দুর্নীতি বিষয়ে কুবি উপাচার্যের বক্তব্য সংবিধান পরিপন্থি: টিআইবি

কুবি প্রতিনিধি: দুর্নীতি বিষয়ে সম্প্রতি দেওয়া কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈনের বক্তব্য সংবিধান পরিপন্থি বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘উপাচার্যের এ বক্তব্য সংবিধানের ২০(২) অনুচ্ছেদের সাথে সাংঘর্ষিক। একই সাথে সরকার প্রধানের জন্য অবমাননাকর। কারণ, প্রধানমন্ত্রী ধারাবাহিক ভাবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার ঘোষণা দিয়েছেন। অন্যদিকে সরকারের দায়িত্বশীল অবস্থান থেকে ঘোষিত তথ্য অনুযায়ী দুর্নীতির ফলে বাংলাদেশের বার্ষিক জাতীয় আয়ের ২ থেকে ৩ শতাংশ ক্ষতি হচ্ছে।’
চীনে দুর্নীতি হয় বলে চীন এত উন্নত মন্তব্য করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে বলেন, ‘করাপশন একচুয়ালি ব্লকস ডেভেলপমেন্ট, দ্যাটস নট ট্রু (দুর্নীতি আসলে উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে, এটি সত্য নয়)। তাহলে চায়না কেন এত উন্নতি করে। চায়নায় তো সবাই দুর্নীতি করে।’
একই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, 'অনেকেই বলেন দেশে দুর্নীতির কারণে উন্নয়ন হচ্ছে না। কিন্তু আমি বলব উলটো কথা। দেশে দুর্নীতি হচ্ছে বলেই উন্নতি হচ্ছে। এটা নিয়ে অনেকেই অনেক কথা বলতে পারেন। যে ঘুষ খায়, সে পদ্মা পাড়ে যায় ইলিশ খেতে। এতে পদ্মা পাড়ের গরীব মানুষেরা ধনী হচ্ছে। দুর্নীতি এভাবে অর্থনীতিতে অবদান রাখে। তাই অর্থনীতিবিদগণ দুর্নীতি নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে না। তবে যারা পলিটিক্যাল ইকোনমি নিয়ে কাজ করে তারা দুর্নীতি নিয়ে কথা বলে থাকে। নৈতিকতার জায়গায়ও এটি প্রশ্নবিদ্ধ। তবে অর্থনীতির জায়গায় থেকে যদি বল, দুর্নীতি কখনোই উন্নয়নের জন্য বাঁধা নয়।’
উপাচার্যের এ বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে শিক্ষক সমাজসহ বিভিন্ন জায়গায় সমালোচনার সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. শামীমুল ইসলাম বলেন, ‘মানুষ তাঁর নৈতিকতার জন্য শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে পরিচিত। কেউ যদি জোর জবরদস্তি করে উন্নয়ন করে চাহিদা পূরণ করে তা কেবল নিজের ‘উন্নয়ন’ই হবে, জাতির উন্নয়ন হতে পারে না। জাতির উন্নয়নের জন্য নৈতিকভাবে উন্নয়ন করতে হবে, দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে নয়।'
একই বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, ‘দুর্নীতি বৈষম্য তৈরির অন্যতম উৎস। বৈষম্য টেকসই উন্নয়নের বিভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা ও পরিকল্পনার বিপরীতে অবস্থান করে। দুর্নীতির সাথে বৈষম্যের একটা সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধান ও উন্নয়নের দর্শন সততা, নৈতিক মূল্যবোধের উপর গুরুত্ব দেয়। উন্নয়ন মানে শুধু আর্থিক উন্নয়ন না। সার্বিক উন্নয়নে সৎ, ন্যায্য ও সাম্যের উপর ভিত্তি করে উন্নয়নকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বৈষম্য তৈরি করে শুধু আর্থিক উন্নয়ন হবে, যা আমাদের সার্বিক উন্নয়নের সাথে পরিপন্থি।’
অধ্যাপক বিদিশা আরও বলেন, ‘দুর্নীতি মূলত অন্যজনকে বঞ্চিত করে, ক্ষতিগ্রস্ত করে। দুর্নীতি করে মানুষ যে অর্থ উপার্জন করে তা সাময়িক, দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন সৎ থাকা ও সৎপথে প্রচেষ্টা করা। সফল মানুষদের দিকে দেখলে আমরা দেখতে পাই, সবাই সৎভাবে ও পরিশ্রমকে পুঁজি করে সফল হয়েছেন। কাজেই শিক্ষকদের উচিত সর্বদা নৈতিকতা, সততা ও ন্যায্যতার কথা বলা।’
