মাই টিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথী ৫ দিনের রিমান্ডে

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আসাদুল হক বাবু হত্যা মামলায় বেসরকারি টিভি চ্যানেল মাইটিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথীর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়া উদ্দিন আহমেদ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এদিন তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) খান মো. এরফান তার সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, মামলার এজাহারনামীয় ১ নং আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার আওয়ামী সরকারের মদদপুষ্ট, আজ্ঞাবহ হয়ে মাই টিভির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হয়ে মো. নাসির উদ্দিন সাথীর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অংশগ্রহণে উসকানিমূলক বক্তব্য ও প্রচার কার্যক্রম চালিয়ে ছাত্র জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। তার এমন উসকানিমূলক কার্যক্রমে অনুপ্রাণিত হয়ে স্থানীয় আওয়ামী সন্ত্রাসী, রাজনৈতিক নেতা, কর্মী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বিচারে গুলিবর্ষণে মামলার ডিসিষ্ট আসাদুল হক বাবু মৃত্যুবরণ করে বলে তদন্তে প্রকাশ পায়। নাসির উদ্দিন সাথী মাই টিভির চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর পদে মহান সাংবাদিকতার পেশায় গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োজিত ও দায়িত্বে থেকে তার অনৈতিক প্রভাব ও প্রতিপত্তিতে দলীয় এবং ব্যক্তিগত হীনস্বার্থে তদানীন্তন আওয়ামী সরকারককে আজ্ঞাবহ হয়ে বিরোধী দলমতকে প্রত্যাখান করে উদ্দেশ্যমূলক হিংসাত্মক এহেন কার্যক্রম সংগঠিত করায় মামলার প্রকৃত ঘটনা, অজ্ঞাতনামা আসামিদের পরিচয় শনাক্তকরণ ও রহস্য উদঘাটনের জন্য তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন। এসময় আসামিপক্ষে রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে রিমান্ডের এ আদেশ দেন। এর আগে রোববার গুলশান থেকে নাসির উদ্দিন সাথীকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
আদালত সূত্রে জানা যায়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানাধীন পাকা রাস্তার ওপর আন্দোলনে অংশ নেন মো. আসাদুল হক বাবু। দুপুর আড়াইটার দিকে আসামিদের ছোঁড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন আসাদু। চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গত বছরের ৩০ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের বাবা জয়নাল আবেদীন।
এ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৫ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় নাসির উদ্দিন ২২ নাম্বার এবং তার ছেলে তৌহিদ আফ্রিদি ১১ নাম্বার এজাহারনামীয় আসামি।
তৌহিদ আফ্রিদিকে গ্রেপ্তার করতে ২৬ ঘণ্টার আলটিমেটাম

কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদিকে গ্রেপ্তার করতে সরকারকে ২৬ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে জুলাই রেভল্যুশনানি অ্যালায়েন্স (জেআরএ)। সংগঠনটির জানিয়েছে, আফ্রিদি শুধু বর্তমান সরকারের সময়কালের নয়, ১৫ আগস্টের আওয়ামী লীগ ক্যাম্পেইনের সময়ও অর্থ সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে জানানো হয়েছে।
রোববার (১৭ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টা ১১ মিনিটে জেআরএ-এর ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, ‘স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মহোদয় এবং ডিএমপি কমিশনার মহোদয়, জুলাই রেভ্যুলেশনারি অ্যালায়েন্স, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (পুনাব) এবং জুলাই ঐক্যসহ অন্যান্য জুলাইয়ের সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে আফ্রিদিকে গ্রেপ্তারের জন্য আর মাত্র ২৬ ঘণ্টা বাকি। আফ্রিদি বাংলাদেশেই আছে। এই ছবিটি গতকালের। কোনো নাটক চলবে না, সোজাসাপ্টা গ্রেপ্তার করতে হবে।
গ্রেপ্তারের এই আলটিমেটাম নিয়ে সরকার বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
