শাবিপ্রবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পাশে আওয়ামী লীগ

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেলের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে পৌঁছে। শিক্ষার্থীদের সব যৌক্তিক দাবির পক্ষে তারা অবস্থান নেয়।
তবে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমদ পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সব সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পাশে আছি। তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে কথা বলব। বিষয়টি শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা খেয়াল রাখছেন।’
এদিকে মঙ্গলবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছিল শিক্ষার্থীরা। দুপুর পৌনে ২টার দিকে তারা গোলচত্ত্বর ছেড়ে মিছিল করে ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয়। সেখানে তারা নানা প্রতিবাদী স্লোগানে ভিসিকে পদত্যাগের আহ্বান জানায়। এসময় ভিসির বাসভবনটি পুলিশ সদস্যরা ঘিরে রাখেন।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) থেকে বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছে।
চবি ক্যাম্পাসে জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে র্যালি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ জনসমাগম হয় এমন কোনো অনুষ্ঠান আয়োজনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়ার কারণে শিক্ষার্থী শিক্ষকসহ সকলের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ১৮ জানুয়ারি থেকে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য বিধি মেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস, পরীক্ষা ও দাপ্তরিক কার্যক্রম চলমান থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এসএম মনিরুল ইসলাম এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ভারপ্রাপ্ত রেজিস্টার অধ্যাপক এসএম মনিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি চট্টগ্রামসহ দেশব্যাপী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আশংকাজনক হারে বেড়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতেও এ ভাইরাসের সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের সুরক্ষার স্বার্থে ১৮ জানুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ক্যাম্পাসে কোনো র্যালি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শিক্ষাসমাপনী অনুষ্ঠান (র্যাগ ডে) এবং জনসমাগম হয় এমন কোনো অনুষ্ঠান আয়োজনের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
দাপ্তরিক প্রয়োজন ছাড়া এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় এমন ব্যক্তিদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস, পরীক্ষা ও দাপ্তরিক কার্যক্রম চলমান থাকবে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সবাইকে মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা নিয়ে এলো ফুল, ফিরিয়ে দিল পুলিশ

ক্যাম্পাসে অবস্থানরত পুলিশ প্রশাসনকে ক্যাম্পাস থেকে চলে যেতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ফুল নিয়ে আসেন। তবে ফুল না নিয়ে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে রাখেন পুলিশের সদস্যরা।
সোমবার (১৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্যের বাস ভবনের সামনে এমন দৃশ্য দেখা যায়। এ সময় লাঠিসোটা ও গান নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশকে অভিবাদন জানাতে এবং তাদেরতে ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ যতদিন পদত্যাগ করে ক্যাম্পাস ছাড়বে না ততদিন আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাবো। এদিন সকাল থেকে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করছেন বলে দাবি করেন পুলিশ প্রশাসন।
আন্দোলনরত রবিউল ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করতে পুলিশ প্রশাসসতে ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে ফুল নিয়ে আসি। কিন্তু তারা আমাদের ফুল না নিয়ে তা ফিরিয়ে দেন। তবে, যতক্ষণ পর্যন্ত ভিসি পদত্যাগ করবে না ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
এ বিষয়ে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজবাহার আলী শেখ বলেন, আমরা প্রশাসনের নির্দেশে এখানে শান্তিপূর্ণভাবে দায়িত্ব পালন করছি। তবে, দায়িত্বশীল জায়গা থেকে আমরা ফুল নিতে পারিনি। আমরা দেখেছি শিক্ষার্থীদের সকাল থেকে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছেন। তারা শান্তি থাকলে আমরাও শান্তিভাবে অবস্থান করবো। তবে, অহেতুকভাবে শিক্ষার্থীদের উপর আমরা চড়াও হতে চাই না।
