১ ম্যাচে ২ বিশ্বরেকর্ড গড়লেন আফ্রিদি

ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর তারোবার ব্রায়ান লারা ক্রিকেট একাডেমিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ইতিহাস গড়ে ফেললেন পাকিস্তানের পেসার শাহীন শাহ আফ্রিদি। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ৪ উইকেট নিয়ে নতুন মাইলফলক গড়লেন। এক ম্যাচেই গড়লেন দুটো বিশ্বরেকর্ড।
এদিন তিনি ৮ ওভারে ৫১ রান দিয়ে তুলে নিয়েছেন ৪ উইকেট। তাতেই তিনি পুরুষদের ওয়ানডেতে (আইসিসির ফুল মেম্বার দেশগুলোর মধ্যে) সেরা স্ট্রাইক রেটের রেকর্ডের মালিক হয়ে গেছেন। এখন তার স্ট্রাইক রেট ২৫.৪। এর আগে এই রেকর্ড ছিল মোহাম্মদ শামির দখলে। তার স্ট্রাইক রেট ছিল ২৫.৮।
শুধু স্ট্রাইক রেট নয়, শাহীন আরও এক বিশ্বরেকর্ডের মালিক হয়েছেন। প্রথম ৬৫ ওয়ানডেতে তার উইকেট সংখ্যা এখন ১৩১, যা এই পর্যায়ে কোনো বোলারের সর্বোচ্চ।
এর আগে মিচেল স্টার্ক ও রশিদ খান ১২৯ উইকেট নিয়ে যৌথভাবে শীর্ষে ছিলেন। গড়ে প্রতি ম্যাচে দুইয়ের বেশি উইকেট পাওয়া এই তালিকায় একমাত্র বোলারও তিনি।
সে ম্যাচে পাকিস্তান টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং নেয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪৯ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ২৮০ রান করে। এভিন লুইস ৬০, শাই হোপ ৫৫ এবং রোস্টন চেজ ৫৩ রান করেন। শাহীন ৪ উইকেটের পাশাপাশি নাসিম শাহ নেন ৩ উইকেট।
জবাবে পাকিস্তান ৪৮.৫ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে। বাবর আজম করেন ৪৭, মোহাম্মদ রিজওয়ান ৫৩, আর ম্যাচসেরা হাসান নওয়াজ ৫৪ বলে অপরাজিত ৬৩ রান করেন। হুসেইন তালাতও অপরাজিত থাকেন ৪১ রানে। একসময় ১৮০ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়লেও নওয়াজ ও তালাত জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন দলকে।
অস্ট্রেলিয়া সিরিজেই শেষ হচ্ছে রোহিত-কোহলির আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার!

গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতে ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ত সংস্করণকে বিদায় জানিয়েছিলেন রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি। এরপর সাদা পোশাকের ক্রিকেটকেও বিদায় জানিয়েছেন এই দুই কিংবদন্তি ক্রিকেটার।
টি-টোয়েন্টি ও টেস্টকে বিদায় জানালেও রোহিত-কোহলি ওয়ানডে থেকে এখনও অবসর নেননি। হয়তো ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপে চোখ রাখছেন এই দুই ক্রিকেটার। দুজনের মধ্যে রোহিতের বয়স এখন ৩৮, কোহলির ৩৬। ওয়ানডে বিশ্বকাপ আসতে আসতে একজন ৪০ ও অন্যজন ৩৮-এ পা দেবেন। বিশ্বকাপ সামনে রেখে তাদের না টেনে ভারত দায়িত্ব তুলে দিতে চায় তরুণদের হাতে।
তিনটি ওয়ানডে খেলার জন্য ভারত আগামী অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়া সফরে যাবে। ১৯ অক্টোবর প্রথম, ২৩ অক্টোবর দ্বিতীয় ও ২৫ অক্টোবর হবে তৃতীয় ম্যাচ। ওই সিরিজ দিয়ে রোহিত-কোহলির আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ দেখছে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই)। বোর্ডের একটি সূত্রের বরাত দিয়ে এই খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দৈনিক জাগরণ।
রোহিত এখন ওয়ানডে অধিনায়ক। তিনি অবসরে গেলে কার হাতে নেতৃত্বের ভার উঠবে? টেস্টে উঠেছে শুভমান গিলের হাতে, ওয়ানডেতেও তাকেই অধিনায়ক দেখছেন সাবেকরা। সুনীল গাভাস্কার ও মোহাম্মদ কাইফ গিলের প্রতিই আস্থা জানিয়েছেন।
এ বছরের ডিসেম্বরে ওয়ানডে ফরম্যাটে হবে বিজয় হাজারে ট্রফি। দৈনিক জাগরণ জানিয়েছে, রোহিত-কোহলি যদি ২০২৭ বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলতেই চান, তবে খেলতে হবে ঘরোয়া এ টুর্নামেন্টে। ইংল্যান্ড সফরের আগেও ঘরোয়া টুর্নামেন্টে খেলার বাধ্যবাধকতা চালু করেছিল বিসিসিআই। যার ফলস্বরূপ এবার ১২ বছর পর দিল্লির হয়ে রঞ্জি খেলেছেন বিরাট কোহলি, রোহিত মুম্বাইয়ের হয়ে খেলেছেন প্রায় ১০ বছর পর।
তিন সেঞ্চুরিতে রানপাহাড়ে উঠে নিউজিল্যান্ডের বিশ্বরেকর্ড