এদিকে রোববার তৌহিদ আফ্রিদির বাবা মাইটিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যাত্রাবাড়ী থানায় দায়ের করা হত্যা মামলায় নাসির উদ্দীনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর যাত্রাবাড়ী থানায় মাইটিভির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সাথী ও তার ছেলে তৌহিদ আফ্রিদি এবং শেখ হাসিনাসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়। মামলাটি করেন মো. জয়নাল আবেদীন নামে এক ব্যক্তি। এ মামলায় প্রধান আসামি করা হয় স্বৈরশাসক শেখ হাসিনাকে। আসামির তালিকায় ২ নম্বরে রয়েছেন সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং ৩ নম্বরে সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন।
মামলায় ১১ নম্বর আসামি তৌহিদ আফ্রিদি এবং ২২ নম্বর আসামি তার বাবা নাসির উদ্দিন সাথী। এ হত্যা মামলায় মোট ২৫ জনকে আসামি করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বিভিন্ন দূতাবাস থেকে রাষ্ট্রপতির ছবি সরানোর নেপথ্যে

বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাসগুলো থেকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের ছবি সরিয়ে ফেলা হয়েছে।পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মৌখিক নির্দেশে এমনটি করেছে দূতাবাসগুলো। হঠাৎ সিটিং রাষ্ট্রপতির ছবি সরানো নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে— এই নির্দেশনা কোত্থেকে এলো। কোনো মৌখিক সিদ্ধান্তে দূতাবাস থেকে রাষ্ট্রপ্রধানের ছবি সরানো যায় কিনা সেটি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে হঠাৎ রাষ্ট্রপতির ছবি নামানোর এই নির্দেশের কারণ কী তা সরকারের তরফে স্পষ্ট করে বলা হচ্ছে না। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনার আলোকে বিদেশে বাংলাদেশ মিশনে রাষ্ট্রপতির ছবি নামানো হয়। তবে এই ব্যাপারে কোনো লিখিত নির্দেশনা জারি করেনি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে একটি সমন্বয়হীনতা দৃশ্যমান।
ছবি সরানোর বিষয়ে একজন উপদেষ্টার আগ্রহের বিষয়টি গণমাধ্যমে এসেছে। তবে তিনি তা অস্বীকার করেছেন।
এদিকে মৌখিক নির্দেশনা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। নানা রকমের গুজবও ছড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাষ্ট্রপতির ছবি সরানোর বিষয়ে সরকারের তরফ থেকে বিধিবিধান উল্লেখ করে প্রজ্ঞাপন জারি হলে অনেক অস্পষ্টতা ও বিতর্ক এড়ানো যেত।
এদিকে রাষ্ট্রপ্রধানের ছবি সরিয়ে ফেলতে হবে এমন কোনো লিখিত নির্দেশনা কোনো দপ্তর কিংবা মিশনকে দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সচিব আজাদ মজুমদার। রোববার রাতে সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, সরকারি দপ্তরে পোট্রেট ব্যবহার শুরু থেকেই অন্তর্বর্তী সরকার নিরুৎসাহিত করছে। অলিখিতভাবে জিরো পোট্রেট নীতি বজায় রেখেছে। তারপরও কেউ কেউ সরকার কিংবা রাষ্ট্রপ্রধানের ছবি নিজ নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করেছে। সেগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে এমন কোনো লিখিত নির্দেশনা কোনো দপ্তর কিংবা মিশনকে দেওয়া হয়নি। তারপরও দেখা যাচ্ছে আজ এটা নিয়ে বাজার গরম করে ফেলা হয়েছে। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করার পর রাজনীতি নিয়ে ঘোঁট পাকানোর সুযোগ কমে আসছে। কাটতি ধরে রাখার জন্য ছোটখাটো অনেক বিষয়কেও এখন তাই পাহাড়সম করে তোলা হচ্ছে।
তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা রোববার বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির ছবি বাংলাদেশের মিশন থেকে সরিয়ে ফেলার জন্য অনেক আগেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মৌখিক নির্দেশনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হয়। এর আলোকে মিশনগুলো থেকে ছবি সরানো হয়েছে।’
এত বড় সিদ্ধান্ত কেন মৌখিকভাবে দেওয়া হলো জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘এ বিষয়ে কোনো কথা না বলাই ভালো।’ মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ অনেক আগে ছবি সরানোর নির্দেশনা দিলেও এত পরে কেন সরানো হলো সে বিষয়ে কর্মকর্তারা কোনো মন্তব্য করেননি।
