ঢাকা, সোমবার, ১৮ আগস্ট ২০২৫ ৩ ভাদ্র ১৪৩২
 
শিরোনাম

গাধারা কি আসলেই বোকা? কী বলছে গবেষণা

অনলাইন ডেস্ক
৮ মে, ২০২৫ ১১:৪৩
অনলাইন ডেস্ক
গাধারা কি আসলেই বোকা? কী বলছে গবেষণা

ছোটবেলা থেকে যে প্রাণীটির নাম আমাদের প্রায়ই শুনতে হয় সেটি হলো ‘গাধা’। অনেক সময় বোকা বোঝাতে, কখনও আবার পরিশ্রমী বোঝাতে। সাধারণত পরিশ্রমী প্রাণী গাধাকে বোকাসোকা বলেই মনে করে মানুষ।

তাই, আমাদের মানবসমাজে কোনো ভুল করলেই গাধার সঙ্গে তুলনা করা যেন একটি রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে! যদিও আমরা অনেকে গাধা দেখিনি। তবুও ব্যাঙ্গাত্মক হিসেবে কারও কারও উপাধি হয়ে দাঁড়ায় গাধা!

আপনাকেও হয়তো একদিন কেউ গাধা বলেছিল, সেই কথাতে বেশ কষ্টও পেয়েছিলেন। কিন্তু আজ সেই কষ্টের কথা ভুলে যান।

আজ যদি কেউ আপনাকে গাধার সঙ্গে তুলনা করেই ফেলে, তাহলে একটুও রাগ করবেন না। কারণ আজ বিশ্ব গাধা দিবস। প্রাণীটির প্রতি সচেতনতা ও ভালোবাসা তৈরির উদ্দেশ্যে প্রতি বছরের ৮ মে পালন করা হয় ‘বিশ্ব গাধা দিবস’।

আচ্ছা, আমরা গাধাকে যতটা বোকা ভাবি, গাধা কী আসলে ততটা বোকা? 

আমাদের মাঝে এমন অনেকেই আছেন যারা কাজে-কর্মে একটু কম দক্ষ বা বুদ্ধি একটু কম। এমন মানুষদের আমরা হরহামেশাই গাধা বলে সম্বোধন করে থাকি। তবে শব্দটি নেতিবাচক অর্থে ব্যবহার করা হলেও গবেষণার তথ্য বলছে, গাধা কিন্তু মোটেও বোকা প্রাণী নয়! আর পাঁচটা প্রাণীর চেয়ে অনেক বেশি বুদ্ধিমান, কর্মঠ, এবং উপকারী প্রাণীও বটে।

কেউ কিছু ভুলে গেলে আমরা তাকে গাধা বলে বকা দিলেও গাধার রয়েছে অবিশ্বাস্য স্মৃতিশক্তি। ২৫ বছর আগে দেখা এলাকা, এমনকি বহু বছর আগে দেখা গাধাদের সহজেই চিনতে পারে এই প্রাণী। একইসঙ্গে গাধা প্রচণ্ড জেদিও হয়ে থাকে, আত্মরক্ষা করার প্রবল ক্ষমতা রয়েছে তাদের।

এদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য এরা প্রখর কৌতূহলী। কোনো ঘটনায় গাধা সহজে চমকে ওঠে না। তাদেরকে ভয় দেখিয়ে বা জোর করে কোনো কাজ করিয়ে নেয়া খুব কঠিন ব্যাপার। এদের চিন্তাধারা ঘোড়ার থেকে স্বাধীন। একটি গাধা মরু পরিবেশে ৬০ মাইল দূরে থেকে অন্য গাধার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারে। ঘোড়ার থেকে তাদের আছে অনেক বড় কান, যা তাদের শরীর শীতল রাখে।

বিশ্ব সভ্যতার ঐতিহ্য গড়তেও গাধাদের ভূমিকা কম নয়। কারণ, ভারি সব উপকরণ বহন করতে ব্যবহার করা হয়েছে গাধাকে। মিশরীয় ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাগুলোর অধিকাংশ ধাতু বহন করা হয়েছিলো গাধার মাধ্যমে। শুধু তাই না, গ্রিসে সংকীর্ণ পথের ওপর কাজ করার জন্যও গাধা ব্যবহার করা হয়েছিলো। রোমান আর্মিরা গাধাকে কৃষিপালিত ও পণ্য বহনকারী প্রাণী হিসেবে ব্যবহার করতো।

