শিক্ষক হিসেবে আমি প্রতিটি শিক্ষার্থীর জীবনে একটি সুস্থায়ী পরিবর্তন আনার স্বপ্ন দেখি

১৯৯৫ সাল থেকে প্রতি বছর ৫ অক্টোবর বিশ্ব ব্যাপী পালিত হয়ে থাকে বিশ্ব শিক্ষক দিবস। এই দিবসটি শিক্ষকদের অবদানকে স্মরণ করার জন্য পালন করা হয়। বাংলাদেশে এবারেই প্রথম রাষ্ট্রীয়ভাবে 'শিক্ষক দিবস' পালিত হতে যাচ্ছে। শিক্ষক দিবসে শিক্ষকবৃন্দের চাওয়া-পাওয়া, নানা অর্জন ও চিন্তা ভাবনার বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেছেন রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মোঃ মাঈনুদ্দিন (সি এস ই বিভাগ) সাক্ষাতকারে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন রাবিপ্রবি প্রতিনিধি আহ্সান হাবীব।
আন্তর্জাতিক শিক্ষক দিবস নিয়ে আপনার ভাবনা…
দিবস নিয়ে আমার ধারণাটা বরাবরের মত ভিন্ন। কোনো বিশেষ সম্পর্ককে আমি দিবসের মাধ্যমে উদ্যাপিত করতে চাইনা। কিছু বিষয়, সম্পর্ক, পেশা, কিংবা মতাদর্শ সর্বজনীন। যখন এই ধরনের বিশেষ বিষয়টাকে বিশেষ দিবসের সাথে বিশেষায়িত করা হয়, তখন আমার মনে হয় সেখানে ঐ পেশা বা সম্পর্কটা যথাযোগ্য মর্যাদায় আর নেই। তাতে যান্ত্রিকতার ছোঁয়া লেগে গেছে। যে মর্যাদাটা প্রাপ্য ছিল কিংবা ঐ বিশেষ পেশা বা সম্পর্ক থেকে যা পাওয়ার কথা ছিল তা আর পাওয়া যাচ্ছে না। এখানে অধিকার আদায়ের জন্য লড়তে হবে লড়াকু হয়ে। হারিয়ে যাওয়া অনুভূতি কে ফিরিয়ে আনতে হবে। অথবা দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, অথবা তাকে যান্ত্রিক বানিয়ে নিতে হবে। তাই আমি অপ্রতুল শিক্ষকের ঘাটতি পূরণ করা, শিক্ষকের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা কিংবা শিক্ষকতার সঠিক দায়িত্ব পালন করবে এটা নিশ্চিত করার বিষয়ে নির্দিষ্ট কোন দিবসে সীমাবদ্ধ না থেকে ৩৬৫ দিনই কাজ করায় বিশ্বাসী।শিক্ষকদের মানুষ গড়ার কারিগর বলা হয়—আমাদের শিক্ষকরা সেই বহুল কাঙ্ক্ষিত আলোকিত মানুষ তৈরি করতে পারছেন?
হ্যাঁ, মানুষ গড়ার কারিগর - শিক্ষক। এখন আপনাকে বলতে হবে শিক্ষক বলতে আপনি কাকে বুঝাতে চেয়েছেন, শুধু আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব প্রাপ্ত পাঠদান কারী শিক্ষককেই। শিক্ষক বলতে শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষকদেরকেই বুঝালে হবে না। এ প্রসঙ্গে সুনির্মল বসুর সবার আমি ছাত্র কবিতার কথা বলতে হয়, আমরা প্রতিনিয়ত শিক্ষা লাভ করি আমাদের পারিপার্শ্বিক পরিবেশের সকল উপাদান থেকে, তা হতে পারে কোন ব্যক্তি, কোন বস্তু বা পার্থিব কিংবা অপার্থিব চিন্তা চেতনা থেকে। আর এই শিক্ষাই একজন শিক্ষার্থীর মনকে করতে পারে প্রস্ফুটিত , আলোকিত। আর আলোকিত মানুষ তৈরি না হলে দেশ ও জাতি রসাতলে ডুবে যেত, হারিয়ে যেত, দেশ পরিণত হত ধ্বংসস্থুপে। তবে আমরা যদি বলি যোগ্য, কর্মদক্ষ জন বল তৈরির কথা তাহলে বলতে হয় আমাদের আরও অনেক দূর যেতে হবে। সেখানে প্রশিক্ষকের যেমন দায় থাকে, আছে শিক্ষার্থীর ও দায়, আছে প্রয়োজনীয় উপাদান সরবরাহের ঘাটতি, আছে অনুকূল পরিবেশের অভাব।শিক্ষক জীবনের প্রত্যাশা-প্রাপ্তি মেলবন্ধন আসলে কতদূর?
