ঢাকা, সোমবার, ১৮ আগস্ট ২০২৫ ৩ ভাদ্র ১৪৩২
 
শিরোনাম

হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যু ঘটাচ্ছে ওমিক্রন, সতর্ক করলো হু

নিজস্ব প্রতিবেদক
৭ জানুয়ারি, ২০২২ ১৪:৫২
নিজস্ব প্রতিবেদক
হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যু ঘটাচ্ছে ওমিক্রন, সতর্ক করলো হু

করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন বিশ্বব্যাপী মানুষের প্রাণহানী ঘটাচ্ছে; এ কারণে এটাকে খাটো করে দেখা উচিৎ নয় বলে মনে করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। শুক্রবার এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।

হু এর প্রধান টেড্রোস আধানম গ্রেব্রিয়েসুস বলেন, নতুন এ ধরনটিতে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। অনেক দেশে আগের প্রভাববিস্তারকারী ডেল্টা ধরনকেও ছাড়িয়ে গেছে এটি (ওমিক্রন), যার মানে হানপাতালগুলো রোগীতে পরিপূর্ণ।

এক সংবাদ সম্মেলনে বৃহস্পতিবার গ্রেব্রিয়েসুস বলেন, ‘ডেল্টার তুলনায় ওমিক্রনকে কম ভয়ঙ্কর বলে মনে হয়েছে, বিশেষ করে তাদের ক্ষেত্রে যারা করোনার টিকা নিয়েছেন; এর মানে এই নয় যে এটাকে হালকা বলে ধরে নেয়া ঠিক হবে।’

হু এর প্রধান বলেন, ‘আগের ধরনটির (ডেল্টা) মতো ওমিক্রনে হাসপাতালে ভর্তি বেড়েছে এবং মানুষের মৃত্যুর কারণ হচ্ছে।’

তিনি বলেন, মূলত, শনাক্তের এ সুনামি এতো বৃহৎ ও দ্রুততর সময়ের মধ্যে যে, এটি সারা বিশ্বের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর ব্যাপক চাপ প্রয়োগ করছে।

শুক্রবার ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬ হাজার ৬৬৯ জন, যা আগের দিনের তুলনায় প্রায় ৫০০ কম। এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছালো ৫৪ লাখ ৮৯ হাজার ৩১০ জনে।

গত ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২৪ লাখ ২৪ হাজার ৬২ জন। করোনার মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৩০ কোটি ৬ লাখ ১১ হাজার ১৭ জনে।

গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ লাখ ৯৩ হাজার ৭০৭ জন এবং মারা গেছেন ১ হাজার ৯৮৯ জন।

এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৫ কোটি ৯৫ লাখ ৬ হাজার ৩১১ জন এবং প্রাণহানি ঘটেছে ৮ লাখ ৫৫ হাজার ৬৭১ জনের।

গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাণহানির তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রাশিয়া। গত ২৪ ঘন্টায় রাশিয়ায় মারা গেছে ৮০২ জন আর নতুন করে সংক্রমিত ১৫ হাজার ৩১৬ জন।

শনাক্তের বিবেচনায় তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৩ কোটি ৫২ লাখ ২৩ হাজার ৭৭০ জন এবং মারা গেছেন ৪ লাখ ৮২ হাজার ৯১১ জন।

প্রাসঙ্গিক
    মন্তব্য

    ইমরান খান কি আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছেন

    নিজস্ব প্রতিবেদক
    ৬ জানুয়ারি, ২০২২ ১১:৩৮
    নিজস্ব প্রতিবেদক
    ইমরান খান কি আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছেন

    পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নিয়মিতই আফগান বিষয়ে কথা বলছেন। তাঁর সেসব বক্তব্য শুনলে যে কারও মনে হতে পারে, তিনি বোধ হয় আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে বাড়তি দায়িত্ব পালন করছেন। আফগান-তালেবানের পক্ষে বিশ্বে সবচেয়ে সরব নেতা এখন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। তালেবানের জন্য সমর্থন আদায় ও আন্তর্জাতিক সমাজের আফগাননীতি পাল্টাতে মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছেন তিনি। তবে তালেবানের শাসননীতি সংস্কারে বিশ্বের প্রত্যাশার প্রতি সামান্যই সহানুভূতি আছে তাঁর। তিনি বরং তালেবানের রাজনৈতিক পদক্ষেপকে ন্যায্যতা দিতে নিজ উদ্যোগে সচেষ্ট। তাতে আফগানিস্তানে টেকসই সরকার প্রতিষ্ঠায় যেমন বাড়তি গতি আসেনি, তেমনি অন্যান্য দেশের জন্য স্বস্তির সঙ্গে আফগানদের দেশ গঠনের কাজে শামিল হওয়াও সহজ হয়নি। এগোচ্ছে না পাকিস্তানের জাতীয় স্বার্থও।

    তালেবানের পক্ষে বিশ্বকে জাগিয়ে তুলতে চাইছে পাকিস্তান কিছু প্রান্তিক এলাকা ছাড়া কাবুলসহ পুরো দেশ প্রায় পাঁচ মাস তালেবানের অধীন। কিন্তু পাকিস্তান ছাড়া আর কোনো দেশ শক্তভাবে তাদের পাশে দাঁড়ায়নি। সামান্য কিছু বাণিজ্য চলছে ইরান ও পাকিস্তানের সঙ্গে, বাকি বিশ্ব থেকে দেশটা অনেকটাই বিচ্ছিন্ন। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে নাগরিকদের অভ্যন্তরীণ জীবনযাপনে এবং আন্তর্জাতিক যোগাযোগে।

    এ মুহূর্তে খাদ্যের ব্যাপক সংকট চলছে সেখানে। সঙ্গে তীব্র শীতের মৌসুম, আর কর্মসংস্থানের বাজারে চরম মন্দা। তালেবান আইনশৃঙ্খলার অগ্রগতি ঘটিয়েছে বেশ। কিন্তু বেসামরিক প্রশাসন পরিচালনায় দক্ষতা দেখাতে পারছে না। বৈশ্বিক আস্থার সংকট দেশটিতে বিনিয়োগখরা তৈরি করে রেখেছে।

    এত অনিশ্চয়তায় সবচেয়ে উদ্বিগ্ন দেখা যাচ্ছে পাকিস্তানের সরকারকে। তাদের চেষ্টায় ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বিশেষ সম্মেলন হলো গত ১৯ ডিসেম্বর; যদিও সেটা কাবুলে না হয়ে ইসলামবাদে হয়েছে!

    পাকিস্তান সরকার মনে করছে, আফগানিস্তানের চলতি সংকটের কারণ আন্তর্জাতিক সমাজের নির্লিপ্ততা। তারা তালেবানের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিশ্ববাসীকে জাগিয়ে তুলতে চেষ্টা করছে। ইমরান খান এই মর্মেও বলছেন, মানবিক বিপর্যয় দেখা দিলে আফগানিস্তান থেকে আবারও বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসী তৎপরতা বাড়তে পারে। তিনি কার্যত ভীতির একটা আবহ তৈরি করে আফগানিস্তানের জন্য সাহায্য আদায় করতে চাইছেন।

    ওআইসি সম্মেলন থেকে আফগানরা বড় কিছু পেল না কেবল আফগানিস্তানকে কেন্দ্র করে ওআইসিকে বিশেষ সম্মেলনে বসাতে পারা পাকিস্তানের কূটনীতিক জোর হিসেবে দেখা যায়। তালেবানের ভাগ্য ভালো, তাদের সংকটে ওআইসি ভাবতে বসেছে। ও রকম ঘটেনি ইয়েমেন কিংবা চীনের উইঘুর মুসলমানদের জন্য।

