আট বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের কমিটি

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ৮টি ইউনিটে আংশিক কমিটি দিয়েছে সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। বৃহস্পতিবার (০১ সেপ্টেম্বর) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হোসেন পারভেজ ও সাধারণ সম্পাদক মো. আজিজুল হাকিম সম্রাট স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এছাড়া সম্প্রতি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটে সংগঠনটির আরও বেশ কয়েকটি কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার (০২ সেপ্টেম্বর) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হোসেন পারভেজ নিজের ফেসবুকে নতুন ৮টি ইউনিটের আংশিক কমিটি ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নতুন ঘোষিত ৮টি ইউনিট হলো- ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস, বাংলাদেশ, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি, স্ট্যামফোড ইউনিভার্সিটি, ড্যাফডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, প্রাইম ইউনিভার্সিটি, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি, ঈশা খাঁ ইউনিভার্সিটি (কিশোরগঞ্জ), কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।
নতুন ইউনিটগুলোর সভাপতি-সম্পাদকরা হলেন- কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সভাপতি ফাহিম রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আহম্মেদ সামির। স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি মুশফিকুর রহমান সাগর, সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম তন্ময়। প্রাইম ইউনিভার্সিটির সভাপতি ফিরোজ কবির শানু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাহার শত খান।
ঈশা খাঁ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সভাপতি শাহরিয়ার খান, সাধারণ সম্পাদক মো. ফয়জুর রহমান। আইইউবিএটির সভাপতি জিসান খান, সাধারণ সম্পাদক. নাসিম বর্ষন। ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশে রসভাপতি মো. রিদোয়ান সিদ্দিকী জয়, সাধারণ সম্পাদক শিহাব উদ্দিন চৌধুরী।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সভাপতি আকরামুল হক বাবু, সাধারণ সম্পাদক ফাইজুল ইসলাম তানভীন এছাড়া ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির সভাপতি মো. রাজাউন আহম্মেদ রাব্বি তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক সিফাতুল ইসলাম প্রান্ত।
নতুন ইউনিটগুলোর কমিটি নিয়ে মো. আজিজুল হাকিম সম্রাট শনিবার সকালে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৭টি ইউনিটে কমিটি করা হয়েছে। এসবগুলো ইউনিটই অত্যান্ত শক্তিশালী। কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চলার পথকে প্রশস্ত রাখতে ইউনিটগুলো কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, বেসরকারি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পাওয়ার পলিটিক্সের পরিবর্তে রিসার্চ পলিটিক্সে গুরুত্ব দিচ্ছে। ১০৭টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের যেগুলোতে আমাদের কমিটি রয়েছে, সবাই এ নীতি অনুরসণ করছে। ছাত্রলীগের এ রাজনীতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা একাডেমিক পড়াশোনার বাইরে সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী শিক্ষায় শিক্ষিত হবে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিয়ে ভুল ধারণা রয়েছে সেটির উন্নয়নেও নতুন কমিটিগুলো কাজ করবে।
ছাত্রদলের অপকর্ম নিয়ে কথা নেই, ছাত্রলীগের কিছু হলেই বড় নিউজ

আমাদের পেছনে তো লোক লেগেই আছে। ছাত্রদল যত অপকর্ম করে গেছে সেটা নিয়ে কথা নেই, কিন্তু ছাত্রলীগের একটু হলেই বড় নিউজ। এ ক্ষেত্রে নিজেদের ঠিক থাকতে হবে।'
আজ বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমি জানি ছাত্রলীগ সম্পর্কে অনেক কথা লেখা হয়। আমরা ক্ষমতায় আছি বলে অনেকে ভেতরে ঢুকে যায় এবং নিজেরা গোলমাল করে। বদনামটা পড়ে ছাত্রলীগের ওপর।’
শেখ হাসিনা অনুপ্রবেশকারী সম্পর্কে সাবধান করে দিয়ে বলেন, ‘ছাত্রলীগকে সংগঠন করার সময় গ্রুপ ভারী করতে আলতু-ফালতু লোক দলে ঢোকালে চলবে না। তাতে নিজেদের, দলের এবং দেশের বদনাম হয়।
তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মানবতার সেবার পাশাপাশি লেখাপড়া করতে হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি। আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ জনশক্তি আমি চাই। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব আসবে এবং সেজন্য আমাদের আজকের প্রজন্ম বা প্রজন্মের পর প্রজন্ম নিজেদের প্রস্তুত করবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, '৭৫ এর পরে তো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছিল অস্ত্রের ঝনঝনানি, বোমাবাজি। আমরা সেখান থেকে ঘুরিয়ে আনতে পেরেছি। শিক্ষার বিভিন্ন পরিবর্তন এনে আধুনিকায়ন করেছি। প্রতি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয়, প্রতি উপজেলায় স্কুল সরকারি করে দিচ্ছি। শিক্ষার ক্ষেত্রে বৃত্তি, উপবৃত্তি দিচ্ছি, উচ্চশিক্ষার জন্য আলাদা ট্রাস্ট ফান্ড করেছি। আমাদের স্বাক্ষরতার হার ৪৫ শতাংশ থেকে ৭৫ শতাংশ করেছি।'
তিনি আরও বলেন, 'খালেদা জিয়া যখন বলল, ছাত্রদল দিয়েই নাকি আওয়ামী লীগকে সোজা করে দিবে। তাদের হাতে যে অস্ত্র, এটা তো জিয়াউর রহমান শুরু করেছিল মেধাবী ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া। আমি ছাত্রলীগের হাতে বই-খাতা-কলম তুলে দিলাম, আগে লেখাপড়া শিখতে হবে। কারণ শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতিকে কেউ সেবা দিতে পারে না।'
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগত স্বার্থ ও লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে উঠে ত্যাগ স্বীকার করে এগিয়ে গেলেই নিজেদের প্রকৃত নেতা হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে। চাওয়া-পাওয়ার ঊর্ধ্বে উঠে ত্যাগ স্বীকার করে এগোতে পারলে সঠিক নেতা হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলা যায়। কিন্তু গড্ডালিকা প্রবাহে অর্থ-সম্পদের পেছনে ছুটলে ওই অর্থ সম্পদেই ভেসে যেতে হয়। তখন নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতাও থাকে না, দেশ ও মানুষকেও কিছু দেওয়া যায় না।’
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় ভাপতিত্ব করেন ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়। মহানগর উত্তরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেন এবং সাইদুর রহমান হৃদয়, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান ও জুবায়ের আহমেদ এবং ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন সভায় বক্তৃতা করেন। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য সভা সঞ্চালনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের দুটি প্রকাশনা ‘মাতৃভূমি’ ও ‘জয় বাংলার’ মোড়ক উন্মোচন করেন।
মন্তব্য