ঢাকা, শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫ ১ ভাদ্র ১৪৩২
 
শিরোনাম

এক সময় ভাত খুঁজতো ক্যান্টিনে, এখন হাঁস খোঁজে ওয়েস্টিনে: পার্থ

অনলাইন ডেস্ক
১৫ আগস্ট, ২০২৫ ১৮:৩
অনলাইন ডেস্ক
এক সময় ভাত খুঁজতো ক্যান্টিনে, এখন হাঁস খোঁজে ওয়েস্টিনে: পার্থ

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, ভোরে তিনি মাঝে মাঝে ৩০০ ফিট সড়কের নীলা মার্কেটে হাঁসের মাংস খেতে যান, সেখানে বন্ধ থাকলে গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলে যান। তার এই বক্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রচুর আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। 


উপদেষ্টা আসিফের এই বক্তব্যের পর বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়েছেন।


বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে দেওয়া ফেসবুক পোস্টে পার্থ লিখেছেন, ‘এক সময় ভাত খুঁজতো ক্যান্টিনে, এখন হাঁস খোঁজে ওয়েস্টিনে।’


ফেসবুকে দেওয়া তার এই স্ট্যাটাসটি রাজনৈতিকভাবে ইঙ্গিতপূর্ণ বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তিনি কার উদ্দেশে এই পোস্ট দিয়েছেন সেটি স্পষ্ট করেননি।

এই রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত আন্দালিব রহমান পার্থের এই পোস্টে লাইক পড়েছে ৭৭ হাজার। ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থর এই পোস্টে পক্ষে বিপক্ষে ২০ হাজার ৫শ মানুষ মন্তব্য করেছেন এবং এটি শেয়ার হয়েছে আট হাজারের বেশি বার।

প্রাসঙ্গিক
    মন্তব্য

    শেখ মুজিবুর রহমান জাতির জনক নন: নাহিদ ইসলাম

    অনলাইন ডেস্ক
    ১৫ আগস্ট, ২০২৫ ১৭:৯
    অনলাইন ডেস্ক
    শেখ মুজিবুর রহমান জাতির জনক নন: নাহিদ ইসলাম

    শেখ মুজিবুর রহমান জাতির জনক নন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। আজ শুক্রবার (১৫ আগস্ট) ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে এ মন্তব্য করেন তিনি। 


    নাহিদ ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘বাংলাদেশ জনগণের শেখ মুজিবুর রহমান জাতির জনক নন। আমরা স্বাধীনতা অর্জনে তার ভূমিকা এবং ত্যাগ স্বীকার করি, কিন্তু আমরা তার শাসনের অধীনে প্রকাশিত জাতীয় ট্রাজেডিকেও স্মরণ করি। তার নেতৃত্বের মাধ্যমে, বাংলাদেশ ভারতের একটি উপনিবেশ রাজ্যে পরিণত হয়, ১৯৭২ সালে জনবিরোধী সংবিধান আরোপিত হয়, এবং ভিত্তি স্থাপন করা হয় লুটপাত, রাজনৈতিক হত্যা এবং একদলীয় বাকশাল একনায়কতন্ত্রের।’


    ওয়ামী লীগের ফ্যাসিষ্ট রাজনীতির অন্তরালে মুজিব পূজা ও মুক্তিযুদ্ধ পূজা, একটি রাজনৈতিক মূর্তি পূজা জনগণের উপর অত্যাচার, জাতিকে লুট করে, নাগরিককে প্রথম শ্রেণী ও দ্বিতীয় শ্রেণী বিভক্ত করে। এটা গণতন্ত্রের ছদ্মবেশে আধুনিক জমিদারি ছাড়া কম কিছু ছিল না। তবুও মুক্তিযুদ্ধ ছিল সকল মানুষের সংগ্রাম। িকয়েক দশক ধরে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশকে তার পৈতৃক সম্পত্তি, জবাবদিহিতা বিহীন শাসন এবং মুজিব নাম ব্যবহার করে দুর্নীতি ও দমন-কলাপকে ন্যায্যতা দিয়েছে।


