১৮ বছর আগে বরখাস্ত ৩২৮ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে পুনর্বহালের নির্দেশ

১৮ বছর আগে বরখাস্ত হওয়া দেশের ৩২৮ জন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে চাকরিতে পুনর্বহারের নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
একইসঙ্গে তাদের চাকরির সকল সুযোগ-সুবিধা ফেরত দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। সোমবার (১৮ আগস্ট) এই বিষয়ে আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তার পর্যবেক্ষণে বলেছে, এই বরখাস্তের সিদ্ধান্ত ছিল অসাংবিধানিক এবং নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা ও সার্বভৌম ক্ষমতার ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ।
আদালতের মতে, একটি সংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে সরকারের হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই।
২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়, দেশের বিভিন্ন উপজেলা নির্বাচন অফিসে কর্মরত ৩২৮ জন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়। অভিযোগ ছিল, তারা দায়িত্ব পালনে অনিয়ম ও পক্ষপাতিত্ব করেছেন।
তবে দীর্ঘ সময়েও এসব অভিযোগের পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ উপস্থাপন করা সম্ভব হয়নি। বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা সেই সময় থেকেই আইনি লড়াই চালিয়ে আসছিলেন।
তৎকালীন বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই রায় প্রদান করেন। আদালত বলেন, এই কর্মকর্তারা কোনো ধরনের নিয়ম ভঙ্গ করেননি। তৎকালীন সময়ে প্রশাসনিকভাবে যেভাবে তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল, তা ছিল অবৈধ ও অন্যায়।
রায়ে আরও বলা হয়েছে, ওই বরখাস্ত আদেশে কোনো নিয়ম মানা হয়নি এবং বিষয়টি ছিল রাজনৈতিক প্রভাবিত ও প্রশাসনিক ক্ষমতার অপব্যবহার।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনসহ ১১ প্রকল্পের অনুমোদন, ব্যয় ৯৩৬১ কোটি টাকা

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ১১টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৯ হাজার ৩৬১ কোটি ৯২ লাখ টাকা।
রোববার (১৭ আগস্ট) শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক বৈঠকে প্রকল্পগুলো অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপার্সন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
জানা গেছে, বৈঠকে একনেক ৯ হাজার ৩৬১ কোটি টাকা ব্যয়ে ১১টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৬ হাজার ৬৭৭ কোটি টাকা, প্রকল্প ঋণ ২ হাজার ৪২৮ কোটি ৪ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ২৫৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে নতুন প্রকল্প ৫টি, সংশোধিত প্রকল্প ২টি এবং ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে মেয়াদ বৃদ্ধির ৩টি প্রকল্প রয়েছে।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে- আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রংপুর অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প, বাপবিবোর বিদ্যমান শিল্পসমৃদ্ধ এলাকার ৩৩/১১ কেভি আউটডোর উপকেন্দ্রের আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধন প্রকল্প, বিএমআর অব কেরু অ্যান্ড কোং (বিডি) লি. (২য় সংশোধিত) প্রকল্প, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ স্থাপন প্রকল্প, ৫টি নির্ধারিত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (সিলেট, বরিশাল, রংপুর, রাজশাহী এবং ফরিদপুর) বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট স্থাপন (১ম সংশোধিত) প্রকল্প, ঢাকার আজিমপুর সরকারি কলোনির ভেতরে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বহুতল আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ (জোন-সি) প্রকল্প, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য ২টি বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণ প্রকল্প, ঢাকা এনভায়রনমেন্টাল সাসটেনেবল ওয়াটার সাপ্লাই (তৃতীয় সংশোধিত) ও বান্দরবান পৌরসভা এবং বান্দরবান জেলার ৩টি উপজেলা সদরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে নিরাপদ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন (১ম সংশোধিত) প্রকল্প, চট্টগ্রামের মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপন প্রকল্প, উপজেলা পর্যায়ে মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ (দ্বিতীয় পর্যায়) (প্রস্তাবিত প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প।
সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টার নিজস্ব ক্ষমতাবলে এরইমধ্যে অনুমোদিত ৯টি প্রকল্প সর্ম্পকে একনেক সদস্যদের অবহিত করা হয়। প্রকল্পগুলো হচ্ছে- ১. হাতিয়া দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া দ্বীপ শতভাগ নির্ভরযোগ্য ও টেকসই বিদ্যুতায়ন (২য় সংশোধিত), ২. রাজশাহী এবং রংপুর বিভাগে নেসকোর আওতাধীন এলাকায় স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটার স্বাপন (১ম সংশোধিত) প্রকল্প, ৩. বরগুনা জেলার ২টি পৌরসভা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, ৪. তিন পার্বত্য জেলায় দুর্যোগ ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক উন্নয়ন (২য় সংশোধিত) প্রকল্প, ৫. লাঙ্গলবন্দ মহাষ্টমী পুণ্যস্নান উৎসবের অবকাঠামো উন্নয়ন (২য় সংশোধিত), ৬. তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি (২য় সংশোধিত), ৭. সিলেট বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন (২য় সংশোধিত) প্রকল্প, ৮. কপোতাক্ষ নদ ও তৎসংলগ্ন এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ (২য় পর্যায়) (১ম সংশোধিত), ৯. বিদ্যালয় বহির্ভূত কিশোর-কিশোরীদের জন্য দক্ষতা কেন্দ্রিক সাক্ষরতা (২য় সংশোধিত) প্রকল্প।
প্রধান উপদেষ্টা নিজে ক্লিয়ার করেছেন, নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে: রিজওয়ানা

নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন- ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন। সেভাবে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে ইসিকে। ইসিও সেই নির্দেশনা মোতাবেক প্রস্তুতি নিচ্ছে। নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যই অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান- এমনটাই জানিয়ছেন এই উপদেষ্টা।
রোববার (১৭ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। এর আগে একনেকের সভায় অংশ নেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
নির্বাচনের সময় ঘোষণার পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে বিভিন্ন বক্তব্য আসছে সেবিষয়ে সরকারের অবস্থান কী, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, এখন পর্যন্ত ইসিকে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে এবং ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলের হিসেব-নিকেশ আছে, নিজস্ব রাজনীতি আছে। এটার সাথে সরকারের অবস্থা বদলের কোনো সম্পর্ক নেই।
দূতাবাস থেকে রাষ্ট্রপতির ছবি সরানোর বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বিদেশে মিশনগুলো থেকে রাষ্ট্রপতির ছবি সরানোর ব্যাপারে কোনো লিখিত নির্দেশনা আছে বলে জানা নেই। এ বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদেও কোনো আলোচনা বা সিদ্ধান্ত হয়নি।তবে এর সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, সিলেটে পাথর লুটের ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের যোগসাজস ছিল অথবা প্রশাসন নীরব ছিল। এ ঘটনায় প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত হবে।
সরকারের বিবৃতি
রিকশাচালককে কীসের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার, ধানমন্ডি থানার ওসির ব্যাখ্যা তলব

রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ থেকে রিকশাচালক আজিজুর রহমানকে কীসের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা জানতে চেয়ে ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ক্যশৈন্যু মারমার নিকট ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে।
রোববার (১৭ আগস্ট) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ থেকে আটক রিকশাচালক মো. আজিজুর রহমানকে কীসের ভিত্তিতে সন্দেহভাজন হিসেবে একটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা জানতে চেয়ে ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে।
একই সঙ্গে ওই পুলিশ কর্মকর্তার সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড ও বক্তব্যে কোনো অসঙ্গতি রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখার ব্যবস্থা নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।
দায়েরকৃত মামলায় আজিজুর রহমানের সম্পৃক্ততার তদন্ত সম্পন্ন করে সম্প্রতি সংশোধিত সিআরপিসির ১৭৩(এ) ধারা মোতাবেক অতিসত্বর প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আজ জামিন পেয়েছেন রিকশাচালক আজিজুর রহমান।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে ৮ দফা অঙ্গীকারনামায় যা রয়েছে

