উন্নত বিশ্বে কারিগরি শিক্ষায় গুরুত্ব বেশি আমরাও সেদিকে এগুচ্ছি

কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, উন্নত বিশ্বে কারিগরি শিক্ষায় বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। আমরাও সেদিকে এগুচ্ছি।
কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেসব শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করছে তারা ভালো করছে। ভবিষ্যতে আরও ভালো করবে। আমাদের লক্ষ্য ২০৫০ সালে কারিগরি শিক্ষা ৫০ শতাংশে উন্নীত করা। বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) গাজীপুরে বাহাদুরপুর এলাকায় রোভার পল্লীতে বাংলাদেশ স্কাউটস রোভার অঞ্চল আয়োজিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে প্রতিভা অন্নেষণ ও আন্তঃইউনিট বিতর্ক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছেন শিক্ষায় বিনিয়োগ হচ্ছে শ্রেষ্ঠতম বিনিয়োগ। আমাদের যেতে হবে অনেক দূর। আমাদের দেশে বর্তমানে ৫ কোটি শিক্ষার্থী রয়েছে, যেটি অনেক দেশের মোট জনসংখ্যার চেয়েও বেশি। এই যে শিক্ষার্থী সংখ্যা, এই সংখ্যাটিকে সম্পদে রূপান্তর করাটাই আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ। এটিকে ওভারকাম করতে হবে। মানবিক বাংলাদেশ তৈরিতে আমাদের সন্তানরা বড় ভূমিকা পালন করবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীদেরকে ভালো মানুষ, স্বাবলম্বী ও পরোপকারী মানুষ হিসেবে তৈরি হতে হবে। তাদের মধ্যে সহমর্মিতার বোধ তৈরি করতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে মানবিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। ’ শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষায় আমরা যা কিছু করছি আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত শিক্ষার কথা বলছি- এসবই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া পথরেখা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও বাংলাদেশ স্কাউটস রোভার অঞ্চলের সভাপতি প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- প্রধান স্কাউট ব্যক্তিত্ব ও দুর্নীতি দমন কমিশনার (দুদক) ড. মো. মোজাম্মেল হক খান, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. গিয়াসউদ্দীন মিয়া।
একাদশে ভর্তির আবেদন শুরু শনিবার, জেনে নিন খুঁটিনাটি

একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু হবে আগামী শনিবার (৮ জানুয়ারি)। এবারও ডিজিটাল পদ্ধতিতে লটারির মাধ্যমে কলেজ পাবেন আবেদনকারীরা। আগে এসএমএসের মাধ্যমে আবেদনের সুযোগ থাকলেও এবার শুধু অনলাইনে ভর্তির আবেদন করতে হবে। দুই মাস ধরে ভর্তি কার্যক্রম শেষে ২ মার্চ একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু হবে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি কলেজ পর্যায়ে শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়ে রোডম্যাপ তৈরি করেছে। আবেদনে শিক্ষার্থীরা সর্বনিম্ন পাঁচটি ও সর্বোচ্চ ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্বাচন করবে। ভর্তির জন্য তিন ধাপে মেধাতালিকা প্রকাশ করা হবে। একাদশে ভর্তি হতে xiclassadmission.gov.bd ওয়েবসাইটে আবেদন করতে হবে।
এদিকে, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বলছেন, এবার প্রায় ২১ লাখ শিক্ষার্থী এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছেন। এত বিপুল শিক্ষার্থীর জন্য পর্যাপ্ত আসন আছে কি না, এ নিয়ে তাদের মনে আছে সংশয়। তবে, কলেজ সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সব শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার পরও প্রায় ৫ লাখ আসন খালি থাকবে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড থেকে জানা গেছে, ৩০ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের সিলেকশন নিশ্চয়ন করতে হবে। সিলেকশন নিশ্চয়ন না করলে তাদেরকে পুনরায় ফি দিয়ে আবেদন করতে হবে। ৭ ও ৮ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় পর্যায়ের আবেদন নেওয়া হবে। পছন্দক্রম অনুযায়ী প্রথম মাইগ্রেশনের ফল এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের আবেদনের ফল প্রকাশ করা হবে ১০ ফেব্রুয়ারি। ১১-১২ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় পর্যায়ে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের সিলেকশন নিশ্চয়ন করতে হবে। এ সময়ের মধ্যে সিলেকশন নিশ্চয়ন না করলে আবেদন বাতিল হবে। ১৩ ফেব্রুয়ারি তৃতীয় পর্যায়ের আবেদন নিয়ে পছন্দক্রম অনুযায়ী দ্বিতীয় মাইগ্রেশনের ফল এবং তৃতীয় পর্যায়ের আবেদনের ফল প্রকাশ করা হবে ১৫ ফেব্রুয়ারি। ১৬ ও ১৭ ফেব্রুয়ারি তৃতীয় পর্যায়ে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের সিলেকশন নিশ্চয়ন করতে হবে। এ সময়ের মধ্যে সিলেকশন নিশ্চয়ন না করলে আবেদন বাতিল হবে।
