মেজর সিনহা হত্যা মামলার রায়, আদালত পাড়ায় নিরাপত্তা জোরদার

দেশজুড়ে আলোচিত কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের গুলিতে নিহত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আদালত ও এর আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সোমবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল থেকে কক্সবাজার দায়রা জজ আদালত এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়।
আসামিদের আদালতে আনার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
সরেজমিন দেখা যায়, আদালত প্রাঙ্গণ ও বাইরে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া ডিবি পুলিশসহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও সাদা পোষাকে দায়িত্ব পালন করছেন। আদালতের প্রবেশমুখে কোনও গাড়ি প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এছাড়া আদালতের মূল ভবনের সামনে পুলিশ সদস্যরা নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করে রেখেছেন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আসামিদের আদালতে আনার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। আদালতের নির্দেশ পেলে আসামিদের কারাগার থেকে আদালতে নিয়ে আসা হবে। তবে কোন সময়ে আনা হবে, নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। ধারণা করা হচ্ছে, দুপুর দুইটার দিকে তাদের আনা হতে পারে।
আসামি সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাসের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সমীর দাশগুপ্ত বাংলানিউজকে বলেন, প্রদীপ কুমারসহ সব আসামিকে সকাল দশটার দিকে আদালতে আনার কথা থাকলেও আনা হয়নি। দুপুর দুইটার দিকে আদালতে আনা হতে পারে।
সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরুতেই বড় ধরনের অনিয়মের অভিযোগ- নিয়োগ বানিজ্য

শিক্ষা কার্যক্রম পুরোপুরি শুরুর আগেই বড় ধরনের অনিয়মে জড়িয়েছে সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অনুমোদিত পদের বাইরে অতিরিক্ত ১০৯ জনকে নিয়োগ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অস্থায়ীভাবে দেওয়া এসব নিয়োগে উপাচার্যের আত্মীয়স্বজন থেকে শুরু ক্ষমতাসীন দলের একাধিক সাংসদের স্বজনেরা রয়েছেন। এমনকি উচ্চশিক্ষার অনিয়ম বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্বে থাকা ইউজিসির কর্মকর্তাদের সুপারিশেও বিশ্ববিদ্যালয়টিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন অনুষদে বেআইনিভাবে আটজনকে ডিন হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে ইউজিসির তদন্তেই। ইউজিসির তদন্ত কমিটি সুপারিশ করেছে, সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ীভাবে (অ্যাডহক) যাঁদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাঁদের মেয়াদ আর না বাড়ানো, অস্থায়ীভাবে নিয়োগ পাওয়ার পরও নীতিমালা লঙ্ঘন করে যাঁদের পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে, তা বাতিল করা এবং পদোন্নতির পর পাওয়া অতিরিক্ত বেতন-ভাতার অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলে জমা দেওয়া।
এবারই প্রথম ইউজিসি তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়নি। তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে চিঠি দিয়েছে ইউজিসি। এ চিঠিতে অনিয়ম বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয়টির স্থায়ী বা অস্থায়ী পদে শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডে ইউজিসির প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা সদস্যকে এবং কর্মকর্তা–কর্মচারী নিয়োগ বোর্ডে ইউজিসির সচিবকে পর্যবেক্ষক হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। চিঠি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তদন্ত কমিটির সদস্য ও ইউজিসির সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ফেরদৌস জামান।
২০১৮ সালের অক্টোবরে প্রতিষ্ঠিত হয় স্নাতকোত্তর চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। এটি দেশের চতুর্থ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। ২০১৮ সালের নভেম্বরে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোর্শেদ আহমেদ চৌধুরী। এখনো বিশ্ববিদ্যালয়টির নিজস্ব ক্যাম্পাস হয়নি। সিলেট শহরের চৌহাট্টা এলাকায় অস্থায়ী ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম চলছে। স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য শহরের পাশে দক্ষিণ সুরমা এলাকায় ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির নিয়োগে স্বজনপ্রীতি ও বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠার পর গত বছরের নভেম্বরে ইউজিসি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে ইউজিসি ১৭ জানুয়ারি উপাচার্যকে চিঠি দিয়ে বলেছে অস্থায়ীভাবে আর কোনো নিয়োগ না দেওয়া। আর যেসব পদে ইতিমধ্যে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাঁদের চাকরির মেয়াদ আর না বাড়িয়ে ইউজিসির অনুমোদিত পদের বিপরীতে উন্মুক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রয়োজনীয়তার নিরিখে নিয়োগ দেওয়ার ব্যবস্থা করা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, কলেজ পরিদর্শক, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, পরিচালক (অর্থ ও হিসাব বিভাগ), পরিচালকসহ (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) গুরুত্বপূর্ণ পদে উন্মুক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিয়োগ দিতে বলে ইউজিসি। এসব গুরুত্বপূর্ণ পদে অস্থায়ী, খণ্ডকালীন, অতিরিক্ত দায়িত্ব বা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ গ্রহণযোগ্য নয়।
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য সাড়ে ১৪ লাখ শিক্ষার্থী নির্বাচিত

