ঢাকা, শনিবার, ২৩ আগস্ট ২০২৫ ৮ ভাদ্র ১৪৩২
 
শিরোনাম

এনসিপির ১৫ নেতার একযোগে পদত্যাগ

অনলাইন ডেস্ক
২০ আগস্ট, ২০২৫ ১৫:১৯
অনলাইন ডেস্ক
এনসিপির ১৫ নেতার একযোগে পদত্যাগ

শেরপুরের নকলায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উপজেলা সমন্বয় কমিটি থেকে পাঁচজন যুগ্ম সমন্বয়কারী ও ১০ জন সদস্যসহ মোট ১৫ জন পদত্যাগ করেছেন।

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) রাতে নকলা সরকারি হাজি জালমামুদ কলেজ রোডের স্থানীয় একটি বাড়ির কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তারা।

পদত্যাগী যুগ্ম সমন্বয়কারীরা হলেন—মো. মমিনুল ইসলাম আরব, মনিরুল ইসলাম মনির, সিরাজুল ইসলাম সোহাগ, রাশিদুল জামান রাসেল ও জসীম উদ্দীন।

আর পদত্যাগী সদস্যরা হলেন—মো. দেলোয়ার হোসেন, সোহেল রানা, জাহাঙ্গীর আলম, সোহাগ মোল্লা, আল আমিন মিয়া, রতন মিয়া, নাজমুল হাসান, সুমন মিয়া, আরিফ মিয়া ও সাদেকুল ইসলাম শান্ত।

পদত্যাগপত্রে নেতারা লেখেন সম্প্রতি ঘোষিত নকলা উপজেলা সমন্বয় কমিটি অযোগ্য, অনাদর্শিক ও সামাজিকভাবে অগ্রহণযোগ্য প্রধান সমন্বয়কারীর নেতৃত্বে গঠিত হওয়ায় আমরা কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছি। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব বরাবর লিখিত পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছি।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী একজন অযোগ্য, অনাদর্শিক ও সামাজিকভাবে অগ্রহণযোগ্য লোক। এ প্রেক্ষাপটে আত্মবিশ্লেষণমূলক চিন্তাভাবনার পর আমরা সম্মিলিতভাবে জাতীয় নাগরিক পার্টির উপজেলা সমন্বয় কমিটির স্ব স্ব পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করছি এবং পুরো কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করছি।

পদত্যাগের বিষয়ে যুগ্ম সমন্বয়কারী মো. মমিনুল ইসলাম আরব বলেন, আমরা পাঁচজন যুগ্ম সমন্বয়কারী ও ১০ জন সদস্য পদত্যাগ করেছি। পদত্যাগের মূল কারণ প্রধান সমন্বয়কারী একজন অযোগ্য ব্যক্তি। তার বিরুদ্ধে শহীদ পরিবারের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তার শিক্ষাগত যোগ্যতাও ভালো নয়। এসব গুরুতর অভিযোগের কারণেই আমরা পদত্যাগ করেছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিপির শেরপুর জেলা কমিটির ১ নম্বর সমন্বয়কারী আলমগীর কবির বলেন, ‘পদত্যাগের বিষয়টি ফেসবুকে দেখেছি। বিভাগীয় কমিটির সঙ্গেও কথা হয়েছে। জেলা কমিটি বসে বিষয়টি মূল্যায়ন করবে এবং পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, গত ১০ আগস্ট কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন এবং মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের স্বাক্ষরে নকলা উপজেলা সমন্বয় কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে হুমায়ুন কবির আকাশকে প্রধান সমন্বয়কারী, ১০ জনকে যুগ্ম সমন্বয়কারী ও ২১ জনকে সদস্য করে মোট ৩২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়।

প্রাসঙ্গিক
    মন্তব্য

    টাক মাথায় চুল লাগানো ও জিমে সময় কাটছে পলাতক আ.লীগ নেতাদের

    অনলাইন ডেস্ক
    ২০ আগস্ট, ২০২৫ ১১:৫৬
    অনলাইন ডেস্ক
    টাক মাথায় চুল লাগানো ও জিমে সময় কাটছে পলাতক আ.লীগ নেতাদের

