ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের প্যানেল চূড়ান্ত হয়নি, সিদ্ধান্ত আসতে পারে আজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে প্যানেল চূড়ান্ত করতে পারেনি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। তবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের শেষ দিনে একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন সংগঠনটির নেতা–কর্মীরা।
গতকাল বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনের তৃতীয় তলায় ডাকসুর প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন তাঁরা। দুপুরের পর থেকে তিন ধাপে ভাগ হয়ে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা।
তাঁরা বলছেন, সংগঠন থেকে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে কারণে তাঁরা একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। তবে কে কোন পদে প্রার্থী হবেন, সেটি এখনো ঠিক হয়নি। আজ সন্ধ্যা বা রাতের মধ্যেই আমাদের প্যানেল ঘোষণা হতে পারে। প্যানেলে কাকে রাখা যায়, সেটা নিয়ে পার্টি অভ্যন্তরীণভাবে যাচাই-বাছাই ও বিশ্লেষণ করছে।
ছাত্রদল ছাড়াও মনোনয়নপত্র সংগ্রহের শেষ দিনে ইসলামী ছাত্রশিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, ছাত্র অধিকার পরিষদ, বাম গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক উমামা ফাতেমা মনোনয়নপত্র নিয়েছেন।
ডাকসুর তফসিল অনুযায়ী, ডাকসুতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের শেষ দিন ছিল রবিবার যা পরে একদিন বধিত করা হয়। যাচাই-বাছাই শেষে ২১ আগস্ট বেলা একটার সময় চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে।
ইতিমধ্যে ডাকসু এবং হল সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। চূড়ান্ত তালিকায় মোট ভোটার সংখ্যা ৩৯ হাজার ৭৭৫। এর মধ্যে ছাত্র ভোটার ২০ হাজার ৮৭১ জন ও ছাত্রী ভোটার ১৮ হাজার ৯০২ জন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে
প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা বহালের দাবিতে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা বহাল এবং বৈষম্য দূরীকরণসহ ৯ দফা দাবিতে অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি ও অবস্থান ধর্মঘট পালান করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।
১৯ আগষ্ট (মঙ্গলবার) সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অ্যাকাডেমিক, প্রশাসনিক ও হলের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে এ কর্মবিরতি পালন করেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ হিসাব দপ্তরের কর্মকর্তা নিয়াজ উদ্দিন বলেন, আমরা আজ কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি সকল প্রকারের বৈষম্য দূরীকরণ ও প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা পাওয়ার জন্য। আমরা এর জন্য আট দফা দাবি তুলে ধরেছি। আমরা আসা করছি প্রশাসন আমাদের দাবি গুলো মেনে নিবে। তারা যদি আমাদের দাবি গুলো না মেনে নেয় তাহলে আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক ও কর্মকর্তা সম্মিলিত ভাবে এই অবস্থান কর্মসূচি আরো কঠোর থেকে কঠোর হবে। প্রয়োজনে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পুর্ন অচল করে দেব। আমাদের কর্মসূচি অফিস বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত চলতে থাকবে।"
অফিসার সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোক্তার হোসেন বলেন, "আজকের ধর্মঘট আমাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের আন্দোলন। বহু বছর ধরে পাওয়া প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অধিকার। এই দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আজ পূর্ণদিবস কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। কেউ যদি মনে করে আমাদের ন্যায্য অধিকার হরণ করা যাবে, তবে তারা আসলে বোকার সর্গে বসবাস করছেন।"
তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা দ্রুত ফিরিয়ে দিতে হবে, নইলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।
জবিতে বিভাগীয় চেয়ারম্যানের কক্ষ থেকে শেখ মুজিবের ছবি অপসারণ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যানের কক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি অপসারণ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
আজ সোমবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে ছবিটি অপসারণ করা হয়।
ছবি অপসারণের বিষয়ে জবি ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রবিউল ইসলাম বলেন, “শেখ মুজিব বাকশালের প্রবক্তা। তারই ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করেছে। আওয়ামী লীগ শেখ মুজিবকে তাদের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করে। আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাসিবাদের এই প্রতীকের কোনো ছবি রাখতে দিতে পারি না। এ কারণে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে এই ছবি অপসারণ করেছি।”
এ বিষয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, “শেখ মুজিবের ছবি রাখা বা অপসারণের বিষয়ে আমার ব্যক্তিগত কোনো মত বা ইচ্ছা নেই। আমি সাংবিধানিক নীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং তা অনুসরণ করার চেষ্টা করি। প্রশাসন বা উপাচার্যের কাছ থেকে কোনো নির্দেশনা না পেলে আমি নিজে ছবি অপসারণ করতে পারি না। তবে শিক্ষার্থীরা যদি ছবি অপসারণ করতে চায়, তা তাদের সিদ্ধান্ত। আমি আইন লঙ্ঘন করে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারব না।”
তবে এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে ছাত্র-জনতার ক্ষোভের মুখে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত থেকে সরিয়ে ফেলা হয় শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি। একইভাবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউট থেকেও সরানো হয় শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার ছবি। এরই ধারাবাহিকতায় প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যানের কক্ষে শেখ মুজিবের ছবি টানিয়ে রাখা নিয়ে নতুন করে আলোচনা তৈরি হয়েছে।
বারডেম ডাক্তারের বিরুদ্ধে জবি শিক্ষার্থীকে হেনস্তার অভিযোগ

বারডেম জেনারেল হাসপাতাল ও ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজে বাত, ব্যথা, প্যারালাইসিস বিষেশজ্ঞ সহকারী অধ্যাপক ডা. আবুল খায়ের আহমদ জামানের বিরুদ্ধে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক শিক্ষার্থীকে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষার্থী এবং দৈনিক দিনকালের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি এস এম সিয়াম। তিনি অভিযোগ করেন, চিকিৎসা নিতে গিয়ে ডা. আবুল খায়ের শুধু খারাপ আচরণই করেননি, বরং রোগী ও তার বাবাকে কর্কশ ভাষায় অপমান করেছেন।
গতকাল রোববার (১৭ আগস্ট) নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অভিযোগ জানিয়ে পোস্ট করেন ভুক্তভোগী সিয়াম।
তিনি অভিযোগ করে ফেসবুক পোস্টে লেখেন, গত জুনে মেরুদণ্ড ও মাংসপেশির ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি বারডেমে চিকিৎসা নিতে শুরু করেন। প্রথমে ওষুধে সাময়িক আরোগ্য হলেও আগস্টে ব্যথা ফের তীব্র হলে নতুন করে এক্স-রে ও বিভিন্ন টেস্ট করানোর পর রিপোর্ট দেখাতে যান। কিন্তু অন্য এক চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন হাতে পেয়ে ডা. আবুল খায়ের নাকি রেগে গিয়ে রিপোর্টগুলো ছুঁড়ে ফেলে দেন এবং কোনো কথা না শুনে চলে যান।
তিনি প্রশ্ন করে বলেন, "এক মেডিকেল রিপোর্ট দুইজন ডাক্তারের কাছে দেখানো বা দুইজনের থেকে পরামর্শ নেওয়া কি গুরুতর কোনো অপরাধের মধ্যে পড়ে?"
