বাংলাদেশ-মালয়েশিয়ার মধ্যে ৫ সমঝোতা ও ৩ নোট বিনিময় সই

বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া পাঁচটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং তিনটি নোট বিনিময় সই হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মালয়েশিয়া সফরের প্রথম দিন পুত্রজায়ায় এসব চুক্তি সই হয়।
প্রথম নোট বিনিময়টি হয় উচ্চশিক্ষা খাতে সহযোগিতার ওপর। এতে স্বাক্ষর করেন মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাতো সেরি উতামা হাজি মোহাম্মদ বিন হাজি হাসান এবং বাংলাদেশের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানবিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
দ্বিতীয় নোট বিনিময়টি কূটনীতিকদের প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত। এতে স্বাক্ষর করেন মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন হাজি হাসান এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
তৃতীয় নোট বিনিময়টি হালাল ইকোসিস্টেমে সহযোগিতা বিষয়ে। এতে স্বাক্ষর করেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের উপমন্ত্রী সেনেটর ড. জুলকিফলি বিন হাসান এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।
পাঁচটি সমঝোতা স্মারকের প্রথমটি প্রতিরক্ষা সহযোগিতা নিয়ে। এতে স্বাক্ষর করেন মালয়েশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী দাতো সেরি মোহাম্মদ খালেদ বিন নরদিন এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
দ্বিতীয় সমঝোতা স্মারকটি তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ, এলএনজি অবকাঠামো, পেট্রোলিয়াম পণ্য ও সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো খাতে সহযোগিতা নিয়ে। এতে স্বাক্ষর করেন মালয়েশিয়ার ভারপ্রাপ্ত অর্থনৈতিক মন্ত্রী দাতুক সেরি আমির হামজা বিন আজিজান এবং বাংলাদেশের জ্বালানি উপদেষ্টা এম ফাওজুল কবির খান।
তৃতীয় সমঝোতা স্মারকটি মালয়েশিয়ার ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ (আইএসআইএস) এবং বাংলাদেশের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস)-এর মধ্যে সহযোগিতা নিয়ে। এতে স্বাক্ষর করেন আইএসআইএস মালয়েশিয়ার চেয়ারম্যান দাতুক প্রফেসর ড. মোহদ ফাইজ আবদুল্লাহ এবং মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান।
চতুর্থ সমঝোতা স্মারকটি মাইমোস সার্ভিসেস এসডিএন বিহাড এবং বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিএমসিসিআই)-এর মধ্যে সহযোগিতা নিয়ে। এতে স্বাক্ষর করেন মাইমোস সার্ভিসেসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফাউজি ইয়াহায়া এবং বিএমসিসিআই-এর শাব্বির আহমেদ খান।
পঞ্চম সমঝোতা স্মারকটি মালয়েশিয়ার ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এনসিসিআইএম) এবং বাংলাদেশের এফবিসিসিআই-এর মধ্যে। এতে স্বাক্ষর করেন এনসিসিআইএম-এর সভাপতি দাতো সেরি এন. গোবালাকৃষ্ণন এবং এফবিসিসিআই প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম ও বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস।
ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত বাংলাদেশ

