বিএনপি গণতন্ত্র হত্যাকারী হিসেবে চিহ্নিত: তথ্যমন্ত্রী

বিএনপি হচ্ছে গণতন্ত্র হত্যাকারী হিসেবে চিহ্নিত বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান বন্দুকের নল উঁচিয়ে মানুষের লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিলেন।
মানুষের লাশের ওপর দিয়ে ক্ষমতায় টিকে ছিলেন। বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা করতে চেয়েছিল। কারণ তারা ভোটকেন্দ্রে আগুন জ্বালিয়েছিল, পাঁচশ’ ভোটকেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছিল। পাঁচশ’ ভোটকেন্দ্র জ্বালানোর সঙ্গে সঙ্গে কোমলমতি শিশুদের বিনামূল্যে বই বিতরণের জন্য যে বই সংরক্ষিত ছিল তা জ্বালিয়ে দিয়েছিল। আসলে ওইদিন তারা গণতন্ত্র হত্যা করতে চেয়েছিল, যাতে নির্বাচন না হয়। নির্বাচন না হওয়ার মাধ্যমে দেশে একটি গণতন্ত্রহীন পরিবেশ সৃষ্টি হয় বা অন্য কিছু ঘটে। সেই চেষ্টা করেছিল বিএনপি, কিন্তু তারা সফল হয়নি।
খালেদা জিয়ার কিছু হলে সরকারের সবাইকে হত্যার আসামি করে বিচার করা হবে বিএনপির মহাসচিবের এমন বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, খালেদা জিয়া বিএনপি ও তার পরিবারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছে। খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের যদি হানি হয় তাহলে বিএনপি নেতারাই আসামি হবেন।
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে তারা রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নেবে না, বিষয়টি সরকার কীভাবে দেখছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, রাষ্ট্রপতির সংলাপের জন্য বিএনপিকে যে আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে সেটা তারা গ্রহণ করেছে। চিঠিটি তারা গ্রহণ করেছেন সেটি ভালো দিক। আমি আশা করবো বিএনপি সংলাপে অংশ নেবে। সংলাপে অংশ গ্রহণ করে তাদের যে আপত্তি কিম্বা সংলাপ প্রক্রিয়া নিয়ে তাদের যে প্রশ্ন সেগুলো সেখানে বলে আসতে পারেন। তাহলেই সেটি একটি গণতান্ত্রিক দলের আচরণ হবে।
সমাবেশে মহাসচিবের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীদের মারামারি বিষয়ে ড. হাছান বলেন, লজ্জাষ্কর বিষয় যে মহাসচিবের সামনে মারামারি হয়। তাদের মহাসচিবের সামনে মারামারি হয় এবং বাকবিতণ্ডা হয়। সেই বাকবিতণ্ডা থামানোর জন্য মহাসচিবকে আবার চিল্লাচিল্লি করতে হয়। এটি বিএনপির জন্য সত্যিই লজ্জার। যারা নিজেদের শৃঙ্খলা রাখতে পারে না, একটি সমাবেশের শৃঙ্খলা রাখতে পারে না, সমাবেশ করতে গিয়ে নিজেরা মারামারি করে, তারা দেশটা কীভাবে চালাবে সরকারে গেলে সেটি বিবেচ্য বিষয়।
স্থানীয় সরকার নির্বাচনের সহিংসতার বিষয়ে ড. হাছান বলেন, আওয়ামী লীগের বাহিরেও বিভিন্ন দলীয় ঘরনার সঙ্গে যুক্ত লোকজন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। অবশ্যই নির্বাচনে হানাহানি সেটা দুঃখজনক, কিন্তু স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বাংলাদেশে সবসময় এ ধরনের হানাহানি হয়ে এসেছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের পশ্চিম বাংলায় যখন স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয় তখনও ব্যাপক হানাহানি হয়। তবে কোনো হানাহানিই কাম্য নয়।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৫ প্রধান শিক্ষককে দশম গ্রেডে উন্নীতের রায় বহাল

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৫ প্রধান শিক্ষককে (প্রশিক্ষিত ও অপ্রশিক্ষিত) দশম গ্রেডে উন্নীত করতে নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) খারিজ করেছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আপিল বিভাগে আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।
প্রধান শিক্ষকের পদটি দ্বিতীয় শ্রেণীর। বর্তমানে তাদের মধ্যে প্রশিক্ষনপ্রাপ্তরা ১১ তম গ্রেডে ও অপ্রশিক্ষিতরা ১২ তম গ্রেডে বেতন পেয়ে থাকেন। তবে এর মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি রিয়াজ পারভেজ ৪৫ জন শিক্ষকের করা এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রায় দেন।
