পিআর পদ্ধতির নির্বাচন ইসলামবিরোধী: নেজামে ইসলাম পার্টি

বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির নির্বাহী সভাপতি মাওলানা একে এম আশরাফুল হক বলেছেন, আসনভিত্তিক নির্বাচন পদ্ধতি একটি মিমাংসিত বিষয়। এখানে সংস্কারের কোনো অবকাশ নেই।
তিনি বলেন, যারা প্রচলিত নির্বাচন পদ্ধতির বাইরে যেয়ে আনুপাতিক তথা পিআরের মতো আজগুবি নির্বাচন পদ্ধতির দাবি করছেন, এর মধ্যে কিছু ইসলামী দলকেও আমরা দেখতে পাচ্ছি। অথচ পিআর পদ্ধতি নির্বাচন একটি ইসলামবিরোধী পদ্ধতি। কারণ রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য ইসলাম জনগণকে যোগ্য ও ভালো ব্যক্তি নির্বাচন করতে বলেছে। দল বা প্রতীক নির্বাচন করতে বলেনি।
সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির নির্বাহী সভাপতি মাওলানা একে এম আশরাফুল হক এমন মন্তব্য করেন।
আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য পিআরের দাবি করা হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই পদ্ধতিতে সরকার ও রাষ্ট্রকে সবসময় দুর্বল করে বিদেশীদের তাঁবেদার বানানোর গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে।
পিআর পদ্ধতিকে বিদেশি ফরমায়েশি নির্বাচন পদ্ধতি দাবি করে আশরাফুল হক আরও বলেন, নির্বাচনের সংস্কারে অভিনব এই পদ্ধতির দাবি পতিত ফ্যাসিবাদকে পুনর্বাসনে নিয়ামক ভূমিকা পালন করবে। কারণ আগামীতে বাংলাদেশের কোথাও কোনো আসনে এককভাবে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ বা তাদের সহযোগী কোনও প্রার্থী বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু এই আজগুবি নির্বাচনি পদ্ধতিতে আনুপাতিক পার্সেন্টের হিসেবের মারপ্যাঁচে তাদের বেশ কিছু আসন পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি করবে। যা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এদেশের জনগণ কখনও মেনে নেবে না।
তিনি বলেন, যারা কথিত পি আর পদ্ধতির নির্বাচনের দাবিতে ভিনদেশি এজেন্ডা বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছেন সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে তাদের অনেকেরই জামানত পর্যন্ত থাকবে না।
ডাকসু নির্বাচনে শিবিরের প্যানেল ঘোষণা: ভিপি সাদিক, জিএস ফরহাদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে অংশ নিতে ২৮ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। ঘোষিত প্যানেলে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে রয়েছেন শিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম। সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রার্থী হয়েছেন শিবিরের ঢাবি শাখার সভাপতি এস এম ফরহাদ এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন খান। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন পদে ইনকিলাব মঞ্চ থেকে যুক্ত হয়েছেন ফাতিমা তাসনীম জুমা।
সোমবার (১৮ আগস্ট) ঢাবির নওয়াব নবাব আলী সিনেট ভবনের তৃতীয় তলায় চিফ রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে মনোনয়ন ফরম তুলে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তুলে ধরেন শিবিরের নেতাকর্মীরা।
এসময় ভিপি, জিএস, এজিএস পদের প্রার্থী ঘোষণা করেন শিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি নূরুল ইসলাম সাদ্দাম। প্রার্থী ঘোষণার পর তিনি আশা ব্যক্ত করে বলেন, প্রশাসনের দেওয়া নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরাপদ পরিবেশে হবে বলে আমরা আশা করি।
ঢাবি শিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ প্যানেলের বাকি সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, প্যানেলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে রয়েছেন ইকবাল হায়দার, কমনরুম, রিডিংরুম ও কাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে উম্মে সালমা, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে রয়েছেন খান জসীম, যিনি জুলাইয়ে চোখ হারান।
সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে রয়েছেন নুরুল ইসলাম সাব্বির, যিনি বর্তমানে ঢাবি শিবিরের অর্থ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ক্রীড়া সম্পাদক পদে আছেন আরমান হোসেন, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে আসিফ আব্দুল্লাহ, আর সমাজসেবা সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন শরিফুল ইসলাম মুয়াজ।
এছাড়া গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে রয়েছেন ঢাবি শিবিরের দপ্তর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসাইন খান, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক পদে মাজহারুল ইসলাম, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে আব্দুল্লাহ আল মিনহাজ এবং মানবাধিকার ও আইনবিষয়ক সম্পাদক পদে রয়েছেন সাখাওয়াত জাকারিয়া। ঘোষিত প্যানেলে আরও ১৩টি সদস্য পদ রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
৫০ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে শিক্ষাবৃত্তি দিলো বাকৃবি ছাত্রশিবির