    ২০২৪ সালের জনগণের বিদ্রোহ এই জমিদারিদ্র্যকে ধ্বংস করে দিয়েছে। কোন ব্যক্তি, কোন পরিবার, কোন মতাদর্শ আর কখনো নাগরিকদের অধিকার কেড়ে নিতে বা বাংলাদেশের উপর ফ্যাসিবাদ আরোপ করতে দেওয়া হবে না। জাতির পিতা শিরোনাম ইতিহাস নয়, বৈষম্যকে চুপ করে রাষ্ট্রকে একচেটিয়া করার আওয়ামী লীগ তৈরী একটি ফ্যাসিষ্ট হাতিয়ার। বাংলাদেশ সব নাগরিক সমান, আর কোন একক ব্যক্তিই তার জন্ম বা ভবিষ্যতের মালিকানা দাবি করতে পারে না।


    শেখ মুজিব ও মুক্তিযুদ্ধ নামে মুজিববাদ একটি ফ্যাসিস্ট মতাদর্শ। আমাদের সংগ্রাম কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়, ফ্যাসিস্ট আদর্শের বিরুদ্ধে। মুজিববাদ ফ্যাসিবাদ ও বিভাজনের একটি আদর্শ। এর মানে হল জোরপূর্বক গুম, হত্যা, ধর্ষণ, এবং নিয়মগতভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন। দেশের সম্পদ লুট করে বিদেশে লন্ড ভন্ড করা মানে। এর মানে হচ্ছে ইসলামোফোবিয়া, সাম্প্রদায়িকতা, এবং সংখ্যালঘু ভূমি দখল। এর মানে হল বিদেশি শক্তির কাছে জাতীয় সার্বোভৌমত্ব বিক্রি করা। ষোল বছর মুজিবকে রাজনৈতিকভাবে বাচিয়ে রাখা হয়েছিল অস্ত্র হিসেবে, আর মূর্তির আড়ালে ছড়িয়েছিল অপহৃত, হত্যা, লুট, গণহত্যা।


    মুজিববাদ একটি জীবন্ত বিপদ। এটাকে পরাজিত করার জন্য রাজনৈতিক, আদর্শিক, এবং সাংস্কৃতিক প্রতিরোধের দাবি রয়েছে। আমাদের সংগ্রাম সম নাগরিকদের একটি প্রজাতন্ত্র, সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার, যেখানে কোন দল, কোন বংশ, কোন নেতা জনগণের উপরে দাড়ায় না। বাংলাদেশ কারো সম্পত্তি নয়, এটা গণ প্রজাতন্ত্র।

    প্রাসঙ্গিক
      মন্তব্য

      মিরপুরে চাঁদাবাজির মামলা তুলে নিতে শ্রমিক দল নেতার প্রাণনাশের হুমকি

      অনলাইন ডেস্ক
      ১৫ আগস্ট, ২০২৫ ১২:১৪
      অনলাইন ডেস্ক
      মিরপুরে চাঁদাবাজির মামলা তুলে নিতে শ্রমিক দল নেতার প্রাণনাশের হুমকি

      রাজধানীর মিরপুরে চাঁদাবাজির মামলা তুলে নিতে সোহেল রানা নামে এক মামলার বাদীকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। পল্লবী থানা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক বশির ৮ আগস্ট ওই বাদীকে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দেন বলে অভিযোগে জানা গেছে। 


      এ ঘটনায় মামলার বাদী সোহেল রানা মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) রাজধানীর পল্লবী থানায় শ্রমিক দল নেতা বশিরসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে একটি জিডি করেন। 


      জিডি ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, সোহেল রানা মিরপুর ১০ নম্বরে বেনারসি শাড়ির ব্যবসা করেন। হাসিনা সরকারের পলায়নের পর শ্রমিক দল নেতা বশির ও তার লোকজন ওই ব্যবসায়ীর কাছে কয়েক দফায় চাঁদা নেন। 


      একপর্যায়ে তারা ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। ওই ব্যবসায়ী চাঁদা দিতে না চাইলে তার ওপর গত ২২ জুলাই হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ২৮ জুলাই বশিরসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় একটি চাঁদাবাজির মামলা করেন সোহেল রানা। বশির ছাড়া এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সেকেন্দার, ইফাজ ও অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জন। 


      এদিকে কয়েক দিন ধরে চাঁদাবাজির মামলা তুলে নিতে ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হলে গত মঙ্গলবার পল্লবী থানায় জিডি করেন সোহেল রানা। 