ভারতের রাজস্থান ও জয়পুরের অন্যতম বাহন গাধা। দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় জিনিসপত্র নিয়ে এরা সহজে চলাফেরা করতে পারে।

পশুপালকদের কাছে গাধা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রাণী। একজন দক্ষ পশুপালক পশুদের নেতা হিসেবে শক্তিশালী গাধাকে বেছে নেবেন। কারণ, খামারে পালন করা পশুরা অন্য হিংস্র পশু দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু গাধা নেকড়ে বাঘ বা অন্য শিকারীর হাত থেকে সবাইকে রক্ষা করতে পারে সংকেত জানিয়ে।

গাধা কোনো দিক দিয়েই আমাদের জন্য ক্ষতিকর প্রাণী নয়। তারা মানুষ ও পশুকে শুধু উপকারই করে। গাধাদের বোকা প্রাণী বলা হলেও, উপরের তথ্যগুলো জানার পর নিশ্চয় কেউ গাধাকে শুধু বোকা বলবেন না। এখন থেকে অন্যকে গাধা বলার আগে নিশ্চয় একবার ভেবে নেবেন।

মন্তব্য

‘গালি’ দেওয়ার কারণ জানালেন পিনাকী ভট্টাচার্য

অনলাইন ডেস্ক
৩ মে, ২০২৫ ১১:২৩
অনলাইন ডেস্ক
‘গালি’ দেওয়ার কারণ জানালেন পিনাকী ভট্টাচার্য

লোকে বলে পিনাকী গালি দেয়। আর পিনাকী বলেন—‘আমি তো আর মারতে পারি না, তাই গালি দিই।’ কেন তিনি বললেন এমন কথা? কেন দেশের এলিটদের বিরুদ্ধে তার এত ক্ষোভ? আর কী সেই অভিজ্ঞতা, যা তাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছিল? এক অনুষ্ঠানে লেখক, অ্যাক্টিভিস্ট ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক পিনাকী ভট্টাচার্য আত্মগোপন থেকে নির্বাসনে যাওয়ার কারণ জানালেন।

শুক্রবার (২ মে) বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ২০ মিনিটে অনুষ্ঠিত চ্যানেল আই-এর পর্দায় সালাম স্টিল ‘স্ট্রেট কাট’-এর আয়োজনে ভার্চুয়ালি অংশ নেন পিনাকী ভট্টাচার্য।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট, মানবাধিকার লঙ্ঘন—এইসব ইস্যুতে ধারালো কনটেন্ট বানান পিনাকী ভট্টাচার্য। কনটেন্টে আক্রমণাত্মক ভাষা, অশ্রাব্য ভাষা কেন ব্যবহার করেন—

অনুষ্ঠানের হোস্ট দীপ্তি চৌধুরীর এই প্রশ্নের জবাবে পিনাকী ভট্টাচার্য বলেন, ‘বাংলাদেশের যে দুর্দশা, এই দুর্দশার জন্য দায়ী কারা? এই দুর্দশার জন্য দায়ী হচ্ছে বাংলাদেশের এলিটরা। যারা রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকে এবং যারা সমাজকে নিয়ন্ত্রণ করে—সেই শিক্ষিত শ্রেণিই বাংলাদেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করে। আর সেই কারণেই বাংলাদেশের এত দুর্দশা।’

রাইজিং ক্যাম্পাসের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণ মানুষ কখনোই বাংলাদেশের সম্পদ কোথাও পাচার করেনি; বরং তারা বাইরে থেকে উপার্জন করে দেশে নিয়ে আসে। এরাই সেই মানুষ, যারা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রাখছে। বাংলাদেশের এলিটরা অর্থনীতিতে এক ফোঁটা টাকাও কন্ট্রিবিউট করে না। বাংলাদেশ অর্থনীতিতে অবদান রাখে তারাই, যারা গার্মেন্টসে মেশিন চালায়, যারা ঠেলাগাড়ি ঠেলে, যারা রিকশা চালায়, যারা শ্রমিক হিসেবে হাতুড়ি চালিয়ে বিল্ডিং তৈরি করে, যারা বাস চালায়, টেম্পু চালায়, ক্ষেতে ফসল ফলায়—তারাই হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি। এবং এদের উৎপাদিত সম্পদ চুরি করে বিদেশে পাচার করে কারা? এলিটরা।’

