ইউনূস ইস্যুতে বিদেশিদের চিঠি বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থায় নগ্ন হস্তক্ষেপ: জবিশিস

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান মামলা স্থগিত করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে বিদেশি বিশিষ্ট নাগরিকদের লেখা খোলা চিঠির প্রতিবাদ জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জবিশিস)।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. একেএম লুৎফর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে একথা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বিদেশি নাগরিকদের চিঠিকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নগ্ন হস্তক্ষেপের শামিল উল্লেখ করে তার প্রতিবাদ জানানো হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এই চিঠিকে অনভিপ্রেত, অশোভন এবং বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপের শামিল বলে মনে করছে। বিশ্বব্যাপী খ্যাতি ও পদমর্যাদা ব্যবহার করে একদল সম্মানিত ব্যক্তি কর্তৃক একটা স্বাধীন সার্বভৌম দেশের স্বাভাবিক বিচার প্রক্রিয়া বন্ধের আহ্বান বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার ওপর অবৈধ হস্তক্ষেপ। শিক্ষক সমিতি মনে করে, সংবিধানের ৯৪ (৪) ধারা মতে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণরূপে স্বাধীনভাবে পরিচালিত হচ্ছে এবং যেকোনো আদালতের বিচারের রায়ে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির উচ্চ আদালতে যাওয়ার অধিকার রয়েছে। স্বাধীন বিচারব্যবস্থার ওপর ভিন্ন দেশের নাগরিকদের অযৌক্তিক ও অযাচিত হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই কাম্য নয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি নীতি-নৈতিকতা ও শিষ্টাচার বিবর্জিত অনাকাঙ্ক্ষিত এই উদ্বেগের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছে। পাশাপাশি শিক্ষক সমিতি এই খোলা চিঠিটি প্রত্যাহারপূর্বক যেন ওই বিদেশি নাগরিকরা বাংলাদেশের জনগণের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন এই আহ্বান জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ আগস্ট ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা স্থগিত করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে ১৬০ বিশ্বনেতার লেখা একটা খোলা চিঠি প্রকাশিত হয়। চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুনের মতো ব্যক্তিত্ব স্বাক্ষর করেন।
কৃষিকে যান্ত্রিকিকীকরণে নেত্রকোনায় টেকনোলজি পার্কের উদ্বোধন

বাকৃবি প্রতিনিধিঃ নেত্রকোনা উপজেলার পূর্বধলায় স্বপ্ননীড় এগ্রো ফার্মে দেশের কৃষিকে যান্ত্রিকিকীকরণের অংশ হিসেবে একটি টেকনোলজি পার্কের উদ্বোধন করা হয়েছে। বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল দশটায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) এপ্রোপ্রিয়েট স্কিল মেকানাইজেশন ইনোভেশন হাব (আসমি) প্রজেক্টের সহযোগিতায় স্থাপিত এ পার্কটি যৌথভাবে উদ্বোধন করেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়েস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. প্রশান্ত কে কালিতা ও মেটাল কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদিক জামিল।
টেকনোলজি পার্কটিতে ধানের বীজতলা তৈরি ও রোপন থেকে শুরু করে ফসল বস্তাবন্দি পর্যন্ত প্রায় সকল ধরনের আধুনিক মেশিন রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি কম্বাইন হারভেস্টার, একটি রাইস ট্রান্সপ্লেন্টার, একটি ট্রাক্টর, একটি সিডার, একটি চপার মেশিন, একটি সিড ট্রে প্রিপারেশন মেশিনসহ অন্যান্য মেশিন রয়েছে। এ পার্ক থেকে কৃষক, শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট সকলকে আধুনিক কৃষি যন্ত্রের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও সেবা দেওয়া হবে। অনুষ্ঠানের শুরুতে রিবন কাটা হয় এবং পরবর্তীতে মেশিনগুলো পরিদর্শন করেন আমন্ত্রিত অতিথিরা।
