সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ায় ফাজিল অনার্স নবীনবরণ ও সবক অনুষ্ঠিত

সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়া ঢাকার ফাজিল অনার্স ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ ও সবক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব জনাব মুনিরুজ্জামান ভূঁঞা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়া ঢাকার অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ ওবায়দুল হক। উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ আশরাফুল কবির, হেড মাওলানা প্রফেসর মোঃ মনজুরুর রহমান এবং শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক মোঃ মহসিন কবির। এছাড়াও মাদ্রাসার শিক্ষকবৃন্দ ও ফাজিল অনার্স শ্রেণির নবীন শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুনিরুজ্জামান ভূঁঞা বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ইসলামের শাশ্বত মূর্ত প্রতীক হতে হবে। নিজেদের আদর্শ ও নৈতিকতায় গড়ে তুলতে হবে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসারী হিসেবে। আলিয়া মাদ্রাসাকে অবক্ষয় থেকে উত্তোলন করে নতুন পথে নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে।
তিনি শিক্ষার্থীদের রুটিন অনুযায়ী পড়াশোনা ও আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি কুরআন, হাদীস, দাওয়াত ও আরবি শিক্ষায় দক্ষতা অর্জনের আহ্বান জানান। তার মতে, আগামীর সভ্যতা হতে হবে ইসলামী সভ্যতা।
মুনিরুজ্জামান ভূঁঞা আরও বলেন, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা ছিল অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী। তারা নিপীড়ন ও নির্যাতন সহ্য করেও জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না - ইআবি ভাইস চ্যান্সেলর

ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. শামছুল আলম বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অনন্য অধ্যায়, যা স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার, ন্যায় ও গণতন্ত্রের জন্য জনগণের ত্যাগ ও সংগ্রামের প্রতীক। এই অভ্যুত্থানের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না।
আজ রবিবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তনে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি কথা বলেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক কবি ও সাহিত্যিক অধ্যাপক আবদুল হাই শিকদার বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা প্রাণ দিয়েছেন, তাদের রক্তের সাথে কোনো প্রকার গাদ্দারি মেনে নেওয়া হবে না। এ রক্তের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে বাংলাদেশে কেউ টিকে থাকতে পারবে না।
তিনি বলেন, যে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত করেছে, তাদের স্বপ্ন ও চিন্তাকে গুরুত্ব দিতে হবে। তরুণদের হাত ধরেই ইতিহাসে সব বড় বিপ্লব সংগঠিত হয়েছে। তবে কোনো ধরনের ‘মব জাস্টিস’ জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনার পরিপন্থী।
জুলাই ঘোষণাপত্র এর প্রশংসা করে অধ্যাপক শিকদার বলেন, এই ঘোষণাপত্র পাঠের দিনটি ছিল জাতির জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যখন সব রাজনৈতিক মতের মানুষ এক মঞ্চে এসে দাঁড়িয়েছিল। ওই দিন থেকেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ঐক্য শুরু হয়েছিল।
সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বাংলা সংস্কৃতি আজ ভারতীয় শব্দ ও অনুপ্রবেশের চাপে ক্ষতিগ্রস্ত। আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখতে হলে এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিকভাবে জয়ী হতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম এবং সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. আইউব হোসেন।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার এ. এস. এম মামুনুর রহমান খলিলী, কামিল (স্নাতকোত্তর) শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ অলী উল্যাহ, তামীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসার শিক্ষার্থী ও জুলাই যোদ্ধা আব্দুল্লাহ আল মিনহাজ এবং জনসংযোগ, তথ্য ও পরামর্শ দপ্তরের সহকারী পরিচালক আবু সালেহ মুহাম্মদ মুসা।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ আলী, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. রফিক আল মামুন, উপ-রেজিস্ট্রার ফাহাদ আহমদ মোমতাজীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।
আলোচনা সভা শেষে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ সকল আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
উপ-পরিদর্শক শরীফ মুহাম্মদ ইউনুছের পদত্যাগে মাদ্রাসা বোর্ডে শূন্যপদ সৃষ্টি

আজ ২৯ জুলাই রোজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের উপ-পরিদর্শক-২ (ডেপুটি ইন্সপেক্টর) শরীফ মুহাম্মদ ইউনুছ ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছেন।
আজ সোমবার (২৯ জুলাই) তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাদ্রাসা ও কারিগরি বিভাগের কর্তৃপক্ষ বরাবর পদত্যাগপত্র দাখিল করেন।
বোর্ডের একটি সূত্র জানিয়েছে, শারীরিক অসুস্থতা ও পারিবারিক সমস্যার কারণে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে তার নিজস্ব কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
উপ-পরিদর্শক শরীফ মুহাম্মদ ইউনুছের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়নি।
পদত্যাগ প্রসঙ্গে মাদ্রাসা বোর্ডের এক কর্মকর্তা বলেন, তিনি বেশ কিছুদিন ধরেই মাদ্রাসা পরিদর্শনে ছিলেন পরবর্তীতে অসুস্থতা বোধ করেন । এখন পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এটি প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার মধ্যেই পড়ছে।
জানা গেছে, বর্তমানে তার পদ শূন্য থাকায় নিয়মানুযায়ী শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের কর্তৃপক্ষ পরবর্তী পদায়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
মোঃ আরিফুল ইসলাম/ ঢা.আ
সাত দফা দাবিতে ঢাকা আলিয়া শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ

ঢাকা, ২৭ জুলাই ২০২৫ সাত দফা দাবিতে আজ সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়া ঢাকার শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন সহ সাধারণ শিক্ষার্থীরাও একাত্মতা প্রকাশ করে অংশ নেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ঢাকা আলিয়ার শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে চরম আবাসন সংকটে ভুগছে। এই সমস্যা সমাধানে নতুন হল নির্মাণের প্রকল্প আজও বাস্তবায়িত হয়নি। ক্যাম্পাসের মূল্যবান মাঠ জুড়ে এখনো অস্থায়ী আদালত দখল করে আছে, যা ছাত্রদের চলাফেরার স্বাধীনতা ও ক্যাম্পাস পরিবেশকে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত করছে।অবিলম্বে অস্থায়ী আদালত অপসারণ ও নতুন হল নির্মাণের দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের সাত দফা দাবি হলো:
১. শিক্ষার্থীদের মৌলিক অধিকার হিসেবে পর্যাপ্ত আবাসনের নিশ্চয়তা।
২. স্থায়ীভাবে আবাসন সঙ্কট নিরসনে নতুন ছাত্রাবাস নির্মাণ।
৩. প্রকল্প বাস্তবায়নের পূর্ব পর্যন্ত বিকল্প আবাসন ও ভর্তুকির ব্যবস্থা।
৪. ক্যাম্পাসে স্থাপিত অস্থায়ী আদালত অবিলম্বে সরিয়ে নেওয়া।
৫. ঢাকা আলিয়া মাঠ উন্মুক্ত করে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর জন্য ব্যবহারের উপযোগী করা।
৬. মাঠ ও স্থাপনা দখলের অভিযোগ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা।
৭. এসব দাবি বাস্তবায়নে নির্ধারিত সময়সীমা ঘোষণা ও তা ছাত্রসমাজের সামনে উপস্থাপন।
সমাবেশ শেষে শিক্ষার্থীরা একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল সহকারে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের অভিমুখে যাত্রা করে।
শিক্ষার্থীরা জানান, দাবি পূরণ না হলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে
ঢামেকে হামলার ভিডিও ভাইরাল,ঢাকা আলিয়া ছাত্রলীগের বরকত ও হাসিবকে গ্রেফতারের দাবি

১৫ জুলাই ২০২৪ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকা আন্দোলনকারী রক্তাক্ত শিক্ষার্থীদের ওপর নতুন করে হামলার ঘটনায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল শিক্ষাঙ্গনে। অভিযোগ উঠেছে, হামলায় সরাসরি অংশ নেন ঢাকা আলিয়া ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম বরকত ও তার অনুসারীরা।
এই ঘটনার ভিডিও ক্লিপ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে আপলোড করা হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, বরকত তার দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে জরুরি বিভাগে প্রবেশ করেন, যেখানে ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই হামলার দৃশ্য স্পষ্ট হয়।ঘটনার প্রতিবাদে মুখর হয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা আলিয়ার শিক্ষার্থী হাসান বলেন, আন্দোলন নয়, জীবন বাঁচাতে গিয়েছিলাম ।
জুলাই আন্দোলনে আমরা রাস্তায় ছিলাম আমাদের অধিকার নিয়ে। যারা আহত হয়েছিল, তারা স্রেফ আন্দোলনের কারণে রক্তাক্ত হয়েছে। তারা হাসপাতালে এসে নিরাপদ থাকবে, সেটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু সেখানে গিয়ে আবারও ছাত্রলীগের হামলার শিকার এটা তো অপরাধ।
তিনি আরও বলেন,
ভিডিও ফুটেজে যাদের দেখা যাচ্ছে, তাদের মধ্যে ঢাকা আলিয়া ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম বরকতের উপস্থিতি স্পষ্ট। আমরা বরকতকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি। আন্দোলনের নামে যদি হামলা বৈধ হয়, তাহলে আমরা কাদের ওপর ভরসা করব।
আরেক শিক্ষার্থী সাব্বির বলেন,মেডিকেলে হামলা রাষ্ট্রের এটা ব্যর্থতা ছিল।
জুলাই আন্দোলন ছিল একটি গঠনমূলক দাবি আদায়ের প্রচেষ্টা। মেডিকেলে যারা চিকিৎসাধীন ছিল, তারা জীবনের জন্য লড়ছিল। সেখানে গিয়ে আবার রাজনৈতিক হামলা চালানো হয়েছে। এটা বর্বরতা ছাড়া কিছু নয়। ঢাকা আলিয়া ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বরকত তো ভিডিওতে ছিলই, তার সঙ্গে ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসিবুর রহমান। আমরা এই হামলার ঘটনায় বরকত ও হাসিবুর সহ হামলার ভিডিও ক্লিপ দেখে সকলকে আইনের আওতায় এনে গ্রেফতারের দাবি জানাই।
শিক্ষার্থীদের ভাষ্য অনুযায়ী, হাসপাতালে হামলা শুধু মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়, রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলার ওপর সরাসরি আঘাত। শিক্ষার্থীরা জানান, জুলাইয়ের এক বছর পরও যদি সরকারি প্রতিষ্ঠানে ভিডিও প্রমাণসহ হামলাকারীরা প্রকাশ্যে থেকে যায়, তাহলে শিক্ষার্থী বা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায় ?
মন্তব্য