সার্বিক বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, উপাচার্য প্রত্যক্ষভাবে দুর্নীতি সহায়ক অবস্থান গ্রহণ করেছেন এবং দেশবাসীকে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে দুর্নীতির মতো জঘন্য, অবৈধ ও অসাংবিধানিক অপরাধের সাথে সংশ্লিষ্ট হওয়ার জন্য উৎসাহ দিয়েছেন। যা একজন উপাচার্যের জন্য আত্মঘাতীমূলক অনৈতিকতার উদাহরণ এবং বাস্তবে একটি অপরাধ। দুর্নীতি করা যেমন আইনের লঙ্ঘন, তেমনি কাউকে দুর্নীতি করতে প্রশ্রয় দেওয়া বা প্ররোচিত করা একই ধরনের অপরাধ।
টেকনাফে ২৫ হাজার ইয়াবা উদ্ধার রোহিঙ্গা সহ আটক-২

তাফহীমুল আনাম, কক্সবাজারঃ কক্সবাজারের টেকনাফে নয়াবাজার পশ্চিম সাতঘরিয়া পাহাড়ি এলাকায় ইয়াবা উদ্ধার এসময় এক রোহিঙ্গাসহ দুই মাদক কারবারিকে আটক করা হয়েছে।
আটকরা হলেন, হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড নয়াবাজার পশ্চিম সাতঘরিয়া পাড়ার মৃত নুরুল হোসেনের ছেলে জাহিদ হোসেন প্রকাশ ধইল্যা (৩৫) ও উখিয়া ১৪-নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ব্লক-এ/৫ এর বাসিন্দা মৃত দিল মোহাম্মদের ছেলে সৈয়দ সালাম প্রকাশ সাইদুল ইসলাম (২৩)।
আজ বুধবার (২ আগস্ট) দুপুরে গণমাধ্যম কে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন কক্সবাজার র্যাব-১৫ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া) মোঃ আবু সালাম চৌধুরী।
মো. আবু সালাম চৌধুরী বলেন , গত মঙ্গলবার (১ আগস্ট) সন্ধ্যায় র্যাব-১৫, কক্সবাজার এর আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হোয়াইক্যংয়ের ০৭নং ওয়ার্ড নয়াপাড়া পশ্চিম সাতঘরিয়া পাড়ার শিয়ালিয়া পাহাড়ের উপর কয়েকজন ব্যক্তি মাদক নিয়ে অবস্থান করছে বলে খরব পায়।
এমন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১৫, চৌকস দল ওই স্থানে মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান চালায়। এ সময় র্যাবের উপস্থিতি বুঝতে পেরে মাদক কারবারিরা পালানোর চেষ্টা করেন। পরে র্যাব তাদের ধাওয়া দিয়ে রোহিঙ্গা সহ দুইজন মাদক কারবারিকে আটক করা হয়েছে।
এরপর আটকদের দেহ ও সঙ্গে থাকা শপিং ব্যাগ তল্লাশি করে ২৫ হাজার ৭শত পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ২টি স্মার্ট ও ১টি বাটন মোবাইল ফোন এবং ৩টি সীম কার্ড জব্দ করা হয়।
মো.আবু সালাম চৌধুরী বলেন, আটককৃত মাদক কারবারিরা জানায়, অভিযানের সময় আরো তিন তাদের তিন সহযোগী পালিয়ে যান বলে স্বীকার করেন। আটক ও পলাতক মাদক ব্যবসায়ীরা বেশকিছু দিন ধরে ইয়াবা কেনা-বেচার সঙ্গে জড়িত।
তারা আরো জানায়, পার্শ্ববর্তী সীমান্ত এলাকা থেকে মাদক সংগ্রহ করে, এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার এড়াতে মাদক ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে টেকনাফের পাহাড়ি এলাকাগুলো ব্যবহার করে থাকে বলে স্বীকার করেন।
উদ্ধারকৃত মাদক ও আটকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান মো. আবু সালাম চৌধুরী।
মাদকসেবিদের জন্য হটস্পট পবিপ্রবি

সাব্বির হোসেন, পবিপ্রবি প্রতিনিধি: পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(পবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে বাড়ছে মাদকের আসর। ক্যাম্পাসে ৮ টিরও বেশি স্পটে নিয়মিত মাদক সেবন চলে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নাকের ডগায় এসব ঘটলেও তা থামাতে ব্যর্থ তারা। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস হয়ে উঠেছে মাদকাসক্তদের ‘অভয়াশ্রম’।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শের -ই বাংলা হলের সামনে, প্রশাসনিক ভবনের পিছনে, মন্দিরের সামনের ফাঁকা যায়গা, সৃজনী স্কুল রাস্তা, খামার ভবন চত্বর, কৃষি খামারের তালতলা, এম কেরামত আলী হলের দক্ষিণ পাশে নিয়মিত চলে মাদকসেবন। গতকাল (মঙ্গলবার) আনুমানিক দুপুর দুই টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে এম.কেরামত আলী হলের পাশে দুই (২) বহিরাগতের মাদকসেবনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
