোন আবেদন আসে নি। ওই রাস্তাগুলো (বুটেক্সের হলের সামনের রাস্তাগুলো) সিটি কর্পোরেশনের অধীনে। তাই উচ্ছ্বেদ অভিযানের ব্যাপারে সিটি কর্পোরেশন থেকে আমাদের কাছে নির্দেশ আসলে আমরা ব্যবস্থা নিব। তাছাড়া উচ্ছ্বেদ অভিযান একটি জটিল প্রক্রিয়া। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আইনগতভাবে এ ব্যাপারে আগাতে হবে। আমরা আইনের বাইরে গিয়ে কিছু করতে পারব না।
খুবিতে নজরুল উৎসব-২০২৫ অনুষ্ঠিত

'২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে আবারও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে নজরুলের প্রাসঙ্গিকতা কত গভীর ও শক্তিশালী
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম-এর ১২৬তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে আজ ২৩ মে (শুক্রবার) খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ‘নজরুল উৎসব-২০২৫’ অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া প্রাঙ্গণে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা, গান ও সাহিত্য প্রতিটি প্রজন্মের জন্যই প্রাসঙ্গিক। তাঁর সৃষ্টির কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল তরুণ সমাজ। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে তরুণ ও যুব সমাজের অনুপ্রেরণার অন্যতম উৎস ছিল নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা ও সঙ্গীত। তবে নজরুলকে শুধু দ্রোহের কবি হিসেবে দেখলে তাঁর সাহিত্যিক বৈচিত্র্য ও গভীরতা অবমূল্যায়িত হয়। তিনি ছিলেন প্রেমের কবি, দ্রোহের কবি ও সাম্যের কবি- একই সঙ্গে মানবতার কণ্ঠস্বর। তাঁর সাহিত্য যুগে যুগে চর্চিত হয়েছে এবং তা আজও অনুকরণীয় ও অনুসরণীয়।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ নূরুন্নবী, একুশে পদকপ্রাপ্ত আবৃত্তিকার ভাস্বর বন্দোপাধ্যায় ও খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নূরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ। মুখ্য আলোচক হিসেবে কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্য ও সংগীতের উপর প্রাঞ্জল আলোচনা করেন বাংলা ডিসিপ্লিনের প্রধান প্রফেসর ড. মোঃ দুলাল হোসেন।
নজরুল উৎসব-২০২৫ উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ নাজমুস সাদাতের সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের প্রধান প্রফেসর ড. মাহমুদ আলম। অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট নজরুল সঙ্গীতশিল্পী প্রদীপ মহন্ত ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ভার্ঘব বন্দোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন
বক্তারা বলেন, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত- সকল প্রজন্মের জন্যই জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এক অবিনাশী অনুপ্রেরণার উৎস। তাঁর সৃষ্টিশীল কবিতা ও সংগীত যুগে যুগে তরুণদের জাগ্রত করেছে, জুগিয়েছে সাহস ও সংগ্রামের প্রেরণা। নজরুল বিশ্বাস করতেন, তরুণ সমাজ নিজের অন্তর্নিহিত শক্তিকে কাজে লাগাতে পারলে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন সম্ভব। এই সমাজে যতদিন শোষণ-নিপীড়ন থাকবে, ততদিন নজরুলের বিদ্রোহী চেতনার প্রয়োজন থাকবেই। নজরুল কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর সম্পদ নন- তিনি সমগ্র মানবজাতির।
বক্তারা আরও বলেন, আমাদের জাতীয় জীবনে নজরুলের প্রাসঙ্গিকতা কত গভীর ও শক্তিশালী, তা ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে আবারও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তাঁর আদর্শ, স্বপ্ন ও মূল্যবোধ যেন আগামীর সমাজকে আলোয় উদ্ভাসিত করে- এই প্রত্যাশাই ব্যক্ত করেন বক্তারা।