রিজওয়ানা হাসান অবশ্য সচিবালয়ের দপ্তরে সাংবাদিকদের কাছে এই খবরের সত্যতা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতির ছবি নামানোর বিষয়টি তিনি মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন। উপদেষ্টা এও বলেন যে, রাষ্ট্রপতির ছবি নামানোর কারণে নির্বাচনের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না। ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তবে সূত্রের বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সম্প্রতি সুইজারল্যান্ড সফরে গিয়ে জেনেভায় বাংলাদেশ দূতাবাসে রাষ্ট্রপতির ছবি টানানো দেখতে পান। তখন তিনি ক্ষোভ প্রকাম করে মন্তব্য করেন, ‘বিষয়টি তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানাবেন।’ তিনি দেশে ফেরার পরপরই দূতাবাসগুলোতে রাষ্ট্রপতির ছবি নামানোর মৌখিক নির্দেশনা বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে যায়। রিজওয়ানা হাসান অবশ্য সচিবালয়ের দপ্তরে সাংবাদিকদের কাছে এই খবরের সত্যতা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতির ছবি নামানোর বিষয়টি তিনি মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন। উপদেষ্টা এও বলেন যে, রাষ্ট্রপতির ছবি নামানোর কারণে নির্বাচনের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না। ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে বিষয়টি সম্পর্কে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে যোগাযোগ করা হলে সেখানকার এক কর্মকর্তা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে নির্দেশ দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিব যুগান্তরকে জানান, এটা সরকারি সিদ্ধান্ত। এর বাইরে আর কোনো মন্তব্য তিনি করতে চাননি।
সিনিয়র কূটনীতিক ও আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের অভ্যন্তরে সরকারি দপ্তরে এবং বিদেশে বাংলাদেশের মিশনে রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধানের ছবি টানানো একটি প্রথা। এ বিষয়ে সাংবিধানিক কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। বাংলাদেশের সংবিধানে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টানানোর কথা বলা আছে। তবে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি টানানো কিংবা নামিয়ে ফেলার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ দিয়ে থাকে। ২০০২ সালে প্রজ্ঞাপন জারি করে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি টানানোর জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। সেই নির্দেশনার ধারাবাহিকতায় ছবি টানানো হয়। এবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ছবি নামানোর মৌখিক নির্দেশনা দেওয়ার পর তা বিদেশে বিভিন্ন দূতাবাসে মৌখিকভাবেই জানিয়ে দেওয়া হয়।
১৮ বছর আগে বরখাস্ত ৩২৮ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে পুনর্বহালের নির্দেশ

১৮ বছর আগে বরখাস্ত হওয়া দেশের ৩২৮ জন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে চাকরিতে পুনর্বহারের নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
একইসঙ্গে তাদের চাকরির সকল সুযোগ-সুবিধা ফেরত দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। সোমবার (১৮ আগস্ট) এই বিষয়ে আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তার পর্যবেক্ষণে বলেছে, এই বরখাস্তের সিদ্ধান্ত ছিল অসাংবিধানিক এবং নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা ও সার্বভৌম ক্ষমতার ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ।
আদালতের মতে, একটি সংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে সরকারের হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই।
২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়, দেশের বিভিন্ন উপজেলা নির্বাচন অফিসে কর্মরত ৩২৮ জন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়। অভিযোগ ছিল, তারা দায়িত্ব পালনে অনিয়ম ও পক্ষপাতিত্ব করেছেন।
তবে দীর্ঘ সময়েও এসব অভিযোগের পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ উপস্থাপন করা সম্ভব হয়নি। বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা সেই সময় থেকেই আইনি লড়াই চালিয়ে আসছিলেন।
তৎকালীন বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই রায় প্রদান করেন। আদালত বলেন, এই কর্মকর্তারা কোনো ধরনের নিয়ম ভঙ্গ করেননি। তৎকালীন সময়ে প্রশাসনিকভাবে যেভাবে তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল, তা ছিল অবৈধ ও অন্যায়।