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত বাংলাদেশ। মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে দ্বিপাক্ষীক বৈঠক শেষে যৌথ বিফিংয়ে এ কথা জানান তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অর্থনীতিসহ সব বিষয়ে ঘুরে দাড়ানোর চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। এসময় তরুণদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেয়ায় মালয়েশিয়া সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেইসাথে দেশটির ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
এছাড়া রোহিঙ্গা সংকট বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, রোহিঙ্গা আমাদের জন্য বড় সংকট। এ সংকট সমাধানে অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনসের (আসিয়ান) সাহায্য চাই।
বাংলাদেশের শান্তি প্রতিষ্ঠায় ড. ইউনুস গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা বলে মন্তব্য করেন মালয়শিয়ান প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহীম। দ্বিপাক্ষীক বৈঠকে প্রতিরক্ষা, জ্বালানি ও হালাল খাদ্যসহ বিভিন্ন খাতে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে দেশটির রাজধানী কুয়ালালামপুরে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকালে সফরের দ্বিতীয় দিনে পুত্রজায়ায় নিজ কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে অভ্যর্থনা জানান আনোয়ার ইব্রাহিম।
প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে বৈঠকের বিষয়টি জানানো হয়।
এর আগে ড. ইউনূস পুত্রজায়ায় পৌঁছালে তাকে সেখানে লাল গালিচা সংবর্ধনা ও গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এরপর একান্ত বৈঠকে মিলিত হন দুই নেতা।
বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হবে।
প্রধান উপদেষ্টার এ সফরে মোট পাঁচটি এমওইউ এবং তিনটি নোট অব এক্সচেঞ্জ সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া ড. ইউনূসের প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায়ও যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা সোমবার (১১ আগস্ট) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে কুয়ালালামপুরে পৌঁছান। সফর শেষে বুধবার (১৩ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
ইসি সানাউল্লাহ
ফিরছে ‘না’ ভোট, পুরো আসনে ফল বাতিলের ক্ষমতাও পাচ্ছে ইসি

নির্বাচন কমিশন (ইসি) চাইলে পুরো আসনের ফল বাতিল করতে পারবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অ.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। তাছাড়া নির্বাচনে না ভোট ফিরছে বলেও জানান তিনি।
সোমবার (১১ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে মুলতবি কমিশন সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান ইসি সানাউল্লাহ।
তিনি বলেন, নির্বাচনে কোনো অনিয়ম হলে একটি, দুটি অথবা পুরো আসনের ফল নির্বাচন কমিশন চাইলে বাতিল করতে পারবে। এ ছাড়া ফলাফল ঘোষণার সময় সাংবাদিকরা থাকতে পারবেন বলে জানান এই নির্বাচন কমিশনার।
ইসি সানাউল্লাহ জানান, কোনো আসনে একজন প্রার্থী থাকলে তাকে না ভোটের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হতে হবে। েনতুন বিধিমালা অনুযায়ী কোনো আসনে একজন প্রার্থী থাকলেও তাকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী ঘোষণা করা হবে না; বরং তাকে ‘না’ ভোটের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। যদি ‘না’ ভোট বেশি হয়, তাহলে ওই আসনে পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
ইসি জানান, এখন থেকে কমিশন যেকোনো নির্বাচনী এলাকার ফল স্থগিত বা বাতিল করার ক্ষমতা রাখবে। আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কার্যকরের বিধানও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
জয়পুরহাটে চলছে দুদকের গণশুনানি

“এবার আওয়াজ তুলুন” স্লোগানে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উদ্যোগে আজ ১১ আগস্ট ২০২৫ জয়পুরহাটে চলছে উন্মুক্ত গণশুনানি। সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং দুর্নীতি প্রতিরোধের লক্ষ্যে আজ জয়পুরহাট জেলার শিল্পকলা অ্যাকাডেমি মিলনায়তনে দুদকের ১৮০তম গণশুনানি শুরু হয়েছে।
সোমবার (১১ আগস্ট) দুদক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গণশুনানিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। এছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আখতার হোসেন অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন বলেন, ‘এখানে গণভোট হলে শতভাগই দুর্নীতির বিরুদ্ধে ভোট দিবেন। জনতা শতভাগ দুর্নীতি বিরোধী হলে দুর্নীতি দমন কঠিন নয়।’
তিনি আরও বলেন, আমরা মানবিক হলে পারস্পরিক অভিযোগ অনেক কমে যাবে। এসময় নিজের সন্তানের কাছে দুর্নীতিবাজ প্রমানিত হওয়ার চেয়ে পরিতাপের কিছু নেই বলেও মন্তব্য করেন দুদক চেয়ারম্যান।
সরকারি পরিষেবা প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ এবং সরকারি কর্মকর্তাদের মাঝে সততা, নিষ্ঠা, জবাবদিহিতা ও মূল্যবোধ বৃদ্ধি করার মাধ্যমে দেশ থেকে দুর্নীতি নির্মূল করাই এই গণশুনানির মূল উদ্দেশ্য।
মন্তব্য