সিরিজের প্রথম টেস্টেও নিউজিল্যান্ডের কাছে পাত্তা পায়নি জিম্বাবুয়ে। এবার সিরিজনির্ধারণী ম্যাচে বুলাওয়েতে প্রথম ইনিংসে মাত্র ১২৫ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা। এরপর কিউইরা রোডেশিয়ান বোলারদের নাস্তানাবুদ করে রানের পাহাড় গড়েছে। দলীয় ছয়শ পেরিয়েছে তিন ব্যাটারের দেড়শ পেরোনো ইনিংসে। এর মাধ্যমেই বিশ্বরেকর্ড গড়ল নিউজিল্যান্ড।
দ্বিতীয় দিন শেষে কিউইদের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৬০১ রান। ইতোমধ্যে প্রথম ইনিংসে তারা ৪৭৬ রানের লিড নিয়েছে। কতটা একপেশে ম্যাচ চলছে সেটি বলাই বাহুল্য। এক ইনিংসে তিন ব্যাটারের দেড়শ পেরোনো ইনিংস যৌথভাবে বিশ্বরেকর্ড। এমন ঘটনা টেস্ট ইতিহাসে আরও দু’বার দেখা গেছে। তবে গত ৩৯ বছরে এবারই প্রথম এক ইনিংসে দেড়শ পেরোলেন তিনজন।
গতকাল (শুক্রবার) কিউই ব্যাটারদের সামনে রীতিমতো অসহায় ছিলেন জিম্বাবুইয়ান বোলাররা। তাদের পক্ষে তিনজন ১টি করে উইকেট নিলেও তাদের প্রত্যেকেই একশ’র বেশি রান খরচ করেছেন। সবমিলিয়ে রানের বন্যা থামাতে ৭ বোলার আক্রমণে আসতে হয়েছে জিম্বাবুয়ের। তবে তাদের সেভাবে সাফল্য পাওয়া হয়নি। কিউইদের পক্ষে দুই ওপেনার ডেভন কনওয়ে ও উইল ইয়াং মিলে উদ্বোধনী জুটিতেই ১৬২ রান করেন। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ৭৩ ও তৃতীয় উইকেটে আসে ১১০ রান।
দিনের শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকা হেনরি নিকোলস ও রাচিন রবীন্দ্র’র জুটি চলমান আছে ২৫৬ রানে। রাচিন ১৩৯ বলে ২১টি চার ও দুই ছক্কায় ১৬৫ এবং নিকোলস ২৪৫ বলে ১৫টি চারের মারে ১৫০ রান করেছেন। এর আগে ওপেনার কনওয়ে ১৫৩ রান করেন ২৪৫ বলে ১৮টি চারের সাহায্যে। সেই তুলনায় বাকি দুই ব্যাটারের কণ্ঠে হয়তো আক্ষেপই ঝরবে। কারণ ইয়াং ৭৪ ও জ্যাকব ডাফি ৩৬ রান করেছেন।
এ নিয়ে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে মাত্র তৃতীয়বার একই ইনিংসে তিনটি দেড়শ পেরোনো ইনিংস দেখা গেছে। প্রথমবার ১৯৩৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ড এবং ১৯৮৬ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ভারতের তিন ব্যাটার একই কীর্তি গড়েন।
জিম্বাবুয়েকে ১২৫ রানে গুটিয়ে দেওয়ার পথে ম্যাট হেনরি ৫ ও জাকারি ফকস ৪ উইকেট নিয়েছেন
এদিকে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত ৪৭৬ রানের লিড টেস্টে কিউইদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে তারা এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪৮১ রানের লিড নিয়েছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে (২০১৯, হ্যামিল্টন টেস্ট)।
প্রয়োজনে তামিমের মতো ‘এক হাতে’ ব্যাট করবেন ওকস!