সিয়াম আরও বলেন, উনার প্রফেশনালিজম নিয়ে এখন আমার সন্দেহ আছে; উনি বা বারডেম কর্তৃপক্ষ যেহুতু আমার থেকে টাকা নিয়েছেন সেহেতু ডা. আবুল খায়ের সাহেব আমার রিপোর্ট দেখতে বাধ্য; উনি ডাক্তার হউক বা যেই হউক না কেনো উনি আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করার কোনো অধিকার রাখেন না, এর জন্য উনাকে আমাদের কাছে নতজানু হয়ে বিনা শর্তে ক্ষমা চাইতে হবে; আমি একজন সাংবাদিক জানা সত্ত্বেও উনি যদি আমার সাথে এমন আচরণ করতে পারে তাহলে সাধারণ রোগীর সাথে কেমন আচার ব্যবহার করবে এটা নিয়ে আমি ভীত সন্ত্রস্ত।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী অধ্যাপক ডা: আবুল খায়ের আহমদ জামান বলেন, পিজি হাসপাতাল থেকে টেস্ট করেছে এবং ডাক্তার দেখিয়েছে, সেই প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী বাকী চিকিৎসা চালানোর কথা বলেছি। এই কথা বলে আমি রুম থেকে বেরিয়ে গেছি। একজন রোগীকে কক্ষে রেখে এভাবে বেরিয়ে যাওয়া ঠিক হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি নামাজের সময় হয়ে যাওয়ায় বেরিয়ে গেছি।
প্রতীক কুমার মন্ডল আদিত্য/
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়
অমরণ অনশন থেকে শিক্ষার্থীদের উঠে আসার আহ্বান আবু সাঈদের ভাইয়ের

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছে বেরোবির ৯ শিক্ষার্থী। তাদেরকে অনশন ভাঙ্গার জন্য আহ্বান করেছে জুলাই আন্দোলনের শহীদ আবু সাঈদ এর দুই ভাই। সোমবার (১৮ আগস্ট) বিকাল সাড়ে পাঁচ টায় রমজান আলী এক ফেসবুক পোস্টে আমরণ অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনশন থেকে উঠে আসার আহ্বান করেছে।
আবু সাঈদ এর ভাই রমজান আলী ফেসবুক পোস্টে বলেন, "ছাত্র সংসদ নিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় আমরণ অনশনরত আমার ছোট ভাই শহীদ আবু সাঈদের সহযোদ্ধা প্রতি আহ্বান। আপনারা এখন উঠে আসুন। আপনাদের এরকম কষ্ট দেখে আমরা বসে থাকতে পারিনি।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা দুই ভাই এটা সমাধানের জন্য শিক্ষা উপদেষ্টা স্যারের কাছে আসি। উনি আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন দ্রুত সময়ের মধ্যে উক্ত সমস্যার সমাধান করার জন্য ইউ জিসিকে নির্দেশনা দিয়েছেন। তাই আপনাদের প্রতি আহ্বান আপনারা উঠে আসুন দ্রুত সময়ের মধ্যে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হবে ইনশাআল্লাহ।"
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী সাংবাদিকদের বলেন, “ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন সংশোধনের জন্য ইউজিসিতে চিঠি দিয়েছি। ইউজিসির সাথে আমার কথা হয়েছে উনারা ১০ কর্ম দিবস সময় চাচ্ছেন। আশা করি ১০ দিনের মধ্যে আমরা ভালো ফলাফল পাব । আর যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে আমি নিজেই দায়িত্ব নিয়ে সম্পন্ন করব।
তিনি আরও বলেন, আইনে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ধারা সংযুক্ত না থাকায় নির্বাচন আয়োজন করা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে আমি একমত। আইন সংশোধন করতে গেলে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ জারি করতে হয়, যা সময়সাপেক্ষ। কিন্তু এটা যাতে ধীরগতিতে না হয়, আমি ইউজিসির সঙ্গে কথা বলেছি।”
উল্লেখ্য যে, এর আগে গত ১২ আগস্ট শিক্ষার্থীরা প্রশাসনকে পাঁচ কর্ম দিবসের আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো কার্যকর ঘোষণা না আসায় তারা আমরণ অনশনে বসতে বাধ্য হয়েছেন বলে শিক্ষার্থীরা।
মন্তব্য