      সোহেল রানা বলেন, ৫ আগস্টের পর বশির ও তার লোকজন ভয়ভীতি দেখিয়ে দোকানে গিয়ে কয়েক দফায় চাঁদা নেন। এ ঘটনার অডিও এবং ভিডিও আমার কাছে আছে। একপর্যায়ে তারা ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এ টাকা না দেওয়ায় আমার ওপর হামলা করা হয়। 


      এ ব্যাপারে জানতে শ্রমিক দল নেতা বশিরের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।   


      বিষয়টি নিশ্চিত করে জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পল্লবী থানার এসআই আরিফ রাব্বানি বলেন, গত মাসে বশিরসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে একটি চাঁদাবাজির মামলা হয়। ওই মামলার বাদীকে ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে গত মঙ্গলবার একটি জিডি হয়েছে। জিডির তদন্ত চলছে।

      প্রাসঙ্গিক
        মন্তব্য

        দলের কর্মকাণ্ডে অনেকেই হতাশ

        এনসিপিতে পদত্যাগের হিড়িক

        অনলাইন ডেস্ক
        ১৫ আগস্ট, ২০২৫ ১১:৩৫
        অনলাইন ডেস্ক
        এনসিপিতে পদত্যাগের হিড়িক

        দলীয় কর্মকাণ্ডে হতাশা, অনিয়মের অভিযোগ, না জানিয়ে পদায়ন বা অন্য দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা—এমন নানা কারণ দেখিয়ে গত দুই মাসে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে প্রায় ২৫ নেতাকর্মী পদত্যাগ করেছেন। একই সময়ে কমিটি স্থগিতের ঘটনাও ঘটেছে। এমন পরিস্থিতির জন্য যাচাই-বাছাই ছাড়াই কমিটি গঠনের সিদ্ধান্তকে দায়ী করছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের একাংশ।


        এনসিপি সূত্রে জানা যায়, দলীয় নিবন্ধনকে কেন্দ্র করে গত ১ জুন ঢাকা মহানগর উত্তরে সমন্বয় কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে এনসিপির কমিটি গঠন শুরু হয়। এখন পর্যন্ত দেশের ৩৩টি জেলা ও প্রায় ২০০টি উপজেলায় সমন্বয় কমিটি করেছে এনসিপি। এসব কমিটি গঠনের পর আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পরিবারের সদস্যকে পদায়ন, কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে অনিয়মসহ নানা অভিযোগ উঠতে থাকে। পরে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ও সংবাদ সম্মেলন করে পদত্যাগ করেন অনেক নেতা। শুধু সিলেট জেলা থেকেই পদত্যাগ করেন ৯ জন। বিভিন্ন অভিযোগ ওঠায় দুটি শাখা কমিটি স্থগিতও করা হয়। এর আগে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের পরপর পদত্যাগ করেছিলেন তিন নেতা।


        এনসিপি নেতারা বলছেন, মূলত নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য তাড়াহুড়া করে কমিটি ঘোষণা করায় এমন ঘটনা ঘটছে। কমিটি গঠনের সময় তেমন যাচাই-বাছাই করা হয়নি। তবে কারও কারও দাবি, এনসিপিকে বিতর্কিত করার জন্যই বিএনপি ও জামায়াতের কেউ কেউ দলটিতে যুক্ত হয়ে আবার পদত্যাগ করেছেন।


        গত ৯ আগস্ট মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা সমন্বয় কমিটি থেকে একসঙ্গে পদত্যাগ করেন এনসিপির চার নেতা। সেদিন বিকেলে শিবচর প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তারা পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এই চার নেতা হলেন—উপজেলার যুগ্ম সমন্বয়কারী শাকিল খান এবং সমন্বয় কমিটির সদস্য মো. রিয়াজ রহমান, মহিউদ্দিন ও কাজী রফিক। পদত্যাগ করার কারণ হিসেবে তারা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দুঃখজনকভাবে লক্ষ করছি যে, শিবচর থানায় দল পরিচালনার দায়িত্ব কিছু অযোগ্য ও বিতর্কিত ব্যক্তির হাতে ন্যস্ত করা হয়েছে, যারা আদর্শিক, নৈতিক ও সাংগঠনিকভাবে সম্পূর্ণ অযোগ্য। এর ফলে দলের প্রকৃত, নিষ্ঠাবান ও ত্যাগী কর্মীরা যথাযথ মর্যাদা ও মূল্যায়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এ ধরনের নেতৃত্বের মাধ্যমে শিবচরের ইতিবাচক পরিবর্তন বা টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়।