সভা সঞ্চালনা করেন ইংরেজি ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী সেলিম পারভেজ ও প্রিন্টমেকিং ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী খায়রুন নাহার। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভার পর শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে অতিথি শিল্পীদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও সংগীত, আবৃত্তি ও নৃত্য পরিবেশন করেন।
ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেন জবি শিক্ষার্থী ধ্রুব

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। জানা যায় ওই শিক্ষার্থীর নাম এ আর ধ্রুব। তিনি রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের (১৬ ব্যাচ) শিক্ষার্থী। তার বাড়ি রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দিতে।
আজ শুক্রবার (২৩ মে) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে তিনি তার ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার বিষয়টি জানান।
ধর্মান্তরিত হওয়ার পর এখন তার নাম আব্দুর রহমান ধ্রুব। তিনি ঢাকা দায়রা জজ থেকে হলফনামার মাধ্যমে তার নাম পরিবর্তন করেছেন।
হলফনামাতে তিনি ঘোষণা করেছেন 'আমি জন্ম সূত্রে বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক এবং আমি আইনতঃ যে কোন হলফ করার উপযুক্ত বটে। আমি একজন প্রাপ্ত বয়স্ক। আমি আমার বর্তমান ও ভবিষ্যত জীবনের যাবতীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতে সক্ষম ও ক্ষমতাবান।আমি জাতীতে হিন্দু ধর্মালম্বি ছিলাম। যদিও হিন্দু গোত্রে আমার জন্ম হইয়াছে কিন্তু আমি স্কুলে অধ্যায়ণকাল থেকেই আমার হিন্দু ধর্মের প্রতি অনীহা সৃষ্টি হয় এবং ইসলাম ধর্মের প্রতি আনুগত্য ও বিশ্বাস সৃষ্টি হয়। আমি হিন্দু পরিবারের সন্তান হইয়াও আমার অনেক মুসলমান বন্ধু-বান্ধবের সহিত অধিক উঠা বসা এবং চলাফেরা ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অব্যাহত যাতায়াত চলতে থাকে বিধায় হিন্দু ধর্মের সহিত আমার কিছুটা দুরত্ব তৈরী হয়। হিন্দু ধর্মের নিয়মকানুন আমার নিকট ভাল লাগে না। আমি ইসলামী বই-পুস্তক ও হিন্দু ধর্মাবলীরবই পুস্তক পড়ে অনেক ভেবে চিন্তে দেখেছি যে, ইসলাম ধর্ম হল একটি পূর্ণাঙ্গ ইহকাল ও পরকালের ধর্ম ইসলাম ধর্মের মধ্যে পার্থিব শান্তি ও কল্যাণ রয়েছে।'
আরও পড়ুন
ধ্রুব নিজের দীর্ঘ আত্মঅনুসন্ধান ও মানসিক সংগ্রামের কথা শেয়ার করে জানান, তিনি ঢাকা দায়রা জজ আদালত থেকে এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের ২৩ তারিখে ইসলাম গ্রহণের বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। তার এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সংবিধানসম্মত অধিকার বলেও তিনি জানিয়েছেন। সবার প্রতি আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, 'যারা সত্য খুঁজছেন, আমি শুধু বলব—একবার কুরআন পড়ুন খোলা মন নিয়ে। সত্য চাইলে, নিশ্চয়ই আল্লাহ পথ দেখাবেন। আমি সেই পথেই শান্তি পেয়েছি।'
ধ্রুব জানান, 'বহুদিন ধরে তিনি মানসিক বিষণ্ণতায় ভুগছিলেন এবং জীবনের নানা সংকটে পড়েছিলেন। সেই সময়গুলোতে তিনি একাধিকবার জীবনের আশা হারিয়ে ফেললেও, প্রতিবারই এক অদৃশ্য শক্তি তাকে রক্ষা করেছে বলে জানান তিনি। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি ধর্ম ও সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করতে শুরু করেন, যার উত্তর তিনি খুঁজে পান ইসলাম ধর্মে।
তিনি আরও বলেন, আমি একসময় বহু দেব-দেবীতে বিশ্বাস করতাম, কিন্তু গভীরভাবে শান্তি খুঁজে পাইনি। কুরআন পড়েই আমি প্রথম সেই প্রশ্নগুলোর জবাব পেয়েছি—কেন জন্মেছি, জীবনের উদ্দেশ্য কী?'