হাইকোর্টের রায়ে ৪৫ জন রিট আবেদনকারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে (প্রশিক্ষিত ও অপ্রশিক্ষিত) দশম গ্রেডে উন্নীত করতে এবং দ্বিতীয় শ্রেনীর কর্মকর্তা হিসেবে অফিসিয়াল গেজেটে অন্তভুক্ত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ লিভ টু আপিল করে। এর শুনানি নিয়ে ওই সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস। রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন। আদেশের বিষয়টি জানিয়ে আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন বলেন, বর্তমানে প্রধান শিক্ষক পদটি দ্বিতীয় শ্রেণীর হলেও তারা বেতন পান ১১ ও ১২তম গ্রেডে। অথচ দ্বিতীয় শ্রেণীর অন্য সব সরকারি চাকরিজীবী দশম গ্রেডে বেতন পান।
ফলে সরকারি প্রধান শিক্ষকদের মর্যাদা দিলেও তাদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল। এ নিয়ে ৪৫ জন শিক্ষক রিটটি করেছিলেন। হাইকোর্ট তাদের দশম গ্রেডে উন্নীত করতে ও দ্বিতীয় শ্রেনীর কর্মকর্তা হিসেবে গেজেটভুক্ত করতে নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছিলেন। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে, যা খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। ফলে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রইল। ফলে শুধু রিট আবেদনকারী ৪৫ জন তাদের প্রাপ্যতা অনুযায়ী আর্থিক সুবিধাদি পাবেন।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণীতে উন্নীত করার ঘোষণা দেন। সেদিনই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করলেও পরে মন্ত্রণালয় প্রশিক্ষিত প্রধান শিক্ষকদের জন্য ১১ ও অপ্রশিক্ষিত প্রধান শিক্ষকদের জন্য ১২তম গ্রেড নির্ধারণ করে, যা বৈষম্যমূলক দাবি করে প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি রিয়াজ পারভেজ ওই রিটটি করেন।
কুয়াশা উৎসবে মেতেছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়

সকাল সোয়া সাতটা। চারপাশ ঘন কুয়াশায় ঢাকা। এর মধ্যে খোলা মঞ্চে শুরু হয়েছে গান। ধ্রুপদি বাংলা গান। সাজানো বিশাল মাঠে দল বেঁধে ঘুরছেন শিক্ষার্থীরা। অনেকেই ছবি তোলায় ব্যস্ত। সবার মধ্যে যেন উৎসবের আমেজ।
আজ বৃহস্পতিবার এ দৃশ্য দেখা গেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কুয়াশা উৎসবে।
নানা আয়োজনে গতকাল বুধবার সন্ধ্যার পর আনুষ্ঠানিকভাবে ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী কুয়াশা উৎসব। গতকাল রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সৌমিত্র শেখর ফানুস উড়িয়ে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন। আজ মধ্যরাত পর্যন্ত চলবে এ উৎসব।
কুয়াশা উৎসব আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আল জাবির প্রথম আলোকে বলেন, ‘কুয়াশাকে অনেকেই নিরাশার প্রতীক মনে করে। সে ধারণা পাল্টে কুয়াশাকেই আশার প্রতীক মনে করাতে এ আয়োজন। এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্যন্ত অঞ্চলে হওয়ায় এখানে ঘন কুয়াশা পড়ে। নাগরিক জীবনে এখন মানুষ কুয়াশা খুব বেশি দেখতে পায় না। এ ছাড়া আমাদের প্রত্যেকেরই শীত নিয়ে রয়েছে শৈশব স্মৃতি। শীতে নবান্ন ঘিরে গ্রামে গ্রামে হতো নানা আয়োজন। সেসব স্মৃতি আমাদের জীবনে চলার সঙ্গী হয়ে থাকে। কুয়াশা উৎসবে আমরা সবাই সেসব দিনের স্মৃতিও মন্থন করতে পারি। এককথায় কুয়াশার মধ্যেও আমরা সবাইকে আশা দেখাতে চাই। তাই এ আয়োজন।’
২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো কুয়াশা উৎসবের আয়োজন করা হয়। এবার চলছে দ্বিতীয়বারের আয়োজন।
