ঢাকা, সোমবার, ১৮ আগস্ট ২০২৫ ৩ ভাদ্র ১৪৩২
 
শিরোনাম

দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ঐতিহাসিক জয় বাংলাদেশের

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৯ মার্চ, ২০২২ ১০:৫২
নিজস্ব প্রতিবেদক
দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ঐতিহাসিক জয় বাংলাদেশের

৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে ডেভিড মিলার স্ট্যাম্প আউট হয়ে যাওয়ার পরই ধারাভাষ্যকাররা বলে দিয়েছেন, ম্যাচটা এখানেই শেষ। দক্ষিণ আফ্রিকার পরাজয় নিশ্চিত। বাকি ছিল আর কতদুর যেতে পারে স্বাগতিক প্রোটিয়ারা।

শেষ দিকে কেশভ মাহারাজ এবং লুঙ্গি এনগিদি কয়েকটি চার-ছক্কা মেরেছিলেন ঠিকই, কিন্তু বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয় আর ঠেকাতে পারেনি তারা।

রীতিমত ঘোষণা দিয়ে গিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ঐতিহাসিক প্রথম জয়ের দেখা পেলো বাংলাদেশ। ৩১৫ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দিয়ে ৪৮.৫ ওভারে প্রোটিয়াদের অলআউট করে দিয়েছে ২৭৬ রানে। ৩৮ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে তামিম ইকবাল অ্যান্ড কোং।

ব্যাট হাতে সাকিব-রাব্বির পর বল হাতে প্রোটিয়া শিবিরে কাঁপন ধরিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ এবং শরিফুল ইসলাম। ৪ উইকেট নিয়ে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সবচেয়ে সফল মিরাজ। ৩ উইকেট নিয়ে স্বাগতিকদের কোমর ভেঙে দিয়েছিলেন তাসকিন আহমেদ। আর গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ব্রেক থ্রু এনে দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন শরিফুল ইসলাম।

এর আগে প্রোটিয়াদের মাটিতে তাদের বিপক্ষে কোনো ফরম্যাটেই কোনো ম্যাচ জেতেনি বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে গিয়ে ৯বার মুখোমুখি হযেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু কোনোবারই জয়ের স্বাদ নিতে পারেনি। জয় তো দূরে থাক, নূন্যতম লড়াই করারও সাহস দেখাতে পারেনি টাইগাররা। সবচেয়ে ছোট ব্যবধানে পরাজয় ছিল ৬১ রানে (২০০৮ সালের ৭ নভেম্বর পচেফস্ট্রমে)।

সে জায়গায় এবার দেশ ছাড়ার আগেই তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান এবং কোচ রাসেল ডোমিঙ্গোরা বলছিলেন, অন্তত একটি জয় হলেও পেতে চান তারা।

রাসেল ডোমিঙ্গো তো বলেই দিয়েছিলেন, এবার তিনি এমন কিছুর আশা করছেন, যা দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে আগে কখনো হয়নি। শেষ পর্যন্ত সেঞ্চুরিয়নের সুপার স্পোর্টস পার্কে সিরিজের প্রথম ম্যাচেই সেটা করে দেখালো বাংলাদেশ। তুলে নিলো দুর্দান্ত এক জয়।

যেন ঠিক ছকে আঁকা একটি ম্যাচ ছিল এটা। টস জিতুক আর না জিতুক, প্ল্যান কার্যকর করার সব চিন্তাই হয়তো তৈরি করা ছিল। যে কারণে টস হেরে ব্যাট করতে নামলেও সেটা খুব একটা প্রভাব পড়েনি ম্যাচে গেম প্ল্যান কার্যকরে। সেঞ্চুরিয়নের মাঠ ছোট, এখানে রান ওঠে। ব্যাটাররা অনেক রানের দেখা পায়। প্রোটিয়ারা নিজেরাই তো এর আগে এই মাঠে কত ম্যাচে রানের বন্যা বইয়ে দিয়েছিল!