অভিযোগ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের বিভিন্ন ছাত্রনেতার কক্ষে নিয়মিত বসে মাদকের আসর। এসব ছাত্রনেতার সাথে বহিরাগত মাদকসেবিদের যোগসাজশ রয়েছে। যার ফলে হাতের নাগালেই পাওয়া যায় গাঁজা, ইয়াবা এবং ঘুমের ওষুধ সহ বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য। মাদক সেবনের খরচ জোগাতে চুরি, ব্লাকমেইল সহ বিভিন্ন অপরাধেও জড়াচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এদের হাতে বিভিন্ন সময় হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরাও। বিশ্ববিদ্যালয়ের চারপাশে শক্ত প্রাচীর না থাকায় সহজেই বহিরাগত প্রবেশের সুযোগ পাচ্ছে। আর এই সুযোগ মাদকসেবিরা বিশ্ববিদ্যালয়কে মাদকের হটস্পট বানিয়েছে।
অন্তত দশ (১০) জন শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায়, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের তদারকির অভাবে মাদকসেবীর সংখ্যা বেড়েছে। ক্যাম্পাসকে সুশৃঙ্খল ও মাদকমুক্ত করার দাবি জানান তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সদ্য মাদক ছেড়ে দেওয়া এক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাস্ট গেট ও সেকেন্ড গেটে কয়েকজন স্থানীয় মাদকবিক্রেতা রয়েছে তাদের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে মাদক প্রবেশ করে। এরপর ক্যাম্পাসে কিছু মাদকসেবি ছাত্রনেতা এসব মাদক বিক্রি করেন। এসব মাদকসেবি ছাত্রনেতাদের কক্ষে বসে মাদকের আসর। আবাসিক হলের বাইরে বিভিন্ন স্থানে যারা মাদকসেবন করেন তারা বহিরাগত। তবে মাদকসেবি ছাত্রনেতাদের সাথে এসব বহিরাগতের সুসম্পর্ক থাকায় তারা মাদকসেবনের স্থান হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয়কে নিরাপদ মনে করেন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন দুমকি থানার অফিসার ইনচার্জ তারেক মোহাম্মদ হান্নান বলেন, "আমি গত ১৯ জুলাই এখানে যোগদান করেই বিশ্বিবদ্যালয়ে মাদকসেবিদের দমনে কাজ শুরু করেছি। এ বিষয়ে একটা সিভিল টিম নিয়েছি। আমরা অচিরেই এসব মাদকসেবিদের গ্রেফতার করবো।"
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও প্রক্টর অধ্যাপক ড.সন্তোষ কুমার বসু বলেন, "স্থানীয় প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি। তাদের সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয়কে মাদকমুক্ত করবো।"
ববি শিক্ষকের বিরুদ্ধে নম্বর টেম্পারিংয়ের অভিযোগ

ববি প্রতিনিধিঃ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক উন্মেষ রায় এর বিরুদ্ধে পরিবহন সংক্রান্ত হয়রানিমূলক আচরণ ও নম্বর টেম্পারিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। বাংলা বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের (স্নাতক) শিক্ষার্থী মো. লুৎফর রহমান রবিবার (৩০ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও পরিবহন পুলের ম্যানেজার বরাবর দুটি পৃথক লিখিত অভিযোগ পত্র দেন।
অভিযোগপত্রের বিষয়টি নিশ্চিত করে উপাচার্যের পিএ প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন বলেন, 'উপাচার্য বরাবর বাংলা বিভাগের এক শিক্ষার্থী অভিযোগপত্র দিয়েছে, উপাচার্য বিষয়টি সম্পর্কে অবগত। কাজ চলমান।