শিক্ষা হচ্ছে একটি উপকরণ, যা কাউকে তার স্বপ্ন পূরণে সাহায্য করে। একজন শিক্ষক হিসেবে, আমি শিক্ষার্থীদের জীবনে একটি পরিবর্তনের উৎস হতে পারি, তাদের আত্ম বিশ্বাস বাড়ানোর জন্য এবং তাদের সামর্থ্য ও সৃজনশীলতার দিকে প্রেরণ করতে পারি।এছাড়া, আমি বিশ্বাস করি শিক্ষা হচ্ছে প্রতিটি জীবনের সাথে যোগাযোগ করার মাধ্যম। একটি শ্রেণীকক্ষে, আমি বিভিন্ন সংস্কৃতির, বয়সের এবং সামাজিক পরিস্থিতির শিক্ষার্থীর সাথে মেলবন্ধন তৈরি করতে পারি এবং তাদের কাছে জ্ঞান ও জীবনের সম্পর্কে জানতে পারি, জানাতে পারি।
শিক্ষক হিসেবে ব্যক্তিগত ভাবে আপনার স্বপ্ন কী, প্রাপ্তি কত খানি?
ইরেজিতে একটি কথা আছে By choice or by chance. আমি শিক্ষকতায় By Choice এসেছি। শিক্ষক হিসেবে আমার স্বপ্ন হচ্ছে প্রতিটি শিক্ষার্থীর জীবনে একটি সুস্থায়ী পরিবর্তন আনা। আমি চাই তারা তাদের নিজেদের স্বপ্নকে চিনতে পারুক, সেই স্বপ্ন অনুসরণ করে জীবনের সমস্ত সমস্যার মোকাবেলা করুক, গড়ে তুলুক একটা সুন্দর নির্মল আবাসযোগ্য পৃথিবী। আমার প্রাপ্তির দিক দিয়ে বলতে গেলে, আমি অনেক শিক্ষার্থীর জীবনে পজিটিভ প্রভাব ফেলতে পেরেছি। যখন দেখি যে একজন শিক্ষার্থী যান্ত্রিক না হয়ে মানবিক হচ্ছে তখন বেশ ভালো লাগা কাজ করে। একজন শিক্ষার্থীর চেহারায় যখন জ্ঞানের জন্য উৎসাহ ও সন্তোষ দেখি তা হয়ে উঠে এক প্রশান্তির কারণ। আমার স্বল্প সময়ের শিক্ষকতার জীবনে ছোট খাট যা কিছুই পেয়েছি, তন্মধ্যে আমার জন্য সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি মনে হয় যখন দেখি আমার শিক্ষার্থীরা সফলতার পথে হাঁটছে, তারা অনুপ্রাণিত হয়ে উঠছে।এমনিতে সমাজ ব্যবস্থার কিছু অসুবিধা তো থেকেই যায়, তাতে কখনও কখনও হয়তো বা ভিন্নধর্মী সমস্যার সম্মুখীন তো হতেই হয়। সমস্যা গুলি সমাধান হয়ে গেলে হয়ত দুঃখ-কষ্টগুলি ভুলে যাই। সমস্যাগুলি কাটিয়ে আবারও স্বপ্নদেখি, স্বপ্নদেখাই।
তবে, আমি মনে করি আমার যাত্রা এখনো সমাপ্ত হয়নি। আমি প্রতিদিন নতুন জিনিস শিখছি এবং আমার শিক্ষার কৌশল উন্নত করার জন্য চেষ্টা করি। আমার স্বপ্ন হচ্ছে যত টুকু সম্ভব অধিক শিক্ষার্থীর জীবনে পজিটিভ প্রভাব ফেলা।
শিক্ষক হিসেবে আপনার মতে কোন দক্ষতা বা গুণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ?
