ঢাকা, সোমবার, ১৮ আগস্ট ২০২৫ ৩ ভাদ্র ১৪৩২
 
শিরোনাম

জুনে আইএমএফের ঋণ পাচ্ছে বাংলাদেশ

অনলাইন ডেস্ক
১৩ মে, ২০২৫ ১৭:২২
অনলাইন ডেস্ক
জুনে আইএমএফের ঋণ পাচ্ছে বাংলাদেশ

আগামী জুন মাসেই ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ প্যাকেজের আওতায় ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড় করতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। এটি ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের নেতৃত্বে একাধিক বৈঠকের পর এ নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছানো গেছে। ফলে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ প্যাকেজের আওতায় জুন মাসে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার ছাড় করতে যাচ্ছে আইএমএফ।

এ বিষয়ে আগামী বুধবার (১৪ মে) আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে। ওইদিন বাংলাদেশ ব্যাংকের সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানানো হবে।

জানা গেছে, ২০২৩ সালে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ অনুমোদন করে আইএমএফ। ২০২৬ সাল পর্যন্ত ৭ কিস্তিতে এই ঋণ দেয়ার কথা। যথাসময়ে প্রথম তিন কিস্তির ২৩১ কোটি ডলার ঋণ পায় বাংলাদেশ। সর্বশেষ কিস্তি পায় ২০২৪ সালের জুনে। চতুর্থ কিস্তি পাওয়ার কথা ছিল ডিসেম্বরে। কিন্তু নানা শর্তে সেই ঋণ আটকে যায়। এখন জানা গেলো, আগামী জুনে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একত্রে আসবে।

প্রাসঙ্গিক
    মন্তব্য

    আমরা টাকা ছাপিয়ে বাজেট বাস্তবায়ন করবো না: অর্থ উপদেষ্টা

    অনলাইন ডেস্ক
    ১৩ মে, ২০২৫ ১৭:০
    অনলাইন ডেস্ক
    আমরা টাকা ছাপিয়ে বাজেট বাস্তবায়ন করবো না: অর্থ উপদেষ্টা
    অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

    ব্যাংক থেকে ধার করে ও টাকা ছাপিয়ে বাজেট বাস্তবায়ন করা হবে না বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। মঙ্গলবার (১৩ মে) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি।

    gnewsদৈনিক ইত্তেফাকের সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন
    অর্থ উপদেষ্টা বলেন, মোটামুটি বাজেটটা আমরা বাস্তবায়ন করব। বিরাট একটা গ্যাপ নিয়ে করব না। প্রকল্প, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন করব অত্যন্ত বাস্তবভিত্তিতে।

    বড় বড় মেগা প্রজেক্ট নিয়ে, ধার করে ডেফিসিট দিয়ে এগুলো করা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ব্যাংক থেকে ধার করে, টাকা ছাপিয়ে বাজেট বাস্তবায়ন করব না। কিছুটা তো ডেফিসিট (ঘাটতি) থাকবে। সেটা পূরণ করতে আমি নেগোশিয়েট করছি, আমরা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে প্রজেক্টের ব্যাপারে কথা বলছি, সেটা মোটামুটি এখন সাকসেসফুল।

    জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এনবিআর বিলুপ্ত হলেও প্রতিষ্ঠানটির স্বার্থ অব্যাহত আছে। সার্বিক বিষয়ে চিন্তা করেই এটি করা হয়েছে। ফলে রাজস্ব আদায়ে কোনো প্রভাব পড়বে না। অন্তত গতবারের চেয়ে আদায় কম হবে না।

    সারা পৃথিবীতেই রাজস্ব আদায় এবং ব্যবস্থাপনা আলাদা আলাদা থাকে জানিয়ে তিনি বলেন, আলাদা করার কারণে রাজস্ব কর্মকর্তাদের শঙ্কার কোনো কারণ নেই। অধ্যাদেশটি ভালোমতো দেখলেই এটি স্পষ্ট হবে।
     
    এদিকে সোমবার (১২ মে) দিবাগত রাতে দেশের ঐতিহ্যবাহী সংস্থা এনবিআর বিলুপ্ত করে বহুল আলোচিত রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ জারি করেছে সরকার। একই সঙ্গে বিলুপ্ত করা হয়েছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ। আইএমএফের শর্ত মানতে আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডার কর্মকর্তাদের মতামত উপেক্ষা করে সোমবার দিবাগত রাতে সরকারি এ প্রজ্ঞাপন জারি হয়।

    সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জারি করা অধ্যাদেশে শুধু রাজস্ব নীতি বিভাগের কার্যপরিধিতে সামান্য পরিবর্তন আনা হয়েছে। আর রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রশাসনিক পদগুলোতে অ্যাডমিন ক্যাডার কর্মকর্তাদের পাশাপাশি আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডারের কর্মকর্তাদের রাখা হয়েছে।

    নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের জনবল রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগে ন্যস্ত হবে। এই জনবল থেকে প্রয়োজনীয় জনবল রাজস্ব নীতি বিভাগে পদায়ন করা যাবে। এছাড়া অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ বিলুপ্ত হয়ে তার জনবল রাজস্ব নীতি বিভাগে ন্যস্ত হবে।

    মন্তব্য

    ইন্সপেক্টর ও সুপারিনটেনডেন্ট পদ পুনর্বহাল চান রাজস্ব কর্মকর্তারা

    অনলাইন ডেস্ক
    ৫ মে, ২০২৫ ১২:৩
    অনলাইন ডেস্ক
    ইন্সপেক্টর ও সুপারিনটেনডেন্ট পদ পুনর্বহাল চান রাজস্ব কর্মকর্তারা

    জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব কর্মকর্তা (আরও) ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তারা (এআরও) তাদের পুরোনো ইন্সপেক্টর ও সুপারিনটেনডেন্ট পদে ফিরে যেতে চান। আসছে ২০২৫-২০২৬  অর্থবছরেই এই দাবির বাস্তবায়ন চান তারা।

    রোববার (৪ মে) এনবিআরের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানের কাছে এসব দাবি নিয়ে চিঠি দেন বাংলাদেশ কাস্টমস অ্যান্ড ভ্যাট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাকাএভ) নেতারা। এনবিআর কার্যালয়ে গিয়ে তারা তাদের দাবির কথা জানান।

    বাকাএভের চিঠিতে স্বাক্ষর করেন সংগঠনের সভাপতি কে এম মাহবুব আলম ও মহাসচিব তানভীর আহমেদ। বর্তমানে রাজস্ব কর্মকর্তাদের সমমানের পদবি হলো সুপারিনটেনডেন্ট এবং সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তাদের সমমানের পদবি হলো ইন্সপেক্টর। ২০১০-১১ অর্থবছরে পুরোনো ইন্সপেক্টর ও সুপারিনটেনডেন্ট পদবি বদলে যথাক্রমে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ও রাজস্ব কর্মকর্তা দেয়া হয়।

    বাকাএভের চিঠিতে বলা হয়, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমারসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সীমান্তে কাস্টমস বিভাগের ইন্সপেক্টর ও সুপারিনটেনডেন্টদের সঙ্গে কাজের সমন্বয়ে এমনকি সমুদ্রগামী জাহাজে কিংবা বিমানবন্দরে কার্যক্রমেও এনবিআরের রাজস্ব কর্মকর্তা ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তারা পরিচয় দিতে গিয়ে ‘পরিচয়সংকট’ বা আইডেন্টিটি ক্রাইসিস অনুভব করেন। কারণ, বিদেশি জাহাজের ক্যাপ্টেন বা বিমানের পাইলট সবার কাছে ইন্সপেক্টর ও সুপারিনটেনডেন্ট পদবিতে পরিচিত। তাই ইন্সপেক্টর ও সুপারিনটেনডেন্ট পদবি পুনর্বহাল করার দাবি জানানো হয়।

    চিঠিতে আরও বলা হয়, পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই ইন্সপেক্টর ও সুপারিনটেনডেন্ট পদবি কাস্টমসের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের গৌরব ও ঐতিহ্য বহন করে, যা আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃত। এ ছাড়া পদবি পুনর্বহালে সরকারের কোনো আর্থিক সংশ্লেষ নেই।

    প্রাসঙ্গিক
      মন্তব্য

      পাকিস্তানের আকাশ বন্ধ : বছরে এয়ার ইন্ডিয়ার লোকসান হবে ৬০০ মিলিয়ন ডলার, চাইল সহায়তা

