প্রেমিককে ভিডিও কলে রেখে রাজশাহী কলেজ ছাত্রীর আত্মহত্যা

রাজশাহী কলেজের অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ইশরাত জাহান হাসি (২০) প্রেমিকের সঙ্গে ভিডিও কলে থাকার সময় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
আজ শুক্রবার (২৭ জুন) সকালে নগরীর হেতমখাঁ কাস্টমস অফিস মোড়ের একটি মেস থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এসময় তার প্রেমিক (নাহিদ) মেসের নিচে উপস্থিত ছিলেন এবং পুলিশ তাকে আটক করেন।
নিহতের বাড়ি নাটোর জেলার বনপাড়া উপজেলায়। রাজশাহী মেডিকেল কলেজে মিডিয়া মুখোপাত্র শংক কে বিশ্বাস তার তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করে বলেন, মেডিকেলে তাকে মৃত অবস্থান নিয়ে আসা হয় এবং পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি ছেলের সাথে হাসির দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। তার সাথে হয়তো হাসির কোনো মনোমালিন্য হয়েছে যেটা থেকে সে আত্মহত্যা করতে পারে।
এ বিষয় রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মু. যহুর আলী বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত হয়েছেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান কে নির্দেশনা দিয়েছেন।
বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক আহমেদ জানান, প্রেমিকের সাথে ব্রেকআপ হওয়ার কাছের এমন ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি এবং নিহতের পরিবার থানায় এসেছে। ছেলেকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে সে শিকার করেছে মেয়েটির সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিলো।
তিনি আরো বলেন, গভীর রাতে ছেলেটি মেয়ের মেসের সামনে ছিল এবং ফোন যেভাবে রাখা ছিলো তাতে ধারণা করা যায় ভিডিও কলে রেখে মেয়েটি আত্মাহত্যা করেছে।
নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ সম্পৃক্ততার অভিযোগে পুলিশ হেফাজতে বাঙলা কলেজ শিক্ষার্থী

নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে রাজধানীর সরকারি বাঙলা কলেজের বাংলা বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে কলেজ শাখা ছাত্রদল।
আটক শিক্ষার্থীর নাম হিমেল খন্দকার। তিনি কলেজটির বাংলা বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছেন, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের হয়ে তিনি দীর্ঘদিন ক্যাম্পাসে সক্রিয় ছিলেন এবং সংগঠনের বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নিতেন।
বুধবার দুপুরে কলেজ প্রাঙ্গণে তাকে চিহ্নিত করে ছাত্রদলের কর্মীরা আটক করেন। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করার সময় বাঁধা প্রদান করে ইসলামী ছাত্রশিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সদস্য।
এমন সময় পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আটক শিক্ষার্থী হিমেল খন্দকারকে দারুসসালাম থানা হেফাজতে নেয়।
এ বিষয়ে এখনো কলেজ প্রশাসন কিংবা থানা পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
ফের বাঙলা কলেজ শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক নির্বাচিত হলেন নাহিদা পারভীন

রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি বাঙলা কলেজে ২০২৫ সেশনের শিক্ষক পরিষদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪শে জুন) উৎসবমুখর ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে ভোট গ্রহণের মাধ্যমে এই নির্বাচন সম্পন্ন হয়।
কলেজ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে সক্রিয় অংশগ্রহণ ও ভোট প্রদানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক চেতনার ভিত্তিতে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত করেন কলেজের শিক্ষকবৃন্দ। নির্বাচন উপলক্ষে সকাল থেকেই কলেজে প্রাণচাঞ্চল্য ও ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ করা যায়।
১৬২ জন ভোটারের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সম্পাদক পদে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাহিদা পারভীন। অভিজ্ঞতা ও পূর্ববর্তী কার্যক্রমে সুনামের কারণে তার ওপর আবারও আস্থা রেখেছেন কলেজটির শিক্ষক সমাজ।
নির্বাচিত অন্যান্য সদস্যরা হলেন: যুগ্ম সম্পাদক পদে মোহাম্মদ শাহ আলম (সহকারী অধ্যাপক, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ), কোষাধ্যক্ষ পদে মোঃ আবদুল মুকীত (প্রভাষক, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ), দপ্তর সম্পাদক পদে হাসান আলী (প্রভাষক, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ), এবং সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে সায়লা ইয়াসমিন প্রিয়া (সহকারী অধ্যাপক, রসায়ন বিভাগ)।
নির্বাহী সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন প্রফেসর মোঃ জামান রিজভী (অধ্যাপক, হিসাববিজ্ঞান বিভাগ), তাহিয়া সারওয়ার (সহযোগী অধ্যাপক, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ), এবং তানিয়া হাসিন (সহকারী অধ্যাপক, মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিভাগ)।
নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে সম্পূর্ণ নির্বাচন নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী, অধ্যাপক, হিসাববিজ্ঞান বিভাগ। নির্বাচন কমিশনার হিসেবে ছিলেন খন্দকার মোঃ রেদওয়ানুর রহমান (সহযোগী অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগ) এবং কামরুন নাহার (সহযোগী অধ্যাপক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ)। তাঁদের পেশাদারী ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় পুরো প্রক্রিয়াটি নিরবচ্ছিন্নভাবে শেষ হয়।
নির্বাচনে পুনরায় নির্বাচিত হয়ে সম্পাদক নাহিদা পারভীন জানান, “শিক্ষক সমাজের এই সমর্থন ও আস্থাকে তিনি দায়িত্ব ও নিষ্ঠার সঙ্গে মূল্যায়ন করতে চান। তার মতে, শিক্ষক পরিষদ শুধু একটি প্রতিনিধি কমিটি নয়, বরং এটি শিক্ষার পরিবেশ, নীতিনৈতিকতা ও সহকর্মী সহমর্মিতার প্রতিচ্ছবি। তিনি বলেন, আগামীদিনে তিনি সহকর্মীদের সম্মিলিত সহযোগিতা নিয়ে একটি ইতিবাচক, কার্যকর ও শিক্ষাবান্ধব কর্মপরিবেশ গঠনে সক্রিয় থাকবেন। শিক্ষকদের অধিকার রক্ষা ও গঠনমূলক আলোচনার সংস্কৃতি বজায় রেখে শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করাই হবে নতুন পরিষদের মূল অঙ্গীকার।”
নির্বাচিত পরিষদের সদস্যরাও জানান, তারা কলেজ প্রশাসন ও সকল শিক্ষককে নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করবেন এবং শিক্ষক সমাজের অধিকার, মর্যাদা ও স্বার্থরক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা রাখবেন।
নির্বাচনটি শিক্ষক সমাজ ও কলেজ প্রশাসনের কাছে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও সহমর্মিতা চর্চার অনন্য উদাহরণ হিসেবে প্রশংসিত হয়েছে।
রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রদলের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি আয়োজন

বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রদলের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুর ১টায় কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক খালিদ বিন ওয়ালির (আবির) এর নেতৃত্বে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, কলেজ শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব আমিনুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কাফি, ছাত্রনেতা সামিউল ইসলাম শিমুল, শরিফুল ইসলাম সৌরভ, জুবায়ের রশিদ, রুহুল আমিনসহ ছাত্রদলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা।
কলেজ শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক খালিদ বিন ওয়ালির (আবির) বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির আওতায় আমরা রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রদলের উদ্যোগে আজকে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করেছি। মূলত ৫ আগষ্ট স্বৈরাচারী সরকার পতনের পর থেকেই দেশব্যাপী আমাদের বিভিন্ন কর্মসূচি চলমান রয়েছে।
এছাড়াও আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ইতোমধ্যে পাঁচ বছরের মধ্যে সারাদেশে ৫০কোটি গাছ লাগানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। সেই ধারাবাহিকতায় দেশব্যাপী ছাত্রদলের কর্মীরা কাজ করে যাচ্ছে।
বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি কে কেন্দ্র কলেজ শাখা ছাত্রদলের উদ্যোগে কলেজের বিভিন্ন প্রাঙ্গণে গাছ লাগানো হয়। এর আওতায় কলেজের প্রশাসন ভবনের পেছনে পলাশ ফুল, ইংরেজি বিভাগের সামনে দুইটি মেহগনি ও কলেজের কেন্দ্রীয় মসজিদের পেছনে একটি মেহগনির গাছ লাগানো হয়েছে।
এইচএসসি পরিক্ষার্থী সুহিনের আত্মহত্যা, নেপথ্যে মানসিক চাপ

রাজধানীর পীরেরবাগ এলাকায় সোহানুজ্জামান সুহিন নামে এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। তিনি সরকারি বাtঙলা কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র (রোল নম্বর ১০১৮৪) এবং আসন্ন এইচএসসি-২০২৫ ব্যাচের পরিক্ষার্থী ছিলেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সুহিন মিরপুর পীরেরবাগ ঝিলপাড় এলাকার একটি বাসায় ব্যাচেলর হিসেবে ভাড়া থাকতেন। তার গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁও জেলায়। তার পিতার নাম নুর আলম এবং মাতার নাম শামসুন্নাহার লাভলী।
নিহতের চাচা জানান, “আগামী ২৬ জুন শুরু হতে যাওয়া এইচএসসি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল সুহিন। তবে সম্প্রতি সে মোবাইল ফোনে অতিরিক্ত আসক্ত হয়ে পড়ে এবং প্রায় সময় মোবাইল গেমে মগ্ন থাকত। এ নিয়ে বাবা নুর আলম তাকে অনেক বকাবকি করেন। চাচার ধারণা, পারিবারিক এ মানসিক চাপে পড়েই সুহিন আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।”
সুহিনের সহপাঠী এবং রুমমেট বর্ষা বলেন, “আমরা শুরু থেকেই একসাথে আছি। ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার পর আমি আজকে আসলাম। এসেই শুনি ও আত্মহত্যা করেছে। এ বিষয়ে আমি তেমন কিছু বলতে পারব না তবে পড়াশুনা নিয়ে ওর বাবা ওরে অনেক বকাঝকা এবং গালিগালাজ করেছে। সে এ বিষয়টি নিয়ে ও অনেক মানসিক চাপে ছিলো।”
স্হানীয় প্রতিবেশীরাও জানান, সুহিন স্বভাবতই শান্ত প্রকৃতির ছিল, তবে সম্প্রতি সে কিছুটা গুটিয়ে গিয়েছিল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিরপুর মডেল থানার ডিউটি অফিসার বলেন, “দুপুরের দিকে আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছাই এবং মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠাই। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে না আসা পর্যন্ত মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত করে বলা যাবে না।”
এ ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে সহপাঠীদের মধ্যেও। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার আত্মহত্যার খবর শেয়ার করে শোক প্রকাশ করছেন।
মানসিক চাপ, পারিবারিক বিরোধ এবং কিশোরদের মোবাইল আসক্তির মত বিষয়গুলো নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে এই ঘটনা।
মন্তব্য