এ উৎসব আয়োজনের সূচিতে রয়েছে আবহমান বাংলার নানা ঐতিহ্য বহন করে এমন সব অনুষ্ঠান। রয়েছে আদিবাসী নৃত্য, নজরুল উৎসর্গে নৃত্য, গান ও কবিতা, লোকগান, কীর্তন, চলচ্চিত্র প্রদর্শনীসহ আরও অনেক আয়োজন।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের সহযোগী পরিচালক এস এম হাফিজুর রহমান বলেন, কুয়াশা উৎসবটি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আয়োজনে না হলেও এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মিলেই আয়োজন করেছেন। শিক্ষার্থীরা আয়োজন খুব উপভোগ করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নওশাদ আল সাইম জানান, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কুয়াশা উৎসবটি একটি সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীরা এ উৎসবে যোগ দিয়েছেন। এ ছাড়া ত্রিশালের সাধারণ মানুষও এ উৎসবে এসেছেন।
দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে আজ সকালের পর্বে ধ্রুপদি বাংলা গানের পর্বের পর বিরতি চলে। বেলা সাড়ে তিনটা থেকে দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়ে চলবে রাত ১১টা পর্যন্ত। এর মধ্যে নাটক, সাহিত্যবিষয়ক আলোচনা, কবিতা পাঠ, আদিবাসীদের পরিবেশনা ও লোকগান হবে।
এক ডোজ টিকা নিলেই ১২ বছরের বেশি বয়সীরা স্কুলে যেতে পারবে

মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, এখন থেকে ১২ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের স্কুলে যেতে হলে করোনার অন্তত এক ডোজ টিকা নিতে হবে, না হলে স্কুলে যেতে পারবে না।
আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সভার সিদ্ধান্ত জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এসব কথা বলেন। তিনি বলেন এই বিষয়ে গত সোমবার (৩ জানুয়ারি) আন্তমন্ত্রণালয় সভায় আলোচনা হয়েছিল। আজকে তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এ সময় এর আগে দেওয়া স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্য এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার কথাও উল্লেখ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
তখন সাংবাদিকেরা জানতে চান, তাহলে কি বার্তাটি এমন যে এখন থেকে ১২ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের স্কুলে যেতে হলে করোনার অন্তত এক ডোজ টিকা নেওয়া লাগবেই? জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন হ্যাঁ। নির্দেশনা দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছে যে টিকা ছাড়া কেউ স্কুলে আসতে পারবে না। ৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয় সভায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় এটি নিশ্চিত করেছে। মৌখিকভাবে তারা নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছে, হয়তো অফিশিয়ালি যায়নি। এ সময় সাংবাদিকেরা আরও জানতে চান, এখনো তো অধিকাংশ শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়া হয়নি, তাহলে এটি কীভাবে হবে? জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, টিকা তো এখন গ্রামগঞ্জে সহজলভ্য, এ জন্যই আরোপ করা।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে নির্ধারিত বিষয়ের বাইরে করোনার নতুন ধরন অমিক্রন মোকাবিলায় বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। এর আগে ৩ জানুয়ারি আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকেও আলোচনা হয়েছিল।
আন্তমন্ত্রণালয় সভার আলোচনা, এর আগে এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্য এবং আজকের নির্দেশনার কথা বলতে গিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, করোনার টিকা কার্যক্রম আরও জোরদার করতে হবে। বুস্টার ডোজের কার্যক্রম আরও কীভাবে বিস্তৃত করা যায়, সেটি দেখতে হবে। বুস্টার ডোজ দেওয়ার বয়স ৬০ বছর বা তার বেশি রাখা হবে নাকি আরও কমানো যায়, সেটা চিন্তা করতে হবে, কারণ, পর্যাপ্ত টিকা আছে।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, অমিক্রনের বিষয়ে বিশেষভাবে বলা হয়েছে, এখন থেকে রেস্তোরাঁ, শপিং মল, প্লেন ও ট্রেনে যাঁরা যাবেন, তাঁদের একটি সময় দিয়ে করোনার দ্বিতীয় ডোজ টিকা ছাড়া যাতে না যায়, সে রকম একটি চিন্তাভাবনার দিকে যেতে হবে। এ রকম বিধি আরোপের একটি বিষয় আসছে।
