গাজা দখল পরিকল্পনার প্রতিবাদ জানাল রাশিয়া

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শনিবার (৯ আগস্ট) ইসরায়েলের গাজা শহর দখল পরিকল্পনার নিন্দা জানিয়েছে। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এটি গাজা উপত্যকায় মানবিক সংকটকে আরও খারাপ করার ঝুঁকি তৈরি করবে। খবর এএফপির।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ ধরনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন এরই মধ্যে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে বিরাজমান ভয়াবহ পরিস্থিতিকে আরও খারাপ হওয়ার দিকে ঠেলে দিতে পারে। যেখানে মানবিক বিপর্যয়ের সব লক্ষণই বিদ্যমান।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গাজার ৮৭ শতাংশ এলাকা এরই মধ্যে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে বা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশের আওতায়। সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, আরও সামরিক অগ্রগতি ‘বিপর্যয়কর পরিণতি’ ডেকে আনতে পারে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এখন গাজা শহরের ওপর ইসরায়েলের নতুন দখল পরিকল্পনাকে কঠোর সমালোচনা করেছে এবং তা সংঘাত ও রক্তপাত বাড়াবে বলে মনে করছে।
জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও পশ্চিমা দেশগুলো অস্ত্রবিরতি, বন্দিদের মুক্তি এবং মানবিক সাহায্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করার দাবি তুলেছে।
হামাস, ইরান, সৌদি আরবসহ অনেক দেশ এই পরিকল্পনাকে জাতিগত নির্যাতন ও গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করেছে। পাশাপাশি মিশর, জর্ডান, তুরস্ক, স্পেনসহ বহু রাষ্ট্র তা দুই-রাষ্ট্র সমাধান ও ফিলিস্তিনি অধিকার লঙ্ঘন বলে নিন্দা জানিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কঠোর পদক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়েছে।
ইরানের হুমকিতে ট্রাম্পের পরিকল্পিত করিডোর অনিশ্চিত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় আজারবাইজান-আর্মেনিয়া শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে প্রস্তাবিত ককেশাস করিডোর বাস্তবায়ন ঠেকানোর হুমকি দিয়েছে ইরান। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির শীর্ষ উপদেষ্টা আলি আকবর ভেলায়াতি সতর্ক করে বলেছেন, ‘এই করিডোর ট্রাম্পের করিযোর হবে না; বরং তার ভাড়াটে সৈন্যদের জন্য কবরস্থানে পরিণত হবে।’
প্রস্তাবিত ‘ট্রাম্প রুট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস অ্যান্ড প্রসপারিটি’ (ট্রিপ) আর্মেনিয়ার দক্ষিণাঞ্চল দিয়ে যাবে, যা আজারবাইজানকে তার নাখিচেভান এক্সক্লেভ এবং পরে তুরস্কের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত করবে। করিডোরের উন্নয়নাধিকার যুক্তরাষ্ট্রের হাতে থাকবে, যা জ্বালানি ও অন্যান্য সম্পদ রপ্তানি বাড়ানোর সুযোগ দেবে।
ইরান যদিও এই চুক্তিকে আঞ্চলিক শান্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে স্বাগত জানিয়েছে, তবে সীমান্তবর্তী এলাকায় যে কোনো বিদেশি হস্তক্ষেপ অঞ্চলটির স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে পারে বলে সতর্ক করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ এবং সাম্প্রতিক ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধের পর ইরানের সামরিক ক্ষমতা করিডোর ঠেকানোর মতো শক্তিশালী নাও হতে পারে।
এদিকে, আর্মেনিয়ার ঐতিহ্যগত মিত্র রাশিয়া বলেছে, সমাধান আঞ্চলিক দেশগুলো মিলে বাস্তবায়ন করা উচিত, যাতে পশ্চিমাদের মধ্যপ্রাচ্যের মতো ব্যর্থ প্রচেষ্টার পুনরাবৃত্তি না হয়। আজারবাইজানের ঘনিষ্ঠ মিত্র তুরস্ক চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে।
আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার মধ্যে তিন দশকের সংঘাত ২০২৩ সালে নাগোর্নো-কারাবাখ পুরোপুরি আজারবাইজানের নিয়ন্ত্রণে গেলে নতুন মোড় নেয়। আজারবাইজান বলেছে, শান্তিচুক্তি সইয়ের পথে একমাত্র বাধা আর্মেনিয়ার সংবিধান থেকে নাগোর্নো-কারাবাখের ভূখণ্ড দাবি অপসারণ করা। প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান এ বিষয়ে গণভোটের ডাক দিয়েছেন, যদিও তারিখ এখনো ঠিক হয়নি।
তবে বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, করিডোর নিয়ে এখনো অনেক প্রশ্নের উত্তর মেলেনি—যেমন কাস্টমস চেক, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং আর্মেনিয়ার বিপরীতে আজারবাইজানি ভূখণ্ডে প্রবেশাধিকারের বিষয়। এসব স্পষ্ট না হলে প্রকল্প বাস্তবায়নে বড় বাধা তৈরি হতে পারে।
দায়িত্ব নিলো প্রশাসন সংস্থা
ব্রিটেনে দেউলিয়া হওয়ার পথে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের ৩ কোম্পানি

যুক্তরাজ্যে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর তিনটি কোম্পানির দায়িত্ব নিয়েছে আর্থিক সংস্থা গ্রান্ট থর্নটনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান।
সংবাদমাধ্যম বিসনাউ শুক্রবার (৮ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই তিনটি কোম্পানির মোট সম্পদের পরিমাণ ১৪২ মিলিয়ন পাউন্ড। গত ২৯ জুলাই এগুলোর দায়িত্ব নেয় প্রশাসন সংস্থা।
সাধারণত কোনো কোম্পানি ঋণ পরিশোধ বা কার্যক্রম চালাতে ব্যর্থ হলে সেগুলো দেউলিয়ার পথে চলে যায়। তখন প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে এগুলো বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়। সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের কোম্পানিগুলোতে দুরবস্থা তৈরি হওয়ায় এগুলো প্রশাসন সংস্থার অধীনে নেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের আবাসন ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগ রয়েছে। দুর্নীতির দায়ে তাকে ইতিমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন অভিযুক্ত করেছে।
বিসনাউ জানিয়েছে, সাইফুজ্জামানের মালিকানাধীন জেটিএস প্রপার্টিস লিমিটেড, রুখমিলা প্রপার্টিস লিমিটেড এবং নিউ ভেঞ্চার্স (লন্ডন) লিমিটেডে গত ২৯ জুলাই প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। সাইফুজ্জানের যেসব কোম্পানি ইতিমধ্যে প্রশাসকের অধীনে গেছে, সেগুলোর সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হলো এ তিনটি। এগুলোর মধ্যে জেটিএসের সম্পদের পরিমাণ ৭৭ মিলিয়ন। যা অন্য দুটি কোম্পানির চেয়ে বেশি।
তথ্য অনুযায়ী, এ তিনটি ‘আবাসন কোম্পানির’ কাছে বিভিন্ন ব্যাংক ৭৮ মিলিয়ন পাউন্ড পাবে। এরমধ্যে সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ডিবিএস সাইফুজ্জামানের জেটিএসের বিভিন্ন প্রপার্টির বিপরীতে ঋণ দিয়েছে।
এরআগে চলতি বছরের শুরুতে সাইফুজ্জামানের আরও তিনটি কোম্পানিতে প্রশাসক নিয়োগের তথ্য জানিয়েছিল বিসনাউ। যেগুলোর মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ২৯ মিলিয়ন পাউন্ড।
মূলত লন্ডনে থাকা ফ্ল্যাট দেখিয়ে এ ধরনের ঋণ নেওয়া হয়।
গত সপ্তাহে বিসনাউ জানিয়েছিল, চলতি বছরের শুরুতে সাইফুজ্জামানের যেসব কোম্পানিতে প্রশাসক বসানো হয় সেগুলোর সম্পদ বিক্রি করা শুরু করেছে গ্র্যান্ড থর্নটন।
সাবেক আওয়ামী এমপি ও ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান যুক্তরাজ্যে ৫০০ মিলিয়ন পাউন্ডেরও বেশি সম্পদ কিনেছিলেন। অথচ মন্ত্রী হিসেবে তিনি নির্দিষ্ট বেতন পেতেন। দুর্নীতি ও অর্থপাচারের অভিযোগে যুক্তরাজ্যের জাতীয় অপরাধ সংস্থা সাইফুজ্জামানের ১৭০ মিলিয়ন পাউন্ডের সম্পদ জব্দ করেছে।
সূত্র: বিসনাউ
কবে, কোথায় পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করবেন, জানালেন ট্রাম্প