বাংলাদেশ ব্যাট করতে নে,শুরুটা ভালো করেছিল। তামিম-লিটন মিলে ৯৫ রানের যে জুটি গড়েছিলেন, সেখানেই গড়ে উঠেছিল আত্মবিশ্বাস। যে কারণে তিন ফিফটিতে বাংলাদেশের রান পার হলো ৩০০। ৩১৪ রানে গিয়ে থামলো টাইগাররা। আফগানিস্তান সিরিজে নিজেকে প্যাসেঞ্জার মনে করা সাকিব আল হাসানই ছিলেন সবচেয়ে সফল। মাঠের খেলায় নিজেকে যে নিবেদিত করতে পারেন, সাকিব তার বড় উদাহরণ। ৬৪ বলে তিনি খেললেন ৭৭ রানের ইনিংস।

তামিম ইকবাল বোলিংয়ের শুরুটাও করালেন সাকিবকে দিয়ে। কিন্তু প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দিলেন শরিফুল। এরপর এক ওভারেই প্রোটিয়া টপ অর্ডারে বড় ধাক্কা দিলেন তাসকিন। ৩৬ রানে নেই ৩ উইকেট। এরপর টেম্বা বাভুমা আর রাশি ফন ডার ডুসেন মিলে ৮৫ রানের জুটি গড়ে ম্যাচটাকে বের করে নেয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু শরিফুল এসে তাদের চেষ্টা ভেঙে দিলেন।

রাফি ফন ডার ডুসেন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিলেন, ৮৬ রান করে চেষ্টা করেন ম্যাচ বের করে নেয়ার। কিন্তু তাসকিনের ডেলিভারিতে রাব্বির দারুণ ক্যাচে পরিণত হয়ে তারও চেষ্টার সমাধি হলো। ডেভিড মিলার তার সেই ‘কিলার মিলার’ উপাধিটাকে ফিরিয়ে আনার প্রয়াস পেয়েছিলেন। কিন্তু মিরাজের বুদ্ধিদীপ্ত বোলিংয়ের সামনে হার মানলেন তিনিও। ৭৯ রান করেই তাই তিনি রয়ে গেলেন পরাজিতের কাতারে।

৩১৫ রানের বিশাল লক্ষ্য। যদিও দক্ষিণ আফ্রিকা ঘরের মাঠে সব সময়ই শক্তিশালী। কিন্তু উল্টোদিকে ওয়ানডে ফরম্যাটটা বাংলাদেশ ভালো খেলে এবং এই ফরম্যাটে প্রোটিয়াদের হারানোর বেশ কয়েকবারের অভিজ্ঞতাও আছে টাইগারদের। যদিও প্রোটিয়াদের বিপক্ষে এসব জয় ছিল ঘরের মাঠ কিংবা বিদেশের মাটিতে। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে নয়।

সে কারণেই সাকিব-তামিমরা বলে আসছিলেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় অন্তত একটি জয় চাই। সে লক্ষ্যে প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ব্যাটাররা নিজেদের কাজটি করে দিয়েছেন। এরপর বোলারদের হাতে ছিল ম্যাচ। শেষ পর্যন্ত তারাও প্রমাণ করলো নিজেদের।

জয়ের লক্ষ্যে শুরুটা দারুণ হলো বাংলাদেশের। চতুর্থ ওভারেই প্রোটিয়া ওপেনার জানেমান মালানের উইকেট তুলে নেন বাঁ-হাতি পেসার শরিফুল ইসলাম। তার বলে ব্যাটের কানায় লাগিয়ে উইকেটের পেছনে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দেন মালান। দুর্দান্ত ক্যাচটি তালুবন্দী করেন মুশফিকুর রহিম।

প্রায় মাটিতে লাগতে যাওয়া বলটি এক ঝলকে গ্লাভসে তুলেন টাইগার উইকেটরক্ষক। দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংসে প্রথম আঘাত আসলো দলীয় ১৮ রানের মাথায়।