শিক্ষক হিসেবে, আমি মনে করি একাধিক দক্ষতা ও গুণ থাকা প্রয়োজন। তবে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গুণ হলো শ্রদ্ধা এবং সহৃদয়তা। শিক্ষার্থীরা যখন উদ্ভাসিত হয় বা কোনো সমস্যায় পরে যায়, তাদের বোঝা, তাদের পাশে থাকা এবং তাদের উত্তরণে সাহায্য করার জন্য একটি সহমর্মিতা ও সহৃদয়তা থাকতে হবে। এই গুণ তাদের বিশ্বাস, উত্তেজনা এবং আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।এছাড়া, শিক্ষক হিসেবে আমার জানতে হবে প্রতিটি শিক্ষার্থীর ভিন্নভিন্ন প্রয়োজনীয়তা, শেখার শৈলী ও স্বভাব। এর মানে হল, আমি প্রতিটি শিক্ষার্থীর সাথে মিথস্ক্রিয়ার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারি।
এবারের বিশ্বশিক্ষক দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে, ‘The teachers we need for the education we want: The global imperative to reverse the teacher shortage’ অর্থাৎ, ‘কাঙ্ক্ষিত শিক্ষা পেতে যেমন শিক্ষক চাই : শিক্ষক সংকট ঠেকাতে বৈশ্বিক উদ্যোগ।’ প্রতিপাদ্যটি কি সময়ের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক? আপনার মন্তব্য কি?
এ প্রতিপাদ্যটিকে বিভিন্ন আঙ্গিকে দেখা যায়। দক্ষ প্রশিক্ষকের অভাব, নাকি সময়ের পরিবর্তন, না কি শুধু রুটিন কাজ করার জন্য শিক্ষক নাকি অন্য কিছু। এ প্রতিপাদ্যটিতে খুবই গভীর বার্তা রয়ে গেছে। সময়ের সাথে পরিবর্তন হচ্ছে সামাজিক ব্যবস্থা । শিল্প বিল্পবের এ সময়টা কে আমরা বলছি ৪র্থ ধাপ। সব কিছুই প্রযুক্তি নির্ভর। পরিবর্তনের হার অনেক বেশি। প্রতি নিয়ত পরিবর্তনের এ সময়ে দেখা দিচ্ছে দক্ষ জনশক্তির অভাব, সময়ের সাথে আমরা মানুষ থেকে যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছি। শিক্ষকতা টা নেশা থেকে পেশা হয়ে যাচ্ছে। বিষয়টা হয়ে যাচ্ছে আগে উদর পূর্তিতার পর বাকি সব। যত গবেষণা তত উন্নয়ন, তবে তার জন্য যথেষ্ট পৃষ্ঠপোষকতার অভাব। তাছাড়া শিক্ষকতায় আসতে চাওয়ার অনীহা কিংবা শিক্ষক নিয়োগে স্টেক হোল্ডারদের অনীহা যার ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত বজায় থাকছেনা। কেউ বা শুধু চাকরি করতে শিক্ষকতায় আসতেছেন। এ সমস্যাগুলি প্রকট হচ্ছে। তা থেকে উত্তরণ প্রয়োজন। তাই বলব প্রতিপাদ্যটি সময়ের সঙ্গে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।
সমাজের উন্নতি ও সুস্থ প্রশাসনের জন্য শিক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। যদি প্রয়োজনীয় শিক্ষকের সংখ্যা কম হয়, তাহলে তা সমগ্র সমাজের উন্নতি ও বিকেন্দ্রীভূত শিক্ষা প্রণালীর জন্য একটি বড় সমস্যা হতে পারে।
বর্তমানে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে, প্রযুক্তির মাধ্যমে শিক্ষা প্রদানের প্রয়াস চলছে, তবে শিক্ষকের সাথে সরাসরি যে মানুষিক সম্পর্ক, যোগাযোগ ও নির্দেশনা তা কখনোই প্রযুক্তি প্রদান করতে পারে না, কিংবা প্রতিস্থাপিত করতে পারেনা, এটা অপরিসীম গুরুত্বপূর্ণ।
আমরা আমাদের শিক্ষা প্রণালীর কাঙ্ক্ষিত মান অর্জন করতে চাইলে যথেষ্ট সংখ্যক দক্ষ ও উৎসাহী শিক্ষক নিয়োগ করা এবং তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া জরুরি।
দেশের শিক্ষকরা বেতন-মর্যাদায় পিছিয়ে আছে বলে শোনা যায়-সেটা কতটুকু প্রাসঙ্গিক? এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কি?
