সব বাধা পেরিয়ে ইসলামাবাদের মূল কেন্দ্রে ইমরান খানের সমর্থকরা

ডেস্ক রিপোর্ট: পুলিশ, রেঞ্জার্স, ও সেনাবাহিনীর বাধা পার করে ইসলামাবাদের মূল কেন্দ্র ডি-চকে পৌঁছে গেছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থকরা।
তবে ডি-চকে পৌঁছানোর পর তারা আবারও বাধার মুখে পড়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির স্থানীয় সংবাদমাধ্যম। এছাড়া ডি-চকের মূল স্থানের আগে কনটেইনার দিয়ে বাধা সৃষ্টি করে রাখা হয়েছিল।
সংবাদমাধ্যম দ্য ডন জানিয়েছে, ডি-চকে ইমরান খানের সমর্থকদের লক্ষ্য করে ব্যাপক কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়েছে।
গত রোববার সারা দেশ থেকে ইসলামাবাদের উদ্দেশ্যে রওনা দেন ইমরানের সমর্থকরা। তারা সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুক্তি ও এই সরকারের পদত্যাগ দাবি করছে। এছাড়া ইমরানের সমর্থকদের আরেকটি বড় দাবি হলো সংবিধানের ২৬ তম সংশোধনী বাতিল করতে হবে। যেটির মাধ্যমে মূলত দেশটির উচ্চ আদালতের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে।
ডি-চকে উপস্থিত ডনের সাংবাদিক জানিয়েছেন, তিনি ইমরানের কয়েক ডজন সমর্থককে কনটেইনার বেয়ে অপরপাশে যেতে দেখেছেন। ওই সময় একটি কনটেইনারের ওপর সেনাবাহিনীর সদস্যদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
ইসলামাবাদের পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় শেহবাজ শরীফের সরকার সংবিধানের ২৪৫ ধারা অনুযায়ী সেখানে সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে।
অপর সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবির নেতৃত্বাধীন বিশাল বহর ইসলামাবাদের জিরো পয়েন্টে এসে পৌঁছেছে। তারা সেখানে পৌঁছানোর পর তাদের লক্ষ্য করে বিপুল কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। অপরদিকে ইমরানের সমর্থকদের আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে দেখা গেছে।
সব বাধা দিয়েও ইমরানের সমর্থকদের আটকাতে না পারায় রাওয়ালপিন্ডি থেকে পুলিশের আরও এক হাজার সদস্যকে ডেকেছে স্থানীয় প্রশাসন।
এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলায় নিজেদের তিন সদস্য নিহত হওয়ার তথ্য জানিয়েছে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ। এরআগে পিটিআইয়ের হামলায় আধাসামরিক বাহিনী রেঞ্জার্স ও পুলিশের ছয় সদস্য নিহত হওয়ার দাবি করেছিল দেশটির সরকার।
পাকিস্তানে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেওয়া হলো সেনাবাহিনীকে

পাকিস্তানের ফেডারেল রাজধানী ইসলামাবাদে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সমর্থকেরা রাজধানীতে পৌঁছে বিক্ষোভ করতে পারে এই আশঙ্কায় দেশটির সরকার এই নির্দেশ দিয়েছে।
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির (পিটিআই) নেতা-কর্মীদের ইসলামাবাদে পৌঁছানোর জন্য নির্ধারিত দিন ছিল গত ২৪ নভেম্বর। তবে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা গাড়িবহরের আকার এবং পথে ব্যাপক ব্যারিকেড থাকায় তারা নির্ধারিত সময়ে পৌঁছাতে পারেননি। তবে দলটি জানিয়েছে, তারা শান্তিপূর্ণভাবে যেকোনো মূল্যে ইসলামাবাদে তাদের সমাবেশের জন্য ঘোষিত স্থান ডি-চকে পৌঁছাতে চায়।
এই অবস্থা মোকাবিলায় পাকিস্তান সরকার দেশটির সংবিধানের ২৪৫ অনুচ্ছেদের আওতায় রাজধানীতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর এক সূত্র জানিয়েছে, সেনাবাহিনীকে অনুচ্ছেদ ২৪৫-এর আওতায় মাঠে নামানো হয়েছে। পাশাপাশি পরিস্থিতি মোকাবিলায় কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে অস্থিতিশীলতা এবং সশস্ত্র হামলাকারীদের শক্ত হাতে দমন করা হয়। এ ছাড়া, ‘দেখামাত্র গুলি’ করার নির্দেশও জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্রটি।
বাড়তে থাকা নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে ইসলামাবাদে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৪৫-এর অধীনে মোতায়েন করার ঘোষণা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এক বিবৃতিতে কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা বাহিনীকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার এবং দাঙ্গাবাজ ও দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে। এমনকি চরম পদক্ষেপ হিসেবে দাঙ্গাকারীদের দেখামাত্র গুলি করারও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার প্রয়োজনে পাকিস্তান সেনাবাহিনী যেকোনো এলাকায় কারফিউ জারি করতে পারে। এ ছাড়া, ইসলামাবাদজুড়ে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এবং কিছু সদস্য গুরুত্বপূর্ণ ভবনের ছাদে অবস্থান নিয়েছেন।
টেইলর সুইফটের কনসার্টে নাচলেন জাস্টিন ট্রুডো

