জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকের পর যা বললেন ন্যাটোপ্রধান

ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুট বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং অন্যান্য ইউরোপীয় নেতা ও ন্যাটো অংশীদারদের বৈঠকটি খুবই সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) ফক্স নিউজের ‘দ্য ইনগ্রাহাম অ্যাঙ্গেল’ অনুষ্ঠানে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে ন্যাটোপ্রধান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বৈঠকে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে সেখানে স্থলসেনা মোতায়েন নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে রোববার হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ও ইউরোপের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। টানা কয়েক ঘণ্টা কয়েক দফা বৈঠক শেষে সন্ধ্যায় ট্রাম্প বলেন, যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে বৈঠক আয়োজনে কাজ শুরু করেছেন তিনি।
নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগেমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি টেলিফোনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেছেন। হোয়াইট হাউসে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক চলার মধ্যেই পুতিনকে ফোন করেন তিনি।
তবে কবে, কোথায় জেলেনস্কি–পুতিন বৈঠক হবে, সে বিষয়ে কিছু জানাননি ট্রাম্প। তিনি লিখেছেন, ‘ওই বৈঠকের পর আমাদের মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হবে। সেখানে দুই প্রেসিডেন্টের (পুতিন ও জেলেনস্কি) সঙ্গে আমি থাকব। আবারও বলছি, প্রায় চার বছর ধরে চলা যুদ্ধ বন্ধের জন্য এটি একটি খুব ভালো ও প্রাথমিক পদক্ষেপ।’
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে গত শুক্রবার আলাস্কায় পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের তিন দিনের মাথায় গতকাল হোয়াইট হাউসে জেলেনস্কিসহ ইউরোপের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের সঙ্গে ওই বৈঠক করলেন ট্রাম্প।
বৈঠকে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎস, ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব ও পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুট উপস্থিত ছিলেন।
দু’সপ্তাহের মধ্যে বৈঠকে বসবেন পুতিন ও জেলেনস্কি: জার্মান চ্যান্সেলর

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে বসতে সম্মত হয়েছেন— এমনটাই জানিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ।
সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে জেলেনস্কিকে সমর্থন জানাতে যেসব ইউরোপীয় নেতারা ওয়াশিংটনে গিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে মের্জও ছিলেন।
এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, বৈঠকের মাঝামাঝি সময়ে ট্রাম্প পতিনকে ফোন করেন এবং তাকে জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য রাজি করান।
জার্মান চ্যান্সেলর ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পুতিনকে বৈঠকের জন্য রাজি করানোর জন্য কৃতিত্ব দিয়েছেন।
তবে পুতিন আসলেই এই বৈঠকে অংশ নেবেন কি না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন মের্জ। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি না রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের এমন একটি শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার সাহস থাকবে কি না। অতএব, প্ররোচনা প্রয়োজন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকের বিরতির সময় আমেরিকান প্রেসিডেন্ট রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সাথে ফোনে কথা বলেছেন এবং আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের মধ্যে একটি বৈঠক হবে বলে সম্মত হয়েছেন। ‘
মের্জ আরও বলেন, ‘ট্রাম্প পরবর্তীতে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের জন্য আহ্বান জানানোর জন্য সম্মত হয়েছেন, যাতে আলোচনা ‘‘সত্যিকার অর্থে শুর’’ হতে পারে। ‘
জার্মান চ্যান্সেলর বলেন, ‘ইউরোপীয়রা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করেছে দেখে ট্রাম্প মুগ্ধ, এবং মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে তাদের আলোচনা এখন ইউক্রেনের নিরাপত্তা গ্যারান্টির বিশদ বিবরণে পরিণত হবে।
নতুন যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রাজি হামাস