    ৫৭ সদস্যের ওআইসির কোনো সদস্যদেশ এখনো তালেবানকে স্বীকৃতি না দেওয়া সত্ত্বেও সম্মেলনে আফগানিস্তানের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিতি ছিলেন তালেবান নেতা আমির খান মুত্তাকি। ইসলামাবাদের কূটনীতিক শক্তিতেই তাঁর এই উপস্থিতি। তবে সুশোভন কথা আর প্রত্যাশার মারপ্যাঁচ ছাড়া আফগানিস্তানের মানুষের চলতি দুর্দশা লাঘবে তাৎক্ষণিক কোনো উদ্যোগ নিতে পারেনি ওআইসি। সৌদি আরব বলেছে, তারা আফগানিস্তানের জন্য একটা মানবিক সহায়তা তহবিল গড়বে। অন্যান্য দেশ সৌদিদের মতো স্পষ্ট কিছু অঙ্গীকার করেনি।

    মনে হচ্ছে, সবাই তালেবানকে আরও দেখতে চায়। দেশটির প্রতি শক্তিধর দেশগুলোর মনোভাবও বুঝতে চায়। বার্তাটি পরিষ্কার—বিশ্বজনমতকে পাল্টানোর আগে আফগানিস্তানে তালেবানের শাসননীতি পাল্টাতে পাকিস্তানের ভূমিকা রাখা দরকার এখন। খাদ্যসংকট ও আর্থিক সংকটের পাশাপাশি তালেবানের শাসননীতিও যে আফগান সমস্যার একাংশ, সেটা আড়াল করার সুযোগ নেই। সময় যত গড়াচ্ছে, তালেবানের বিষয়ে পাকিস্তানের অবস্থানের সঙ্গে বাকি বিশ্বের দৃষ্টিভঙ্গির ফারাক বেড়ে যাচ্ছে; বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের। তবে ইমরানের এই সমালোচনা চীনসহ আরও অনেক দেশ সমর্থন করে যে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে আফগানদের রাষ্ট্রীয় সম্পদ আটকে রেখেছে, সেটা অন্যায়।

    তালেবানের হয়ে কূটনৈতিক লড়াইয়ে ইমরান ১৫ আগস্ট ন্যাটো সৈন্যরা চূড়ান্তভাবে আফগানিস্তান ছেড়ে গেলেও সেখানকার মেঠো পরিস্থিতি কোনোভাবেই ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়ছে না। অন্তত তিনটি কারণে আফগানিস্তান নিয়ে উদ্বেগে পড়েছে ওয়াশিংটন। প্রথম কারণ অবশ্যই মানবিক বিপর্যয়। ক্ষুধার্ত আফগানদের দুরবস্থার দায় কোনোভাবেই ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্র এড়াতে পারে না। দ্বিতীয়ত, দেশটিতে সব জাতিসত্তার প্রতিনিধিত্বমূলক কোনো সরকার গড়ে ওঠেনি আজও। আর সবচেয়ে বড় উৎকণ্ঠার কারণ আইএসের উত্থান।

    আফগানিস্তানের ভেতরকার এই তিন চিত্র পাকিস্তানের মোটেই অজানা নেই। এর মধ্যে কেবল প্রথমটির সমাধানে মরিয়া তারা। তালেবানের ক্ষমতাকাঠামোকে বাকি দুই সমস্যার সমাধানে চাপ দিতে অনিচ্ছুক কিংবা অসমর্থ তারা। এখানেই তাদের সঙ্গে বাকি বিশ্বের ব্যবধান।

    ইমরান খান আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক বিষয়গুলো রাজনীতির বিষয় থেকে আলাদাভাবে বিবেচনার অনুরোধ করছেন ক্রমাগত। তিনি নারীশিক্ষা ও নারীর কর্মসংস্থানবিরোধী তালেবান অবস্থানকেও এই মর্মে যৌক্তিকতা দেন যে এটা পশতু মূল্যবোধসম্মত। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে, আফগানিস্তানে তালেবানের শাসনের মধ্যেই বহু মিছিল-মিটিং করেছে মেয়েরা শিক্ষা ও কাজের অধিকার চেয়ে। তবে নারীশিক্ষার চেয়ে এখন অবশ্যই বড় বিষয় হয়ে গেছে সেখানকার ক্ষুধার সমস্যা।