    স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের বহু শীর্ষ নেতা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে তারা টাক মাথায় চুল লাগানো, জিমে ব্যায়াম করাসহ বিভিন্ন ভাবে সময় পার করছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করেছে।


    প্রতিবেদনে বলা হয়, ওইসব নেতাদের অনেকেই এখন কলকাতার নিউ টাউন এলাকায় অবস্থান করছেন। সেখানে তারা বাসা ভাড়া করে বসবাস করছেন, কেউ কেউ আবার আশ্রয় নিয়েছেন স্বজনদের বাড়িতে।


    প্রতিবেদন অনুযায়ী, পলাতক নেতারা সাধারণ মানুষের চোখে না পড়ার চেষ্টা করছেন। খুব একটা বাইরে বের হন না। বাসায় থেকেই তারা দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল মিটিং করেন। কেউ কেউ সময় দিচ্ছেন শরীর চর্চায়, আবার কেউ স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ব্যস্ত। রান্নার কাজটিও মাঝে মাঝে নিজেদেরই করতে হচ্ছে।


    নিরাপত্তার স্বার্থে অনেকেই তাদের অবস্থান গোপন রাখছেন। তবে বেশিরভাগই থাকছেন পশ্চিমবঙ্গের নিউ টাউন এলাকায়। এলাকাটি বেছে নেয়ার পেছনে আছে কয়েকটি কারণ- প্রশস্ত রাস্তাঘাট, তুলনামূলক সাশ্রয়ী বাসাভাড়া, আধুনিক ফিটনেস সেন্টার, ভালো চিকিৎসা সুবিধা এবং নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছাকাছি অবস্থান।


    দ্য প্রিন্ট দাবি করেছে, তারা শেখ হাসিনার সরকারের একাধিক সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যের সঙ্গে কথা বলেছে। তাদের মধ্যে আছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত।


    মোহাম্মদ এ আরাফাত দ্য প্রিন্টকে বলেছেন, এখন তার জীবনে কোনো নির্দিষ্ট ঘুম বা বিশ্রামের সময় নেই। প্রতিটি দিন শুধু কাজেই কেটে যাচ্ছে। তার ভাষায়, মাঝে মাঝে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের পার্থক্য বুঝে উঠতে পারি না।


    ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে প্রথমবার প্রকাশ্যে দেখা যায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামালকে। সেই সময় কলকাতার নিক্কো পার্কে তাকে দেখা গেলে মুহূর্তেই খবরটি ভাইরাল হয়। সাধারণ মানুষ বিস্মিত হয়ে পড়ে, কীভাবে তিনি দেশ ত্যাগ করলেন, অথচ কেউ জানলো না।


    এ নিয়ে দেশীয় প্রশাসন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে। পুলিশের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক শাহ আলম জানান, ইমিগ্রেশন রেকর্ডে কামালের বিদেশযাত্রার কোনো প্রমাণ নেই।


    নিউ টাউনে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের এক সাবেক এমপি দ্য প্রিন্ট–কে জানান, কামাল এখন সেখানকার একটি অ্যাপার্টমেন্টে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে থাকছেন। তার দলীয় সহকর্মীরা নিয়মিত তার সঙ্গে দেখা করেন। তিনি দিল্লিতেও যান বৈঠকে অংশ নিতে এবং ভারতের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করতে। কামালের ছেলে সাফি মুদ্দাসসির খান জ্যোতি ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকায় গ্রেপ্তার হন।


    ওই সাবেক এমপি আরও বলেন, কামাল এখন দলের নেতাকর্মীদের মনোবল ধরে রাখার দায়িত্বে আছেন। নেতাদের বারবার বলছেন- তারা এখানে বিশ্রাম নিতে আসেননি, এসেছেন টিকে থাকতে ও ভবিষ্যতের রাজনীতির জন্য প্রস্তুত হতে।


    দ্য প্রিন্ট আরও জানিয়েছে, পলাতক আওয়ামী নেতাদের কেউ কেউ এখন একটি ‘গোপন পার্টি অফিস’ চালাচ্ছেন বলে গুজব ছড়ালেও, নিউ টাউনে অবস্থানরত এক সাবেক এমপি বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, তারা একটি নির্দিষ্ট জায়গায় বসেন বটে, কিন্তু সেটিকে অফিস বলা ঠিক হবে না। ওই জায়গাটিকে তারা শুধু ‘দলীয় মিলনকেন্দ্র’ হিসেবে ব্যবহার করেন।