পৃথিবীতে যে কোন ধরনের পেশার সাথে যদি শিক্ষকতার তুলনা করা হয় তা হলে বলতে হবে শিক্ষক তা হচ্ছে সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং কেননা অভিনেতা মঞ্চে কিংবা তার কাজের দৃশ্য পটে বুলি আওড়িয়ে অভিনয় করে যায় আর সেখানে শিক্ষককে প্রতিনিয়ত সকল বাস্তবতার সাথে যুদ্ধ করে শিখতে হয়, শেখাতে হয়। জাগ্রত করতে হয় সুপ্ত প্রতিভাকে, মেধায়-মননে হতে হয় অনন্য। আর সেখানে যদি একজন শিক্ষককে তার তিন বেলা খাবারের চিন্তায় বিভোর হইতে হয়, তখন কি আর সে তার মর্যাদায় আছে বলে মনে হয়। যে গবেষক কিংবা প্রশাসক কে গড়ে তুলতে একজন শিক্ষক তার জীবনটাকে যখন অকাতরে বিলিয়ে দেয়, তখনই আবার ঐ শিক্ষক কে ধরনা দিতে হয় ঐ প্রশাসকের কাছে তার বেতনের গ্রেডটা যদি মহাশয় একটু বাড়িয়ে দিতেন। এ বিষয়টা খুবই স্পর্শকাতর। প্রশাসনের উচিত শিক্ষকদের বেতন-ভাতাদির ব্যবস্থা এমন ভাবে সমন্বয় করা যাতে করে শিক্ষকতার শ্রেণি কক্ষে গিয়ে তার পরিবার চালানোর চিন্তা না করতে হয়, তার সন্তানের পড়াশুনার খরচের কথা চিন্তা না করতে হয়, কিংবা শ্রেণী কক্ষে না গিয়ে প্রাইভেট টিউশনে যাওয়ার চিন্তা না করতে হয়।বেরোবিতে আগামীকাল থেকে শুরু হতে যাচ্ছে জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা

বেরোবি প্রতিনিধি: বেগম রোকেয়া ইউনিভার্সিটি ডিবেট অ্যাসোসিয়েশন ( ব্রুডার) আয়োজনে ৩য় জাতীয় আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা-২০২৩ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
আগামীকাল শুক্রবার (৬অক্টোবর) সকালে ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের গ্যালারি রুমে এ প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করা হবে।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সকালে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সংগঠনের সভাপতি প্রতিযোগিতার তথ্যটি নিশ্চিত করেন ।
আগামীকাল ৬-৭ অক্টোবর প্রতিযোগিতার গ্রুপ পর্ব ও সেমি ফাইনাল পর্বের বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া ৭ই অক্টোবর,শনিবার বিকালে ফাইনাল রাউন্ড, পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বিতর্ক অনুষ্ঠান এর সমাপ্তি ঘটবে।
এ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় দেশের ৩২ টি পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে দল অংশগ্রহণ করবে।
এবারের প্রতিযোগিতার টাইটেল স্পন্সর হিসেবে আছে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইউসিবি ফিনটেক কোম্পানি লিমিটেড এর ডিজিটাল আর্থিক পরিষেবা ব্র্যান্ড উপায়, এছাড়া আরো সহযোগিতায় আছে রংপুর সিটি কর্পোরেশন এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, লজিস্টিক পার্টনার হিসেবে আছে ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ।
এছাড়া মিড়িয়া পার্টনার হিসেবে থাকছে সারাদেশে স্থানীয় দৈনিক আজকের পত্রিকা এবং সময় টিভি।
উল্লেখ্য, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতর্ক সংগঠন ব্রুডা প্রতিষ্ঠার পর থেকে মানুষের মাঝে যুক্তির চর্চা ছড়িয়ে দিতে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন বিতর্ক আয়োজন, অংশগ্রহণ এবং কৃতিত্বপূর্ণ অর্জনের মাধ্যমে ব্রুডা বিতার্কিকদের মেধা ও মননে আত্মবিশ্বাসী এবং শাণিত মূল্যবোধের ধারক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
কোচিং ব্যবসা পরিহার করতে শিক্ষকদের প্রতি রাষ্ট্রপতির আহ্বান

