সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ
সারজিসের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতার ১০ কোটি টাকার মানহানির মামলা

গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যাকাণ্ডে বিএনপিকে জড়িয়ে সামাজিক মাধ্যমে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছেন বাসন থানা বিএনপির সভাপতি তানভীর সিরাজ।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গাজীপুর অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে করা মামলায় ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে।
মামলার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সিদ্দিকুর রহমান বলেন, মামলার শুনানি শেষে বিচারক সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সারজিস বেশ কয়েকবার বিএনপিকে নিয়ে এমন অপপ্রচার চালিয়েছেন। বিষয়টি দলের কর্মীদের মনে আঘাত করেছে। আশা করি তিনি এখন থেকে আরও সচেতন হবেন।
মামলার বাদী তানভীর সিরাজ অভিযোগ করে বলেন, “অপরাধী চক্রের ভিডিও ধারণ করায় সাংবাদিক তুহিনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। কিন্তু সারজিস আলম না জেনেই ফেসবুকে এই ঘটনায় বিএনপিকে জড়িয়ে ভিত্তিহীন ও মানহানিকর বক্তব্য দিয়েছেন, যা দলের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন করেছে। ইতোমধ্যে গাজীপুর মহানগর পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করে স্পষ্ট করেছেন যে, এতে কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই। দলের নির্দেশনা অনুযায়ী আমি এই মামলা করেছি এবং আশা করি ন্যায়বিচার পাব।”
মামলার পটভূমিতে জানা যায়, গত ৭ আগস্ট রাত ৯টা ৫৫ মিনিটে সারজিস আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে লেখেন—
“গাজীপুরে এক বিএনপি নেতার চাঁদাবাজি নিয়ে নিউজ করায় দুপুরে আনোয়ার নামের এক সাংবাদিককে ইট দিয়ে থেঁতলে দেয় বিএনপির কর্মীরা। দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের সাংবাদিক তুহিনকে গাজীপুরের চৌরাস্তায় চা দোকানে রাতে জ** করে হ*ত্যা করেছে চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীরা! আনোয়ার এবং তুহিন বন্ধু ছিলেন।”
পরদিন ৮ আগস্ট সকাল ১০টা ৩৯ মিনিটে তিনি পোস্টটি সম্পাদনা করে ‘চাঁদাবাজ’ শব্দটি বাদ দিয়ে ‘ছিনতাইকারী’ শব্দ ব্যবহার করেন।
হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেন জামায়াত আমির

হার্টের চিকিৎসার জন্য দীর্ঘ ১০ দিন হাসপাতালে থাকার পর বাসায় ফিরলেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসায় রওনা দেন। এ সময় দলের জামায়াত আমিরের গাড়ি বহরে ও রাস্তার দুই পাশে দলের বহু নেতাকর্মী উপস্থিত হন।
এর আগে গত ২ আগস্ট হাসপাতালটিতে ওপেন হার্ট সার্জারির মাধ্যমে জামায়াত আমিরের ৪টি ব্লকের বাইপাস করা হয়। বিশিষ্ট কার্ডিয়াক সার্জন অধ্যাপক জাহাঙ্গীর কবিরের তত্ত্বাবধানে সফল এই অপারেশন করা হয়। পরে তিনি ক্রমেই সুস্থ হয়ে ওঠেন।
মঙ্গলবার জামায়াত আমিরের হাসপাতাল ছাড়ার সময় সেখানে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান ভালো আছেন। তিনি এখন বাসায় যাবেন। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী বাসায় আরো দুই সপ্তাহ তার বিশ্রামের প্রয়োজন হবে। তবে এ সময় তিনি আমাদেরকে পরামর্শ দিতে পারবেন। তিন সপ্তাহ পর আবার দেশ-জাতির জন্য সক্রিয় হবেন বলে আমরা আশা করি।
ডা. তাহের বলেন, হাসপাতালে থাকার সময় জামায়াত আমিরকে দেখার জন্য অনেক ব্যক্তি আসেন। সবাইকে দেখার সুযোগ দেয়া সম্ভব হয়নি। সবার প্রতি দলের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তিনি বলেন, আমরা জামায়াত আমিরের পক্ষ থেকে দেশবাসীকে সালাম জানাচ্ছি এবং তার সুস্থতার জন্য আরো দোয়া কামনা করছি। তার নেতৃত্বে যাতে একটি পজিটিভ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারি সেই দোয়াও চাচ্ছি।
প্রেস ব্রিফিংয়ে ইউনাইটেড হাসপাতালের ডা. শহীদ আহমেদ চৌধুরী, জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ও সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বক্তব্য রাখেন।
এ সময় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা‘ছুম, মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ড. হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আব্দুল হালিম ও অ্যাডভোকেট মোয়াযযম হোসাইন হেলালম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ, মোবারক হোসাইন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সারজিস আলমের বিরুদ্ধে বিএনপির মামলা