    কক্সবাজারের এক সাবেক এমপি দ্য প্রিন্টকে জানান, তার প্রতিদিনের রুটিন এখন অনেকটা নির্দিষ্ট ছন্দে বাঁধা। তিনি সকাল বেলা উঠে ফজরের নামাজ পড়েন, এরপর রুমমেটের সঙ্গে স্থানীয় জিমে যান। একজন ভারোত্তোলন করেন, আরেকজন পিলাটেস ক্লাসে ভর্তি হয়েছেন।


    তারা দুজন ১৫০০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাটে থাকেন। ভাড়া মাসে ৩০ হাজার টাকা। রাঁধুনি না থাকলে নিজেরাই রান্না করেন। সেই এমপি বলেন, রান্নায় আমি খুব একটা পারদর্শী নই। আমার ফ্ল্যাটমেটও না। তবে যেদিন রান্না করতে হয়, সেদিন ভিডিও কলে ঢাকায় আমার স্ত্রীর সাহায্য নেই। দুপুরে কিছুটা বিশ্রামের পর সন্ধ্যায় তারা ভার্চুয়াল মিটিংয়ে অংশ নেন। মিটিং হয় কলকাতা, দিল্লি, বাংলাদেশ এবং অন্যান্য দেশের আওয়ামীপন্থি কর্মীদের সঙ্গে।


    প্রতিবেদনে আরও উঠে এসেছে, শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে যুক্ত কিছু সাবেক কূটনীতিকও দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তাদের একজন হারুন আল রশিদ। আগে তিনি ছিলেন মরক্কোয় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত। সরকার পতনের পর তার পাসপোর্ট বাতিল করা হয়।


    বর্তমানে তিনি কানাডার অটোয়ায় বসবাস করছেন। সেখানে তিনি লেখালেখিতে সময় কাটাচ্ছেন। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে লিখেছেন একটি ডিসটোপিয়ান উপন্যাস। তিনি জানান, বাড়িতে নিয়মিত বই পড়েন, সীমিত বাজেট মেনে চলেন এবং বেশি দূরের কোনো কাজ নিতে চান না।


    আরেক সাবেক এমপি দ্য প্রিন্টকে জানান, তিনি এখন একা থাকেন কলকাতার একটি ২-বেডরুমের ফ্ল্যাটে। এই সময়টাকে নিজের জন্য কাজে লাগাচ্ছেন। চুল পাতলা হয়ে যাওয়ায় সম্প্রতি তিনি দিল্লির একটি ক্লিনিকে হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট করিয়েছেন। তার ভাষায়, চুল উঠে যাচ্ছিল। এখন নতুন করে মাথায় চুল উঠছে দেখে মনে হচ্ছে, অন্তত কিছু একটা তো ভালো হলো।


    শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাদের এই জীবনযাপন এখন প্রশ্নের মুখে। কেউ এখনও আশা ছাড়েননি ফেরার। আবার কেউ এই সময়কে দেখছেন ব্যক্তিগত পুনর্গঠনের সুযোগ হিসেবে। তবে আপাতত, তারা কেউই দেশে ফেরার মতো পরিবেশ দেখছেন না- এটিই স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে দ্য প্রিন্টের প্রতিবেদনে।


    প্রাসঙ্গিক
      মন্তব্য

      স্থায়ী কমিটির বৈঠক

      জুলাই সনদের যে ৩ দফায় আপত্তি বিএনপির

      অনলাইন ডেস্ক
      ২০ আগস্ট, ২০২৫ ১০:৫২
      অনলাইন ডেস্ক
      জুলাই সনদের যে ৩ দফায় আপত্তি বিএনপির

      জুলাই সনদের চূড়ান্ত খসড়ার তিনটি দফায় আপত্তি জানিয়েছে বিএনপি। এগুলো হচ্ছে-২, ৩ ও ৪ নম্বর দফা। সনদের চূড়ান্ত খসড়ায় বেশকিছু অসামঞ্জস্য চোখে পড়েছে দলটির নীতিনির্ধারকদের। এসব পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার-বিশ্লেষণ করে দেখার জন্য দলের তিন সদস্যকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা জুলাই সনদের চূড়ান্ত খসড়া পর্যালোচনা করে ঐকমত্য কমিশনে মতামত জানাবেন। 


