অভিযোগ নিয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীকে বের করে দিলেন জবি রেজিস্ট্রার

জবি প্রতিনিধি:
"বের হয়ে যাও! ওরে বের করে দাও! বিশ্ববিদ্যালয়ে কেনো পড়তে এসেছো এলাকার কলেজে পড়লেই তো পারতে"
ঠিক এভাবেই শিক্ষার্থীর সাথে দুর্ব্যবহার করে রুম থেকে বের করে দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. শেখ মো: গিয়াস উদ্দিন। হেনস্তার শিকার হওয়া শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফন্টের সভাপতি ইভান তাহসীব।
গতকাল মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের গ্যারেজ থেকে গত তিন মাসে একাধিক সাইকেল চুরির ঘটনা নিয়ে লিখিত অভিযোগ দিতে যায় ইভান তাহসিভ সহ কয়েকজন শিক্ষার্থী। এসকল চুরির ঘটনায় যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ নিয়ে যাওয়ার পরই তিনি এর সমাধান না করে উল্টো অভিযোগকারীদের সাথে উত্তেজিত হয়ে তাকে রুম থেকে বের করে দেন।
শিক্ষার্থীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরন করার একটি অডিও ক্লিপ হাতে এসেছে প্রতিবেদকের কছে।
অডিও ক্লিপে শোনা যায়, শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে রেজিস্ট্রার ড. গিয়াস উদ্দিন উত্তেজিত হয়ে বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের মালামালের নিরাপত্তা দিতে পারবো না, মালামাল শিক্ষার্থীদের নিজ দায়িত্বে রাখতে হবে। শিক্ষার্থীরা কি খাবে, কোথায় থাকবে? এই দায়িত্ব প্রশাসনের না। শিক্ষার্থীদের কিছু হলে এর দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয়ের না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর দায়ভার নিতে পারবে না। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের সাথে ক্ষিপ্ত হয়ে রেজিস্ট্রার বলেন, বের হয়ে যাও, ওকে বের করে দাও। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কেনো পড়তে আসো এলাকায় পড়লেই তো পারতে।
এ বিষয়ে ইভান তাহসীব বলেন, আমার এক ছোট ভাইয়ের সাইকেল চুরি নিয়ে অভিযোগ জানাতে আমরা রেজিস্ট্রার দপ্তরে যায়। আমি প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেরেজ থেকে সাইকেল চুরির ঘটনা বললে, রেজিস্ট্রার উত্তেজিত হয়ে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো গ্যারেজ নেই। শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের আন্ডার গ্রাউন্ডের মালামালের নিরাপত্তার দায়িত্ব ওনি নিতে পারবে না বলে জানান। শিক্ষার্থীরা টিউশনির জমানো টাকায় সাইকেল কিনে, সেই সাইকেল নিয়ে টিউশনি করে।
ওনি যদি গ্যারেজের নিরাপত্তা দিতে না পারে, তাহলে গ্যারেজ বন্ধ করে দিক, অথবা সাইনবোর্ড লাগিয়ে ঘোষণা করে দিক, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন মালামালের দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় নিতে পারবে না। এক পর্যায়ে ওনি আমাকে তার কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি মিটিং আছেন এ বিষয়ে পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন। পরবর্তীতে একাধিকবার বিভিন্ন ফোন নাম্বার দিয়ে তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি আর ফোন রিসিভ করেন নি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, বিষয়টি আমি শোনা মাত্র রেজিস্ট্রারের সাথে কথা বলেছি। এটা সম্পূর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিত। শিক্ষার্থীদের যদি কোন অভিযোগ থাকে তাহলে তা যেন আমার অফিসে দেয় আমি এটার ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
আবাসন সংকট নিরসনসহ
চার দফা দাবিতে উপাচার্যের কাছে জবি শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি

জবি প্রতিনিধি:
আবাসন সংকট নিরসনসহ চার দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দুই দশক পার হলেও এখনও শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করা হয়নি। এটি অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় ‘চরম বৈষম্যমূলক’ উল্লেখ করে তারা বলেন, এটি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা, নিরাপত্তা ও মানবিক চাহিদার পরিপন্থী।
শিক্ষার্থীরা সতর্ক করে বলেন, দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে চলমান শান্তিপূর্ণ আন্দোলন আরও বেগবান হবে এবং তার দায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেই নিতে হবে।
উল্লেখিত চার দফা দাবিগুলো হলো:
১. ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট বৃদ্ধি এবং অন্তত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন ভাতা অন্তর্ভুক্ত করা।
২. দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণ এবং পুরান ঢাকায় ড. হাবিবুর রহমান হল ও বাণী ভবনের নির্মাণকাজ আগামী ১০ মে’র মধ্যে শুরু করা।
৩. বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি ১৫ দিন অন্তর দ্বিতীয় ক্যাম্পাস ও হল নির্মাণ কার্যক্রমের অগ্রগতি মুক্তমঞ্চে ব্রিফ করার বাধ্যবাধকতা আরোপ।
৪. আগামী ১৫ মে’র মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা।
উল্লেখ্য, আবাসন সংকট ও দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের নির্মাণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই জবি শিক্ষার্থীদের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করছে। এর আগে বিভিন্ন সময় তারা মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।
কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে
খুবিতে ক্লাস বর্জন ও ব্লকেড কর্মসূচি

