নিম্নচাপটি ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে

উত্তর অন্ধ্র প্রদেশ-দক্ষিণ ওড়িষ্যার উপকূলের অদূরে পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সকাল ৬টায় দক্ষিণ ওড়িষ্যা উপকূল অতিক্রম করে বর্তমানে উপকূলীয় ওড়িষ্যা ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরো উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সকালে আবহাওয়ার ২ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ু চাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে দমকা/ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
যার ফলে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার সব নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
সাত মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
মোহাম্মদপুরের ছিনতাই চক্রের প্রধান ‘ভাগনে বিল্লাল’ গ্রেপ্তার

ছিনতাই চক্র পরিচালনার অভিযোগে বিল্লাল ওরফে অগ্নি বিল্লাল ওরফে ভাগনে বিল্লাল (২৯) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)। সিটিটিসি বলছে, রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ছিনতাই চক্রের প্রধান ভাগনে বিল্লাল।
সিটিটিসির বরাতে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, রাজধানীতে বিশেষ অভিযান পরিচালনার সময় সিটিটিসি’র একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকার ছিনতাইকারী বিল্লাল সাভারের শামলাপুর এলাকায় অবস্থান করছে।
ওই তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার (১৮ আগস্ট) দিবাগত রাত ১টার দিকে অভিযান পরিচালনা করে বিল্লালকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার বিল্লাল মোহাম্মদপুর ও আদাবরসহ বিভিন্ন এলাকায় চাপাতি ও বিভিন্ন ধারালো অস্ত্রের মুখে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ছিনতাই করত।
সিটিটিসি সূত্রে আরও জানা যায়, বিল্লালের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর ও আদাবর থানায় সাতটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানাসহ বিভিন্ন অপরাধের ছয়টি মামলা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।
বরগুনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট
অসমাপ্ত আত্মজীবনী’সহ চার শতাধিক বই পুড়িয়ে দিলেন শিক্ষার্থীরা

বরগুনার সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের লাইব্রেরি থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনীসহ আওয়ামী লীগের প্রায় চার শতাধিক বই আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ক্যাম্পাস চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
শিক্ষার্থীরা জানায়, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী সরকারের পতন হয়। এরপর দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আওয়ামী সরকারের সকল চিহ্ন মুছে ফেলা হলেও বরগুনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের লাইব্রেরিতে ছিল শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের আরও অসংখ্য বই। পরে কলেজের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে লাইব্রেরিতে খুঁজে প্রায় চার শতাধিক বই বের করে আগুনে পুড়িয়ে দেন।
বরগুনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কম্পিউটার ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী ও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শাখার ছাত্রশিবিরের সভাপতি আবদুল বলেন, ‘লাইব্রেরিতে বঙ্গবন্ধুর কিছু বই ছিল। গত ৫ আগস্টের পর ওই বইগুলো থাকার কথা না। স্যারদের কাছে শিক্ষার্থীরা জানতে চেয়েছে বইগুলো আছে কিনা। তবে তারা বলেছিলেন বইগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে। পরে লাইব্রেরিতে খুঁজে বইগুলো পাওয়া যায়। পরে কলেজের সামনে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়।’
বরগুনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শিহাব হোসাইন বলেন, কলেজের চার তলার একটি লাইব্রেরি রুম থেকে শেখ মুজিবের বিভিন্ন গল্পের বইসহ চার শতাধিক বই বের করা হয়। ছাত্রদলের কলেজ শাখার সদস্যরাসহ, ছাত্রশিবির, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে এ বইগুলো খুঁজে বের করে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।
এ বিষয়ে বরগুনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অনিল চন্দ্র কীর্তুনিয়া বলেন, ‘আমি গত দেড় মাস আগে এখানে যোগদান করেছি। বিগত সরকারের ওই বইগুলো ছিল। এর আগে যিনি দায়িত্বে ছিলেন তিনি আমাকে বলেছেন সম্মুখে কোনো বই রাখা নেই। তবে কলেজে পরীক্ষা চলায় কোথায় কোনো বই রাখা হয়েছে তা সম্পূর্ণভাবে খোঁজ নিতে পারিনি। শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরিতে গিয়ে ডেকে রাখা বইগুলো বের করে পুড়িয়ে ফেলেছে।’
পাবনায় ‘ময়েজ বাহিনীর’ অস্ত্র তৈরির কারখানা, বিপুল সরঞ্জামসহ আটক ২

পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার প্রত্যন্ত চতরা বিলে সন্ত্রাসী ময়েজ বাহিনীর আস্তানায় অস্ত্র তৈরি কারখানার সন্ধান পাওয়া গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মঙ্গলবার ভোরে ওই আস্তানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে দুজনকে আটক করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, আতাইকুলা থানার অন্তর্গত আটঘরিয়া উপজেলার প্রত্যন্ত চতরা বিলে সন্ত্রাসী ময়েজ বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিবি ও আতাইকুলা থানা পুলিশ মঙ্গলবার ভোরে ওই বিলে ময়েজ বাহিনীর আস্তানায় বিশেষ অভিযান চালায়। এ সময় বিলের মধ্যে লুকানো ঘাঁটি থেকে অস্ত্র তৈরির ছাঁচ, কাটিং মেশিন, ড্রিল মেশিন, লোহার পাত, গানপাউডারের মতো উপকরণসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা করা হয়।
এ সময় আস্তানা থেকে অধিকাংশ সন্ত্রাসী পালিয়ে গেলেও দুজন আটক হয়। আটক ব্যক্তিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, স্থানীয়ভাবে সংগঠিত ডাকাতি ও চাঁদাবাজির জন্য এসব অস্ত্র তৈরি করা হচ্ছিল। তবে এর পেছনে আরও বড় কোনো নেটওয়ার্ক জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
স্থানীয় অধিবাসীরা জানান, চতরা বিলের দুর্গম চরাঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরেই ময়েজ বাহিনীর তৎপরতা চলছিল। দিনের বেলায় তেমন দেখা না গেলেও রাতে তারা অস্ত্রসহ মহড়া দিত। এতে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছিল। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত ছিল। বিলে বিপুল আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
আতাইকুলা থানার ওসি হাবিবুল ইসলাম জানান, আটঘরিয়া উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত চতরা বিলকে ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ডাকাতিসহ নানা অপরাধের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে রেখেছিল ময়েজ বাহিনী। বেশ কয়েকদিন পর্যবেক্ষণ করার পর মঙ্গলবার ভোরে ওই বিলের আস্তানায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। আস্তানা থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধারসহ দুজনকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং অন্যদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। অস্ত্র তৈরির আস্তানা নিয়ে মিডিয়াকে পরে বিস্তারিত ব্রিফিং করা হবে বলে জানান তিনি।
৬ কোটি টাকার সেতু পারাপারে সাঁকোই একমাত্র ভরসা

বরগুনার আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী নদীতে একটি সেতু নির্মাণ হলেও করা হয়নি সংযোগ সড়ক। ফলে ৬ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ওই সেতুটি পারাপারে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে এলাকার অন্তত ৩০ হাজার বাসিন্দাদের। বাঁশ ও কাঠের তৈরি সাঁকো দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে সেতুতে উঠছেন তারা। এ ছাড়াও সংযোগ সড়কের অভাবে সব ধরনের গাড়ি চলাচলও বন্ধ রয়েছে। তবে সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য দ্রুতই দরপত্র আহ্বান করা হবে বলে জানিয়েছেন বরগুনার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী, কুকুয়া ও চাওড়া এ তিনটি ইউনিয়নের সংযোগস্থল আমড়াগাছিয়া বাজার সংলগ্ন গুলিশাখালী নদীর ওপর সেতু নির্মাণের জন্য ২০২৩ সালের ১৯ মে মেসার্স কহিনুর এন্টারপ্রাইজ এ্যান্ড ত্রিপুরা নামের একটি বরিশালের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয় এলজিইডি। পরে ৬ কোটি ২২ লাখ ৫৮ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্ধারিত সময়ের আগে ২০২৪ সালের জুন মাসেই সেতু নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করে প্রতিষ্ঠানটি। তবে নির্মাণ কাজ শেষ হলে সেতুটির পশ্চিম পাশের উচ্চতার ৫ ফুটের মাথায় পূর্ব খেকুয়ানি এলাকার চলাচলের জন্য একটি সড়ক থাকায় আটকে যায় সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ। আর এ কারণেই দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সেতুটি পারাপারে বাঁশ ও কাঠের মাধ্যমে নির্মাণ করা সাঁকোই একমাত্র ভরসা স্থানীয় বাসিন্দাদের।
সরেজমিনে সেতুটি ঘুরে দেখা যায়, প্রতিদিন কয়েকটি ইউনিয়নের শিশু বৃদ্ধসহ অসংখ্য মানুষ এ সেতু পার হয়ে বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াত করেন। সেতুটির পূর্ব প্রান্তে বালু ভরাট করে সংযোগ সড়কের কিছুটা কাজ হলেও অপর প্রান্তে নেওয়া হয়নি কোনো উদ্যোগ। এতে চলাচলের সুবিধায় স্থানীয়দের উদ্যোগে পশ্চিম প্রান্তে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। তবে ঝুঁকি নিয়ে মানুষ চলাচল করলেও বন্ধ রয়েছে সকল প্রকার গাড়ি চলাচল।
রাশেদুল হাসান নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, প্রায় দুই বছর ধরে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ সেতুটি সংযোগ সড়কে অভাবে মানুষের কোনো উপকারে আসছে না। আমাড়াগাছিয়া বাজারসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের যাওয়া-আসা এবং চিকিৎসা সেবা নিতে দুইটি ইউনিয়নের মানুষ এ সেতুর মাধ্যমেই যাতায়াত করেন। সরকার কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণ করলেও তা কোনো এক অবহেলায় জনগণের কাজে আসছেনা। এলাকায় কেউ অসুস্থ হলে প্রায় দুই কিলোমিটার পথ ঘুরে দেড় থেকে দুই ঘন্টা সময় লাগে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যেতে। তবে সেতুটি চলাচলের উপযুক্ত থাকলে মাত্র ১০ থেকে ১৫ মিনিটেই যাওয়া সম্ভব হত। আমরা বারবার বিভিন্ন যায়গায় কথা বলেও এখন পর্যন্ত এ সেতুর সংযোগ সড়কের বিষয়ে কোনো সুরাহা পাইনি।
ইউসুফ নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, সেতু দিয়ে কোনো গাড়ি চলাচল করতে পারে না। সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে সেতুর ওপর উঠতে হয়। শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই সাঁকো দিয়ে চলাচল করছেন। যে কোনো সময় একটি দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, তখন তার দায়ভার কে নিবে। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই, যাতে অতি দ্রুত এ সেতুর সংযোগ সড়কের কাজ শেষ করা হয়।
মন্তব্য