      এ নিয়ে সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনা শেষে বলা হয়, সরকার ঘোষিত সময়ে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সংশয় দেখছে না বিএনপি। তবে নির্বাচনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে দেশি-বিদেশি শক্তির ষড়যন্ত্র চলছে। নির্বাচনের স্বার্থে সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে চান তারা। এরই ধারাবাহিকতায় জুলাই সনদেও স্বাক্ষরে আগ্রহী দলের শীর্ষ নেতারা।


      গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন। রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হয়ে চলে ১১টা পর্যন্ত। 


      এ সময় উপস্থিত ছিলেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন (ভার্চুয়ালি), মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (ভার্চুয়ালি), আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী (ভার্চুয়ালি) সালাহউদ্দিন আহমদ, বেগম সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ (বীরবিক্রম) ও ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। 


      বৈঠক সূত্র জানায়, ২৮ পৃষ্ঠার এই খসড়া পুঙ্খানুপুঙ্খ বিচার-বিশ্লেষণ করতে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদসহ তিন নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা এ নিয়ে কাজও শুরু করেছেন। বৈঠকে নেতাদের পর্যালোচনায় উঠে আসে-সনদ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারনামায় জুলাই সনদকে সংবিধানের ওপরে স্থান দেওয়া হয়েছে। ঐকমত্য কমিশনে ধারাবাহিক বৈঠকে আলোচনা হয়নি-এমন কিছু বিষয়ও এতে রাখা হয়েছে। এছাড়া কিছু বিষয় সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয়নি। এ সময় বলা হয়, আগামী সংসদ গঠনের ২ বছরের মধ্যে সংবিধান সংক্রান্ত সংশোধনী পাশ করার কথা প্রথমে বলা হলেও চূড়ান্ত খসড়ায় তা নেই।


      সূত্রমতে, জুলাই সনদের পূর্ণাঙ্গ খসড়া নিয়ে সামগ্রিকভাবে খুব বেশি আপত্তি নেই বিএনপির। তবে জুলাই সনদে উত্থাপিত ৮৪ দফার মধ্যে যেগুলোয় সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে, সেসবের বাস্তবায়ন কীভাবে হবে; যেসব বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট এসেছে, সেগুলোর সুরাহা কীভাবে হবে এবং সংবিধান সংস্কারবিষয়ক যেসব কথা এসেছে, এর বাস্তবায়ন কীভাবে হবে-এসবের নিষ্পত্তি জরুরি। নোট অব ডিসেন্ট প্রসঙ্গও পর্যালোচনায় উঠে আসে।


      এ সময় বলা হয়, শুধু বিএনপিই নয়, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল কিছু বিষয়ে ভিন্নমত দিয়েছে। নারী আসন নিয়ে বিএনপির প্রস্তাব ছিল ৩০০ আসনের মধ্যে অন্তত ৫ শতাংশ আসনে নারীদের মনোনয়ন দেওয়া, যেখানে তারা সরাসরি ভোটের নির্বাচনে অংশে নেবেন। কিন্তু অন্য দলগুলো এ প্রস্তাবে দ্বিমত করেছে। এছাড়া সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭০-এর সংস্কার প্রসঙ্গে বিএনপি চারটি ক্ষেত্র যুক্ত করতে চেয়েছে, যা নিয়েও মতবিরোধ রয়েছে। বিএনপি যেসব মৌলিক প্রস্তাবে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছে, সেগুলোয় ছাড় দিতে চায় না। এখানে বিএনপি আগের অবস্থানেই থাকতে চায়। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন ব্যক্তি একই সঙ্গে দলীয় প্রধানের পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন না, নিম্নকক্ষের নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষের ১০০ জন সদস্য নির্বাচিত হবেন-এসব অন্যতম।