      অনলাইন ডেস্ক
      ২ মে, ২০২৫ ১৪:৩৭
      অনলাইন ডেস্ক
      পাকিস্তানের আকাশ বন্ধ : বছরে এয়ার ইন্ডিয়ার লোকসান হবে ৬০০ মিলিয়ন ডলার, চাইল সহায়তা

      পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা এক বছর স্থায়ী হলে প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলারের অতিরিক্ত খরচের মুখে পড়বে এয়ার ইন্ডিয়া। এই লোকসানের জন্য সরকারের কাছে আর্থিক ক্ষতিপূরণ চেয়েছে সংস্থাটি। রয়টার্সের দেখা বিমান সংস্থাটির একটি চিঠিতে এই তথ্য উঠে এসেছে।

      গত সপ্তাহে কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর জঙ্গি হামলার জেরে পাকিস্তান পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ভারতের এয়ারলাইনগুলোর জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে ভারতের বিমান সংস্থাগুলোর জ্বালানি ব্যয় বেড়েছে, দীর্ঘ হয়েছে যাত্রাপথ।

      ২৭ এপ্রিল এক চিঠিতে এয়ার ইন্ডিয়া সরকারের কাছে এই অর্থনৈতিক ক্ষতির অনুপাতে একটি 'ভর্তুকি মডেল' চালুর আবেদন জানিয়েছে। 

      সিভিল এভিয়েশন মন্ত্রণালয়কে দেওয়া ওই চিঠিতে প্রাক্কলন করা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞা স্থায়ী হলে বছরে ৫০ বিলিয়ন ভারতীয় রুপির বেশি (প্রায় ৫৯১ মিলিয়ন ডলার) লোকসান গুনতে হবে।

      চিঠিতে সংস্থাটি আরও বলেছে, 'ক্ষতিগ্রস্ত আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলোর জন্য ভর্তুকি একটি ভালো, নির্ভরযোগ্য ও ন্যায্য সমাধান…পরিস্থিতির উন্নতি হলে ভর্তুকি প্রত্যাহার করে নেওয়া যেতে পারে।'

      চিঠিতে বলা হয়েছে, আকাশসীমা বন্ধ থাকায় কারণে অতিরিক্ত জ্বালানি ও ক্রু প্রয়োজন হওয়ায় এয়ার ইন্ডিয়াই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

      এয়ার ইন্ডিয়া এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। ভারতের সিভিল এভিয়েশন মন্ত্রণালয়ও মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি।

      বিষয়টির সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, সরকার ভারতীয় বিমানের ওপর আরোপ করা আকাশসীমা নিষেধাজ্ঞার প্রভাব মূল্যায়নের এয়ার ইন্ডিয়ার কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়ার পরই সংস্থাটি এই চিঠি পাঠায়।

      বর্তমানে টাটা গ্রুপের মালিকানাধীন এয়ার ইন্ডিয়া আগে সরকারি মালিকানায় ছিল। বিমান সংস্থাটি এখন কয়েক বিলিয়ন ডলারের পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বোয়িং ও এয়ারবাসের বিমান সরবরাহে বিলম্বের কারণে এয়ারলাইনটির প্রবৃদ্ধি ইতিমধ্যেই বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ৪.৬ বিলিয়ন ডলার আয়ের বিপরীতে বিমান সংস্থাটির নিট লোকসান হয়েছে ৫২০ মিলিয়ন ডলার। 

      ভারতে ২৬.৫ শতাংশ বাজার অংশীদারত্ব থাকা এয়ার ইন্ডিয়া ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় ফ্লাইট পরিচালনা করে। এসব ফ্লাইট বেশিরভাগ সময়ই পাকিস্তানের আকাশপথ ব্যবহার করত। প্রধান স্থানীয় প্রতিদ্বন্দ্বী ইন্ডিগোর চেয়ে এয়ার ইন্ডিয়ার দূরপাল্লার রুটে ফ্লাইটের সংখ্যা অনেক বেশি।

      সিরিয়াম অ্যাসেন্ড-এর অনুযায়ী, এপ্রিলে নয়াদিল্লি থেকে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আমেরিকার গন্তব্যে ইন্ডিগো, এয়ার ইন্ডিয়া ও এর সাশ্রয়ী সহযোগী সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের সম্মিলিত ফ্লাইটের সংখ্যা ছিল প্রায় ১ হাজার ২০০।