শিক্ষকদের প্রতি কোচিং বাণিজ্য বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সকালে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, যে অভিভাবকরা জিপিএ-৫ পেলে খুশিতে আত্মহারা হয়ে যান, আপনারা যদি মনে করেন সন্তানকে নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে, বাস্তব শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে, তাহলে এ ধরনের কোচিংয়ে পড়ানোর অবস্থান থেকে নিজেদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। শিক্ষকদের কাছেও কোচিং ব্যবসা পরিহার করার আহ্বান থাকল।
তিনি বলেন ‘শিক্ষকদের মধ্যে কেউ কেউ কোচিংয়ের রমরমা ব্যবসা করে যাচ্ছেন। যেটা শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার শিক্ষা থেকে কিছুটা দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। আপনাদের এ কোচিং ব্যবসা পরিহার করতে হবে।’ অভিভাবকদেরও সন্তানকে কোচিংয়ে দেওয়ার আগ্রহ কমাতে হবে উল্লেখ করে মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, শুধু জিপিএ-৫ পাওয়ার জন্য অভিভাবকরা তাড়াহুড়া করে সন্তানকে একটা ভালো কোচিংয়ে দেন। তারা মনে করেন যে, এ কোচিংয়ের মাধ্যমে তাদের সন্তানকে গুণগত বা ভালো শিক্ষা দিতে পারব। কিন্তু ঘটছে উল্টো। এ মানসিকতা থেকে সরে আসতে হবে।
সমাজের ভিত্তি নির্মাণে শিক্ষকরাই মূল প্রকৌশলী উল্লেখ করে তিনি বলেন, পৃথিবীর যত উল্লেখযোগ্য অর্জন, গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার, আধুনিক সভ্যতা গঠন— সবকিছুর পেছনে কোনো কোনো শিক্ষক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভূমিকা রেখে চলেছেন। শিক্ষকরা শুধু শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক দিকটাই দেখেন না, মানবিক মূল্যবোধ, সততা, দেশপ্রেমবোধ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখেন। সমাজগঠন ও সমাজের ভিত্তি নির্মাণে শিক্ষকরাই মূল প্রকৌশলী।
শিক্ষার্থীকে সত্য-মিথ্যার পার্থক্য শেখাতে শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, আপনারা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ন্যায়-অন্যায়, সত্য-মিথ্যার পার্থক্য বোঝাবেন। মানবসেবা, দেশপ্রেম ও পিতা-মাতার প্রতি যত্নশীল হওয়ার শিক্ষা দেবেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পিতা-মাতাতুল্য আচরণ করবেন। শাসনও করবেন। কিন্তু যেটা শাস্তির পর্যায়ে পড়ে, সেটা পরিহার করবেন।
শিক্ষকদের মর্যাদা ফেরাতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, অভিভাবক, সমাজের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিসহ সবাই মিলে যদি এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য কাজ করেন, তাহলে আমাদের শিক্ষকদের সেই মান-মর্যাদা ফিরে আসবে। তারা আর দুঃখবোধ করবেন না। মনে মনে ভাববেন না যে, এমন ছাত্র-ছাত্রীকে পড়ালাম, মানুষ করার চেষ্টা করলাম, তাদের দ্বারা অসম্মানিত হচ্ছি। শিক্ষকদের এ দুঃখ-দুর্দশা নজরে নিয়ে সবাইকে এ অবস্থা থেকে উত্তরণে চেষ্টা করতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। অনুষ্ঠানে শিক্ষাসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে প্রধান ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং শিক্ষকরা অংশ নেন।
ইবিতে নোফেলিয়ানদের মিলনমেলা অনুষ্ঠিত