এর আগে, রোববার (১৬ জানুয়ারি) একইভাবে ফুল নিয়ে পুলিশকে দিতে আসেন শিক্ষার্থীরা। তবে, পুলিশে ফুল না নিয়ে হঠাৎ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে ভিসিকে মুক্ত করতে শিক্ষার্থীদের উপর লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট ও কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়েন। এতে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী, শিক্ষক-কর্মকর্তাসহ পুলিশ কর্মকর্তারা আহত হয়েছেন বলে জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ হামলায় কয়েকজন গুরুতর আহত হয়ে মেডিক্যালে ভর্তি আছেন বলে জানা যায়।
এর আগে, প্রভোস্টের অসদাচরণের কারণ দেখিয়ে বেগম সিরাজজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের প্রভোস্ট জাফরিন আহমেদ লিজাসহ প্রভোস্ট বডির পদত্যাগ ও তিন দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন হলের শিক্ষার্থীরা। পরের দিন শনিবার সন্ধ্যায় প্রশাসনের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের নেতৃত্বাধীন ৬ গ্রুপের নেতাকর্মীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠে এবং এ হামলায় ১০-১২ জন শিক্ষার্থী আহত এবং কয়েকজন ছাত্রী হেনস্তার শিকার হয়েছে বলে জানা যায়।
এরপর রোববার শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সোমবার এক দফা দাবিতে আন্দোলনের ডাক দেয় শিক্ষার্থীরা। এদিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে সোয়া ১১টার দিকে প্রথম ছাত্রী হল, বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, সৈয়দ মুজতবা আলী হলে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। এরপর পৌঁনে ৩টা দিকে প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনগুলোতে তালা দেওয়া হয়। পরে উপাচার্য বাস ভবন ঘেরাও করে শিক্ষার্থীরা। পরে রাতে ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চে প্রতিবাদী কনসার্ট আয়োজন করবে বলে ঘোষণা দেন তারা।
এদিকে উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতি ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার কারণ বের করতে ফিজিক্যাল অনুষদের ডিন অধ্যাপক রাশেদ তালুকদারকে সভাপতি, রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেনকে সদস্য সচিব এবং সকল ডিনকে সদস্য করে ৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এছাড়া বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়, ক্যাম্পাসের ভেতরে সংঘটিত দুঃখজনক ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার জন্য কর্তৃপক্ষ থেকে যাবতীয় খরচ বহনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এতে চিকিৎসাজনিত যাবতীয় ব্যয় বহন করবে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেয় শাবি শিক্ষক সমিতি।
এদিকে আন্দোলনের বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় অনেক সুন্দরভাবে চলছে। এমনভাবে বাংলাদেশে আর কোন ক্যাম্পাস চলছে বলে আমার জানা নেই। আমি মনে করি বহিরাগত কিছু মানুষদের ইন্ধনে শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলন করছে। আশা করি আমরা আবারো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে পারবো এবং দ্রুত সময়ে ক্লাস-পরীক্ষা কার্যক্রম ফিরে যেতে পারবেন বলে আশা করেন উপাচার্য।
সর্বশেষ এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (রাত ১০টা) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা দুইভাগে বিভক্ত হয়ে অবস্থান করছেন বলে জানা যায়। পাশাপাশি রাতে ‘হীরক ভিসির শেষে’ শিরোনামে একটি প্রতিবাদি কনসার্টের আয়োজন করেন তারা। এছাড়া শিক্ষার্থীদের এক গ্রুপ ক্যাম্পাসের মূল ফটকে এবং আরেক গ্রুপ ভিসির বাস ভবনের সামনে অবস্থান নেন। একসময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রদান ফটকের পুলিশ আসলে মূল ফটকে গেইটে তালা মেরে দেন শিক্ষার্থীরা। এরপর সন্ধ্যায় গেইটে জলকামান, রায়টকার এবং পুলিশের ক্রাইসিস রেসপন্স টিমের প্রায় অর্ধশতাধিক সদস্য উপস্থিত হন। এদিকে জলকামান গেইট ভেঙে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে না পারে এজন্য ভেতর থেকে বালুর বস্তা, ইট এবং বাঁশ দিয়ে এক ধরনের দেয়াল তৈরি করেদেন আন্দোলনকারীরা।
এদিকে ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনে নয়াবাজার এলাকায় র্যাব একটু পর পরই টহল দিচ্ছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
সেবা নিতে এসে জনগণ যেন হয়রানির শিকার না হয়

সরকারি সেবা নিতে এসে সাধারণ জনগণ যেন হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়ে মাঠ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সজাগ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে ‘জেলাপ্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন ২০২২’-এর উদ্বোধনকালে এ নির্দেশনা দেন
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ডিসি সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন তিনি।
জেলা প্রশাসকসহ মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘সরকারি সেবা নিতে এসে সাধারণ মানুষ যেন কোনোভাবেই হয়রানি শিকার না হয়, সে বিষয়ে সকলকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। ’