    পাকিস্তান মনে করছে, তালেবানকে স্বীকৃতি দিতে বিশ্ব যত বিলম্ব ঘটাবে, তত পরিস্থিতি খারাপ হবে। অর্থাৎ পাকিস্তান একদিকে মানবিক সমস্যাকে রাজনীতির বাইরে গিয়ে বিবেচনার অনুরোধ করছে, আবার একই সঙ্গে দেশটির খাদ্যসংকটকে ব্যবহার করে তালেবানকে বিশ্ব স্বীকৃতি আদায় করে দিতেও সচেষ্ট। তালেবানের হয়ে প্রায় সব কূটনৈতিক লড়াই ইমরান খান একাই যেন লড়ে যেতে আগ্রহী।

    তালেবানের প্রতি শর্তহীন সমর্থনের বিনিময়ে পাকিস্তান কী পাচ্ছে আফগানিস্তানের চলতি খাদ্যসংকটের রাজনৈতিক ফলাফল সম্পর্কে ইমরান সরকার ভালোভাবেই অবহিত। এই সংকট সামাল দিতে না পারলে অরাজকতা ছড়িয়ে পড়বে। আর এই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারলে তালেবান বিশ্বজনমত অগ্রাহ্য করে আরও কিছুদিন দেশ চালাতে পারবে।

    কিন্তু দেশটির অন্যান্য সমস্যা থেকে খাদ্যসংকটকে আলাদা করে দেখা বা দেখাতে চাওয়া বড় এক স্ববিরোধিতা। খাদ্যসংকটের সঙ্গে সুশাসনের অভাব ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার অভাব বরাবরই ওতপ্রোতভাবে লেপটে থাকে। তালেবান ক্ষমতায় আসামাত্র দেশটিতে অর্ধেকের বেশি সংবাদমাধ্যম বন্ধ হয়ে গেছে। সমসংখ্যক সংবাদকর্মী দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। মাঠপর্যায়ে খাদ্যসংকটের বিস্তারিত খবরাখবর পাওয়াও বেসরকারি সংগঠনগুলোর জন্য বড় এক সমস্যা।

    হাজারা, তাজিক, উজবেক ইত্যাদি শক্তির সমন্বয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার না থাকায় দীর্ঘ মেয়াদে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক স্থিতিশীলতাও আসছে না কাবুলে। তালেবান যেভাবে নারীশিক্ষা ও নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বন্ধ করেছে, সেটাও জনসংখ্যার অর্ধেকের আয়রোজগারে বিপর্যয়কর হয়েছে।

    ইমরান খানের আফগাননীতি হয়তো এই আফগানিস্তানই চাইছে। তা না হলে ক্ষুধামুক্তির প্রশ্নটা যে সুশাসনের প্রক্রিয়ারই অংশ, সেটা অগ্রাহ্য করে আফগানিস্তানে অর্থকড়ি ঢালার আহ্বান জানাচ্ছে কেন ইসলামাবাদ?

    কিন্তু তালেবানের প্রতি ইমরান সরকারের এ রকম শর্তহীন সমর্থনের নীতি পাকিস্তানের স্বার্থের দিক থেকে কতটা যৌক্তিক, সে প্রশ্নও উঠছে। উভয় দেশের সম্পর্কে তালেবান ইতিমধ্যে চালকের আসন নিতে শুরু করেছে। পাকিস্তানে তেহরিক-ই-তালেবান (টিটিপি) ইতিমধ্যে সরকারের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি অবস্থা থেকে বেরিয়ে গেছে। আফগান-তালেবানের সঙ্গে পরামর্শ ছাড়া এটা কখনোই ঘটার কথা নয়। টিটিপির এ সিদ্ধান্ত কৌশলগত দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ। আফগানিস্তানে নিজস্ব আদর্শের সরকার থাকায় তাদের পক্ষে পাকিস্তানে চূড়ান্ত বিস্তৃতির এটাই সুবর্ণ সময়।