ইসরায়েলের সঙ্গে ৬০ দিনের নতুন যুদ্ধবিরতির সর্বশেষ প্রস্তাব মেনে নিয়েছে গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। নতুন এই চুক্তিতে গাজায় হামাসের হাতে থাকা অর্ধেক জিম্মিকে ফেরত ও ইসরায়েলের পক্ষ থেকে কিছু ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তির শর্ত রয়েছে। সোমবার মিসরীয় সরকারি একটি সূত্রের বরাত দিয়ে হামাসের যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে নেওয়ার এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বাসেম নাঈম লিখেছেন, ‘‘গাজা যুদ্ধ নিয়ে মধ্যস্থতাকারীদের উপস্থাপিত নতুন যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে হামাস।’’
তবে এই বিষয়ে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। মিসরীয় সরকারি সূত্র বলেছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তির নতুন প্রস্তাবে ৬০ দিনের জন্য গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযান স্থগিত ও প্রায় দুই বছরের যুদ্ধের অবসানে একটি সামগ্রিক চুক্তির পথ তৈরি করার রূপরেখা রয়েছে।
বিষয়টি সম্পর্কে অবগত অপর একটি সূত্র বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের দেওয়া আগের প্রস্তাবের সঙ্গে নতুন এই প্রস্তাবের মিল রয়েছে। উইটকফের আগের ওই প্রস্তাব মেনে নিয়েছিল ইসরায়েল।
গাজা নগরীর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ইসরায়েলি পরিকল্পনা বিশ্বে ও ইসরায়েলের ভেতরেও ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে ও যুদ্ধের অবসানের দাবিতে রোববার ইসরায়েলে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। রোববারের এই বিক্ষোভকে গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অন্যতম বৃহত্তম বিক্ষোভ বলে দাবি করা হচ্ছে।
বিক্ষোভকারীরা যুদ্ধ অবসানের পাশাপাশি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে গাজায় বন্দি বাকি ৫০ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন। গাজায় হামাসের হাতে বন্দি থাকা জিম্মিদের মধ্যে অন্তত ২৯ জন জীবিত আছেন বলে ধারণা করছেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।
গাজা নগরীর নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করা নিয়ে ইসরায়েলের পরিকল্পিত অভিযানের জেরে মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীরা যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর জোরদার প্রচেষ্টা শুরু করেছেন।
গাজার পূর্বাঞ্চলে সম্ভাব্য ইসরায়েলি স্থল অভিযানের আশঙ্কায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে গাজার পশ্চিম ও দক্ষিণে আশ্রয় নিচ্ছেন। যদিও ওই দুই অঞ্চলেও টানা গোলাবর্ষণ করছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।
ইসরায়েলি হামলা ও ক্ষুধা-অনাহারে গাজায় নিহত ছাড়াল ৬২ হাজার

টানা প্রায় দুই বছরের গণহত্যামূলক অভিযানে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি হামলা ও অবরোধের জেরে সৃষ্ট ক্ষুধা ও অনাহারের কারণে ৬২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
অবরুদ্ধ এ অঞ্চলে কোনো নিরাপদ আশ্রয় নেই; প্রতিদিন মানুষ নিহত হচ্ছেন শুধু পরিবারের জন্য খাবার খুঁজতে গিয়ে। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গাজা উপত্যকার সবচেয়ে বড় নগরী — এবং এখন কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত — গাজা সিটিতে ইসরায়েলি হামলা আরও জোরদার করা হয়েছে। ইসরায়েল এ শহর দখল করে হাজার হাজার মানুষকে জোরপূর্বক দক্ষিণে তথাকথিত কনসেন্ট্রেশন জোনে সরিয়ে নিতে চায়। সোমবার ভোর থেকে গাজা জুড়ে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন, এর মধ্যে ১৪ জন ছিলেন সাহায্যপ্রত্যাশী।
আল জাজিরাকে এক চিকিৎসা সূত্র নিশ্চিত করেছে, গাজা সিটির আল-সাবরা এলাকায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত তিনজন নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছেন। স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে সাংবাদিক ইসলাম আল-কৌমিও রয়েছেন।
দেইর আল-বালাহ থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক তারেক আবু আজযুম জানিয়েছেন, “গাজা সিটির পূর্বাঞ্চলে অব্যাহতভাবে হামলা চলছে। হামলার মাত্রা থেকে বোঝা যাচ্ছে, ইসরায়েলের বর্তমান কৌশল গাজার ভৌগোলিক ও জনসংখ্যাগত কাঠামো বদলে দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, “ইসরায়েল ভারী কামান, যুদ্ধবিমান ও ড্রোন ব্যবহার করছে বাকি আবাসিক বাড়িগুলো ধ্বংস করার জন্য। ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা ভয়াবহ। এই সামরিক কৌশলই বলে দিচ্ছে যে ইসরায়েল সহজে স্থল অভিযান চালাতে পারবে এবং আবাসিক এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে। স্থানীয়রা বলছেন, দিন-রাত হামলা অব্যাহত রয়েছে।”
যারা ইতোমধ্যেই একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, তারা আবারও গাজা সিটি ছেড়ে যাচ্ছেন। তবে অনেকে রয়ে গেছেন। গত রোববারও শহরটি ছিল হামলার মূল লক্ষ্য, সেদিন প্রায় ৬০ জন নিহত হন। একই সঙ্গে ইসরায়েল বাকি অল্প কয়েকটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রকেও হামলার টার্গেট করছে।
ধ্বংসস্তূপ, অস্থায়ী আশ্রয় বা তাঁবুতে বেঁচে থাকা ফিলিস্তিনিদের অনেকেরই কোথাও যাওয়ার উপায় নেই। বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি বিলাল আবু সিত্তা বলেন, “আমি সেখানে কীভাবে যাব? যাওয়ার মতো সামর্থ্য নেই। দক্ষিণে যেতে প্রায় ৯০০ ডলার লাগে, আমার কাছে এক ডলারও নেই। আমি কীভাবে যাব?”
অন্যরা ইসরায়েলের দেওয়া আশ্রয় ও সাহায্যের প্রতিশ্রুতিতে আস্থা রাখছেন না। নোয়ামান হামাদ বলেন, “আমরা ইসরায়েলের কাছ থেকে কিছুই চাই না। শুধু আমাদের সেই ঘরে ফেরার অনুমতি দিক, যেখান থেকে আমরা পালিয়েছিলাম— আমাদের আর কিছু দরকার নেই।”
এদিকে সামান্য আশার আলো দেখা দিয়েছে। কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতির খসড়া মেনে নিয়েছে হামাস। আল জাজিরাকে এক সূত্র জানিয়েছে, এই চুক্তি কার্যকর হলে ৬০ দিনের জন্য যুদ্ধবিরতি হবে এবং গাজায় আটক রাখা ইসরায়েলি বন্দিদের অর্ধেক ও ইসরায়েলের কারাগারে আটক একাংশ ফিলিস্তিনিকেও মুক্তি দেওয়া হবে।
তবে ফিলিস্তিনিরা আগেও বহুবার এমন আশার ভরসায় প্রতারিত হয়েছেন। চলতি বছরের জানুয়ারির স্বল্পস্থায়ী যুদ্ধবিরতি মার্চে ইসরায়েল ভেঙে দেওয়ার পর থেকেই এই যুদ্ধ প্রবেশ করেছে মানবিক বিপর্যয়ের সবচেয়ে ভয়াবহ পর্যায়ে।
বৃহত্তর ইসরায়েল : আদৌ সম্ভব নাকি শুধুই হুমকি?