অভিযোগ পত্রে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে আমি গলা ব্যথাসহ অন্যান্য সমস্যায় ভুগছে। গত (শনিবার) শ্বাসকষ্টসহ গলাব্যথা তীব্র হলে এ্যাম্বুলেন্স সেবার জন্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সঞ্জয় সরকারের শরণাপন্ন হই। তিনি এ্যাম্বুলেন্স চালককে ফোন দিয়ে শেরে বাংলা হল থেকে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। এরপর এ্যাম্বুলেন্সের সেবা পেয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে ফেরার পথে এ্যাম্বুলেন্সের নাম্বারে পুনরায় ফোন দেই। তখন এ্যাম্বুলেন্স চালক বলেন, সঞ্জয় সরকার ফোন না দেওয়া পর্যন্ত তিনি যেতে পারবেন না। এরপর সঞ্জয় সরকারকে পুনরায় ফোন দিলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করে বিভাগীয় চেয়ারম্যান উন্মেষ রায় কে ফোন দিতে বলেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে চেয়ারম্যান উন্মেষ রায়কে ফোন দিলে তিনি নানাভাবে আমাদের কটূক্তিমূলক কথা বলেন এবং এ্যাম্বুলেন্সকে না আসতে বারণ করেন। মানসিকভাবে আমি ভেঙে পড়ায় বাংলা বিভাগের অন্য শিক্ষক মোহাম্মাদ সাকিবুল হাসানকে ফোন দিলে তিনি এ্যাম্বুলেন্স চালককে ফোন দিয়ে বলে দিলে এ্যাম্বুলেন্স চালক দপদপিয়া টোল পাড় হয় । পথিমধ্যে চেয়ারম্যান উন্মেষ রায় ড্রাইভারকে ফোন দিয়ে আসতে নিষেধ করেন।'
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, 'উন্মেষ রায় পরীক্ষায় নম্বর টেম্পারিং করে আমাকে নম্বর কম দেন। তার কোর্সে ভালো পরীক্ষা দেওয়ার পরও নম্বর দেন না। তিনি ইচ্ছে করেই ব্যক্তিগত আক্রোশে নম্বর কম দেন।'
অভিযোগকারী শিক্ষার্থী লুৎফর রহমান এ বিষয়ে বলেন, 'মার্কসীট তুলে দেখি অন্য কোর্সে ৩.৭৫ বা ৩.৫০ অথচ তার কোর্সে ৩.২৫ এর উপর উঠেই না। সবচেয়ে ভালো পরীক্ষা দিয়েও তার কোর্সে ভালো নম্বর উঠাতে পারি না। তার রুমে গেলেও আমাকে বের করে দেওয়া হয়। স্যারের সাথে আমার কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই। কিন্তু সে আমার সাথে এমন আচরণ করছে কেন বুঝতে পারছি না।
এই শিক্ষার্থী আরো বলেন, অনার্সে আমার সব কোর্সের রেজাল্ট ৩.৫০ উপরে কিন্তু শুধুমাত্র বিভাগের সহকারী অধ্যাপক উন্মেষ রায়ের কোর্সগুলোতে ৩.৫০ এর নিচে। অর্নাসে আমাদের মোট ৭টি কোর্স নিয়েছেন তিনি। আশা করেছিলাম এসব কোর্সে সর্বনিম্ন জিপিএ ৩.৫০ পাবো। কিন্তু তার এসব কোর্সগুলো কেন এমন নম্বর পেলাম তা আমার বোধগম্য নয়। বাংলা ছোটগল্প - ১ (কোড-১০৭) পেয়েছি ৩.২৫, বাংলা উপন্যাস -২ (কোড-২০৩) পেয়েছি ৩.২৫ , বাংলা প্রবন্ধ -১ (কোড- ২০৭) পেয়েছেন ৩.২৫ , বাংলা কবিতা -৪ (কোড-৩০১)পেয়েছি ৩.২৫ , বাংলা রম্য সাহিত্য (কোড-৩০৮) ৩.০০, ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের সাহিত্য (কোড- ৪০৪) ৩.২৫ এবং ভ্রমন ও পত্র সাহিত্য (কোড -৪০৭) পেয়েছি ৩.০০।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলা বিভাগের একাধিক শিক্ষার্থীরা জানান, উন্মেষ রায়ের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নতুন নয়। ইসলাম ধর্ম নিয়ে শ্রেনীকক্ষে বিভিন্ন কটুক্তিমূলক কথা বা অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করেন। এসব নিয়ে যে শিক্ষার্থী প্রতিবাদ করেন তাদেরকে বিভিন্নভাবে অপমান অপদস্তসহ নম্বর টেম্পারিংয়ের শিকার হতে হয়।
এসব অভিযোগের বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক উন্মেষ রায় বলেন, 'নম্বর ট্যাম্পারিংয়ের বিষয়ে আমি জানি না, এরকম কোনো ঘটনা ঘটে নাই। কেউ অভিযোগ দিতেই পারে। আর এ বিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই। তবে এম্বুলেন্সের জন্য ফোন দিয়েছে ঐ শিক্ষার্থী তবে এরকম কোনো কিছু ঘটে নাই। আর আমাদের সাশ্রয়ের বিষয় আছে তো। সাধারণত জরুরী বিষয় হলে এ্যাম্বুলেন্সের বিষয়টা দেখি।