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধাবসান ইস্যুতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টের হাই প্রোফাইল বৈঠকটি হবে আগামী ১৫ আগস্ট, যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যে। শুক্রবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করা এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন ট্রাম্প নিজে।
ট্রুথ সোশ্যালের পোস্টে ট্রাম্প বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমার সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বহু প্রতীক্ষিত বৈঠকটি হবে আগামী ১৫ আগস্টে, যুক্তরাষ্ট্রের মহান আলাস্কা অঙ্গরাজ্যে।”
এই পোস্ট দেওয়ার আগে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে ট্রাম্প বলেছিলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে শান্তির স্বার্থে দুই দেশের মধ্যে কিছু অঞ্চল বিনিময় হতে পারে, তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলেন তিনি।
এদিকে ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প আসন্ন বৈঠকের তারিখ ও স্থান উল্লেখ করার পর তাতে সায় দিয়েছে রাশিয়াও। এক বিবৃতিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের জন্য যে সময় ও স্থান নির্ধারণ করেছেন, তা বেশ যুক্তিসঙ্গত।”
পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে পোস্ট করা এক বার্তায় ক্রেমলিন কর্মকর্তা এবং পুতিনের মুখপাত্র ইউরি উশাকভ বলেছেন, “আসন্ন বৈঠকে সন্দেহাতীতভাবেই দুই দেশের প্রেসিডেন্টের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হবে ইউক্রেন সংকটের একটি দীর্ঘস্থায়ী শান্তিপূর্ণ সমাধান।”
ট্রাম্পকে রাশিয়া সফরের নিমন্ত্রণও দিয়েছেন উশাকভ। টেলিগ্রাম পোস্টে তিনি বলেছেন, “আমরা খুবই খুশি হবো যদি দুই দেশের প্রেসিডেন্টের পরবর্তী বৈঠক রাশিয়ায় হয়। আমরা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে রাশিয়া সফরের নিমন্ত্রণ করছি।”
প্রসঙ্গত, ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতির এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য ইউক্রেনের আবেদন প্রত্যাহারের দাবিতে কিয়েভের সঙ্গে মস্কোর কয়েক বছর ধরে টানাপোড়েন চলার পর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী।
এই যুদ্ধ থামানোর জন্য পুতিনকে গত তিন বছরে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশ আহ্বান জানিয়েছে, কিন্তু পুতিন নিজের শর্তে অনড় থাকায় সেসব আহ্বানে কোনো কাজ হয়নি। রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট পর্যায়ের বৈঠকের জন্যও একাধিকবার আহ্বান জানানো হয়েছে, তবে পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কির অনাগ্রহের জন্য তা সম্ভব হয়নি।
গত মে মাস থেকে অবশ্য তুরস্কে শান্তি সংলাপ শুরু করেছেন রাশিয়া ও ইউক্রেনের সরকারি কর্মকর্তারা। বর্তমানে এই সংলাপের তৃতীয় পর্ব চলছে। গত তিন মাস ধরে চলমান সংলাপে ইতোমধ্যে কয়েক হাজার যুদ্ধবন্দি বিনিময় করেছে দুই দেশ।
এর মধ্যে গত সপ্তাহের শুরুর দিকে মস্কো এসেছিলেন ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফ। পুতিনের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন তিনি।
পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের সর্বশেষ বৈঠকটি হয়েছিল জাপানে, ২০১৯ সালের জি২০ সম্মেলনে। সে সময় নিজের প্রথম মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন ট্রাম্প।
২০২৪ সালের নির্বাচনে জিতে দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর আগামী ১৫ আগস্ট প্রথমবারের মতো পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। অবশ্য জানুয়ারি মাসে শপথ গ্রহণের পর থেকে এ পর্যন্ত আট মাসে বেশ কয়েকবার টেলিফোনে কথা হয়েছে দুই দেশের প্রেসিডেন্টের মধ্যে।