যারা আবেদন করতে পারবেন: ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে যারা এসএসসি পাস করেছেন, তারা আবেদন করতে পারবেন। তবে, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএসসি পাস করা শিক্ষার্থীরা ২২ বছর বয়সেও আবেদন করতে পারবেন। যেসব শিক্ষার্থী এসএসসি ও দাখিলের ফল পুনঃনিরীক্ষার আবেদন করবেন, তারা ১৫ জানুয়ারির মধ্যে আবেদন করলেও ফল পরিবর্তনকারীরা ২২ ও ২৩ জানুয়ারি আবেদন করতে পারবেন। ২৪ জানুয়ারি পছন্দক্রম পরিবর্তনের সুযোগ দেওয়া হবে। ২৯ জানুয়ারি প্রথম দফায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করা হবে।
অন্যদিকে, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতেও ৮ জানুয়ারি থেকে আবেদন নেওয়ার চিন্তা চলছে। কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে ভর্তি নীতিমালাসহ এ সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
কোন প্রতিষ্ঠানে আবেদন ও ভর্তি ফি কত: আবেদন ও নির্বাচন পর্ব শেষে ১৯ থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের ভর্তি করা হবে। এবার আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫০ টাকা। নীতিমালায় ঢাকা ও জেলা পর্যায়ে বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনে ভর্তি ফিসহ সব ব্যয় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী, ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার ক্ষেত্রে বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনে ৫ হাজার টাকা, ঢাকা মহানগরের বাইরে ৩ হাজার, জেলা পর্যায়ে ২ হাজার আর উপজেলা ও মফস্বলে ১ হাজার ৫০০ টাকা আদায় করা যাবে। নির্ধারিত ফির বেশি অর্থ আদায় করা যাবে না। এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সেশন চার্জ ও ভর্তি ফি নেওয়া যাবে। উন্নয়ন ফি আদায় করা যাবে না।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, একাদশ শ্রেণিতে লেখাপড়া হয়, সারা দেশে এমন কলেজ ও মাদ্রাসা আছে ৮ হাজার ৮৬৪টি। অন্যদিকে, সরকারি ও বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট আছে ৫৫০। কলেজ ও মাদ্রাসায় আসন আছে ২৪ লাখ ৪০ হাজার ২৪৯টি। পলিটেকনিকে আছে ১ লাখ ৬৯ হাজার আসন। সবমিলিয়ে এ স্তরে আসন ২৬ লাখ ৯ হাজার ২৪৯টি। এর বিপরীত দিকে এসএসসি, দাখিল এবং সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছেন ২০ লাখ ৯৬ হাজার ৫৪৬ জন। তাদের মধ্যে এসএসসিতে ১৬ লাখ ৮৬ হাজার ২১১ জন, দাখিলে ২ লাখ ৭২ হাজার ৭২২ জন এবং কারিগরি শাখা থেকে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৩ জন পাস করেছেন।
প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষাব্যবস্থায় বড় ধরনের সংস্কার আনছে সরকার।

প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষাব্যবস্থায় বড় ধরনের সংস্কার আনছে সরকার। নতুন শিক্ষাক্রমে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের মোট আটটি এবং মাধ্যমিকে দশটি বিষয় পড়ানো হবে।
এর মধ্যে প্রাথমিকের বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সামাজিক বিজ্ঞান, বিজ্ঞান ও ধর্মশিক্ষার পাশাপাশি নতুন দুটি বিষয় হলো- ‘শিল্পকলা’, ‘শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা’ এবং মাধ্যমিকের বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সামাজিক বিজ্ঞান, বিজ্ঞান, ধর্মশিক্ষা, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষার পাশাপাশি নতুন তিনটি বিষয় হলো জীবন ও জীবিকা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, শিল্প ও সংস্কৃতি।
নতুন শিক্ষাক্রমে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির দুটি পাবলিক পরীক্ষা থাকবে না। পাশাপাশি নবম ও দশম শ্রেণিতে মানবিক, বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা নামে বিভাগও তুলে দেয়া হবে। সেটি ঠিক হবে উচ্চ মাধ্যমিকে গিয়ে।