হ্যারি ব্রুক ও জো রুটের সেঞ্চুরিতে সহজ জয়ের পথেই ছিল ইংল্যান্ড। চা বিরতির সময় ৬ উইকেটে ৫৭ রান প্রয়োজন ছিল তাদের। কিন্তু রুট-ব্রুক আউট হতেই আচমকা ঘুরে যায় ম্যাচের গতিপথ। এতে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলে ভারত। ৩৭৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে চতুর্থ দিন শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ৬ উইকেটে ৩৩৯ রান। জয়ের জন্য বাকি ৩৫, হাতে মাত্র ৪ উইকেট। তার ওপর কাঁধের চোটে ছিটকে গেছেন অলরাউন্ডার ক্রিস ওকস, যার ফেরার সম্ভাবনা ছিল না বললেই চলে।
তবে দলের প্রয়োজনে অসম্ভবকে সম্ভব করার মানসিকতা দেখাচ্ছেন ৩৬ বছর বয়সী এই তারকা বোলিং অলরাউন্ডার। এমনিতে তার এক হাত স্লিং ঝুলানো, কিন্তু দলের প্রয়োজনে এক হাতেও ব্যাট করতে প্রস্তুত আছেন তিনি। এমনকি চতুর্থ দিনে রোববার ওভালের ইনডোরে এক হাতে ব্যাটিংয়ের কিছুটা অনুশীলনও করেছেন ওকস।
এমন সাহসী সিদ্ধান্তে ক্রিকেটভক্তদের মনে পড়ে যাচ্ছে তামিম ইকবালের সেই ঘটনাটি। ২০১৮ এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের শুরুর দিকে চোট পেয়ে তার হাতও স্লিংয়ে ঝোলানো ছিল। টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন। তবু শেষ জুটিতে ক্রিজে গিয়ে এক হাতে ব্যাট করে ক্রিকেটের চিরন্তন সাহসীকতার গল্পে জায়গা পেয়ে গেছেন বাংলাদেশের ওপেনার। তামিম ছাড়াও ১৯৮৪ সালে হেডিংলি টেস্টে ম্যালকম মার্শাল ভাঙা আঙুল নিয়ে স্লিং ঝোলানো অবস্থায় এক হাতে ব্যাট করে সতীর্থকে সেঞ্চুরি করতে সাহায্য করেছিলেন।
চতুর্থ দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে ওকসের বিষয়টি নিয়ে জো রুট বলেছেন, ‘ওকস এখনো আমাদের সঙ্গেই আছে। এটা এমন এক সিরিজ, যেখানে খেলোয়াড়দের নিজেদের ঝুঁকিতে ফেলতে হয়েছে। ঋষভ পন্ত ভাঙা পা নিয়েও ব্যাট করেছে। এখন ওকসও প্রস্তুত, ইংল্যান্ডের জন্য এক হাতে হলেও ব্যাট করতে।’
তবে রুটের আশা, ওকসের ব্যাটিংয়ে নামার প্রয়োজন পড়বে না, ‘সে প্রচণ্ড যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তবে এটা (দলের প্রতি নিবেদন) তার কাছে অনেক অর্থবহ। ইংল্যান্ডের জন্য নিজেকে ঝুঁকিতে ফেলতেও প্রস্তুত থাকা তার চরিত্র ও ব্যক্তিত্বের জানান দেয়। তবে আশা করি খেলা ওই পর্যন্ত যাবে না।’
এদিকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, ওকসের চোট প্রাথমিকভাবে যতটা ভাবা হয়েছিল, তার চেয়ে অনেক বেশি গুরুতর। অস্ত্রোপচারের সম্ভাবনাও আছে, যার ফলে পাঁচ মাস মাঠের বাইরে থাকতে হতে পারে তাকে। ফলে আসন্ন অ্যাশেজ সিরিজেও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তার অংশগ্রহণ।
সব মিলিয়ে আজ শেষ দিনে ওভালে রোমাঞ্চকর সমাপ্তির অপেক্ষায় ক্রিকেটপ্রেমীরা। ওকস নামবেন কি না, ইংল্যান্ড জিতবে কি না—সব প্রশ্নের জবাব আজ মাঠেই পাওয়া যাবে।
পাকিস্তানকে আর দেখা যাবে না বিশ্ব লিজেন্ডস লিগে

ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অব লিজেন্ডসে (ডব্লিউসিএল) রানার্সআপ হয়েছে পাকিস্তান লিজেন্ডস। আসরে মাঠের ক্রিকেটে ভালো পারফর্ম করলেও মাঠের বাইরের কাণ্ডে তাদের নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। ফলে এরপর থেকে আর এই আসরে অংশ গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।
মূলত পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ বর্জন করেছিল ভারত লিজেন্ডস। গ্রুপ পর্বে ম্যাচ বর্জনের পর সেমি ফাইনালেও ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হওয়ায় খেলতে অস্বীকৃতি জানায় ভারত। ফলে সেমিতে না খেলেই ফাইনালের টিকিট পায় পাকিস্তান। আর এমন কাণ্ডে সংশ্লিষ্ট দুই দলই সমালোচনার মুখোমুখি হয়।
টুর্নামেন্টে এমন পরিস্থিতি হওয়ায় আয়োজকদের নিয়ে সমালোচনা করেছে পিসিবি। এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, আয়োজকদের কয়েকটি সিদ্ধান্ত তাদের অংশগ্রহণের পরিবেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
পিসিবি বলেছে, 'ম্যাচ বাতিলের সিদ্ধান্ত কোনো ক্রিকেটীয় কারণে হয়নি, বরং সুনির্দিষ্ট জাতীয়তাবাদী ধারণাকে তুষ্ট করে ওই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।'
'আমাদের ক্রিকেটারদেরকে আমরা এমন আসরে অংশ নিতে দিতে পারি না, যেখানে খেলাধুলার চেতনাকে ছাপিয়ে যায় বিকৃত রাজনীতি, স্পোর্টসম্যানশিপ ও ভদ্রলোকের খেলার ধারণাটিকেই যা খাটো করে তোলে।'-যোগ করেন তিনি।
মন্তব্য