মেটাল কোম্পানির অর্থায়নে উদ্যোক্তা খান মো. সাজ্জাদের টেকনোলজি পার্কের মেশিনগুলো পূর্বধলা উপজেলার অধিকাংশ ধান চাষে যান্ত্রিক সেবা দিচ্ছে। একই প্রজেক্টের আওতায় সারা দেশে প্রায় আটটি শেড নির্মাণ করা হয়েছে। কৃষিতে এসব আধুনিক যন্ত্র ব্যবহারের ফলে সময়, শ্রম ও ফসল ক্ষতি কম হয় পাশাপাশি কৃষক বেশি লাভবান হচ্ছে। পার্কের মেশিন ব্যবহারে একটি মৌসুমে প্রায় ১৫০ একর জমির ধান চাষ সম্ভব যা প্রথাগত পদ্ধতি থেকে ৫০ শতাংশ উৎপাদন খরচ কমিয়ে দেয়।
আসমি প্রকল্পের পরিচালক অধ্যাপক ড. মঞ্জুরুল আলমের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়েস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. প্রশান্ত কে কালিতা, বাকৃবি কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ড চয়ন কুমার সাহা, মেটাল কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদিক জামিল, সেনেগালের ইন্সটিটিউট সেনেগালাইস দ্য রিসারসেস এগ্রিকোলস এর পরিচালক ড. অ্যালিয়ুু ফায়ে, পূর্বধলা উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আলমগীর কবির প্রমূখ।
মঞ্জুরুল আলম বলেন, মানুষ স্বপ্ন দেখে আর চেষ্টা করে সেই স্বপ্ন পূরণের। আমার স্বপ্ন ছিলো বাংলাদেশের কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণ। কৃষি শ্রমিক দিন দিন কমে যাচ্ছে। কৃষিক্ষেত্রে সুবিধা কম হওয়ায় অন্যান্য কর্মক্ষেত্রে ঝুকছে তারা। যান্ত্রিকীকরণের ফলে কৃষিতে পূর্বের তুলনায় অনেক সুবিধা বাড়বে এতে মানুষের মাঝে আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে। যান্ত্রিক কৃষির ফলে ফলন বৃদ্ধি ও সময় সাশ্রয়ী কৃষিতে রূপান্তর হচ্ছে।
যান্ত্রিকীকরণের যাত্রা নিয়ে উদ্যোক্তা বলেন, প্রথমে একটি মিনি কম্বাইন হারভেস্টার দিয়ে শুরু হয় আমার যাত্রা। মেশিন বিষয়ে তখন কিছুই বুঝতাম না কিভাবে ব্যবহার করা হয়। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ম্যাটাল কোম্পানির সহযোগিতায় মেশিন বিষয়ক কর্মশালা ও অনেক তথ্য পাই। কৃষি কাজে এসব মেশিনের ব্যবহার সময় ও শ্রম উভয়ই কম লাগছে পাশাপাশি অধিক অর্থ আয় হচ্ছে।
সাজেক যাওয়ার পথে ঢাবি ছাত্রীকে অপহরণ

রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক যাওয়ার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক ছাত্রী অপহরণের শিকার হয়েছেন। বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা-সাজেক সড়কের শিজকছড়া নামক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
অপহৃতা দ্বীপিতা চাকমা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যায়নরত বলে জানা গেছে। তিনি রোকয়া হলের আবাসিক ছাত্রী। দ্বীপিতা খাগড়াছড়ি জেলা সদরের শীতেজ বিকাশ চাকমার মেয়ে।
জানা যায়, দ্বীপিতা কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে পর্যটকবাহী গাড়িতে করে খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক পর্যটন এলাকায় বেড়াতে যাচ্ছিলেন। এ সময় অতর্কিত তাদের গাড়ি আটকিয়ে দ্বীপিতাকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় একদল দুর্বৃত্ত। কী কারণে তাকে অপহরণ করা হয়েছে, তা বিস্তারিত জানা যায়নি।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ উদ্ধার অভিযানে নেমেছে বলে জানিয়েছেন রাঙামাটির পুলিশ সুপার মীর মো. আবু তৌহিদ। তিনি বলেন, একদল পাহাড়ি সন্ত্রাসী অস্ত্রের মুখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এর পরপরই অপহৃতাকে উদ্ধারে পুলিশ ঘটনাস্থলের চারদিকে অভিযান তৎপরতা শুরু করেছে।
সুইসাইড নোট ফেসবুকে ভাইরাল, পুলিশ গিয়ে দেখে আড্ডা দিচ্ছেন যুবক!