প্রসঙ্গত, এর আগে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও সাম্প্রদায়িক উস্কানীর অভিযোগ উঠেছিল বাংলা বিভাগের ঐ শিক্ষকের বিরূদ্ধে। ২০২২ সালের ২৩ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ ছাদেকুল আরেফিন বরাবর ৩৯ জন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি একটি অভিযোগ পত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোঃ খোরশেদ আলমের কাছে জমা দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তবে সে ঘটনা কোন পদক্ষেপ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এসব বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. ছাদেকুল আরেফিনকে হোয়াটসঅ্যাপে ক্ষুদে বার্তা ও একাধিবকার ফোন করলে রিসিভ করেননি।
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর মোটরসাইকেল চুরি, ৪ দিনেও মামলা নেয়নি পুলিশ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৭-২০১৮ সেশনের শিক্ষার্থী বাবলু মিয়ার মোটরসাইকেল ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোভিড-১৯ এর ভ্যাক্সিন দিতে গিয়ে চুরি হয়।
গত ১২ জুলাই কোভিড-১৯ এর চতুর্থ ডোজের টিকা দিতে গিয়ে হাসপাতালে প্রবেশের ১২ মিনিট পর হাসপাতাল থেকে বের হয়ে দেখেন তার মোটরসাইকেলটি নেই। পরবর্তীতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে দেখা যায়, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হাসপাতালে প্রবেশের ৮ মিনিটের মাঝেই মোটরসাইকেলটি চুরি করে নিয়ে পালিয়ে যায়। কিন্তু সামনের সিসিটিভি ক্যামেরা নষ্ট থাকায় চোরকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে বাইক চুরির চারদিন পার হয়ে গেলেও মামলা নেয়নি ত্রিশাল থানা পুলিশ। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বাবলু জানায়, "আমি মামলা করতে চাইলে আমাকে থানা থেকে বলা হয়েছে অজ্ঞাতনামা মামলা করে কি করবেন? পরবর্তীতে জিডি নিতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছিলো ত্রিশাল থানা পুলিশ।"
তিনদিনেও মামলা না নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে ত্রিশাল থানার ওসি মাইন উদ্দিন জানান, "পুলিশ তো মামলা করবে না। ১৭ তারিখ এসে মামলা করতে পারবে।"
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আরও জানায়, "আমি মোটরসাইকেল শনাক্তের অগ্রগতি জানতে চাইলে ত্রিশাল থানার এস আই আনিস আমাকে বলেন, পুলিশের কাছে যাদুর চেরাগ নাই যে আপনার মোটরসাইকেল বের করে দিবে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চোর শনাক্ত করে নিয়ে আসেন। তারপর আমি আসামী ধরবো।"
এ ব্যাপারে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, "মোটরসাইকেল চুরি ঠেকানো তো আমার দায়িত্ব না।"
সামনের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ না পাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি আরও জানান, "যেসব সিসিটিভি ক্যামেরা ঠিক ছিলো সেগুলোর ফুটেজ দেওয়া হয়েছে। আমি ঘটনার দিন জানতে পারি সামনের সিসিটিভি ক্যামেরা নষ্ট। আমি সবসময় তো সব ব্যাপারে অবগত থাকিনা। আপনি থানায় যোগাযোগ করেন।"
মোটরসাইকেল চুরি হয়ে যাওয়ার চারদিন পেরিয়ে গেলেও মামলা না নেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবস্থান জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান জানান, "মোটরসাইকেল চুরি হলে সাধারণত থানায় মামলা নেয় না। তবে অভিযোগ বা জিডি গ্রহণ করে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সাথে এবং থানায় আমার কথা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।"
মন্তব্য