    একই সময় আফগান-তালেবানের সঙ্গে পাকিস্তান বাহিনীর সংঘর্ষ ঘটেছে সীমান্তে কাঁটাতার বসানো নিয়ে। পাকিস্তান সরকার পশতু এলাকার ভেতর দিয়ে উভয় দেশের মধ্যে প্রায় ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ যে কাঁটাতার বসাচ্ছে, সেটা পশতু-তালেবানের পক্ষে মেনে নেওয়া কঠিন। এতে পুরোনো ‘পশতুস্তান’ ধারণা বিপন্ন হবে। একই জাতি বিভক্ত হয়ে যাবে দুই সীমান্তে। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের পশতুদের কাছে এটা কুখ্যাত এক প্রকল্প। আফগান-তালেবান পাকিস্তানের সীমান্ত প্রকল্পে রীতিমতো গুলি ফুটিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। তালেবান-নিয়ন্ত্রিত প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পাকিস্তানের কাঁটাতার নির্মাণ প্রকল্পকে ইতিমধ্যে ‘অবৈধ’ বলে উল্লেখ করেছে। পাকিস্তানের জন্য এসব খারাপ আলামত।

    সীমান্তে কাঁটাতার নির্মাণে আফগান-তালেবানের আপত্তি একই সঙ্গে পাকিস্তানে তাদের বন্ধু-সংগঠন টিটিপির বিকাশের স্বার্থেও। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখে টিটিপি অস্ত্রধারীরা নিয়মিত খোলা সীমান্ত দিয়ে পাশের দেশে ঢুকে পড়তে পারছে। কাঁটাতার তৈরি হয়ে গেলে সেটা সহজ হবে না।

    তালেবান যেভাবে সীমান্তপ্রাচীরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে, তাতে কাঁটাতার টিকিয়ে রাখা দুরূহই হবে। সে ক্ষেত্রে পাকিস্তানের ভেতরে এ প্রশ্ন আরও জোরালোভাবে উঠবে যে তালেবানকে শর্তহীনভাবে মদদ দিয়ে বিনিময়ে কী পাওয়া গেল? কাবুলে পূর্ণ অনুগত একটা সরকারই যদি গড়ে তোলা না যায়, তাহলে আফগানিস্তানের নতুন অধ্যায় থেকে ইসলামাবাদের প্রাপ্তি কী?

    এটা স্পষ্ট যে, আফগানিস্তান নিয়ে ইমরান খানের মানসিক চাপ সামনে আরও বাড়বে। একদিকে রয়েছে সেখানকার শাসকদের টিকিয়ে রাখার দায়, অন্যদিকে দেখা দিয়েছে সেই শাসকদের অনুগত রাখার চ্যালেঞ্জ।

    আলতাফ পারভেজ দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাস বিষয়ে গবেষক

    প্রাসঙ্গিক
      মন্তব্য

      টিকা না নিলে জীবন কারাগার বানিয়ে দেব: ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট

      নিজস্ব প্রতিবেদক
      ৫ জানুয়ারি, ২০২২ ১৫:৩৬
      নিজস্ব প্রতিবেদক
      টিকা না নিলে জীবন কারাগার বানিয়ে দেব: ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট

      করোনা টিকার যথেষ্ট সরবরাহ থাকার পরও যারা টিকা নেননি বা টিকার বিরোধিতা করেন, তাদের জীবনকে কারাগার বানিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রাঁ।

      ফ্রান্সের লা প্যারিসিয়ান সংবাদপত্রকে তিনি বলেন, ‘যারা ভ্যাকসিন নেয়নি আমি তাদের হয়রানি করতে চাই এবং এটা করে যেতে চাই।

      তবে এ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছেন ম্যাক্রোঁ। বিরোধী দলের নেতারা বলেছেন, তিনি যে ভাষা ব্যবহার করেছেন তা একজন প্রেসিডেন্টের মুখে মানায় না।

      বিবিসি জানিয়েছে, করোনা সংক্রান্ত একটি বিল পাসে বিলম্ব হওয়ার কারণে এমন মন্তব্য করেছেন ম্যাক্রোঁ।

