লেবাননে হিজবুল্লাহর ৪০০ স্থাপনায় ইসরায়েলের হামলা

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী শনিবার লেবাননে হিজবুল্লাহর ৪০০ স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে। অন্যদিকে হিজবুল্লাহ বলছে, তারা উত্তর ইসরায়েলের একটি বিমানঘাঁটিতে কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।
ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) শনিবার রাতে বলেছে, তারা দুটি তরঙ্গ আক্রমণ শুরু করেছে - একটি প্রায় ২৯০ টি সাইট আক্রমণ করেছে এবং দ্বিতীয়টি দক্ষিণ লেবানন জুড়ে ১১০ টি সাইটকে আক্রমণ করেছে।
রবিবার সকালে হিজবুল্লাহ তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে পোস্ট করেছে, গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে হিজবুল্লাহ সবচেয়ে বড় জবাব হিসেবে ইসরায়েলের হাইফা শহরের কাছে রামাত ডেভিড ঘাঁটিতে রকেট নিক্ষেপ করেছে।
টাইমস অফ ইসরায়েল জানিয়েছে, শনিবার রাতে হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের জেজরিল উপত্যকার উত্তরাঞ্চলীয় শহরে কমপক্ষে ১০ টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। গত অক্টোবরের শুরুতে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে এটি ছিল ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হিজবুল্লাহ রকেটের গভীরতম অনুপ্রবেশ। ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্রকে বাধা দিয়েছে।
ইসরায়েলে হিজবুল্লাহর রকেট হামলায় তিনজন আহত হয়েছে বলে জানায় টাইমস অফ ইসরায়েল।
গত মঙ্গল ও বুধবার লেবাননজুড়ে হামাস সদস্যেদের ব্যবহার করা কয়েক হাজার তারহীন যোগাযোগযন্ত্র পেজার ও ওয়াকিটকিতে একযোগে বিস্ফোরের ঘটনা ঘটে। লেবানন সরকার ও হিজবুল্লাহর দাবি, ইসরায়েল বৈদ্যুতিক বার্তার মাধ্যমে এ বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। কিন্তু ইসরায়েল এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি। দুই দিনের বিস্ফোরণে সাধারণ মানুষসহ সশস্ত্র গোষ্ঠীটির ৩৭ জন নিহত হয়েছে। আহত হয় প্রায় তিন হাজার।
এরপর গত শুক্রবার লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণের শরতলিতে ব্যাপক বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে অন্তত ৩৮ জন নিহত ও কয়েক ডজন আহত হয়।
শুক্রবারের হামলায় হিজবুল্লাহর কমান্ডার ইব্রাহিম আকিলও নিহত হন। হামলার সময় বৈরুতের শহরতলির একটি ভবনে তিনি বৈঠক করছিলেন। হামলায় পুরো ভবনটি ধুলোয় মিশে যায়।
গত অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই ইসরায়েলে রকেট হামলা চালাচ্ছে হিজবুল্লাহ। জবাবে লেবাননে গোষ্ঠীটির বিভিন্ন স্থাপনায় বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল।
হামলার কারণে উভয় দেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ইসরায়েল লেবানন সীমান্তবর্তী নিজেদের উত্তরাঞ্চল থেকে সরিয়ে নেওয়া নাগরিকদের এখন ফেরত আনতে চায়। এ জন্য অঞ্চলটি নিরাপদ করতে লেবাননে সম্প্রতি বিমান হামলা বাড়িয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। কিন্তু গাজা যুদ্ধ বন্ধ না করা পর্যন্ত ইসরায়েলে হামলা চলবে বলে ঘোষণা দিয়েছে হিজবুল্লাহ।
৫৭ জনের বহর নিয়ে নিউইয়র্ক যাচ্ছেন ড. ইউনূস

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে আগামী সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্ক যাচ্ছেন। প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী, নিরাপত্তা বাহিনী ও গণমাধ্যমকর্মী মিলিয়ে মোট ৫৭ জনের একটি বহর নিয়ে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার জাতিসংঘ অধিবেশনে অংশগ্রহণ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অবশ্যই ব্যয় সংকোচ করতে হবে। অবশ্যই অপ্রয়োজনীয় কোনো খরচ করা যাবে না। কিছু বিষয় আছে আমরা চাইলেও সংকোচন করতে পারি না। এর মধ্যে নিরাপত্তা সবার উপরে। সব মিলিয়ে সদস্য সংখ্যা হবে ৫৭ জন। তার মধ্যে বড় একটি অংশ নিরাপত্তা ও প্রেস। আমি আপনাদের এটুকু বলতে পারি, সেখানে যাদের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কেবল তারাই যাচ্ছেন।
এ সময় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা শেখ হাসিনা সরকারের আমলে জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে যাওয়া বহরের একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, আগে যারা বড় বহর নিয়ে যেতেন, তারা কেন সেটা করতেন তা আমি বলতে পারব না। হয়ত এটার কোনো অর্জন ছিল, কিন্তু আমার জানা নেই। স্বাভাবিক সময়ে সংখ্যা ছিল ৩৪৪, ৩৩৫; এটা ছিল ৭৩ ও ৭৪তম অধিবেশনে। কোভিডের কারণে ৭৫তম হয়েছে ভার্চুয়ালি। কোভিডের সীমাবদ্ধতার মধ্যেও ৭৬তম অধিবেশনে ১০৮, ৭৭তম অধিবেশনে ১৩৮ জন গিয়েছিলেন। কোভিড পরবর্তী সময় যখন ব্যয় সংকোচনের কথা বলা হচ্ছিল তখনও ১৪৬ জনের বহর নিয়ে নিউইয়র্কে যায় বাংলাদেশ।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আগাম ভোটগ্রহণ শুরু

আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীরা। আগামী ৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য ভোটগ্রহণের দিন নির্ধারণ করা হলেও এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি রাজ্যে আগাম ভোট দেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন বহু নাগরিক।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের এক মাসেরও বেশি সময় আগেই ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। যেখানে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করতে ভোটপ্রদান শুরু করেছে দেশটির মানুষ। স্থানীয় সময় শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) ভার্জিনিয়া, সাউথ ডাকোটা ও মিনেসোটার বাসিন্দাদের দেখা গেছে সশরীরে ভোটকেন্দ্রে হাজির হতে। খবর এএফপির।
খুব ভোরবেলায় ভার্জিনিয়ার আর্লিংটন নির্বাচন কেন্দ্রে ৫৬ বছর বয়সী টম কিকেনি ভোট দিতে এসে তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আপনি এটাই অনুভব করতে পারছেন যে আমরা এই প্রক্রিয়ার অংশ।’ তার স্ত্রী ৫৫ বছর বয়সী মিশেল জানান, আগাম ভোট দিয়ে তার বন্ধু ও প্রতিবেশীর সামনে উদাহরণ তৈরি করে তিনি খুব সুখী অনুভব করছেন।
ভোট প্রদানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি রাজ্যের রয়েছে নিজস্ব নিয়মকানুন। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ডাক যোগে ও সশরীরে আগাম ভোট প্রদান। এছাড়া নির্বাচনের দিন ভোটপ্রদান অথবা ওই তিনটি প্রক্রিয়ার সংমিশ্রণ। যার প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন প্রার্থীরা।
নিউইয়র্কে জয়শঙ্করের সাথে বৈঠকে বসছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে নিউইয়র্কে বৈঠকে বসছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার জাতিসংঘ অধিবেশনে অংশগ্রহণ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
মো. তৌহিদ হোসেন জানান, জয়শঙ্করের সঙ্গে আমার দেখা হওয়ার সম্ভাবনা আছে। প্রায় নিশ্চিত। দেখা হবে।ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন নিয়ে তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটু টানাপড়েন চলছে। এটা কিন্তু স্বীকার করতে হবে। সমস্যা সমাধান করতে হলে অস্বীকার করলে চলবে না।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমরা অবশ্যই চেষ্টা করব সেই টানাপড়েন যেন পেছনে ফেলতে পারি এবং একটি কাজের সম্পর্ক তৈরি হয়। এটা হতে হবে অবশ্যই সার্বভৌম ক্ষমতার ভিত্তিতে এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের ভিত্তিতে। আমি মনে করি, এর ভিত্তিতে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া সম্ভব এবং সেটা আমরা চেষ্টা করব।
ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেবে না সৌদি

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরাইলকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেবে না বলে জানিয়েছে সৌদি আরব। বুধবার এক বক্তব্যে এ কথা বলেছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। বক্তব্যে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি দখলদারি ও অপরাধেরও সমালোচনা করেন তিনি। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
সালমান বলেছেন, পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায় সৌদি আরব। এই লক্ষ্য পূরণ হওয়া পর্যন্ত আমরা অক্লান্ত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব। আর আমরা অঙ্গীকার করছি যে, স্বাধীন ফিলিস্তিন ছাড়া ইসরাইলের সঙ্গে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করা হবে না।
শুরা কাউন্সিলে দেওয়া ভাষণে এই মন্তব্য করেন যুবরাজ। বাদশাহ সালমানের পক্ষ থেকে বার্ষিক এই বক্তব্য প্রদান করেন তিনি। ভাষণের আগে যুবরাজের সামনে শপথ গ্রহণ করেছেন শুরা কাউন্সিলের সদস্যরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুটি সূত্র জানিয়েছে যে, তেল আবিবের সঙ্গে রিয়াদের স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপনে ওয়াশিংটনের প্রচেষ্টাকে উপেক্ষা করা হচ্ছে। এর নেপথ্যে রয়েছে গত অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইলি আগ্রাসন।
যুবরাজের শেষ বক্তব্য থেকে ধারণা করা যায়, ইসরাইলি আগ্রাসনের অবসান না হওয়া পর্যন্ত মার্কিন প্রচেষ্টা ধোপে টিকবে না।
গাজা যুদ্ধ শুরুর কয়েক সপ্তাহ আগে যুবরাজ সালমান জানিয়েছিলেন, ইসরাইল-সৌদি একটা চুক্তির সন্নিকটে আছে।
ওই দুই সূত্র রয়টার্সকে আরও বলেছে, ইসরাইলের সঙ্গে সৌদির স্বাভাবিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে কিছু বিলম্ব হবে। রিয়াদের জন্য এই আলোচনার সবচেয়ে লাভজনক দিক হিসেবে অনেক বিশেষজ্ঞ যেটা ধারণা করছেন, তা হলো, এর বিনিময়ে মার্কিনিদের সঙ্গে একটা প্রতিরক্ষা চুক্তির দ্বার উন্মোচিত হতে পারে।
মন্তব্য