আম্পায়ারও অবশ্য নিশ্চিত ছিলেন না ক্যাচের ব্যাপারে। সফট সিগন্যাল ‘নটআউট’ দিয়ে থার্ড আম্পায়ারের কাছে পাঠালেন। তাতে দেখা গেলো বল ব্যাটে লেগেছে, ক্যাচও পরিষ্কারভাবেই গ্লাভসবন্দী করেছেন মুশফিক।

শরিফুলের বোলিং তোপের পরপরই আক্রমণে নিয়ে আসা হয় ডান-হাতি পেসার তাসকিন আহমেদকে। তামিমের এই আস্থার প্রতিদান দিলেন তাসকিন। সাফল্য এনে দিতে খুব বেশি সময় নেননি তিনি। একই ওভারে পরপর প্রোটিয়াদের টপ অর্ডারের দুই ব্যাটারকে সাজঘরের পথ দেখিয়ে দেন।

শরিফুলের বলে ১৮ রানের মাথায় পড়ে প্রোটিয়াদের প্রথম উইকেট। তাসকিনের বলে ৩৬ রানের মাথায় পড়লো দ্বিতীয় উইকেট। ৮ম ওভারের ১ম বলে উইকেট পড়ার পর চতুর্থ বলে পড়লো আরো এক উইকেট। এবার প্রোটিয়াদের নির্ভরযোগ্য ব্যাটার এইডেন মারক্রামকে মিরাজের ক্যাচে পরিণত করলেন তাসকিন।

ব্যক্তিগত ২১ রানে তাসকিনের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন অপর ওপেনার কাইল ভেরাইনি। তাসকিনের ওভারের প্রথম বলে রিভিউ নেয়ারও সুযোগ পেলেন না তিনি। আম্পায়ার আঙ্গুল তুলতেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি। ওভারের ৪র্থ বলটি ছিল ফুলার লেন্থ। ক্যাচ ওঠে পয়েন্টের কাছে। মিরাজ খুব সহজেই সেটিকে তালুবন্দী করলেন।

তাসকিনের এক ওভারেই কাঁপন ধরে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং লাইনআপে। ৩৬ রানে ৩ উইকেট পড়ার পর ম্যাচে ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ব্যাটার টেম্বা বাভুমা এবং রাশি ফন ডার ডুসেন। তারা দু’জন প্রাথমিক চেষ্টায় সফল হওয়ার পর নজর দেন রানের গতি বাড়ানোর দিকে।

৮৫ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা এবং রাশি ফন ডার ডুসেন। ২৭তম ওভারে নিজের ৬ষ্ঠ ওভার বল করতে এসে ব্রেক থ্রু উপহার দিলেন শরিফুল। তার বলে উইকেটের পেছনে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দেন প্রোটিয়া অধিনায়ক। ৫৫ বলে ৩১ রান করে আউট হন তিনি।

টেম্বা বাভুমা আউট হলেও রাশি ফন ডার ডুসেন যেন বাংলাদেশের হাত থেকে ম্যাচটা নিতে যাচ্ছিলেন। বেশ কয়েকবার আউটের সুযোগ তৈরি হয়েছিল; কিন্তু প্রতিবারই বেঁচে যান তিনি।

অবশেষে ত্রাণকর্তার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন তাসকিন আহমেদ। ভয়ঙ্কর থেকে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা রাশি ফন ডার ডুসেনকে ইয়াসির আলী রাব্বির হাতে দুরহ ক্যাচে পরিণত করে সাজঘরের পথ দেখালেন তিনি। ৩৮তম ওভারের প্রথম বলেই তাসকিনকে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন ফন ডার ডুসেন। দৌড়ে এসে সেই ক্যাচ তালুবন্দী করেন ইয়াসির। ৮৬ রান করে আউট হন তিনি।

ফন ডার ডুসেন আউট হওয়ার পর দ্রুত রান তুলে আবার বাংলাদেশের জন্য বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ান ডেভিড মিলার। যদিও এর মধ্যে আন্দিল পেহলুকাইয়ো, মার্কো জানসেন, কাগিসো রাবাদার উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে ধরে রাখেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