      জানা গেছে, বিরোধী আইনপ্রণেতারা বিলটির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। এই সপ্তাহে ভোটাভুটির পর বিলটি পাস হওয়ার কথা রয়েছে। তবে আইনপ্রণেতারা বলছেন, এই নিয়ে তারা মৃত্যুর হুমকিও পেয়েছেন।

      ওই সাক্ষাতকারে ম্যাক্রোঁ বলেন, আমি জোর করে কাউকে ভ্যাকসিন দিতে চাই না। তবে সামাজিক জীবনে যোগাযোগ সীমিত করে সবাইকে আগ্রহী করে তুলতে চাই।

      ম্যাক্রোঁ আরো বলেন, ‘ভ্যাকসিন যারা নেয়নি আমি তাদেরকে কারাগারে পাঠাবো না। তাই আমাদের তাদেরকে বলা দরকার ১৫ জানুয়ারী থেকে আপনারা রেঁস্তোরায় যেয়ে খেতে পারবেন না। এমনকি কফি খেতে যেতে পারবেন না। থিয়েটারে যেতে পারবেন না, সিনেমায় যেতে পারবেন না।

      প্রাসঙ্গিক
        মন্তব্য

        দুর্নীতি-যৌন অপরাধ মুসলিম বিশ্বের দু’টি প্রধান শত্রু: ইমরান খান

        নিজস্ব প্রতিবেদক
        ৩ জানুয়ারি, ২০২২ ২১:১৪
        নিজস্ব প্রতিবেদক
        দুর্নীতি-যৌন অপরাধ মুসলিম বিশ্বের দু’টি প্রধান শত্রু: ইমরান খান

        পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন যে, ক্রমবর্ধমান দুর্নীতি এবং যৌন অপরাধ মুসলিম বিশ্বের দু’টি প্রধান শত্রু।

        রোববার ন্যাশনাল রাহমাতুল-লিল-আলামিন অথোরিটি (এনআরএএ) আয়োজিত সংলাপের দ্বিতীয় অংশ ‘রিয়াসাতে মদিনা : ইসলাম, সমাজ ও নৈতিক পুনরুজ্জীবন’ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘সমাজে দুই ধরনের অপরাধ রয়েছে। একটি দুর্নীতি এবং অন্যটি যৌন অপরাধ। আমাদের সমাজে যৌন অপরাধ তীব্রভাবে বেড়েছে, যেমন, ধর্ষণ ও শিশু নির্যাতন এবং এর মাত্র এক শতাংশ নথিভুক্ত করা হয়েছে।’

        পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইন্টারনেটের অশ্লীলতা এবং পর্নোগ্রাফিক সামগ্রীতে ডুবে যাওয়া থেকে মুসলিম তারুণ্যকে বাঁচানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, বাকি ৯৯ শতাংশের সাথে সমাজকে লড়াই করতে হবে। দুর্নীতির ক্ষেত্রেও তাই। সমাজে দুর্নীতিকে অগ্রহণযোগ্য করতে হবে। দুর্ভাগ্যক্রমে, যখন আপনাদের নেতৃবৃন্দ সময়ের সাথে সাথে দুর্নীতিগ্রস্ত হয়, তারা দুর্নীতিকে গ্রহণযোগ্য করে তোলেন।’

        অনুষ্ঠানটিতে উপস্থিত ইসলামিক বিশেষজ্ঞরা ইমরান খানের সাথে একমত হয়েছেন যে, তরুণদের শেখানো উচিত কীভাবে আধুনিক জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়। তারা আধুনিকতার নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় মুসলিম দেশগুলোর কিছু সম্মিলিত প্রচেষ্টার পরামর্শ দিয়েছেন এবং বলেছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জীবন ও সুন্নাহ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করার মাধ্যমে মুসলিম তরুণদের আধুনিক যুগের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করার জন্য প্রয়োজনীয় গুণাবলীতে দীক্ষিত করা যেতে পারে। সূত্র: ডন।

        প্রাসঙ্গিক
          মন্তব্য
          সর্বশেষ সংবাদ
            সর্বাধিক পঠিত