সাংবাদিক তুহিন হত্যায় বিএনপিকে জড়িয়ে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে এনসিপির উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে গাজীপুর কোর্টে মামলা দায়ের করেন বাসন থানা বিএনপির সভাপতি তানভীর সিরাজ। মানহানির জন্য ১০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরন চাওয়া হয়েছে।
তানভীর সিরাজ বলেন, ‘অপরাধী চক্রের ভিডিও ধারণ করায় সাংবাদিক তুহিনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। কিন্তু এসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম না জেনেই ফেসবুকে এই ঘটনায় বিএনপিকে জড়িয়ে নানা অপপ্রচার চালিয়েছে, যা দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে।
সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র
খুলনায় শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা

অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে খুলনায় রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
সোমবার (১১ আগস্ট) খুলনার সোনাডাঙ্গা থানায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এসআই বিধান চন্দ্র রায় বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
খুলনার সোনাডাঙ্গা মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন– খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট এমএম মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলাল উদ্দিন, শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল, এস এম কামাল হোসেন ও অ্যাডভোকেট পারভেজ আলম খান। এ ছাড়া মামলায় আরও ৩০/৪০ জনকে অজ্ঞাত পরিচয়ের আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ২২ এপ্রিল খুলনা মহানগরীর ময়লাপোতা থেকে সন্দেহজনকভাবে আটক করা হয় আওয়ামী লীগ নেতা এম এম মুজিবুর রহমানকে। তার কাছ থেকে জব্দ করা মোবাইল থেকে জানা যায় হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম ও জুম অ্যাপসের মাধ্যমে ‘তেরখাদা উপজেলা আওয়ামী লীগ’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’, ‘বিজয় একাত্তর’ ও ‘জয় বাংলা আমার প্রাণ’ গ্রুপের মাধ্যমে সরকার উৎখাতের জন্য ষড়যন্ত্র করা হয়। কেএমপি থেকে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রাষ্ট্রদ্রোহর মামলার অনুমতি চাওয়া হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। ৪ আগস্ট রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার অনুমতি পায় কেএমপি। সোমবার এ ঘটনায় সোনাডাঙ্গা থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
গত ১৬ বছরে যারা নির্যাতিত ছিল আজকে জালেম হয়ে উঠছে: ভিপি নুর

"গত ১৬ বছরে যারা নির্যাতিত, নিপীড়িত, মজলুম ছিল, আজকে তারা জালেম হয়ে উঠছে" বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। সোমবার (১১ আগস্ট) বিকেলে রাজশাহী জেলা ও মহানগর ছাত্র, যুব ও গণঅধিকার পরিষদের আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথি বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।
এসময় তিনি তিনি বলেন, গত ১৬ বছরে যারা নির্যাতিত, নিপীড়িত, মজলুম ছিল, আজকে তারা জালেম হয়ে উঠছে। বিভিন্ন এলাকায় দখল বাজি, চাঁদাবাজি, মানুষের উপর জুলুম, নির্যাতন এমনকি অন্য দলের লোকেরা এলাকায় থাকতে হলে তাদের কাছে থেকে মাশেয়ারা নিচ্ছে। আওয়ামী লীগ এটা করেছিল। ছাত্রলীগ, যুবলীগ এটা করেছিল। সীমান্ত দিয়ে কাপড় ছাড়া পালিয়েছে। আমাদের একজন প্রধানমন্ত্রী জুতা পড়ার সময় পান নাই। দেশের প্রধান বিচারপতি, বায়তুল মোকাররমের খতিবসহ পালিয়েছে।
তিনি বলেন, এই উদাহরণগুলো থাকার পরেও যদি কেউ শিক্ষা না নেয়, তাহলে তাদের জন্যও ভবিষ্যতে নিষ্ঠুর পরিণতি অপেক্ষা করছে। তাই আমরা সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বলতে চাই, এদেশের মানুষ প্রমাণ করেছে তারা পরিবর্তনের পক্ষে। কাজেই দশটা হোন্ডা, বিশটা গন্ডা, শোডাউন দিয়ে, মিছিল করে, মিটিং করে, হুমকি দিয়ে, প্রশাসন দিয়ে ভোট কেন্দ্র দখল করে, কেউ মন্ত্রী হবেন এমপি হবেন, সরকার গঠন করবেন সেই ইতিহাস ভুলে যান।
তিনি একটি গবেষণা তুলে ধরে আরো বলেন, বাংলাদেশের মাত্র ১২% মানুষ বিএনপিকে, ১০% মানুষ জামায়াত কে, ১৪% মানুষ বলতে চায় না কাকে ভোট দিবে, বাকি ৪৮% মানুষ এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি তারা কাকে ভোট দিবে। তিনি বলেন, তার মানে এটা পরিষ্কার ১৪% মানুষ বিএনপি, জামায়াত কাউকে ভোট দিতে চায় না, আর ৪৮% মানুষের সিদ্ধান্ত আমরা জানি না। এই সম্ভাবনাময় পরিস্থিতিতে যারা ট্রাক মার্কায় নির্বাচন করবেন তারা যদি সাধারণ মানুষের কাছে যেতে পারেন, তাদের মাঝে আপনাদের গ্রহণযোগ্যতা করে নিতে পারেন, তাহলে আগামীতে মানুষ আপনাদের গ্রহণ করবে।
এছাড়াও আয়োজিত এই গণসমাবেশে দলটির কেন্দ্রীয় ও রাজশাহী জেলা ও মহানগর ছাত্র, যুব ও গণঅধিকার পরিষদের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য