        এরপর ১০ আগস্ট ফরিদপুরের সমন্বয় কমিটির সদস্য মো. রুবেল মিয়া (হৃদয়) পদত্যাগ করেন। এনসিপির ফরিদপুর জেলা সমন্বয় কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী সৈয়দা নীলিমা দোলার কাছে দেওয়া পদত্যাগপত্রে তিনি উল্লেখ করেন, সম্প্রতি দলের কর্মকাণ্ড, বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের অভিযোগ, দলের সিদ্ধান্ত এবং অবস্থানগুলো জুলাই বিপ্লবের নীতি ও নৈতিকতার পরিপন্থি বলে মনে হওয়ায় এবং দলটির বর্তমান পথচলা তার ব্যক্তিগত আদর্শ ও মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় তিনি গভীরভাবে হতাশ ও বিচলিত।


        এর আগে ৮ আগস্ট চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার জাতীয় নাগরিক পার্টির সমন্বয় কমিটি থেকে ১ নম্বর যুগ্ম সমন্বয়কারী এ ইউ মাসুদ (আরফান উদ্দিন) পদত্যাগ করেন। ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে তিনি এ সিদ্ধান্ত জানান। পদত্যাগের বিষয়ে এ ইউ মাসুদ বলেন, কমিটি দেওয়ার আগে জানানো হয়েছিল, আমি প্রধান সমন্বয়কারীর পদ পাব। কিন্তু কমিটি প্রকাশ হওয়ার পর দেখলাম, যুগ্ম সমন্বয়কারীর পদ দেওয়া হয়েছে। এখানে কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেন কিংবা সম্পর্ক অনুঘটক হিসেবে কাজ করতে পারে।


        একইদিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়ে দুই নেতা—শরীয়তপুর জেলা সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী ও ডামুড্যা উপজেলা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী তারিকুল ইসলাম এবং জেলা কমিটির সদস্য পলাশ খান পদত্যাগ করেন। তারা ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগের কথা জানান।


        এর আগে এনসিপির ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন ইসমাইল হোসাইন ও ইঞ্জিনিয়ার আলাউদ্দিন নামে দুই নেতাও, যারা নিজেদের জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির পরিবারের লোক বলে উল্লেখ করেন। পদত্যাগের বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ার আলাউদ্দিন বলেন, ‘আমি জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির পরিবারের লোক। দীর্ঘদিন বিএনপির রাজনীতি করায় মামলা-হামলার শিকার হয়েছি। এনসিপির উপজেলা কমিটিতে আমাকে রাখার বিষয়ে পূর্বে অবগত করা হয়নি, এমনকি আমি তাদের কোনো কর্মসূচিতেও অংশগ্রহণ করিনি। তাই আমি পদত্যাগ করেছি।’


        গত ২৯ জুন এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সদস্য সচিব আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত মতলব দক্ষিণ উপজেলা শাখার সমন্বয় কমিটি ঘোষিত হয়। এর কিছুক্ষণ পরই ওই কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী ডি এম আলাউদ্দিনকে ‘জাতীয় পার্টির নেতা ও ‘ফ্যাসিস্টের সহযোগী’ আখ্যা দিয়ে পদত্যাগ করেন যুগ্ম সমন্বয়কারী হেলাল উদ্দিন। নিজের ফেসবুক আইডি থেকে তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন।


        এ ছাড়া ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে এবং কেন্দ্রীয় দপ্তরে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে এনসিপি বাগমারা উপজেলা কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন তিন সদস্য—হাদিউজ্জামান রাফি, ফুয়াদ হাসান গানিম ও রাবিউল ইসলাম রাহুল। এ বিষয়ে হাদিউজ্জামান রাফি বলেন, ‘আমি রাজনীতি করতে চাই না, এ কথা আগেই তাদের জানিয়েছিলাম। তবু আমার নাম কমিটিতে রাখা হয়েছে। তাই পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে নিজেকে সব সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির অনুরোধ জানিয়েছি।’ আরেক পদত্যাগী নেতা ফুয়াদ হাসান গানিম বলেন, ‘আমি বিএনপি পরিবারের সন্তান। একাধিকবার অনিচ্ছার কথা জানানোর পরও আমার নাম কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে পদত্যাগ করেছি।’