তবে ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলেই আসল কাজটি করে দেন তিনি। মিরাজকে ড্যান্সিং ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে এসে বল মিস করেন মিলার। স্ট্যাম্পিং করতে অভিজ্ঞ উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের বিন্দমাত্র বিলম্ব হয়নি। ৫৭ বলে ৭৯ রান করেন তিনি। ৮টি বাউন্ডারির সঙ্গে ছক্কা মারেন ৩টি। শেষ দিকে ১৬ বলে ২৩ রান করে কেশভ মাহারাজ এবং লুঙ্গি এনগিদি ১০ বলে ১৫ রান করে শুধু পরাজয়ের ব্যবধানই কমিয়েছেন।

তবুও মাহমুদউল্লাহর বলে কেশভ মাহারাজ যখন এলবিডব্লিউ হলেন, আম্পায়ার আউট দিতে চাইলেন না। খুব আত্মবিশ্বাসী মাহমুদউল্লাহ সঙ্গে সঙ্গেই ডিআরএস চাইলেন। তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বারবার বলছিলেন, এটা আউট। শেষ পর্যন্ত টিভি রিপ্লেতে দেখা গেলো তিনি সঠিক এবং আম্পায়ার বোঙ্গানি জেলে ক্ষমা চেয়ে আউটের ঘোষনা দিলেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড

টস: দক্ষিণ আফ্রিকা বাংলাদেশ: ৩১৪/৭, ৫০ ওভার (সাকিব আল হাসান ৭৭, লিটন দাস ৫০, ইয়াসির আলি রাব্বি ৫০, তামিম ইকবাল ৪১, মাহমুদউল্লাহ ২৫, মিরাজ ১৯*; মার্কো জানসেন ২/৫৭, কেশভ মাহারাজ ২/৫৬, রাবাদা ১/৫৭)।

দক্ষিণ আফ্রিকা: ২৭৬/১০, ৪৮.৫ ওভার (রাশি ফন ডার ডুসেন ৮৬, ডেভিড মিলার ৭৯, টেম্বা বাভুমা ৩১, কাইল ভেরাইনি ২১, কেশভ মারাহাজ ২৩, লুঙ্গি এনগিদি ১৫*; মেহেদী হাসান মিরাজ ৪/৬১, তাসকিন আহমেদ ৩/৩৬, শরিফুল ২/৪৭, মাহমুদউল্লাহ ১/২৪)।

ফল: বাংলাদেশ ৩৮ রানে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ: সাকিব আল হাসান।

প্রাসঙ্গিক
    মন্তব্য

    ক্রিকেটে নতুন নিয়ম

    নিজস্ব প্রতিবেদক
    ৯ মার্চ, ২০২২ ১৩:৫৮
    নিজস্ব প্রতিবেদক
    ক্রিকেটে নতুন নিয়ম

    ক্রিকেটে আবারও তালিকাভুক্ত হলো নতুন কিছু নিয়ম। এমসিসির এক বৈঠকে প্রাথমিকভাবে স্বীকৃতিও পেয়েছে নিয়মগুলো।

    এমসিসির বৈঠকে প্রাথমিকভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে নিয়মবদলের বিষয়গুলো। আগামী অক্টোবর থেকে ক্রিকেটের নতুন নিয়মগুলো কার্যকর হবে।

    নিয়মগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো— ক্যাচ নেওয়ার সময় দুই ব্যাটসম্যান যদি নিজেদের মধ্যে ক্রস করে নেন। তা হলেও নতুন ব্যাটসম্যানকেই ক্রিজে এসে স্ট্রাইকে দাঁড়াতে হবে।