নিজের পরিবার ও পরিচিতজনদের উদ্দেশ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম করা পোস্টটিতে ধ্রুব বলেন, 'আমি জানি, সবাই এই সিদ্ধান্ত সহজভাবে নেবে না। তবে আমি চাই, আপনারা অন্তত একবার কুরআন পড়ুন—তর্কের জন্য নয়, সত্য জানার জন্য।'
চেম্বারে আপত্তিকর অবস্থায় আটক রাবির শিক্ষক-ছাত্রীকে সাময়িক বহিষ্কার

আপত্তিকর অবস্থায় নিজ চেম্বারে আটকের ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ফাইন্যান্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ হেদায়েত উল্লাহ ও একই বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্রীকে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩৯তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে জানিয়েছেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন।
এর আগে, গত ২১ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের একাডেমিক সভার সিদ্ধান্তমতে, অভিযুক্ত ওই শিক্ষক ও ছাত্রীকে বিভাগের সব কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।
এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য বলেন, ’তদন্ত প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত অভিযুক্ত শিক্ষক ও ছাত্রী বিভাগের কোনো ধরনের একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না বলে সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ঘটনা অধিকতর তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, গত ১১ মে সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনের ৩০৭ নম্বর কক্ষ থেকে ওই শিক্ষক এবং ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে স্নাতকোত্তরের (এমবিএ) এক ছাত্রীকে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করেন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত দুই সাংবাদিক ও দুই শিক্ষার্থী।
আরও পড়ুন
পরে ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে ওই শিক্ষক দাবি করেন, ভিডিও প্রকাশ না করার জন্য দুজন ক্যাম্পাস সাংবাদিক, একজন সাবেক সহসমন্বয়ক ও একজন ছাত্র ৩ লাখ টাকা চাঁদা নিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলন করে ওই ছাত্রীও একই দাবি করেন। একই দিন সংবাদ সম্মেলন করে সাজ্জাদ হোসেন সজীব ও সিরাজুল ইসলাম সুমন নামের দুই সাংবাদিক দাবি করেন, তারা চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত নন।
যদিও অভিযোগ ওঠার পর তাঁরা চাকরি হারিয়েছেন। সজীব কালবেলা ও সুমন খবরের কাগজের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ছিলেন। দুজনকেই প্রতিষ্ঠান দুটি অব্যাহতি দিয়েছে। সুমন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (রাবিসাস) সহসভাপতি ও সজীব যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। অভিযোগ সামনে আসার পর সংগঠন থেকেও তাঁদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ওই শিক্ষক বাদী হয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে গত ২০ মে নগরের মতিহার থানায় সাবেক সহসমন্বয়ক, দুই সাংবাদিকসহ চার শিক্ষার্থীর নামে মামলা করেন। দুই সাংবাদিক ছাড়া অভিযুক্ত অন্য দুজন হলেন—আইবিএ দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আতাউল্লাহ এবং আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব। টাকা দেওয়া নিয়ে শিক্ষক হেদায়েত উল্লাহ ও নাজমুস সাকিবের একটি কল রেকর্ডও ছড়িয়ে পড়ে।
পরে ২১ মে ওই শিক্ষক ও ছাত্রীকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ফাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তাঁরা অভিযুক্ত ছাত্রী-শিক্ষক এবং চাঁদা গ্রহণকারী চার শিক্ষার্থীর স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি করেন। পরদিনই সিন্ডিকেট সভায় শাস্তি পেলেন অভিযুক্ত শিক্ষক-ছাত্রী।
মন্তব্য