        এ বিষয়ে এনসিপির উপজেলা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী আলী মর্তুজা বলেন, ‘তারা পারিবারিক বা সামাজিক চাপের মুখে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকতে পারেন। তবে কেউ স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলে সেটি তাদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় কমিটি প্রয়োজনীয় পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।’


        এনসিপি থেকে পদত্যাগ করেছেন সিলেট জেলা কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী ও জুলাইয়ে নিহত সাংবাদিক এটিএম তুরাবের ভাই আবুল আহসান জাবুরও। তিনিসহ সিলেটে এনসিপি থেকে ৯ জন পদত্যাগ করেন। গত ১২ জুলাই কমিটি ঘোষণার পরদিন বিশ্বনাথ ও গোয়াইনঘাট উপজেলা কমিটি থেকে চার নেতা পদত্যাগ করেন। তাদের মধ্যে গোয়াইনঘাট উপজেলা কমিটি থেকে সদস্য ফাহিম আহমদ ও যুগ্ম সমন্বয়কারী নাদিম মাহমুদ এবং বিশ্বনাথ উপজেলা কমিটি থেকে যুগ্ম সমন্বয়কারী রুহুল আমিন ও সদস্য শাহেদ আহম্মেদ পদত্যাগ করেন। এ ছাড়া গত ২১ জুলাই গোয়াইনঘাট উপজেলা কমিটি থেকে আরও চার নেতা পদত্যাগ করেন। তারা হলেন—যুগ্ম সমন্বয়কারী এনামুল হক মারুফ, সদস্য তরিকুল ইসলাম, কিবরিয়া আহমদ ও কামরুল হাসান।


        এর আগে দল গঠনের পরপরই এনসিপি থেকে পদত্যাগ করেন দলটির তিন কেন্দ্রীয় নেতা যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবু হানিফ, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (উত্তর অঞ্চল) হানিফ খান সজীব ও যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুজ জাহের। পদত্যাগপত্রে তারা ব্যক্তিগত কারণের কথা জানান এবং পদত্যাগের পর আগের দল গণঅধিকার পরিষদে ফিরে যান।


        এদিকে, সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণ দেখিয়ে এনসিপির মাদারীপুর জেলা ও সদর উপজেলা সমন্বয় কমিটি স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে মাদারীপুর জেলা কমিটির সদস্য মো. আব্দুল্লাহ আদিল ও রাতুল হাওলাদারের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব সাংগঠনিক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে সমন্বয় কমিটি গঠনের মাত্র দুদিন পর নানা আলোচনা-সমালোচনার মুখে তা স্থগিত করা হয়।


        এনসিপির বিভিন্ন জেলা, উপজেলার কমিটির সদস্যরা পদত্যাগ করলেও তারা দলীয় কোনো নির্দেশনা মানেননি। পদত্যাগ পাঠানো হয়নি কেন্দ্রীয় দপ্তর সেলে। বেশিরভাগই পদত্যাগ করেছেন ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে। এ বিষয়ে এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত কালবেলাকে বলেন, ‘কোনো জেলা, উপজেলা কমিটির কারও কোনো পদত্যাগ আমি পাইনি। কারা ফেসবুকে পদত্যাগ করেছেন, সেটাও আমি জানি না।’


        নেতাকর্মীদের পদত্যাগের বিষয়ে এনসিপি দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক মোহাম্মদ রাকিব বলেন, জাতীয় নাগরিক কমিটি থেকে মূলত এনসিপির সমন্বয় কমিটি করা হয়েছে। তাই জামায়াত-শিবিরের একটি অংশ এনসিপিতে থেকে যায়। পরে সুযোগ বুঝে তারা পদত্যাগ করে। বিএনপিপন্থি এমন কেউও থাকতে পারে। মূলত এনসিপিকে বিতর্কিত ও সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্যই তারা কমিটিতে থেকেছেন এবং পদত্যাগ করেছেন। এ ছাড়া নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় যাওয়ার জন্য দ্রুত কমিটিগুলো করা হয়েছে। সে সময় খুব বেশি যাচাই-বাছাই করা হয়নি।