জাতীয় (জুলাই) সনদ–২০২৫ বাস্তবায়নে ৮ দফা অঙ্গীকারনামাসহ পূর্ণাঙ্গ খসড়া রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠিয়েছে জাতীয় ঐক্যমত কমিশন। এই খসড়ার ভাষায় কোনো শব্দ, বাক্য গঠন বা কোনও বিষয়ে মন্তব্য থাকলে আগামী ২০ আগস্ট বিকেল ৪টার মধ্যে কমিশনের কার্যালয়ে জমা দেওয়া অনুরোধ করা হয়েছে।
শনিবার (১৬ আগস্ট) আনুষ্ঠানিকভাবে খসড়াটি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়। জুলাই সনদে ৮৪টি দফা রয়েছে এবং এগুলো বাস্তবায়নে ৮দফা অঙ্গীকারনামাসহ পূর্ণাঙ্গ খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। সকল পক্ষ স্বাক্ষর দিলেই তা বাস্তবায়ন হবে।
অঙ্গীকারনামায় বলা হয়, যেহেতু বাংলাদেশের সাংবিধানিক কনভেনশনের অংশ হিসাবে ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ হতে ১৯৭২ সালের ৪ঠা নভেম্বর পর্যন্ত দেশে কার্যত কোনো সংবিধান না থাকা সত্ত্বেও ওই সময়ের সব কার্যাবলি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মহান শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১৯৭২ সালের সংবিধানে সন্নিবেশিত করে এর আইনি ও সাংবিধানিক বৈধতা প্রদান করা হয়।
একইভাবে যেহেতু ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর গণঅভ্যুত্থানোত্তর সময়ে প্রধান বিচারপতি পদত্যাগ করে উপ-রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ, অতঃপর অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি পদের দায়িত্ব গ্রহণ এবং পরবর্তীতে প্রধান বিচারপতি পদে ফিরে যাওয়া সংক্রান্ত কোনো আইনি কাঠামো না থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক দল ও জোটসমূহের রূপরেখা ও অঙ্গীকারের ভিত্তিতে ওই ধরনের কার্যাবলিকে বৈধতা দিয়ে পরবর্তী সংসদ গণ-অভ্যুত্থানে প্রদত্ত জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটিয়ে সাংবিধানিক কনভেনশন এবং গণতন্ত্রকে সংহত করে;
সুতরাং উল্লেখিত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, জনগণের ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ এবং সাংবিধানিক কনভেনশন বজায় রেখে ২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে আমরা নিম্নস্বাক্ষরকারীগণ এই মর্মে অঙ্গীকার করছি যে-
১) জনগণের অধিকার ফিরে পাওয়া এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সুদীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে হাজারো মানুষের জীবন ও রক্তদান এবং অগণিত মানুষের সীমাহীন ক্ষয়ক্ষতি ও ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে অর্জিত সুযোগ এবং তৎপ্রেক্ষিতে জন-আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলন হিসেবে দীর্ঘ ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে প্রণীত ও ঐকমত্যের ভিত্তিতে গৃহীত নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দলিল হিসাবে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ এর পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করব।
২) এই রাষ্ট্রের মালিক জনগণ; তাদের অভিপ্রায়ই সর্বোচ্চ আইন এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনগণের অভিপ্রায় প্রতিফলিত ও প্রতিষ্ঠিত হয় রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে, এমতাবস্থায় আমরা রাজনৈতিক দল ও জোটসমূহ সম্মিলিতভাবে দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে জনগণের অভিপ্রায়ের সুস্পষ্ট ও সর্বোচ্চ অভিব্যক্তি হিসাবে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ প্রণয়ন করেছি বিধায় এই সনদের সকল বিধান, নীতি ও সিদ্ধান্ত সংবিধানে অন্তর্ভুক্তকরণ নিশ্চিত করব এবং বিদ্যমান সংবিধান বা অন্য কোনো আইনে ভিন্নতর কিছু থাকলে সেই ক্ষেত্রে এই সনদের বিধান/প্রস্তাব/সুপারিশ প্রাধান্য পাবে।
৩) এই সনদের কোনো বিধান, প্রস্তাব বা সুপারিশের ব্যাখ্যা সংক্রান্ত যে কোনো প্রশ্নের চূড়ান্ত মীমাংসার এখতিয়ার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ওপর ন্যস্ত থাকবে।
৪) ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ ’-এর প্রতিটি বিধান, প্রস্তাব ও সুপারিশ সাংবিধানিক ও আইনগতভাবে বলবৎ হিসেবে গণ্য হবে বিধায় এর বৈধতা, প্রয়োজনীয়তা, কিংবা জারির কর্তৃত্ব সম্পর্কে কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না।
৫) ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ ’-এ বাংলাদেশের সামগ্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা তথা সংবিধান, বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশি ব্যবস্থা ও দুর্নীতি দমন ব্যবস্থার বিষয়ে যেসব প্রস্তাব/সুপারিশ লিপিবদ্ধ রয়েছে সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংশোধন, সংযোজন, পরিমার্জন, লিখন ও পুনর্লিখন এবং বিদ্যমান আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন, পরিবর্তন, পরিমার্জন, লিখন, পুনর্লিখন বা নতুন আইন প্রণয়ন, প্রয়োজনীয় বিধি প্রণয়ন বা বিদ্যমান বিধি ও প্রবিধির পরিবর্তন বা সংশোধন করব।
৬) আমরা ঐকমত্যে স্থির হয়েছি যে, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণের নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম এবং বিশেষত; ২০২৪ সালের অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক তাৎপর্যকে সাংবিধানিক তথা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হবে।
৭) আমরা সম্মিলিতভাবে ঘোষণা করছি যে, রাষ্ট্র ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণ অভ্যুত্থানকালে সংঘটিত সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার, শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান ও শহীদ পরিবারসমূহকে যথোপযুক্ত সহায়তা প্রদান এবং আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনে ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে।
৮) আমরা এই মর্মে একমত যে, জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ এর যে সকল প্রস্তাব/সুপারিশ অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য বলে বিবেচিত হবে সেগুলো কোনো প্রকার কালক্ষেপণ না করেই পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকার ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসমূহ সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করবে।
মন্তব্য