খুবি প্রতিনিধি:
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবি ও চলমান আমরণ আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থীরা আজ (বুধবার) সকল ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের (২৪ ব্যাচের) পূর্বনির্ধারিত পরীক্ষা যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে।
আজ (২৩ এপ্রিল) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদি চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হবে, যা জিরো পয়েন্টে গিয়ে ব্লকেড কর্মসূচিতে রূপ নেবে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, কুয়েটের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন কেবল একটি প্রতিষ্ঠানের নয় সেটি দেশের উচ্চশিক্ষা-পর্যায়ের নিরাপত্তা, স্বচ্ছতা ও সম্মানজনক পরিবেশ নিশ্চিত করার বৃহত্তর দাবির অংশ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, "আমরা কুয়েট শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনের সঙ্গে একাত্ম। তারা নিরাপদ ও সম্মানজনক পরিবেশে পড়াশোনার যে দাবি জানিয়েছে, সেটি শুধু তাদের নয়—সারাদেশের শিক্ষার্থীদেরই দাবি।"
আরেকজন শিক্ষার্থী জানান, "শিক্ষাঙ্গনে হয়রানি ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে কুয়েটের শিক্ষার্থীরা যে অবস্থান নিয়েছে, সেটি সাহসিকতার উদাহরণ। আমরা তাদের পাশে থেকে সঠিক দাবিগুলো আদায়ে সহযোদ্ধা হতে চাই।"
রাবি প্রেসক্লাবের নেতৃত্বে মাহিন-মিশন

রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) প্রেসক্লাবের ২০২৫-২৬ সেশনের নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে জাগো নিউজের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক মনির হোসেন মাহিনকে সভাপতি ও দৈনিক মানবজমিনের প্রতিবেদক মারুফ হোসেন মিশনকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৩ সদস্যবিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়েছে।
রোববার (২০ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৩টায় সংগঠনটির নিজস্ব কার্যালয়ে নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণা করেন সংগঠনটির প্রধান উপদেষ্টা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসেন।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন সহসভাপতি সৈয়দ সাকিব (বাংলাভিশন) ও আশিকুল ইসলাম ধ্রুব (দৈনিক ইত্তেফাক), সহসাধারণ সম্পাদক জুবায়ের জিসান (ঢাকা পোস্ট), কোষাধ্যক্ষ মিরাজ আহম্মেদ আফ্রিদি (দৈনিক ইনকিলাব), সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক এম শামীম (দৈনিক দিনকাল), প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবু ছালেহ শোয়েব (দৈনিক বণিক বার্তা), দপ্তর সম্পাদক ফাহমিদুর রহমান ফাহিম (দৈনিক আমার দেশ) ও ক্রীড়া সম্পাদক ফজলে রাব্বি পরশ (দৈনিক যায়যায়দিন)।
এতে কার্যনির্বাহী সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন তানভির খান তরুণ (এডুকেশন টাইমস), ফাহিমা করিম বন্যা (দৈনিক মানবিক বাংলাদেশ) ও মীর তুহিন (দৈনিক ভোরের ডাক)।
ফলাফল ঘোষণার সময় আরো উপস্থিত ছিলেন প্রেসক্লাবের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ফজলুল হক, অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার ও সদ্য বিদায়ী সভাপতি জুবায়ের জামিল।
নতুন কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষক সমিতি, বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, রিপোর্টার্স ইউনিটি, শিক্ষক ফোরাম, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো নতুন কমিটিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
সেশনজট নিরসনে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে: রাবিপ্রবি উপাচার্য

রাবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ
রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবিপ্রবি) সেশনজট নিরসনে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আতিয়ার রহমান।
সেশনজট নিরসনের পরিকল্পনা জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, সেশনজট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে ইতোমধ্যেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমি যোগদানের পরপরই সকল বিভাগের সাথে বসেছি, আলোচনা করেছি এ বিষয়ে বিভাগগুলোকে বার্তা দিয়েছি।
উপাচার্য আরো বলেন, সেশনজট নিরসনের জন্য আমি সকল বিভাগের চেয়ারম্যানদের সাথে কথা বলেছি। এখানে একটি বিষয় আমাদের মাথায় রাখতে হবে, সেমিস্টারের সময়সীমা কমানোর পাশাপাশি কারিকুলাম সম্পন্ন করতে যেন ঘাটতিটা না থাকে। সবদিক চিন্তা করেই আমাদের কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে বিভাগের চেয়ারম্যান ও শিক্ষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকাটাও জরুরি বলে আমি মনে করি।’
উপাচার্য আরো জানান, সেশনজট দূর করার জন্য দ্রুত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার ব্যাপারে ইতোমধ্যে সকলকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
এদিকে শিক্ষার্থীরা বলছেন, করোনা মহামারী,শিক্ষক আন্দোলন, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুথান, শিক্ষক সংকট ও শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণেই সেশনজট তৈরি হয়েছে।
সিএসই বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী আবিদুল ইসলাম জানান, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যাগুলোর মধ্যে অন্যতম প্রধান সমস্যা হচ্ছে সেশনজট। আমাদের নতুন উপাচার্য আসার পর ক্যাম্পাসে একের পর এক চমক দেখতে পাচ্ছি, অনেক পরিবর্তন আমাদের চোখের সামনে দৃশ্যমান। আমরা আশাকরি, বাকি কাজের মতো স্যারের হস্তক্ষেপে দ্রুত সময়ের মধ্যে সেশনজট নিরসনে যথাযথ উদ্যোগ দেখতে পাবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকটের ব্যাপারে জানতে চাইলে উপাচার্য জানান, আমাদের বহু স্বল্পতা রয়েছে। সবার সহযোগিতায় ধারাবাহিকভাবে এগুলো আমরা পূরণ করার চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক ভবনের কাজ,একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রস্তুতি ও শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে তা শেষ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন উপাচার্য। তিনি এ বিষয়ে সবার সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেন।
মন্তব্য