জানতে চাইলে এনসিটিবির সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. মশিউজ্জামান বলেন, ‘নতুন শিক্ষাক্রমে কয়েকটি নতুন বিষয় যেমন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, তেমনি পুরোনো বিষয়গুলোকেও নতুনভাবে সাজানো হয়েছে। বলা যায়, কয়েকটি বিষয় নামের দিক থেকে নতুন হলেও বিষয়বস্তুর দিক থেকে পুরোপুরি নতুন নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি, বর্তমান পাঠ্যক্রমে আমাদের একটি বিষয় আছে যার নাম ‘চারুকলা’। নতুন শিক্ষাক্রমে এর নাম দেয়া হয়েছে ‘শিল্প ও সংস্কৃতি’। এর ফলে এ বিষয়ে শিখন ক্ষেত্র অনেক বাড়বে। আগে যেমন এ বিষয়ে শুধু চারুকলাকে ফোকাস করা হতো, এখন চারুকলার পাশাপাশি নৃত্যকলা, নাট্যকলা, সংগীত ইত্যাদি বিষয় থেকে শিক্ষার্থী জানতে পারবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়টি প্রাথমিকে থাকবে শিল্পকলা নামে এবং মাধ্যমিকে শিল্প ও সংস্কৃতি নামে।’
অন্যদিকে ‘শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা’ বিষয়ে শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্য সম্পর্কিত মৌলিক বিষয়ের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের বিভিন্ন বিষয়ের সঙ্গেও পরিচিত হবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘যেকোনো পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা যেন মানসিক দৃঢ়তা ধরে রাখতে পারে, এ জন্য কিছু মৌলিক জ্ঞান এ বিষয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা অর্জনের সুযোগ পাবে। এর ফলে শিশুরা সব ধরনের প্রতিকূলতা মোকাবিলা করার সক্ষমতা অর্জন করবে।’
বেশ কিছুদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাঠ্যপুস্তকে যৌন শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে গুঞ্জন উঠেছে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আর্কষণ করা হলে ড. মশিউজ্জামান বলেন, ‘এ ধরনের কোনো কিছু পাঠ্যপুস্তকে থাকবে না। তবে শিক্ষার্থীরা যেন প্রজনন স্বাস্থ্যের বিষয়ে জানতে পারে, এ সম্পর্কিত অধ্যায় অন্তর্ভুক্ত থাকবে।’
প্রজনন স্বাস্থ্যসংক্রান্ত অধ্যায়ে কী কী থাকবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ইন বিল্ট আমাদের সবাইকেই (ছেলে ও মেয়ে) প্রজননের বেশ কিছু ধাপ অতিক্রম করতে হয়। এ বিষয়ে যেন শিক্ষার্থীরা সুস্পষ্ট ধারণা পায়, এ জন্য আমরা “শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষা” বিষয়ে প্রজনন স্বাস্থ্য নামে অধ্যায় রেখেছি।’
‘অন্যদিকে “জীবন ও জীবিকা” বিষয়টি হবে পেশাভিত্তিক। নবম ও দশম শ্রেণিতে এ বিষয়ে বাধ্যতামূলকভাবে প্রত্যেক শিক্ষার্থী কৃষি, সেবা বা শিল্প খাতের একটি পেশায় দক্ষতা অর্জন করবে। এতে দশম শ্রেণি শেষে একজন শিক্ষার্থী যেকোনো একটি পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করতে পারবে।’
ডিজিটাল প্রযুক্তি বিষয়ে কী পড়ানো হবে, এমন প্রশ্নে এনসিটিবির এই সদস্য বলেন, ‘বর্তমান শিক্ষাক্রমে আমাদের আইসিটি নামে একটি বিষয় আছে। এই বিষয়টির ব্যাপ্তি বাড়িয়ে এর নাম দেয়া হয়েছে “ডিজিটাল প্রযুক্তি”। এর ফলে শিক্ষার্থীরা আইসিটির প্রাথমিক জ্ঞান আহরণ করার পাশাপাশি ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের সতর্কতা, অনলাইন ক্রাইম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের নিয়মকানুন ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারবে।’
সমন্বিত শিক্ষাক্রমে প্রত্যেক ধর্মের জন্য আলাদা পাঠ্যবই থাকবে বলেও জানান তিনি।
বলেন, ‘প্রত্যেক ধর্মের জন্য আলাদা পাঠ্যবই তৈরি করা হচ্ছে। অনেকেই বলার চেষ্টা করছেন, নতুন শিক্ষাক্রমে একটি বইয়ের মাধ্যমে সকল ধর্মের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করবে, বিষয়টি ঠিক নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রত্যেক ধর্মের বইয়ে আমরা তিনটি শিখন ক্ষেত্র রেখেছি। এগুলো হলো ধর্মীয় জ্ঞান, ধর্মীয় বিধিবিধান ও ধর্মীয় মূল্যবোধ। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করবে। এ ছাড়া নতুন শিক্ষাক্রমে টিচিং লার্নিং সিস্টেম এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যাতে শিক্ষার্থীরা নিজেরাই নিজ নিজ ধর্মের আচার-ব্যবহার, বিধিবিধানগুলো পড়ার পাশাপাশি গ্রুপ স্টাডির মাধ্যমেও আলোচনা করবে। এরপর তারা এগুলো বিদ্যালয়ের দেয়ালিকায় উপস্থাপন করবে। এতে শিক্ষার্থীরা সব ধর্ম সম্পর্কে জানতে পারবে।’