      বিএনপি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার কিছু ভারসাম্য আনতে রাজি। তবে এমন ভারসাম্য চায় না, যেখানে সরকারপ্রধান তথা প্রধানমন্ত্রীর হাতে পর্যাপ্ত ক্ষমতা থাকবে না। দলটি মনে করে, সার্বিক বিবেচনায় সংসদীয় গণতন্ত্রে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হাতে পর্যাপ্ত ক্ষমতা থাকা প্রয়োজন। রাষ্ট্রপতিকে ব্যাপকভাবে ক্ষমতায়িত করা হলে সংসদীয় গণতন্ত্র তেমন অর্থবহ থাকবে না। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রীর হাতে যথেষ্ট ক্ষমতা না থাকলে সংসদীয় গণতন্ত্র অকার্যকর হয়ে পড়বে। জুলাই জাতীয় সনদের পূর্ণাঙ্গ খসড়ায় রাজনৈতিক দলগুলো কোন কোন প্রস্তাবে একমত হয়েছে এবং কোন প্রস্তাবে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছে, সেটা উল্লেখ করা হয়েছে। বিএনপিসহ কোন কোন দল কোন প্রস্তাবে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছে, উল্লেখ আছে সেটিও। 


      জুলাই জাতীয় সনদ সংবিধানের ওপরে প্রাধান্য পেলে একটি খারাপ নজির স্থাপন হবে-এমন মন্তব্যও করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। তারা বলেন, ‘এখানে বলা হয়েছে, জুলাই সনদের সবকিছু সংবিধান এবং কোনো আইনি ভিন্নতা থাকলেও এই সনদের বিধান, প্রস্তাব, সুপারিশ প্রাধান্য পাবে। এছাড়া দ্বিতীয় দফার আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে অঙ্গীকারনামায় সনদকে সংবিধানের ওপরে রাখা হয়েছে। কোনো ডকুমেন্ট সংবিধানের ওপরে হতে পারে না। আমরা সংবিধানের মধ্যে আইনি বৈধতা এবং সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় কীভাবে এই সমঝোতা দলিলটিকে বাস্তবায়ন করতে পারি, সেই চিন্তা করতে হবে। এখন যদি বলা হয় এই দলিলের সবকিছু সংবিধানের ওপরে প্রাধান্য পাবে, তাহলে এটা ভবিষ্যতের জন্য খারাপ নজির সৃষ্টি হবে। এটা করা ঠিক হবে না।’


      সালাহউদ্দিন আহমদ দুপুরে সাংবাদিকদের জানান, চূড়ান্ত খসড়ায় ‘বলা হয়েছে-এই সনদের বিধিবিধানের ব্যাখ্যা মীমাংসার এখতিয়ার বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের ওপর ন্যস্ত থাকবে। আপিল বিভাগের ওপর কি এমন কোনো আইন ন্যস্ত করতে পারি? কোনো মামলার রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট ডিভিশন থেকে আপিল বিভাগে আপিল হয়। তা ছাড়াও সাংবিধানিক কিছু বিষয়ে আর্টিকেলের ১০৩ অনুসারে আপিল বিভাগে যাবে। জুলাই সনদ আইনও নয় এবং রায়ও নয়।


      এখানে ব্যাখ্যার জন্য আপিল বিভাগে কে পাঠাবে? কীসের ভিত্তিতে যাবে? সেই প্রশ্নগুলো আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা একটা সমঝোতার দলিলের স্বাক্ষর করলাম, সেখানে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য আপিল বিভাগের কোনো এখতিয়ার আছে কি না, এই এখতিয়ারটা কী? এটা খুঁজে বের করতে হবে।’


      জুলাই সনদের বৈধতা নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না-এই প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না, এই এখতিয়ার কি আমাদের সংবিধান কাউকে দিয়েছে? আমার মনে হয়, এটা সঠিকভাবে উচ্চারিত হয়নি। এটা অন্য কোনোভাবে হয়তো লেখা যেত। আদালতে প্রশ্ন তুলতেই পারেন কেউ। আর্টিকেল ৩১ অনুসারে আইনের আশ্রয় নেওয়া যে কোনো নাগরিকের অধিকার। আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না, এ বিষয়টা এভাবে উল্লেখ করা ঠিক হবে না।’