ইসলামী শিক্ষা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ( বাকৃবি) বিভিন্ন বর্ষের ৫০ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে শিক্ষাবৃত্তি দিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির বাকৃবি শাখা। শিক্ষাবৃত্তি হিসেবে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে নগদ অর্থ প্রদান এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থান:২৪ এর 'দ্রোহ গাথা' শীর্ষক স্মারক গ্রন্থ উপহার দেওয়া হয়।
শনিবার (১৬ জুলাই ) বিকাল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) মিনি সম্মেলন কক্ষে ওই বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠিত হয়।
বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু জোফার মো. মোসলেহ উদ্দিন, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় গবেষণা সম্পাদক মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, বাকৃবি শাখা শিবিরের সভাপতি আবু নাসির ত্বোহা, সেক্রেটারি আব্দুল আল মঈন । এছাড়াও বাকৃবি শাখা ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন নেতাকর্মী ও বৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে শিবিরের কেন্দ্রীয় গবেষণা সম্পাদক মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম বলেন, "শিক্ষাবৃত্তি প্রদান, ইফতার মাহফিলসহ আমাদের যে সকল কর্মকান্ড আছে তা আমরা নতুন করে করছি না। বিগত ১৭ বছরেও আমরা এ সকল কর্মকান্ড করে এসেছি। কিন্তু স্বৈরাচারের আমলে সবথেকে বেশি জুলুমের শিকার হয়েছিল বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। তাই আমরা আমাদের অনুষ্ঠানগুলো সল্প পরিসরে করার চেষ্টা করতাম। শুধুমাত্র শিবির করার অপরাধে এবং শিবির সন্দেহে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের উপর নির্মম অত্যাচার-নির্যাতন করা হতো।
তিনি আরও বলেন, আমরা শহীদ ভাইদের রক্তকে কখনো বৃথা যেতে দিব না। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির এখানে অঙ্গীকারবদ্ধ। নতুন বাংলাদেশের যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ছাত্ররা নিজেদের রক্ত দিয়ে দেশকে মুক্ত করেছে, সেই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে হলে শিক্ষার্থীদের নিজেকে দেশ করার যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে। ছাত্র শিবির এই যোগ্য মানুষ তৈরি করতে কাজ করে যাচ্ছে।"
হাসনাত-সারজিসসহ পাঁচ নেতার শোকজ প্রত্যাহার

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তির দিনে কক্সবাজার সফরের ঘটনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পাঁচ কেন্দ্রীয় নেতাকে দেওয়া কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) প্রত্যাহার করা হয়েছে।
শনিবার (১৬ আগস্ট) দলটির যুগ্ম সদস্য সচিব (দফতর) সালেহ উদ্দিন সিফাত স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৬ আগস্ট জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপি’র মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ-এর প্রতি পৃথক পাঁচটি কারণ দর্শানো নোটিশ প্রেরণ করা হয়েছিল। যার প্রেক্ষিতে উল্লেখিত নেতৃবৃন্দ দফতর মারফত আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব বরাবর কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব প্রদান করেন।
শোকজের জবাব বিশ্লেষণে উপরোক্ত ঘটনায় দলীয় শৃঙ্খলার ব্যত্যয় না ঘটায় আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম এবং সদস্যসচিব আখতার হোসেনের নির্দেশক্রমে উল্লেখিত শোকজ নোটিশসমূহ প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং বিষয়টির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট এনসিপির পাঁচ নেতার কক্সবাজার সফর নিয়ে আলোচনা ও বিতর্কের সৃষ্টি হয়। পরে নেতাদের শোকজ নোটিশ দেয় দল।
ছাত্রশিবিরে কেউ দখল–চাঁদাবাজির জন্য আসে না: নুরুল ইসলাম সাদ্দাম

ছাত্রশিবিরে কেউ লুটপাট, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি বা টেম্পুস্ট্যান্ড দখলের জন্য আসে না। এখানে যোগ দিয়ে এসব কাজ করা সম্ভবও নয়। ইসলামী ছাত্রশিবিরে সবাই নিজেকে সঠিকভাবে গড়ে তোলার জন্যই আসে।
শনিবার (১৬ আগস্ট) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে নবীন শিক্ষার্থীদের নিয়ে আয়োজিত "ফ্রেশার রিসিপশন অ্যান্ড ক্যারিয়ার গাইডলাইন" অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম।
তিনি বলেন, “স্বাধীনতার পর থেকে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো মানবিক মানুষ তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছে। অথচ এদেশের প্রকৃত অভাব যোগ্য ও সৎ নেতৃত্বের। ইসলামী ছাত্রশিবির সেই নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন সৎ নেতৃত্ব তৈরির লক্ষ্যে কাজ করছে। প্রশাসন বারবার ছাত্রশিবিরকে শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি দাঁড় করাতে চায়। তবে আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই—ছাত্রশিবির কখনো শিক্ষার্থীদের প্রতিপক্ষ হবে না।”
তিনি আরও বলেন, “ছাত্রশিবিরে কাউকে জোর করে যোগদান করানো আমাদের লক্ষ্য নয়। একজন সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে ছাত্রসমাজকে গড়ে তোলাই আমাদের কাজ।”
অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানান, ছাত্রশিবিরের আয়োজিত এ অনুষ্ঠানটি ছিল আন্তর্জাতিক মানের। বিভিন্ন স্কলারদের দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য ভবিষ্যৎ জীবনে কাজে লাগবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।
প্রায় ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে আয়োজিত এ নবীনবরণে প্রায় ২ হাজার ৩০০ শিক্ষার্থী অংশ নেন। এর মধ্যে প্রায় ৭০০ জন ছাত্রী ছিলেন। অনুষ্ঠানে নবীন শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ ও উপহার প্রদান করা হয়।
চবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে এবং সাহিত্য সম্পাদক সাঈদ বিন হাবিব ও শিক্ষা সম্পাদক মোনায়েম শরীফের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন ইরাসমাস মন্ডুস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আশিকুর রহমান। বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সমাজসেবা সম্পাদক আব্দুল মোহাইমিন।
এ ছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবির সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. এনায়েত উল্ল্যা পাটওয়ারী ও ছাত্র-ছাত্রী পরামর্শ ও নির্দেশনা কেন্দ্রের পরিচালক ড. মো. আনোয়ার হোসেন।
মন্তব্য