২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির ফল প্রকাশ করা হয়েছে আজ শনিবার। http://xiclassadmission.gov.bd এ ঠিকানায় ফল পাওয়া যাচ্ছে। মুঠোফোনে এসএমএসের মাধ্যমে ফল জানা যাচ্ছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক আবু তালেব মো. মোয়াজ্জেম হোসেন প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, প্রথম পর্যায়ে ১৪ লাখ ৫৭ হাজার ২২৬ শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছে। মোট আবেদন করেছিল ১৫ লাখ ৭৬ হাজার ১৪১ জন। প্রথম দফায় যারা নির্বাচিত হয়নি, তারা আরও দুই দফায় আবেদন করার সুযোগ পাবে।
গত ৩০ ডিসেম্বর এসএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ করা হয়। এরপর ৮ থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত অনলাইনে ভর্তির জন্য আবেদন গ্রহণ করা হয় (পুনর্নিরীক্ষণে ফল পরিবর্তনকারীদের জন্য পরও সুযোগ ছিল)। এবারও অনলাইনে ভর্তির কাজটি হচ্ছে।
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে একজন শিক্ষার্থী কোন কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছে, সেটি ঠিক করা হয়েছে। শিক্ষার্থীর যোগ্যতা ও আবেদনে দেওয়া তাদের পছন্দক্রমের ভিত্তিতে ভর্তির জন্য কলেজ নির্বাচন করা হয়েছে।
এখন নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের আগামীকাল রোববার থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি রাত আটটার মধ্যে মোবাইল ব্যাংকিং চার্জ বাদে রেজিস্ট্রেশন ফির ২২৮ টাকা জমা দিয়ে ভর্তির প্রাথমিক নিশ্চয়ন করতে হবে। পরে মাইগ্রেশন হলে শিক্ষার্থীকে নতুন করে আর ভর্তির নিশ্চয়ন করতে হবে না, অর্থাৎ আর রেজিস্ট্রেশন ফি দিতে হবে না।
নির্বাচিতদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির কাজটি হবে ১৯ থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ভর্তির কাজ শেষে আগামী ২ মার্চ একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস শুরু হবে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সুযোগে অনেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার সুযোগে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর এবং মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম।
আজ রবিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে দেশের করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে অধিদপ্তরের নিয়মিত ভার্চুয়াল স্বাস্থ্য বুলেটিনে তিনি এই তথ্য জানান।
নাজমুল ইসলাম বলেন, আমরা দেখছি দেশে করোনা সংক্রমণ প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। এই অবস্থায় সরকার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে স্কুল-কলেজসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে। কিন্তু এই সুযোগে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের বিনোদন, পর্যটন কেন্দ্রে ঘুরতে নিয়ে যাচ্ছেন। এসব কারণেই কিন্তু সংক্রমণ থামানো যাচ্ছে না, দিনদিন বেড়েই চলেছে।
তিনি বলেন, আমরা দেখেছি যে, পুরো বাংলাদেশে গত ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের প্রভাব ছিলো প্রবল, কিন্তু সেই সময়ে প্রভাব বেশি থাকা সত্ত্বেও শতকরা হিসেবে শনাক্তের হার এবং মোট রোগীর সংখ্যা কম ছিলো। কিন্তু ডিসেম্বরের শেষ এবং জানুয়ারির শুরু থেকে আমরা দেখেছি কীভাবে ক্রমাগত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। তাই করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টকে কোনোক্রমেই হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই।
অধিদপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ওমিক্রনের কারণে দেশে সংক্রমণ কয়েকগুণ বেড়েছে। আমরা যদি মৃত্যুর সংখ্যাটি দেখি, তাহলে দেখা যায় ডিসেম্বর পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ৩/৪ জনে ছিলো। এখন মৃতের সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে প্রতিদিন গড়ে ২০/২৫ জন মারা যাচ্ছে। কাজেই আমাদের আত্মতুষ্টিতে ভোগার কোনো সুযোগ নেই।
তিনি আরও বলেন, দেশে করোনা সংক্রমণের হার যেমনটি বেড়েছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমাদের টিকা কর্মসূচিও বেগবান হয়েছে। যারা দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন এবং বুস্টার ডোজের জন্য যোগ্য বিবেচিত হয়েছেন, এমনকি যারা টিকার বার্তাও পেয়েছেন কিন্তু করোনা সংক্রমণের কারণে টিকা নিতে পারেননি, তারা সুস্থ হওয়ার ছয় সপ্তাহ পর বুস্টার ডোজ নিতে পারবেন।
কাল দেওয়া হবে ৩৬ হাজার শিক্ষককের নিয়োগপত্র

৩৬ হাজার ১৩৮ জন শিক্ষকের মাঝে নিয়োগপত্র দিতে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আগামীকাল সোমবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুর ২টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এসব নিয়োগপত্র প্রদান করবেন।
তবে বর্তমানে শিক্ষামন্ত্রী আইসোলেশনে থাকায় সশরীরে নাকি ভাচ্যুয়ালি সংযুক্ত থাকবেন তা এখনও নিশ্চিত নয়।
আর রবিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের জানান, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিষয়ে ২ হাজর ৬৫ জন এবং এনটিআরসি (বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ) এর মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত ৩৪ হাজর ৭৩ জন শিক্ষকের মাঝে নিয়োগপত্র প্রদান করা হবে।
জানতে চাইলে মোহাম্মদ আবুল খায়ের বলেন, শিক্ষামন্ত্রী আইসোলেশনে থাকায় সশরীরে নাকি ভাচ্যুয়ালি সংযুক্ত থাকবেন তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে ওই অনুষ্ঠানে তিনি নিয়োগপত্র প্রদান করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে সবাইকে নিয়োগপত্র দেওয়া হবে কিনা, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সবাইকে তো দেওয়া সম্ভব না। তবে কিছু শিক্ষককে আনুষ্ঠানিকভাবে নিয়োগপত্র প্রদান করা হবে।
মন্তব্য