রেস্তোরাঁয় এই বিষয়টি কীভাবে তদারক করা হবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রতিটি শহরে তদারক দল (ভিজিলেন্স টিম) থাকবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দেখবে। কারিগরি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি সময় দিয়ে এটি করা হবে। কারণ, অমিক্রন ঠেকাতে গেলে কিছু কঠোর ব্যবস্থায় যেতে হবে।
করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে অন্যান্য সিদ্ধান্ত বা নির্দেশনার কথা বলতে গিয়ে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বাড়ির বাইরে কোনো অবস্থায় মাস্ক ছাড়া যাওয়া যাবে না। এখন থেকে এ বিষয়ে সচেতনতা ব্যবস্থার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে চেষ্টা করতে হবে। এ ছাড়া সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমাগম সীমিত রাখতে হবে। মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি বাধ্যতামূলক করতে হবে।
করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে হয়তো গণপরিবহনে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চলাচলের সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে জানান আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, এখনো তা হয়নি। বিধিনিষেধ (লকডাউন) দেওয়ার বিষয়ে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর মন্ত্রীরা সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষ থেকে সভায় যোগ দেন।
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির জরুরি সভা শুক্রবার

বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি প্রায় সাড়ে তিন বছর পর জরুরি সভা ডেকেছে। শুক্রবার সকাল ১০টায় রাজধানীর ঢাকা কলেজে সভাটি অনুষ্ঠিত হবে বলে জনিয়েছেন বিদায়ী কমিটির সভাপতি অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার।
জানা যায়, প্রায় সাড়ে তিন বছর পর ১৫ হাজার বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারদের এ সংগঠনটির সভা অনুষ্ঠিত হতে চলেছে।
এর আগে গত ২৩ ডিসেম্বর সেলিম উল্লাহ খোন্দকার স্বাক্ষরিত জরুরি সভার বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘সমিতির গঠনতন্ত্রের ধারা-৮ এ বলা হয়েছে, দুই বছরের দায়িত্ব গ্রহণ শেষে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব না হলে দুই মাস করে চার মাস সময় নিতে পারবে কেন্দ্রীয় কমিটি। এরপরও নির্বাচন না হলে বিলুপ্ত হবে কমিটি। পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে ২০ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠন করতে হবে। এই কমিটি তিন মাসের মধ্যে তফসিল ও ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন করবে। অন্যথায় সাধারণ সভা বা জরুরি সভা আহবান করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, সংগঠনের গঠনতন্ত্রের ব্যত্যয় ঘটিয়ে একতরফা এবং অবৈধভাবে ভোটার তালিকা প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণের প্রেক্ষিতে জরুরি সাধারণ সভা আহবান করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সভাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিন নির্বাচন না হওয়ায় সমিতির কার্যক্রম গতি হারিয়েছে। অতীতে এতো দীর্ঘ সময় নির্বাচনবিহীন অবস্থায় থাকেনি বিসিএস শিক্ষা সমিতি। এই সভা আহ্বানের ফলে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। স্বাধীনতা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সংসদের নেতৃবৃন্দ এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। এই সভা থেকেই তারা নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা ও একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন।
মন্তব্য