    অর্থাৎ শট নেওয়ার পর ফিল্ডার ক্যাচ নেওয়ার সময় দুই ব্যাটসম্যান প্রান্ত বদল করলে আর আগের মতো নতুন ব্যাটসম্যান ক্রিজে এসে নন-স্ট্রাইকে দাঁড়াতে পারবেন না। তাকেই স্ট্রাইক নিতে হবে। এবার থেকে পুরনো নিয়ম উঠে যাচ্ছে।

    নতুন নিয়মে কোনো ব্যাটসম্যান ক্যাচ আউট হলে নতুন ব্যাটসম্যানকেই সরাসরি এসে স্ট্রাইক নিতে হবে। তাতে দুই ব্যাটসম্যান ক্রস করে থাকুক আর নাই বা থাকুক। আউট হওয়ার পর নতুন ব্যাটসম্যান এলে তাকেই স্ট্রাইক নিতে হবে। প্রান্ত বদল করলে নতুন ব্যাটসম্যানের নন-স্ট্রাইকে দাঁড়ানোর নিয়ম আর থাকছে না।

    প্রাসঙ্গিক
      মন্তব্য

      কুমিল্লাকে হারিয়ে ফাইনালে বরিশালকুমিল্লাকে হারিয়ে ফাইনালে বরিশাল

      নিজস্ব প্রতিবেদক
      ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ২২:১৬
      নিজস্ব প্রতিবেদক
      কুমিল্লাকে হারিয়ে ফাইনালে বরিশালকুমিল্লাকে হারিয়ে ফাইনালে বরিশাল

      বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের প্রথম কোয়ালিফায়ারে আজ মুখোমুখি হয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও ফরচুন বরিশাল। এ ম্যাচে কুমিল্লাকে ১০ রানে হারিয়ে প্রথম দল হিসেবে ফাইনালে গেল বরিশাল।

      ফাইনালে যাওয়ার লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৬২ রানের সংগ্রহ পায় কুমিল্লা। তবে ৩০ বলে ২০ রানের ধীরগতির ইনিংস খেলেন মাহমুদুল হাসান জয়। জয়কে মেহেদী হাসান রানা বোল্ড করার পর টানা তিনটি উইকেট হারায় কুমিল্লা। ৬৮ রানে ৩ উইকেট যায় কুমিল্লার। ৩৫ বলে ৩৮ রান করেন লিটন দাস।

      চতুর্থ উইকেটে মঈন ও ফাফ ডু প্লেসি গড়েন ২১ বলে ৩৬ রানের জুটি গড়েন। মঈনকে বোল্ড করে এই জুটি ভাঙেন ডোয়াইন ব্রাভো। ১৫ বলে ২২ রান করেন মঈন, হাঁকান তিনটি ছক্কা। ১৫ বলে ২১ রান করে দলের প্রয়োজনের সময়েই ক্যাচ আউট হয়ে যান ডু প্লেসিও।

      জয়ের জন্য শেষ ওভারে কুমিল্লার প্রয়োজন ছিল ১৮ রান। বোলিংয়ে আসেন মুজিব উর রহমান। দ্বিতীয় বলে ছক্কা মারার পর ইনিংসের এক বল বাকি থাকতেই আউট হয়ে যান সুনীল নারাইন। সেই সঙ্গে বরিশালের জয় নিশ্চিত হয়।

      এর আগে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নামে ফরচুন বরিশাল। ব্যাট হাতে শুভ সূচনা করেন ক্রিস গেইল ও মুনিম শাহরিয়ার। তাদের ৫৮ রানের জুটি ভাঙেন শহিদুল ইসলাম। ১৯ বলে ২২ রান করে বিদায় নেন গেইল। দ্বিতীয় উইকেটে ১৮ বলে ২৬ রান যোগ করেন মুনিম ও নাজমুল হোসেন শান্ত। মারমুখী ভঙ্গিতে থাকা মুনিম বড় শট খেলতে গিয়েই তানভীরের বলে এলবিডব্লিউ হন।