সূত্র : এএফপি
অপারেশন সিঁদুর : বড় তথ্য ফাঁস করলেন ভারতের বিমানবাহিনীর প্রধান

গত জুন মাসের শুরুর দিকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পরিচালিত সামরিক অভিযান ‘অপারেশন সিঁদুর’ ইস্যুতে বড় তথ্য প্রকাশ করেছেন ভারতের বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল অমরপ্রীত (এপি) সিং। তিনি দাবি করেছেন, অপারেশন সিঁদুর চলাকালে পাকিস্তানি বাহিনীর অন্তত ৬টি বিমান ধ্বংস করেছে ভারতের সেনাবাহিনী।
শুক্রবার ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কর্ণাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরুতে ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি বার্ষিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এয়ার চিফ মার্শাল এপি সিং। সেখানে তিনি বলেন, “অন্তত ৫টি যুদ্ধবিমান এবং একটি সামরিক কার্গো— পাকিস্তানের সমারিক বাহিনীর ৬টি বিমান আমরা ধ্বংস করেছি। বিমানগুলো ধ্বংস করা হয়েছে ভূমি থেকে রকেট ফায়ারের মাধ্যমে। প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূর থেকে আমরা ফায়ার করেছিলাম।”
“এটা একটা রেকর্ড। কারণ এর আগে কখনও ভূমি থেকে ফায়ার করে আমরা পাকিস্তানের এতগুলো যুদ্ধবিমান ধ্বংস করিনি।”
বিমান বাহিনীর প্রধান আরও জানান, ৬টি বিমানই ধ্বংস করা হয়েছে এই ছ’টি পাকিস্তানি বিমানকেই ধ্বংস করা হয়েছে ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘এস-৪০০’ ব্যবহার করে। বস্তুত, এই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রাশিয়ার তৈরি।
এই ছ’টি পাকিস্তানি বিমান ধ্বংসের পাশাপাশি আকাশপথে পাকিস্তানের সামরিক ঘাঁটিতে হামলার সময়েও বেশ কিছু পাকিস্তানি বিমানের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান এয়ার চিফ মার্শাল অমরপ্রীত। বিশেষ করে পাকিস্তানের জাকোবাবাদে সামরিক ঘাঁটির কথাও উল্লেখ করেন তিনি। সেখানে এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের হ্যাঙ্গার ছিল। ওই হ্যাঙ্গারটির অর্ধেকই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে বলে জানান বায়ুসেনা প্রধান।
জাকোবাবাদের ওই হ্যাঙ্গার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি নিশ্চিত, যে ওই হ্যাঙ্গারের ভিতরে কিছু বিমান ছিল, যেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”
গত ২২ এপ্রিল ভারতের জম্মু-কাশ্মির রাজ্যে জঙ্গি হামলায় নিহত হন ২৫ জন ভারতীয় এবং একজন নেপালি পর্যটক। হামলার কয়েক ঘণ্টা পর পাকিস্তানি কাশ্মিরভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট এর দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয়।
ভয়াবহ এই জঙ্গি হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত। কিন্তু দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার ভারতের এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলে, পাকিস্তানকে হেয় করার জন্য ভারত নিজে এই হামলার পরিকল্পনা সাজিয়েছে।
এই নিয়ে নয়াদিল্লি ও ইসলামাদের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মাঝেই ৪ থেকে ৭ জুন পর্যন্ত পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মির, পাঞ্জাব ও সিন্ধে অভিযান পরিচালনা করে ভারতের বিমান বাহিনী। দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী সেই অভিযানের নাম দেয় অপারেশন সিঁদুর।
এর পরে অবশ্য ৭ জুন থেকে ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযান ‘অপারেশন বুনিয়ান উল মারসুস’ পরিচালনা করে পাকিস্তান। পরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতিতে যায় দুই দেশ।
সূত্র : এনডিটিভি
মন্তব্য