      সংশ্লিষ্ট তিনজন ব্যক্তি জানিয়েছেন, পাকিস্তানের আকাশসীমা বন্ধের ফলে এয়ারলাইন শিল্পে যে ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে, তা কমানোর জন্য বিভিন্ন বিকল্প বিবেচনা করছে ভারত সরকার।

      একটি সূত্র জানিয়েছে, সম্ভাব্য সমাধান বের করতে ভারতীয় বিমান সংস্থাগুলো সিভিল এভিয়েশন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছে। এর মধ্যে চীনের কাছাকাছি দুর্গম অঞ্চল দিয়ে বিমান চালনা এবং কিছু ক্ষেত্রে করছাড়ের মতো বিষয়গুলো বিবেচনায় রয়েছে।

      চিঠিতে এয়ার ইন্ডিয়া কিছু ওভারফ্লাইট ক্লিয়ারেন্সের (আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি) বিষয়ে চীনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সরকারকে অনুরোধ করেছে। 

      এছাড়া দীর্ঘ ভ্রমণ সময়ের বিষয়টিকে বিবেচনায় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার দূরপাল্লার ফ্লাইটগুলোতে অতিরিক্ত পাইলট নেওয়ার অনুমোদন চেয়েছে সংস্থাটি।

      প্রাসঙ্গিক
        মন্তব্য

        বাম্পার ফলনের পরও সংকটে কুমিল্লার আলু চাষিরা

        নিজস্ব প্রতিবেদক
        ২০ এপ্রিল, ২০২৫ ১৫:৪৮
        নিজস্ব প্রতিবেদক
        বাম্পার ফলনের পরও সংকটে কুমিল্লার আলু চাষিরা

        জেলায় আলুর বাম্পার ফলন হলেও সংরক্ষণ ও ন্যায্য মূল্য নিয়ে বিপাকে পড়েছে কৃষরা। উৎপাদিত আলু নিয়ে এখন চিন্তিত তারা।

        স্থানীয় কোল্ডস্টোরেজগুলোতেও জায়গা না পাওয়ায় খোলা আকাশের নিচে এবং গাছতলায় কোন রকম ত্রিপল টানিয়ে সংরক্ষণ করছেন। অনেকের আলুতে পচন ধরেছে। দাম বাড়ার আশায় দীর্ঘ দেড় মাসেরও বেশি সময় অপেক্ষার পরও সেই আলু দাম মাত্র মূল্যে বিক্রি করে দিচ্ছেন অনেক কৃষক।

        সরেজমিনে জেলার বুড়িচংয়ের মিথলমা, আবিদপুর, মনঘাটা, শিকারপুর, পাঁচকিত্তা, হালাগাও, লোয়ার চর, কাকিয়ার চর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে খোলা জায়গায়, গাছতলায়, বাড়ির উঠোন ও ঘরের ভেতর আলুর স্তুপ দেওয়া হয়েছে। অনেকেই আবার জমিতেই স্তুপ করে ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রেখেছেন আলু। কেউ আবার ত্রিপল খুলে বেছে বেছে পচা ও পোকায় খাওয়া আলু ফেলে দিচ্ছেন।

        একাধিক কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিমণ আলু উৎপাদন করতে সব মিলিয়ে খরচ হয়েয়ে ৭৫০-৮০০ টাকা। অথচ বাজারে একমণ আলু পাইকারী বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা দরে। যার কারনে বাধ্য হয়ে দেশীয় কায়দায় তারা আলু সংরক্ষণ করেছেন। তবে বৃষ্টি হলে সঠিকভাবে সংরক্ষণ না করার কারনে আলু পচে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। ফলে বাধ্য হয়ে অনেকেই কম দামে বিক্রি করে দিচ্ছেন আলু।

        কৃষক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বীজ, হাল চাষ, সার, ওষুধ ও শ্রমিক খরচসহ সব মিলিয়ে প্রতিমণ আলু উৎপাদন করতে প্রায় ৭৫০ টাকা খরচ হযেছে। অথচ এখন বাজারে আলু বিক্রি করতে চাইলে পাইকাররা বলছে এক মণের দাম ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা। যার কারনে আলু বিক্রি করতে পারছিনা আমরা। আমার বাড়ির উঠানে ৫০০ মণ আলু ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রেখেছি। আপনি গ্রাম ঘুরে দেখেন অনেকেই আমর মতো ঝুঁকি নিয়েই বাড়ির উঠোনে আলু জমা করে রেখেছে। যদি একটু দাম বাড়ে তাহলেই ছেড়ে দিব। আর যদি এর মধ্যে বৃষ্টি-বাদল শুরু হয় তাহলে সব শেষ।