      মাঠ ছাড়ার আগে মুনিম করেন ৩০ বলে ৪৪ রান। মারকুঠে এই ব্যাটারের উইলো থেকে আসে দুইটি চার ও চারটি ছক্কা। সাকিব আল হাসান নেমেই নিজের ভুলেই রান-আউট হন। ২ বলে ১ রান করেন তিনি। শুরু হয় বরিশালের টানা উইকেট হারানো। ৮৪ রানের দ্বিতীয় উইকেট হারানোর পর ৯৪ রানের মধ্যে বরিশাল হারিয়ে ফেলে পাঁচটি উইকেট।

      শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৪৩ রান সংগ্রহ করতে পারে বরিশাল। ডোয়াইন ব্রাভো ২১ বলে ১৭ রানের ধীরগতির ইনিংস খেলেন। কুমিল্লার পক্ষে শহিদুল তিনটি এবং মঈন দুইটি উইকেট শিকার করেন।

      প্রাসঙ্গিক
        মন্তব্য

        আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের বাংলাদেশ দল ঘোষণা

        নিজস্ব প্রতিবেদক
        ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ২১:৫২
        নিজস্ব প্রতিবেদক
        আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের বাংলাদেশ দল ঘোষণা

        আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের জন্য বাংলাদেশ দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। প্রথমবারের মতো ওয়ানডে দলে আছেন ইবাদত হোসেন, নাসুম আহমেদ ও মাহমুদুল হাসান।

        তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের সব ম্যাচই হবে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। প্রথম ওয়ানডে ২৩ ফেব্রুয়ারি।

        এই সিরিজের জন্য বাংলাদেশের ওয়ানডে দলে ডাক পেয়েছেন অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা চার ক্রিকেটার—ব্যাটসম্যান মাহমুদুল হাসান ও ইয়াসির আলী, স্পিনার নাসুম আহমেদ ও পেসার ইবাদত হোসেন। মাহমুদুল, ইয়াসির ও ইবাদতের টেস্ট অভিষেক হলেও সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তাঁরা আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেননি। নাসুম খেলেছেন শুধু আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি।

        সর্বশেষ গত বছর অনুষ্ঠিত জিম্বাবুয়ের বিপক্ষের ওয়ানডে সিরিজের দল থেকে বাদ পড়েছেন ছয় ক্রিকেটার—মোহাম্মদ মিঠুন, মোহাম্মদ নাঈম, মোসাদ্দেক হোসেন, নুরুল হাসান, রুবেল হোসেন ও তাইজুল ইসলাম। চোটের কারণে দলে নেই মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।

        এবার আফগানিস্তান সিরিজে মাহমুদুল, ইয়াসির, নাসুম, ইবাদত ছাড়াও দলে ঢুকেছেন নাজমুল হোসেন। আজ তিন ম্যাচ সিরিজের জন্য তামিম ইকবালকে অধিনায়ক করে ১৫ জনের দল ঘোষণা করেছে বিসিবি। চোটের কারণে বিপিএলে শুরুর দিকে ছিটকে পড়া পেসার তাসকিন আহমেদকে রাখা হয়েছে দলে।

        গত বছর জুলাইয়ে জিম্বাবুয়ের মাটিতে সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজ খেলেছিল বাংলাদেশ। সেবার পারিবারিক কারণে ওয়ানডে না খেলেই দেশে ফিরেছিলেন মুশফিকুর রহিম। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে দলে আছেন তিনি।

        জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে মুশফিকসহ ছিলেন ১৭ জন। এবার ১৫ জন নিয়ে দল গড়া হয়েছে।

        ২৩ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ। পরের দুটি ম্যাচ হবে ২৫ ও ২৮ ফেব্রুয়ারি। সব কটি ম্যাচই হবে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। এ সিরিজটি বিশ্বকাপ সুপার লিগের অন্তর্ভুক্ত।

        ওয়ানডে সিরিজের পর বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান ২ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজও খেলবে, সে ম্যাচগুলো হবে মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে।

        বাংলাদেশের ওয়ানডে দল:

        তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), লিটন দাস, নাজমুল হোসেন, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ, আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, শরীফুল ইসলাম, ইবাদত হোসেন, নাসুম আহমেদ, ইয়াসির আলী, মাহমুদুল হাসান।

        প্রাসঙ্গিক
          মন্তব্য

          সাকিবের সঙ্গে কথা বলেছিল আইপিএলের ২ দল, শিশিরের দাবি

          নিজস্ব প্রতিবেদক
          ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৭:৫৬
          নিজস্ব প্রতিবেদক
          সাকিবের সঙ্গে কথা বলেছিল আইপিএলের ২ দল, শিশিরের দাবি

          এবারের আইপিএলে খেলা হচ্ছে না সাকিব আল হাসানের। গতকাল সন্ধ্যায় ব্যাপারটি নিশ্চিত হয়ে গেছে। এই প্রথম আইপিএলের নিলামে উঠেও বিক্রি হলেন না বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার। কাল দ্বিতীয় দিনেও তাঁর নাম ডাকা হয়েছিল, কিন্তু আগ্রহ দেখায়নি কোনো দল। ব্যাপারটি অবাক করেছে অনেককেই। বিশেষ করে তাঁর বর্তমান ফর্ম বিচার করে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তাঁর অভিজ্ঞতা আর রেকর্ড যেমন, তাতে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে তাঁর দল না পাওয়াটা বেশ অপ্রত্যাশিত। সাকিবের আইপিএলে দল না পাওয়া নিয়ে তাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখন জোর আলোচনা।

          ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) নিলামে গত দুই দিনে দুবার নাম উঠেছিল সাকিব আল হাসানের। কোনোবারই তাঁকে দলে নিতে আগ্রহ দেখায়নি ১০ ফ্র্যাঞ্চাইজির কেউ। এর পর থেকে চারদিকে আলোচনা-সমালোচনা। সাকিবের আইপিএল ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেল নাকি, উঠেছিল এমন প্রশ্নও।

          আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই সাকিবের স্ত্রী উম্মে আল হাসানের পোস্ট বিষয়টিকে অন্য মাত্রা দিয়েছে। শিশির লিখেছেন, নিলামে কোনো দল তাঁকে না নিলেও আইপিএলের দুটি দল নাকি সরাসরি সাকিবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল, ‘খুব বেশি উত্তেজিত হওয়ার আগে আপনাদের জানিয়ে রাখি, বেশ আগেই দুটি দল সরাসরি যোগাযোগ করেছিল। তারা জানতে চেয়েছিল, সাকিব পুরো মৌসুম তাদের হয়ে খেলতে পারবে কি না!’

          শিশির মনে করেন, আইপিএলে সাকিব দল পায়নি বলেই যে তাঁর আইপিএল ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে, সেটা ঠিক নয়। দল পেলে তিনি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে থাকতে পারতেন না। শিশির প্রশ্ন তুলেছেন, তখন সবাই তাঁকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলতেন কি না, ‘আইপিএলে দল না পাওয়া খুব বড় বিষয় নয়। এবার পায়নি, পরের বছর পাবে। দল পেলে তাকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ মিস করতে হতো। তখন কি সবাই একই কথা বলতেন? তাকে বিশ্বাস ঘাতক বানাতেন? আপনাদের উত্তেজনায় জল ঢেলে দেওয়ার জন্য দুঃখিত!’

          দেশের হয়ে খেলা বাদ দিয়ে সাকিব আইপিএলে খেলতে চান, এমন সমালোচনা প্রায়ই হয় তাঁকে নিয়ে। নিজের পোস্টে শিশির সেই প্রসঙ্গই তুলেছেন। এর আগে কলকাতা নাইট রাইডার্স আর সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়েও খেলেছেন সাকিব। কলকাতার হয়ে শিরোপা জয়ের অভিজ্ঞতাও আছে তাঁর।

          প্রাসঙ্গিক
            মন্তব্য
            সর্বশেষ সংবাদ
              সর্বাধিক পঠিত