ডেস্ক রিপোর্ট: মন্ট্রিয়লের মতো শহর হিংসার আগুনে জ্বলছে। তা নিয়ে যেন ভ্রুক্ষেপই নেই জাস্টিন ট্রুডোর। তিনি ব্যস্ত টেইলর সুইফটের কনসার্ট নিয়ে। দর্শকদের মাঝে দাঁড়িয়ে দিব্যি নাচছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওকে কেন্দ্র করে এমনই অভিযোগ উঠেছে। আর তাতেই নিন্দুকরা হয়েছেন সরব।
ভারত-কানাডা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বেশ টালমাটাল। তা নিয়ে টানাপোড়েন তো চলছেই। এর মধ্যেই আবার মন্ট্রিয়লে প্যালেস্টাইনের পতাকা নিয়ে ন্যাটো-বিরোধী পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে তুলকালাম কাণ্ড হয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশকে স্মোক-বোমাও ছুড়তে হয়েছে বলে খবর। টরন্টোতে নাকি ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কুশপুত্তলিকাও পোড়ানো হয়েছে। হিংসার অভিযোগে একাধিক গ্রেপ্তারিও হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতেই ভাইরাল হয়েছে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর নাচের ভিডিও। শোনা গেছে, শনিবার রাতে টরোন্টোর রজার্স সেন্টারে টেইলর সুইফটের এই কনসার্ট ছিল। সব টিকিট আগেই বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। দর্শকাসন ছিল পরিপূর্ণ। তারই মাঝে ছিলেন ট্রুডো। ডার্ক শার্ট ও জিনস পরে গিয়েছিলেন তিনি। গ্র্যামিজয়ী শিল্পীর বিখ্যাত গান ‘ইউ ডোন্ট ওন মি’র ছন্দে দুহাত তুলে নাচছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী।
ট্রুডোর এই ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে। তাতেই একজনের মন্তব্য, ‘এটাই বাস্তব। মন্ট্রিয়ল পুড়ছে আর জাস্টিন ট্রুডো টেলর সুইফ্টের কনসার্টে তরুণীদের ফ্রেন্ডশিপ ব্যান্ড দেওয়া-নেওয়া করছেন আর নাচছেন আনন্দে।’
কানাডার প্রধানমন্ত্রীর এই নাচকে রোমের সম্রাট নিরোর বাঁশি বাজানোর সঙ্গেও তুলনা করা হয়েছে। দেশের সমস্যার সমাধান করার বদলে তিনি কেন টেইলর সুইফটের কনসার্টে গিয়ে নাচে মশগুল? তা নিয়ে বিরোধীরাও প্রশ্ন তুলেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সমন জারির পর এবার ভারতের আদালতে আদানির বিরুদ্ধে মামলা