        এদিকে আর্থিক কেলেঙ্কারি ও গুরুতর দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে চট্টগ্রাম মহানগর এনসিপির যুগ্ম সমন্বয়কারী নিজাম উদ্দিনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রিক আন্দোলন বন্ধ করতে ৫ লাখ টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নিজামের বিরুদ্ধে। গত রোববার সন্ধ্যায় এ-সংক্রান্ত একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর মঙ্গলবার তাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। দলের এক নেতাকে মারধরের ঘটনায় এনসিপির রাজশাহী জেলার যুগ্ম সমন্বয়কারী নাহিদুল ইসলামকে গত ২৭ জুন সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তাকে কেন স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না, সে বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। এ ছাড়া শৃঙ্খলাভঙ্গ, নৈতিক স্খলন, বিতর্কে জড়ানোসহ বিভিন্ন ঘটনায় ১০ জন কেন্দ্রীয় নেতাকে গত ছয় মাসে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে এনসিপি।


        শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগগুলো তদন্ত করে থাকে এনসিপির শৃঙ্খলা কমিটি। কেন্দ্রীয় এবং বিভিন্ন জেলা-উপজেলার সদস্যদের নানান অভিযোগ দেখিয়ে পদত্যাগের বিষয়ে এই কমিটির প্রধান ও এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল-আমিন কালবেলাকে বলেন, অভিযোগ পেলেই আমরা প্রাথমিকভাবে শোকজ দিয়ে থাকি। এরপর জবাব পেলে আমরা যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত সতর্কবার্তা দিয়ে থাকি। এ ছাড়া শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে কমিটি বাতিল, বহিষ্কারের সুপারিশও আমরা করেছি। সব অভিযোগ আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি।


        নেতাকর্মীদের পদত্যাগের বিষয়ে তিনি বলেন, লোকাল পর্যায়ে এনসিপির নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। অনেককে প্রেশারের মধ্যে রাখা হচ্ছে। যার ফলে কেউ কেউ এসব নিতে না পেরে বিভিন্ন চাপে পদত্যাগ করতে পারেন।


        এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ বলেন, বিভিন্ন কমিটি থেকে কারা পদত্যাগ করছেন, কেন করছেন বিষয়গুলো আমরা পর্যালোচনা করে দেখব। যেসব অভিযোগ সামনে আসছে সেগুলো আমাদের শৃঙ্খলা কমিটি গুরুত্ব সহকারে দেখবে। এরপর আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আমরা মাত্র নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ করেছি। এবার দেশব্যাপী সংগঠন গোছাতে আরও বেশি মনোযোগী হবো।

        প্রাসঙ্গিক
          মন্তব্য

          অধিকাংশ গণমাধ্যম বিশেষ রাজনৈতিক দলের মুখপাত্র: হাসনাত

          অনলাইন ডেস্ক
          ১৫ আগস্ট, ২০২৫ ১১:৬
          অনলাইন ডেস্ক
          অধিকাংশ গণমাধ্যম বিশেষ রাজনৈতিক দলের মুখপাত্র: হাসনাত

          জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, গণমাধ্যম একটি রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। রাষ্ট্র যথাযথভাবে পরিচালিত হওয়ার জন্য এই স্তম্ভকে সর্বোচ্চ দায়িত্ব ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করতে হয়, এটাই জনগণের প্রত্যাশা। কিন্তু আমাদের দেশের গণমাধ্যম সেই দায়িত্ব কতটা সঠিকভাবে পালন করছে, তা এখন প্রশ্নবিদ্ধ। বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুকে দেয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ কথা বলেন।


          এতে তিনি লিখেন, বেশিরভাগ গণমাধ্যম কখনো বিশেষ কোনো রাজনৈতিক দলের মুখপাত্র, কখনো কর্পোরেট স্বার্থরক্ষাকারী, আবার কখনো কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর হয়ে সংবাদ প্রচার করছে। ফলে প্রকৃত সংবাদ হারিয়ে যাচ্ছে। চটকদার ক্লিকবেট শিরোনাম ও চরিত্রহননের খবরের সয়লাব দেখা যাচ্ছে। রাজনীতিতে আসা তরুণ নারী নেত্রীদের চরিত্রহনন যেন নিত্যদিনের ঘটনা। নারীদের রাজনৈতিক পদচারণা সংকুচিত করতে একটি পক্ষ ক্রমাগত অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।



          হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, সংবাদ পরিবেশনে সততা ও দায়িত্বশীলতার পরিবর্তে এখন অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে চটকদার শিরোনাম, বিভ্রান্তিকর উপস্থাপন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ট্রেন্ড নির্ভর কনটেন্টের প্রভাব।


          ডিজিএফআই-এর সরবরাহকৃত তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বিশেষের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলক প্রচার, গোপন ফুটেজ ব্যবহার করে চরিত্রহননের চেষ্টা, কিংবা ব্যক্তিগত ঘটনাকে অতিরঞ্জিত করে উপস্থাপনের মতো হীন কাজ হচ্ছে। রাজনৈতিক বক্তব্যের পাঁচ মিনিটের গঠনমূলক দিক বাদ দিয়ে একটি বাক্য বা শব্দকে হাইলাইট করে বিভেদ তৈরির অপচেষ্টা চলে। এটি একদিকে রাজনৈতিক পরিবেশকে উত্তপ্ত ও রাজনৈতিক সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক বিনষ্ট করে।


          অনেক সময় দেখা যায়, ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর প্রতি এক ধরনের অন্ধ আনুগত্য ও প্রশংসা প্রদর্শনের প্রবণতা গণমাধ্যমে দেখা যায়, যা সাংবাদিকতার নীতিমালার পরিপন্থী।


          এনসিপির এই নেতা বলেন, অনেক পরিশ্রমী সংবাদকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে বোঝা যায়, এর পেছনে রয়েছে গভীর কাঠামোগত সংকট। দেশে টেলিভিশনের জন্য আলাদা কোনো আইন না থাকায় সরকার চাইলে যেকোনো সময় চ্যানেল বন্ধ করে দিতে পারে। অনলাইন ও টিভি মাধ্যমে কোনো নির্ধারিত বেতন কাঠামো নেই। ঢাকায় অনেক সাংবাদিক মাসে মাত্র ৮–১০ হাজার টাকা পান। আর মফস্বলের অধিকাংশ সাংবাদিক কোনো বেতনই পান না, বরং অনেক সময় আইডি কার্ড পাওয়ার জন্য উল্টো টাকা দিতে হয়।


          পত্রিকাগুলো এখনো ২০১৩ সালের অষ্টম ওয়েজবোর্ড অনুসরণ করে, সেটিও বাধ্যতামূলক নয়। ফলে অধিকাংশ মালিক তা মানেন না।


          সাংবাদিকদের সমস্যার কথা তুলে ধরে হাসনাত বলেন, যেখানে বেতন দেওয়া হয়, সেখানেও ৪–৫ মাস বকেয়া থাকা অস্বাভাবিক নয়। চাকরির কোনো নিশ্চয়তা নেই। মালিক চাইলে যেকোনো সময় ছাঁটাই করতে পারেন। সাংবাদিকদের ওপর হামলা বা হত্যার বিচার হয় না, ফলে তারা এক অনিশ্চিত জীবনে বাস করেন।


          স্বাধীন সাংবাদিকতার পথে সবচেয়ে বড় বাধা রাজনৈতিক ও গোয়েন্দা সংস্থার হস্তক্ষেপ। বিশেষ করে ডিজিএফআই-এর প্রভাব স্পষ্ট। তাদের নির্দেশ না মানলে বিজ্ঞাপন বন্ধ হয়ে যায়, মালিকদের অন্যান্য ব্যবসায়িক কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি হয়, নানা ধরনের হয়রানির মুখে পড়তে হয়। তাই মালিকরা ক্ষমতার কাছাকাছি থাকতে বাধ্য হন। আর সাংবাদিকদের দিয়ে সরাসরি রাজনৈতিক দালালি করানো হয়। এর সঙ্গে রয়েছে কর্পোরেট নেক্সাস। বিশেষ করে বসুন্ধরা গ্রুপের মিডিয়া সন্ত্রাস অনেককেই আত্মসমর্পণে বাধ্য করে। (এই মাফিয়াদের বিরুদ্ধে কথা বলায় রিপোর্ট করিয়ে এই আইডিও রেসট্রিক্টেড করে দেয়।)


          যে গণমাধ্যম জনগণের আস্থা হারায়, তার পতন শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র।

          প্রাসঙ্গিক
            মন্তব্য
            সর্বশেষ সংবাদ
              সর্বাধিক পঠিত