জাবিতে রোববার থেকে সশরীর ক্লাস বন্ধ, বহিরাগত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

দেশে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে আগামী রোববার থেকে সশরীর ক্লাস বন্ধ ও বহিরাগত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞাসহ বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে সশরীর চলমান পরীক্ষা, ব্যবহারিক ক্লাস ও দাপ্তরিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব বিধিনিষেধের কথা উল্লেখ করা হয়। প্রশাসনিক সূত্র জানায়, গত বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী রোববার থেকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের ক্লাস অনলাইনে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো। তবে স্বল্পসংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে একাধিক গ্রুপ করে ব্যবহারিক ক্লাস ও একাধিক কক্ষে চলমান পরীক্ষা সশরীর নেওয়া যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সরকার নির্ধারিত ফি দিয়ে করোনা শনাক্তের পরীক্ষা করাতে পারবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে করোনা শনাক্তের অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করার যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা বিস্তৃত করা হবে। যেসব শিক্ষার্থী করোনার টিকা নিতে না পারায় হলে আসতে পারছেন না, তাঁরাও একইভাবে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করিয়ে ওই পরীক্ষার ফলাফল জমা দিয়ে হলে আসতে পারবেন।
হল বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত এখন পর্যন্ত নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন রহিমা কানিজ। তাঁর সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে আপাতত চারজন শিক্ষার্থীর জন্য আইসোলেশনের ব্যবস্থা রাখা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশ করা যাবে না। বিশ্ববিদ্যালয়কে পিকনিক স্পট ও মিলনমেলার স্থান হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। রেজিস্ট্রারকে না জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনো অনুষ্ঠান করা যাবে না। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ক্যাম্পাসে সব ধরনের সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হলো।
করোনায় বন্ধ থাকার পর গত বছরের ১১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়া হয়। এরপর গত ২১ অক্টোবর থেকে শুরু হয় সশরীর ক্লাস ও পরীক্ষা।
রাবির প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের নতুন আহ্বায়ক নির্বাচিত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের স্টিয়ারিং কমিটির আহ্বায়ক পদে নির্বাচিত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এম খলিলুর রহমান খান। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল নয়টা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। পরে বিকেলে ভোটের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে।
এ নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, নির্বাচনে প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের ৫৫১ জন সদস্য ভোট দিয়েছেন। এর মধ্যে ২৫৫ ভোট পেয়ে আহ্বায়ক পদে বিজয়ী হয়েছেন অধ্যাপক এম খলিলুর রহমান খান। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের বর্তমান স্টিয়ারিং কমিটির কো-কনভেনর তারিকুল হাসান ২২১ ভোট পেয়েছেন।
এর আগে গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের স্টিয়ারিং কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে তৎকালীন উপাচার্য আবদুস সোবহান–সমর্থিত প্যানেল আহ্বায়কসহ চারটি সদস্যপদে জয় লাভ করে। বাকি ১৬ সদস্যপদে জয় পায় ‘দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষকবৃন্দ’।
তবে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে গত ১৩ নভেম্বর অধ্যাপক হাবিবুর রহমান আহ্বায়কের পদ থেকে অব্যাহতি নেন। এতে আহ্বায়কের পদটি শূন্য হয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে আহ্বায়ক পদে আবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
মন্তব্য