ইবি প্রতিনিধি : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষীপুর জেলা থেকে আগত শিক্ষার্থীদের ছাত্র কল্যাণ ফোরাম 'নোফেল'র মিলনমেলা ও কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সকাল ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবনের ৪০১ নম্বর কক্ষে এটি অনুষ্ঠিত হয়। এসময় ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের বিদায়ী ক্রেস্ট প্রদান এবং ২০২১-২২ ও ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়।
আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ দেলোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দাওয়াহ ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ রহিম উল্যাহ। এছাড়াও কোয়ার্টার মসজিদের সিনিয়র ইমাম এম. এম.ইউসুফ, নোফেল ছাত্র কল্যাণ ফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আজমেরী হক পিয়াস, বর্তমান সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মাসুমসহ শতাধিক শিক্ষার্থীরা।
এছাড়াও এসময় অনলাইনে যুক্ত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ নাজিমুদ্দিন।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. রহিম উল্যাহ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় এমন একটি যায়গা যেখানে কেও চাইলে ভালো কিছু করতে পারবে আবার চাইলে মন্দ দিকেও নিজেকে নিয়ে যেতে পারবে। সেখানে ভালোমন্দ বিবেচনা করে ভালো জিনিসগুলো তোমাদেরই বেছে নিতে হবে। আপনারা সময়ের গুরুত্ব দিবেন, সময়কে মূল্যায়ন করবেন। তাহলে জীবনে অনেক ভালো যায়গায় নিজেকে নিয়ে যেতে পারবেন। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভালো সামাজিক সংগঠনে যুক্ত হয়ে নিজেকে ডেভেলপ করতে পারবেন।
এসময় আলোচনা সভা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে নবীন শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নেয়।
কয়েক ঘন্টার বৃষ্টিতে জলাবদ্ধ রাবি ক্যাম্পাস

কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ক্যাম্পাসে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে চলাচলে ভোগান্তিতে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো শিক্ষক-শিক্ষার্থী।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, ক্যাম্পাসে যে ড্রেনগুলো আছে সেগুলোর অবস্থা বেহাল। এ কারণে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে চলাচলে বিড়ম্বনায় পড়েন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন সময়ে এমন জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলেও কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনা।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ কলা ভবন ও মমতাজ উদ্দীন কলা ভবনের সামনে, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পেছনে, পরিবহন মার্কেটের সামনে, টুকিটাকি চত্বর, পরিবহন এলাকা ও চারটি বিজ্ঞান ভবনের সামনে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া কাজী নজরুল অডিটোরিয়ামের উত্তর পাশ থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবন পর্যন্ত রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে আছে। এতে একাডেমিক ভবনগুলোতে ঢুকতে বিপাকে পড়ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। কেউবা ঢুকছেন পানিতে ভিজে আবার অনেকে রিকশা করে গেট পর্যন্ত যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, জলাবদ্ধতার বিষয়ে আমরা অবগত আছি। আমরা জানার সঙ্গে সঙ্গে পানি নিষ্কাশনের জন্য জানিয়েছি। দ্রুতই পানি বের হয়ে যাবে আশা করি। সবাইকে একটু ধৈর্য ধরার অনুরোধ করছি।
মন্তব্য