‘এখানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কথাটাও মনে রাখতে হবে সেই কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষ, তাদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে যে অর্থ উপার্জন করে সেটা দিয়েই তো বেতন-ভাতা, আমাদের সব কিছু চলে। কাজেই তাদের সম্মান করতে হবে। ’
দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ে তুলতে সরকারের অবস্থান তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দক্ষ, দুর্নীতিমুক্ত ও সেবামুখী জনপ্রশাসন গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি, জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল, সিটিজেনস চার্টার ইত্যাদির বাস্তবায়ন জোরদার করতে হবে। '
`সুশাসন সংহতকরণের উদ্দেশ্যে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়নে এবং দুর্নীতি প্রতিরোধে জেলা প্রশাসকগণ আরও আন্তরিকভাবে কাজ করবেন বলে আশা করি। ’
ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী টিকার বাইরে

ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত মোট মাদরাসার সংখ্যা ১ হাজার ৩৪৬টি। অধিভুক্ত সব মাদরাসা ফাজিল (পাস) পর্যন্ত। এসব কলেজে অনার্স স্তর ৭৭টি এবং কামিল স্তরের মাদরাসা ২৫৩টি। মোট দুই লাখ ৫১ হাজার ৭০৩ জন শিক্ষার্থী এসব মাদরাসায় অধ্যয়নরত। এর মধ্যে করোনার এক ডোজ ও দুই ডোজ মিলিয়ে মোট টিকা নিয়েছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ১৬১ জন শিক্ষার্থী। আর টিকা নেননি ১ লাখ ১২ হাজার ৫৪২ জন। অর্থাৎ টিকা নিয়েছেন প্রায় ৫৫ দশমিক ২৮ শতাংশ আর টিকা নেননি প্রায় ৪৫ শতাংশ (৪৪ দশমিক ২৮) শিক্ষার্থী।
গত ১০ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে টিকা দেওয়ার তথ্য জমা দেয় ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়। জমা দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, অধিভুক্ত মাদরাসাগুলোর ফাজিল (পাস), অনার্স ও মহিলা মাদরাসার মোট শিক্ষার্থী ২ লাখ ৫১ হাজার ৭০৩ জন। এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে করোনার টিকার দুই ডোজ নিয়েছেন ৬৫ হাজার ৮৮০ জন। এক ডোজ টিকা নিয়েছেন ৭৩ হাজার ২৮১ জন। নিবন্ধন করেছেন কিন্তু টিকা গ্রহণ করেননি ৪১ হাজার ৭৮৬ জন। নিবন্ধন করেননি ৭০ হাজার ৭৫৬ জন শিক্ষার্থী।
ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আহসান উল্লাহ বলেন, ‘যারা নিবন্ধন করেনি সেসব শিক্ষার্থীদের দ্রুত নিবন্ধন করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। জানুয়ারির মধ্যে এসব শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া শেষ হবে বলে আশা করি।’
অধিভুক্ত মাদরাসাগুলোর শিক্ষক সংখ্যা ২৯ হাজার একজন। শিক্ষকদের মধ্যে দুই ডোজ টিকা গ্রহণ করেছেন ২২ হাজার ৪০২ জন। আর এক ডোজ টিকা গ্রহণ করেছেন ৬ হাজার ১৯৫ জন। নিবন্ধন করেছেন কিন্তু অসুস্থতার কারণে টিকা গ্রহণ করেননি ৪০৪ জন।
ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সংখ্যা ১৯৪ জন। এদের মধ্যে দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন ১৮০ জন এবং এক ডোজ টিকা নিয়েছেন ১৯৪ জন।
অধিভুক্ত মাদরাসার কর্মচারীর সংখ্যা ৭ হাজার ৩৬৮ জন। টিকার দুই ডোজ গ্রহণ করেছেন চার হাজার ৮৬০ জন আর এক ডোজ গ্রহণ করেছেন দুই হাজার ৫৩ জন। নিবন্ধন করেছেন কিন্তু অসুস্থতাজনিত কারণে টিকা নেননি ৪৬৫ জন।
গত ১০ জানুয়ারি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছিলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট শিক্ষার্থী ৪৪ লাখ ৩৪ হাজার ৪৫১ জন। এর মধ্যে প্রথম ডোজ সম্পন্ন করেছেন ২৩ লাখ ২৮ হাজার ৪৬৮, দ্বিতীয় ডোজ ১৭ লাখ ১৩ হাজার ৩০২ জন। মোট নিবন্ধন করেছেন ২৭ লাখ ৩১ হাজার ২৮৭ জন। এর মধ্যে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের। চলতি জানুয়ারির মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় নেওয়া সম্ভব হবে।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হলে ১৭ মার্চ থেকে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। দীর্ঘ ১৮ মাস পর গত বছর ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে সীমিত আকারে শ্রেণি পাঠদান অব্যাহত রাখা হয়েছে। নতুন করে দেশে করোনা সংক্রমণ ব্যাপকভাবে বেড়ে গেলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ না করে টিকা দিয়ে ১২ বছরের বেশি বয়সী সব শিক্ষার্থীকে (মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসার জন্য নির্দেশনা জারি করা হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে।
অন্যদিকে, দেশের ৬৫ হাজার ৯৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রেখে শ্রেণিপাঠদান অব্যাহত রাখার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এছাড়া টিকা কার্যক্রম অব্যাহত রেখে দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরাসরি শ্রেণি পাঠদান চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তবে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) সশরীরে ক্লাস বন্ধ ঘোষণা করেছে।
মন্তব্য