রাজবাড়ীর শহরের ৭নং ওয়ার্ডের ভবানিপুর গ্রামে প্রেমের সম্পর্কে ভাটা পড়ায় এক যুবক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সুইসাইড নোট লিখে আত্মহত্যার মিথ্যে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু সুইসাইড নোটটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে জেলা পুলিশের নজরে আসে। এ সময় তাৎক্ষণিক পুলিশের মোবাইল টিম ওই যুবককে উদ্ধার করতে বাড়িতে গিয়ে জানতে পারে তিনি ফেসবুকে মিথ্যা পোস্ট দিয়েছেন।
বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাজবাড়ী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. রেজাউল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সুইসাইড নোট লেখা ব্যক্তি হলেন, ভবানিপুর এলাকার মৃত গোলাম ফয়েজের ছেলে ফেরদৌস নাঈম। তার দেওয়া পোস্টে দাবি করেছেন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
পুলিশ জানায়, রাত ৯টা ৩৭ মিনিটে ফেরদৌস নাঈম নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে জেলা পরিষদের প্যাডে একটি সুইসাইড নোট ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ভাইরাল হওয়া সুইসাইড নোটে লেখা ছিল ‘আমি ফেরদৌস নাঈম, ৮৭১২৬১০..,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি নং ২০১৯০১৫৮..। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমার ব্যক্তিগত প্রেমের সম্পর্কের ঝামেলা/সংকট মোকাবিলায় আপনারা স্বপ্রণোদিত হয়ে যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ এবং একই সাথে ক্ষমাপ্রার্থী। কারণ আমার ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে আপনদের অপমানিত ও লজ্জিত হতে হয়েছে। আমার বিধবা মা কে যেই মেয়ে (অশ্লীল ভাষা) বলে গালাগাল করেছে এবং আমার আম্মুর সম্মানহানি হয় এমন কথা বলেছে সেই মেয়ের বিচার আপনারা না করলেও আমার বলার কিছু নেই। কিন্তু মৃত বেলাল ফয়েজের সন্তান হিসেবে এই বিচার আমি করব। আমার মৃত্যু হলে কবরটা যেন আমার বাবার কবরেই হয় এই শেষ অনুরোধ। এর নিচে বিশেষ দ্রষ্টব্য দিয়ে আবার লেখা ছিল, এক সেট ব্লেড যেটা দিয়ে সবেমাত্র হাত কাটছি। আরেক সেট আমার বাসায় লুকানো আছে।’
এদিকে ফেসবুকে পোস্টটি ভাইরাল হলে পুলিশ তাৎক্ষণিক ওই যুবকের বাড়িতে গিয়ে জানতে পারে তিনি সুস্থ আছেন। এ ছাড়াও তিনি আত্মহত্যার মিথ্যা হুমকি দিয়েছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে ফেরদৌস নাঈমের নম্বরে একাধিকবার কল করা হলে মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. রেজাউল করিম জানান, ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া সুইসাইড নোটটি নজরে এলে তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশের মোবাইল টিম ছেলেটির বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। পরে সেখানে গিয়ে পুলিশ দেখতে পায় ছেলেটি দিব্যি সুস্থ। সে তার মা ও আত্মীয়দের সঙ্গে বসে গল্প করছিল। পরে ছেলেটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জানান, ‘সে মজা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সুইসাইড নোটটি লিখেছিল।’ তবে তাকে মানসিকভাবে একটু অসুস্থ বলেও মনে হয়েছে।
জবি শিক্ষার্থীকে মারধরের সময় ছাত্রলীগ- 'জানোসই তো শিবির মারলে সব মাফ'

জবি প্রতিনিধি: ফেসবুকে পোস্ট শেয়ার করায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক শিক্ষার্থীকে মেরে টাকা আদায় করার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মারধর ও ছিনতাই শেষে হুমকি দিয়ে ওই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে বলেন, ‘তুই যদি এই বিষয়গুলো কারো সাথে শেয়ার করোস তাহলে তোরে শিবির ট্যাগ দিয়ে মেরে ক্যাম্পাসের মেইন গেইটে ঝুলায় রাখব।’
ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর নাম ইব্রাহিম জনি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী। অভিযুক্তরা হলেন, দর্শন বিভাগের (২০১৬-২০১৭) শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মেহেদী হাসান ও অর্থনীতি বিভাগের (২০১৯-২০২০) শিক্ষাবর্ষের ইকবাল মাহমুদ রানা। রানা অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। তারা দুজনই শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইনের অনুসারী।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে ১৮ তম ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন উপলক্ষে রসায়ন বিভাগের সাজসজ্জার কাজ শেষ করে ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার সময় অর্থনীতি বিভাগের ১৫তম আবর্তনের ইকবাল মাহমুদ রানা এবং দর্শন বিভাগের ১২তম আবর্তনের মোহাম্মদ মেহেদি আমার (ইব্রাহিম) পথ রোধ করেন এবং জিজ্ঞাসা করেন, আমি কেন সৌরভ ভাইয়ের পোস্ট শেয়ার করেছিলাম? (সৌরভ দাস রসায়ন বিভাগ ১৬ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী। তাকে গত ৩১ জুলাই, ২০২৩ দফায় দফায় হামলা করে মারাত্মক আহত করা হয়।) তারা আরও বলেন, "তুই ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে পোস্ট শেয়ার দিছস কেনো?"
অভিযোগ পত্রে আরও বলা হয়, "তোদের ব্যাচের সব পোলাপান তো পোস্ট শেয়ার দেয় নাই। শুধু তুই শেয়ার দিছস। কেন দিছোস? কারণ নিশ্চয়ই তুই শিবির করস।" এমন নানা ধরনের প্রশ্নের পর তারা আমার (ইব্রাহিমের) মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে চেক করে। মোবাইল ফোনে কিছু না পেয়ে আমাকে (ইব্রাহিম) বার বার মেরে ফেলার ও জেলে পাঠানোর হুমকি দেয়। পরবর্তীতে তারা আমাকে ক্যাম্পাস থেকে বের করে ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে নিয়ে মারধর করে। এরপর তারা আমার কাছে নগদ ৫০ হাজার টাকা দাবি করে।
টাকা আদায়ের ব্যাপারে অভিযোগ পত্রে বলা হয়েছে, "তুই (ইব্রাহিম) যদি এখন টাকা না দেছ তবে আকতার (জবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক) ভাইরে দিয়ে তোরে জেলে ঢুকায় দিব। আর এখন শিবির ট্যাগ নিয়ে একবার জেলে ঢুকলে নির্বাচনের আগে আর বের হতে পারবি না সেটা তুই ভালো করেই জানস।" পরবর্তীতে মারধর করে বাবা-মা ও টিউশনগুলোর গার্জিয়ানদের বাসায় ফোন দিয়ে ১৩ হাজার টাকা নেন বিকাশে।
অভিযোগে আরও বলা আছে, "আমাদের (ছাত্রলীগের নেতাকর্মী) ছাত্রত্ব নিয়ে কোন সমস্যা নাই। ৭দিনের বেশি বহিষ্কার করে রাখতে পারবে না।" পরবর্তীতে তারা আমাকে (ইব্রাহিম) আবারও মারধর করে জোরপূর্বক ভিডিও ধারণ করে এবং আমাকে (ইব্রাহিম) বাধ্য করেন স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিতে যে, আমি আগে শিবির করতাম আর এখন থেকে ছাত্রলীগ করব। পরিশেষে তারা বলে যে, "তুই তো এডা শেয়ার করবি সবার সাথে। তাই আমরা প্রমাণ রাখলাম যে তুই শিবির। জানোসই তো, শিবির মারলে সব মাফ।"
অভিযোগের বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস. এম আকতার হোসাইন বলে, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আছে, প্রক্টর স্যারের কাছে দুই দিক থেকেই অভিযোগ গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী বিচার হবে। কোন অপরাধের দায় ছাত্রলীগ নেবে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, এ বিষয়ে আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত করা হবে। তদন্ত করে অভিযুক্তদের আইন অনুযায়ী বিচার করা হবে।'
মন্তব্য