রায়ে আরও বলা হয়েছে, ওই বরখাস্ত আদেশে কোনো নিয়ম মানা হয়নি এবং বিষয়টি ছিল রাজনৈতিক প্রভাবিত ও প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনসহ ১১ প্রকল্পের অনুমোদন, ব্যয় ৯৩৬১ কোটি টাকা

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ১১টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৯ হাজার ৩৬১ কোটি ৯২ লাখ টাকা।
রোববার (১৭ আগস্ট) শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক বৈঠকে প্রকল্পগুলো অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপার্সন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
জানা গেছে, বৈঠকে একনেক ৯ হাজার ৩৬১ কোটি টাকা ব্যয়ে ১১টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৬ হাজার ৬৭৭ কোটি টাকা, প্রকল্প ঋণ ২ হাজার ৪২৮ কোটি ৪ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ২৫৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে নতুন প্রকল্প ৫টি, সংশোধিত প্রকল্প ২টি এবং ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে মেয়াদ বৃদ্ধির ৩টি প্রকল্প রয়েছে।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে- আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রংপুর অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প, বাপবিবোর বিদ্যমান শিল্পসমৃদ্ধ এলাকার ৩৩/১১ কেভি আউটডোর উপকেন্দ্রের আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধন প্রকল্প, বিএমআর অব কেরু অ্যান্ড কোং (বিডি) লি. (২য় সংশোধিত) প্রকল্প, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ স্থাপন প্রকল্প, ৫টি নির্ধারিত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (সিলেট, বরিশাল, রংপুর, রাজশাহী এবং ফরিদপুর) বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট স্থাপন (১ম সংশোধিত) প্রকল্প, ঢাকার আজিমপুর সরকারি কলোনির ভেতরে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বহুতল আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ (জোন-সি) প্রকল্প, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য ২টি বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণ প্রকল্প, ঢাকা এনভায়রনমেন্টাল সাসটেনেবল ওয়াটার সাপ্লাই (তৃতীয় সংশোধিত) ও বান্দরবান পৌরসভা এবং বান্দরবান জেলার ৩টি উপজেলা সদরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে নিরাপদ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন (১ম সংশোধিত) প্রকল্প, চট্টগ্রামের মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপন প্রকল্প, উপজেলা পর্যায়ে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ (দ্বিতীয় পর্যায়) (প্রস্তাবিত প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প।
সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টার নিজস্ব ক্ষমতাবলে এরইমধ্যে অনুমোদিত ৯টি প্রকল্প সর্ম্পকে একনেক সদস্যদের অবহিত করা হয়। প্রকল্পগুলো হচ্ছে- ১. হাতিয়া দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া দ্বীপ শতভাগ নির্ভরযোগ্য ও টেকসই বিদ্যুতায়ন (২য় সংশোধিত), ২. রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগে নেসকোর আওতাধীন এলাকায় স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার স্বাপন (১ম সংশোধিত) প্রকল্প, ৩. বরগুনা জেলার ২টি পৌরসভা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, ৪. তিন পার্বত্য জেলায় দুর্যোগ ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক উন্নয়ন (২য় সংশোধিত) প্রকল্প, ৫. লাঙ্গলবন্দ মহাষ্টমী পুণ্যস্নান উৎসবের অবকাঠামো উন্নয়ন (২য় সংশোধিত), ৬. তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি (২য় সংশোধিত), ৭. সিলেট বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন (২য় সংশোধিত) প্রকল্প, ৮. কপোতাক্ষ নদ ও তৎসংলগ্ন এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ (২য় পর্যায়) (১ম সংশোধিত), ৯. বিদ্যালয় বহির্ভূত কিশোর-কিশোরীদের জন্য দক্ষতা কেন্দ্রিক সাক্ষরতা (২য় সংশোধিত) প্রকল্প।
মন্তব্য