      এদিকে বুধবার (২০ আগস্ট) বিকাল ৪টার মধ্যে ঐকমত্য কমিশনের কার্যালয়ে জুলাই জাতীয় সনদের পূর্ণাঙ্গ সমন্বিত খসড়ার বিষয়ে দলীয় মতামত জমা দেয়ার সময়সীমা নির্ধারিত রয়েছে। তবে খসড়া পর্যালোচনার ক্ষেত্রে একদিন বেশি সময় নিতে পারে বিএনপি। সেক্ষেত্রে বৃহস্পতিবার ঐকমত্য কমিশনে মতামত দেওয়ার কথা রয়েছে।


      প্রাসঙ্গিক
        মন্তব্য

        পাঁচ বছরে ২৫ কোটি গাছ লাগাবে বিএনপি, থাকবে খাল খনন কর্মসূচিও: তারেক রহমান

        অনলাইন ডেস্ক
        ১৯ আগস্ট, ২০২৫ ২১:৫
        অনলাইন ডেস্ক
        পাঁচ বছরে ২৫ কোটি গাছ লাগাবে বিএনপি, থাকবে খাল খনন কর্মসূচিও: তারেক রহমান

        বিএনপি আগামী দিনের সকল রাজনৈতিক পরিকল্পনা ও কর্মসূচি সাজাচ্ছে জানিয়ে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ক্ষমতায় গেলে পাঁচ বছরে অন্তত ২৫ কোটি গাছ লাগানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া খাল খনন কর্মসূচিও পুনরায় গ্রহণ করা হবে।


        মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) রাজধানীর বাংলাদেশ চীন মৈত্রী আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনায় সভায় ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে এ কথা বলেন তিনি।


        নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে চাইলে প্রচলিত ধারার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দূরত্ব তৈরি হলে রাষ্ট্র এবং রাজনীতিতে পতিত, পরাজিত, পলাতক ফ্যাসিস্ট চক্রের পুনর্বাসনের পথ সহজ হয়ে উঠবে। তাই গণতন্ত্রকামী জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।


        নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে কোনও কোনও রাজনৈতিক দলের বক্তব্যে জনগণের মনে নানা জিজ্ঞাসা তৈরি হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে জনগণকে শক্তিশালী করতে নির্বাচনই হচ্ছে অন্যতম প্রধান মাধ্যম। নানারকম শর্ত আরোপ করে জনগণের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার পথে বাধা সৃষ্টি হলে গণতন্ত্রে উত্তরণের পথ সংকটে পড়বে।


        এসময় তিনি বলেন, ইতিহাসের নৃশংসতম ফ্যাসিস্টের পলায়নের পর ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির নিত্যনতুন ইস্যু নিয়ে অহেতুক বিতর্কে লিপ্ত হওয়া শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি অবমাননা। সংবিধান কিংবা লিখিত বিধিবিধান দিয়ে ফ্যাসিবাদ ঠেকানো যায়না, জনগণকে রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী করার বিকল্প নেই বলেও জানান তারেক রহমান।

        প্রাসঙ্গিক
          মন্তব্য

          পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের পক্ষে নয় বিএনপি: ফখরুল

          অনলাইন ডেস্ক
          ১৯ আগস্ট, ২০২৫ ২০:৩০
          অনলাইন ডেস্ক
          পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের পক্ষে নয় বিএনপি: ফখরুল

          বিএনপি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের পক্ষে নয় বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার বিকেলে থাইল্যান্ড থেকে চিকিৎসা শেষে রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে তিনি এই মন্তব্য করেন।


          ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য জাতীয় নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। দেশের মানুষ নির্বাচন চায়, সংকট নিরসনের একমাত্র পথ দ্রুত নির্বাচন। যারা সংস্কার চাচ্ছেন না, সেটা তাদের দলের ব্যাপার।


          ডাকসু নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, সকলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হোক এটাই প্রত্যাশা।


          এর আগে গত ১৩ আগস্ট চোখের অপারেশন পরবর্তী ফলোআপের জন্য সস্ত্রীক থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ওইদিন থাই এয়ারওয়েজের একটি বিমানে ঢাকা ছাড়েন এই দম্পতি।

          প্রাসঙ্গিক
            মন্তব্য
            সর্বশেষ সংবাদ
              সর্বাধিক পঠিত