পিনাকী বলেন, ‘এলিটদের তিনটা ভয়—একটা সম্মান হারানোর ভয়, একটা মার খাওয়ার ভয়, আরেকটা সম্পদ হারানোর ভয়। আমি তো আর মারতে পারব না তাদের, তাই তাদের গালি দিই। সম্মান হারানোর ভয়—এটলিস্ট এই গালির কারণে যেন তারা ঠিক থাকে। এই গালির তোড়ে যদি তারা ঠিক থাকে, তাহলে বাংলাদেশকে আমরা কিছুটা সাইজ করতে পারব। আদারওয়াইজ, এরা বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের জীবনকে দাসের জীবন বানিয়ে রাখবে। এবং যারা আসলে দাসের জীবন বানিয়ে রাখছে, তাদের জন্য তো গালিই প্রাপ্য। এটাই আমার কমিউনিকেট করার রাস্তা।’

অনুষ্ঠানের শুরুতেই পিনাকী ভট্টাচার্যকে প্রশ্ন করা হয়, কেন তিনি দেশে ছেড়েছেন, কেন তাকে পলিটিক্যাল্যাল অ্যাসাইলাম নিতে হলো? জবাবে পিনাকী ভট্টাচার্য বলেন, ‘২০১৮ সালে যখন নিরাপদ সড়ক আন্দোলন চলছিল, যেদিন শহীদুল আলমকে গ্রেপ্তার করা হলো সেদিন আমাকে সকালে ডিজিএফআই থেকে ডাকা হলো তাদের অফিসে যাওয়ার জন্য। যিনি ফোন করেছিলেন তিনি নিজের পরিচয় দেন মেজর ফারহান বলে। ভদ্রতা করেই আমাকে বলা হয়েছিল, ডিজিএফআই অফিসে যেতে হবে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, আমি সিভিলিয়ান আমাকে কেন ডিজিএফআই ডাকবে? বললো আমাদের কিছু জরুরি আলাপ আছে আপনার সাথে।’

পিনাকী জানান, দ্বিতীয় কলে রূঢ়ভাবে তাকে জানানো হয়, সেদিনই যেতে হবে এবং সন্ধ্যার আগেই তাকে ডিজিএফআই অফিসে যেতে হবে।

তিনি বলেন, ‘আমি আমার বন্ধুবান্ধব এবং যাদের সাথে হিউম্যান রাইটস নিয়ে অ্যাক্টিভিজম করতাম তাদেরকে সঙ্গে কথা বললাম। উনারা সবাই বললেন আমি যেন না যাই এবং আমি যেন লুকিয়ে পড়ি। তখনই আমি লুকিয়ে পড়ি। পরদিন আমার বাসায় ডিজিএফআই রেইড করে, অফিসে রেইড করে আমি কোথায় তা জানার জন্য। আমি ৫ মাস প্রায় আত্মগোপনে ছিলাম নানা জায়গায় ঢাকা শহরেই। তারপরে নির্বাচন হয়ে গেলে তখন মনে করলাম লুকিয়ে থাকাটা অনুচিত। আমার বাসার সামনে ডিজিএফআই গার্ড বসালো, সারাক্ষণ ধরে নজরদারী এবং আমাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। তারপরে আমার দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া। তা না হলে তো ডিজিএফআই আমাকে ধরে নিয়ে যেত।’

পিনাকী বলেন, ‘আমরা জানি ডিজিএফআই যাদেরকে ধরে তাদের বেশিরভাগই ফেরে না। আমি ওই সময় আসলে যারা গুম হয়েছে তাদের একটা ডকুমেন্টেশন করছিলাম। সে সময় আমি জানতে পেরেছি যে যারা গুম হয় তাদেরকে ডিজিএফআই এভাবেই ডেকে নিয়ে যায়। সে যায়, সে ভিক্টিম তারপর্ আর সে কখনোই ফিরে আসে না। ন্যাচারালি তখন আমিও এটাই ভেবেছি যে আমার কপালেই সম্ভবত এটাই ঘটতে যাচ্ছে। সেজন্যই আত্মগোপনে যাওয়া এবং দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া।’

ফ্রান্সে যাওয়ার কারণ প্রসঙ্গে এই আ্যাক্টিভিস্ট বলেন, ‘তখন আমি একটা ফ্রেন্স হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশনের সঙ্গে কাজ করতাম। তারাই আমার ভিসা পাওয়ার যাবতিয় ব্যবস্থা করে দেয় এবং এখানে আশ্রয় পাওয়ার জন্য তারা সর্বোতভাবে আমাকে সাহায্য করে।’

মন্তব্য
সর্বশেষ সংবাদ
    সর্বাধিক পঠিত