        সুমন মিয়া নামে এক কৃষক বলেন, প্রতি কেজি আলু ১৩ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি করছি। অথচ বাজারে খুচরা আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা। আমরা আলু উৎপাদন করে কি দোষ করে ফেলেছি?। মৌসুম শেষে মজুদ কমে আসলে ১৩ টাকার আলুই বিক্রি হবে ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে। আমরা যদি নিজেরা এ আলু সংরক্ষণ করতে পারতাম তাহলে মজুতদারদের পরিবর্তে লাভবান আমরাই হতাম।

        আলু চাষী মোকালেব মিয়া বলেন, শখের বসে এ বছর ৪২ শতক জমিতে আলু লাগিয়েছি। ফলনও ভালো হয়েছে। বর্তমানে আমার কাছে প্রায় ৬০ মণ আলু রয়েছে। অন্যান বছর দেখি পাইকাররা বাড়িতে এসে আলু নিয়ে যায় কিন্তু এবার কেউই আসছে না। শুনেছি নিমসার বাজারে উত্তরবঙ্গ থেকে আনা আলু বেশি বিক্রি হচ্ছে। গ্রাম থেকে আলু সংগ্রহ করতে হলে শ্রমিক খরচ এবং পরিবহন করো দুটোই লাগে তাই তারা এদিকে আগ্রহ দেখায় না।

        কৃষকদের অভিযোগ, উত্তরবঙ্গসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আনা আলু পরিবহন খরচসহ অন্যান্য খরচে দেখিয়ে বেশি দামে বিক্রি করা যায়। যারা ট্রাকে করে আলু পাঠান সে আলুর সংরক্ষণের দায়িত্ব তাদেরই থাকে। বিক্রি না হলে পচে যাওয়ার ক্ষতির দায় না থাকায় আড়তদাররা বাইরে থেকে আসা আলু ব্যবসায়ীদের প্রাধান্য দিয়ে থাকেন বেশি। অন্যদিকে যারা আলু বেসরকারিভাবে মজুদ করেন তাদের আলু দিয়ে ভর্তি হয়ে গেছে স্থানীয় কল্ডেস্টোরেজ গুলো। একদিকে আড়তদারদের কাছে চাহিদা নেই স্থানীয় আলুর অপরদিকে কোল্ড স্টোরেজে নেই জায়গা - মাঝখানে বিপুল পরিমাণ আলু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা।

        নিমসার বাজারের আলুর আড়তদার মো. নাজিম বলেন, সারা বাংলাদেশের কোল্ড স্টোরেজদের সাথে আমাদের যোগাযোগ আছে। জানা মতে কোথায়ও জায়গা নেই। তারপরও সরকার যদি খোঁজ নিয়ে কোল্ড স্টোরেজ গুলোতে জায়গা করতে পারে তাহলে আমাদের স্থানীয় আলুগুলো রাখার ব্যবস্থা করলে কৃষক বেঁচে যাবে। এ বিপুল পরিমাণ আলু পচনের হাত থেকে বাঁচানো গেলে আলুর দাম মানুষের নাগালের মধ্যে সারা বছরই থাকবে।

        কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আইউব মাহমুদ জানান, এবছর জেলায় আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১০ হাজার ২৫৪ হেক্টর জমি। উৎপাদন হয়েছে ৯ হাজার ৬১ একর জমিতে। ফলন হয়েছে ২২ লাখ ৯০ হাজার ৭৮ টন, যা গত বছরের তুলনায় বেশি। আমরা ২০২৪ সালের বন্যার পর চেষ্টা করেছি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে আলু চাষ করতে হয়। যেসব জমিতে আলু চাষ হয়েছে ফলন খুবই ভালো হয়েছে। কিন্তু যে পরিমান আলু এখনো বিক্রি হয়নি এসব বিষয় নিয়ে কাজ করবে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর।

        প্রাসঙ্গিক
          মন্তব্য
          সর্বশেষ সংবাদ
            সর্বাধিক পঠিত