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আবারও ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ ধারণা নিয়ে বিতর্ক তৈরি করেছেন। ১৯৯৫ সালে প্রকাশিত তার বই ‘এ প্লেস আন্ডার দ্য সান’-এ তিনি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের অস্তিত্ব অস্বীকার করে ভূমধ্যসাগর থেকে জর্ডান নদী পর্যন্ত ভূখণ্ডকে ইহুদিদের ভূমি বলে উল্লেখ করেছিলেন।
সম্প্রতি আই২৪ নিউজে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, তিনি ‘ঐতিহাসিক ও আধ্যাত্মিক মিশনে’ আছেন এবং বৃহত্তর ইসরায়েলের স্বপ্নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই মন্তব্যে আরব লীগ, ওআইসি, জিসিসিসহ ৩১টি আরব ও ইসলামী দেশ প্রতিবাদ জানায়।
‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ ধারণার সূত্র অনেক পুরোনো। ১৮৯৭ সালের বাসেল কংগ্রেস থেকে শুরু করে ১৯১৭ সালের বেলফোর ঘোষণা এবং ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ পর্যন্ত নানা সময়ে এই স্বপ্ন আলোচনায় এসেছে। ধর্মীয় বর্ণনায় নাইল থেকে ইউফ্রেটিস পর্যন্ত ভূখণ্ডকেই প্রতিশ্রুত ভূমি বলা হয়।
এমনকি পুরোনো মুদ্রায়ও ইসরায়েলের সীমানা বিস্তৃতভাবে আঁকা ছিল—যেখানে কুয়েত, ইরাক, মিসর ও সৌদি আরব পর্যন্ত অন্তর্ভুক্ত।
ইতিহাসবিদরা বলছেন, ইসরায়েলের পতাকার নীল দাগ কিংবা পুরোনো মুদ্রাতেও এর প্রতীক পাওয়া যায়। ১৯৭০ সালের পর লিকুদ পার্টির উত্থানে এই প্রতীকী ধারণা বসতি সম্প্রসারণ এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে অস্বীকারের মাধ্যমে নীতিতে রূপ নেয়।
তবে অনেক গবেষকের মতে, বৃহত্তর ইসরায়েল বাস্তবে সম্ভব নয়। কারণ এতে লাখ লাখ আরব জনগণ যুক্ত হবে, যা ইসরায়েলের জন্য জনসংখ্যাগতভাবে বড় চ্যালেঞ্জ।
ইসরায়েলি-আমেরিকান লেখক মিকো পেলেড বলেন, ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ আসলে রাজনৈতিক স্লোগান। তার মতে, আসল হুমকি হলো গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের চলমান সামরিক অভিযান ও পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা।
তথ্যসূত্র : শাফাক নিউজ, আলজাজিরা
মন্তব্য