ডেস্ক রিপোর্ট: ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা ও সমন জারির পর এবার ভারতের সুপ্রিম কোর্টেও মামলা হয়েছে গৌতম আদানির বিরুদ্ধে। ভারতের এই শীর্ষ ধনকুবেরের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছেন অ্যাডভোকেট বিশাল তিওয়ারি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, ভারতের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী আদানি গ্রুপের চেয়ারপারসন গৌতম আদানি ও তাঁর ভাতিজা সাগর আদানির বিরুদ্ধে সমন পাঠিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিকিউরিটি ও এক্সচেঞ্জ কমিশন।
গত বুধবার ভারতের আহমেদাবাদে শান্তিবন ফার্মে গৌতম আদানির বাড়িতে এবং বোড়াকেভে সাগর আদানির বাড়িতে এই সমন পৌঁছেছে।
সমনে গৌতম ও সাগর আদানিকে ২১ দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন নিউইয়র্কের ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্টের ফেডারেল কোর্ট। এ ছাড়া মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আদানিদের ওপর অনির্দিষ্ট আর্থিক জরিমানা এবং বিধিনিষেধ চেয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জনিয়েছে, গৌতম আদানি ও তাঁর ভাতিজা সাগর আদানিসহ আরও সাতজনের বিরুদ্ধে ২৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেডের একজন পরিচালকও আছেন এর মধ্যে।
নিউইয়র্কের আদালতে করা মামলার নথি থেকে জানা গেছে, কথিত ঘুষের ঘটনাগুলো ২০২০ সাল থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ঘটেছে।
মার্কিন আদালতে এ মামলার পর এবার ঘুষ ও প্রতারণার অভিযোগে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে মামলা করলেন অ্যাডভোকেট বিশাল তিওয়ারি। এর আগে তিনি আদানি-হিন্ডেনবার্গ বিতর্কের সময়ও সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন।
বিশাল তিওয়ারি তাঁর মামলায় আদানি গোষ্ঠীকে ‘অর্থ জালিয়াতি’ ও ‘স্টক ম্যানিপুলেশন’–এর জন্য অভিযুক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, আদানি গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে ২০ হাজার কোটি রুপি শেয়ার বিক্রি বাতিল করেছে।
পাকিস্তানে ইমরান খানের হাজার হাজার সমর্থক গ্রেফতার

ডেস্ক রিপোর্ট: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুক্তির দাবিতে রাজধানী ইসলামাবাদে ইমরান খানের সমর্থকরা বিক্ষোভ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাদের ঠেকাতে রোববার ইসলামাবাদে নিরাপত্তা-লকডাউন জারি করা হয়।
ইমরানের সমর্থকদের দাবি, নির্বাচনে জালিয়াতি করে ক্ষমতায় এসেছেন শেহবাজ শরিফরা। তাই তাদের পদত্যাগ করতে হবে। ইমরানসহ পিটিআই দলের যে নেতারা বন্দি আছেন, তাদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।
বার্তাসংস্থা এপি জানিয়েছে, ইমরানের কয়েক হাজার সমর্থককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার মধ্যে দলের পাঁচজন সংসদ সদস্যও আছেন। নিরাপত্তাজনিত কারণে ইসলামাবাদের অনেক জায়গায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখাওয়া থেকে আসার সব রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। লাহোরেও পুলিশ পিটিআইয়ের প্রচুর কর্মীকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, যেকোনও ধরনের জমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
খাইবার পাখতুনখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রী ও ইমরানের ঘনিষ্ঠ নেতা আলি আমিন গান্দাপুর ভিডিওবার্তায় বলেছেন, মানুষ যেন শহরের ডি চকে জমায়েত হন। যতক্ষণ পর্যন্ত দাবিপূরণ না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত ওখানে অবস্থান করার জন্য ইমরান খান নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে গত অক্টোবরেও পুলিশ ইসলামাবাদে এভাবেই ইমরানের সমর্থকদের বিক্ষোভ আটকানোর চেষ্টা করেছিল। তখন বিক্ষোভ সহিংস হয়ে ওঠে। একজন পুলিশকর্মী মারা যান। প্রচুর নিরাপত্তা কর্মী আহত হন। বহু বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়।
দুই পক্ষ একে অপরের প্রতি সহিংসতার অভিযোগ আনে। পুলিশের অভিযোগ, গন্ডগোল করার জন্যই এই বিক্ষোভ ডাকা হয়েছে। ইমরানের দলের নেতাদের দাবি, অন্যায়ভাবে তাদের নেতাকে জেলে বন্দি করে রাখা হয়েছে।
২০২২ সালের এপ্রিলে সংসদে অনাস্থা প্রস্তাবে হেরে গিয়ে ক্ষমতা হারাতে হয়েছিল ইমরান খানকে। ২০২৩ থেকে থেকে তিনি জেলে বন্দি। তার তিন বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
ইমরানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-সহ বিভিন্ন অভিয়োগে ১৫০টির মতো মামলা করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও পাকিস্তানে তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয়। তার সমর্থকদের দাবি, ইমরানের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মামলা করা হয়েছে।
গত ডিসেম্বরে ইমরানকে জামিন দেওয়া হয়। কিন্তু আইনি জটিলতায় তিনি মুক্তি পাননি। ইমরান অবশ্য তার বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
মন্তব্য