দেশের বাইরে আ.লীগ কী করছে, নজর রাখছে সরকার : প্রেস সচিব

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ দেশের বাইরে কী করছে, তা অন্তর্বর্তী সরকারের নজরদারির মধ্যে রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
রোববার (১০ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টার মালয়েশিয়া সফর নিয়ে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।
আসন্ন নির্বাচন ইস্যুতে শফিকুল আলম বলেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যই বডি ক্যাম কেনা হচ্ছে।’
ভারতের কলকাতায় আওয়ামী লীগের অফিস স্থাপনের বিষয়ে বিবিসির সংবাদ প্রকাশ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগের অফিস, আপনারা জানেন, তাদের কার্যক্রম বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তারা বাইরে কী করছে, আমরা অবশ্যই তা মনিটরিং করছি।’
এর আগে প্রধান উপদেষ্টার মালয়েশিয়া সফর নিয়ে বিস্তারিত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিজি (পিডি) শাহ আসিফ রহমান। এসময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ৩ দিনের সফরে সোমবার (১১ আগস্ট) মালয়েশিয়া যাচ্ছেন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের আমন্ত্রণে বাংলাদেশ সরকারপ্রধানের এটি ফিরতি সফর। আনোয়ার ইব্রাহিম গত অক্টোবরে মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে বাংলাদেশে এসেছিলেন।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) পুত্রযায়ায় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা। সফরে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়েও মালয়েশিয়াসহ আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোকে আহ্বান জানানো হবে এই সফরে। পাশাপাশি শ্রমবাজার, গভীর সমুদ্রের সঠিক ব্যবহার, কৃষিসহ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্কে জোরদারের বিষয়গুলোও আলোচনায় গুরুত্ব পাবে। মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গেও মুহাম্মদ ইউনূসের সাক্ষাৎ হতে পারে।
খসড়া তালিকা প্রকাশ : দেশের মোট ভোটার ১২ কোটি ৬১ লাখ

নির্বাচন কমিশন (ইসি) ২০২৫ সালের হালনাগাদ খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যাচ্ছে, ৩০ জুন পর্যন্ত দেশের মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার ৯০০ জনে। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪০ লাখ ৬ হাজার ৯১৬ জন এবং নারী ভোটার ৬ কোটি ২১ লাখ ৬২ হাজার ৭৬০ জন।
ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ রোববার রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ২০২৫ সালে ভোটার অন্তর্ভুক্তির হার ৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ এবং ভোটার বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
আখতার আহমেদ জানান, গত ২ মার্চ ভোটারের সংখ্যা ছিল ১২ কোটি ৩৭ লাখ ৩২ হাজার ২৭৪ জন। পরবর্তীতে বাদ পড়া ভোটারদের অন্তর্ভুক্ত করতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এ হালনাগাদ কার্যক্রমে নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছে ৪৫ লাখ ৭১ হাজার ২১৬ জন। একই সময়ে মৃত ও অযোগ্য ভোটার হিসেবে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে ২১ লাখ ৩২ হাজার ৫৯০ জনকে। ফলে সম্পূরক তালিকা অনুযায়ী দেশের মোট ভোটার দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার ৯০০ জনে।
তিনি আরও বলেন, সম্পূরক খসড়া তালিকা আজ (রোববার) আমাদের সব অফিসে প্রকাশ করা হয়েছে। কোনো তথ্য সংশোধনের প্রয়োজন হলে তা জানাতে হবে এবং প্রাপ্ত সংশোধনী যাচাই করে ৩১ আগস্ট চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে।
ইসি সচিব জানান, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হবে, তাদের অন্তর্ভুক্ত করে আরও একটি তালিকা প্রকাশ করা হবে। নবীন ভোটারদের দীর্ঘসময় অপেক্ষা না করানোর জন্য নতুন আইনে এই সুযোগ রাখা হয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, এ বছর মোট তিনবার ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন। ইতোমধ্যে প্রথমটি করা হয়েছে গত ২ মার্চ। দ্বিতীয়টি আগামী ৩১ আগস্ট এবং তৃতীয়টি ৩১ অক্টোবর প্রকাশ করা হবে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন
৫০ লাখ প্রবাসীর ভোট নেওয়ার উদ্যোগ, প্রস্তাবনা নিয়ে প্রশ্ন

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে চায় সরকার। নির্বাচন কমিশন (ইসি) পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে এই ভোট গ্রহণ করবে। এজন্য প্রবাসীদের ভোট গ্রহণ ব্যবস্থা উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছে ইসি। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে ভোটিং ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন ও বাস্তবায়নের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) পাঠানো হয়েছে। ইসির আশা, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে প্রবাসীরা প্রথমবারের মতো জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন।
তবে প্রস্তাবনায় সমন্বয়হীনতা, অস্পষ্টতা ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের ঘাটতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিকল্পনা কমিশন। বিদেশে অবস্থানরত মোট ভোটারের সংখ্যা উল্লেখ থাকলেও কতজনের ভোট গ্রহণ করা হবে এবং কোন কোন দেশ থেকে ভোট হবে, তা স্পষ্ট নয়। বিদেশে ভোট গ্রহণে প্রয়োজনীয় কূটনৈতিক সহযোগিতার বিষয়েও নির্দিষ্ট তথ্য নেই।
প্রকল্পের প্রস্তাবনা ও খরচ: সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ‘দেশের বাইরে ভোটদান সিস্টেম উন্নয়ন এবং বাস্তবায়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ভোটিং সিস্টেম উন্নয়ন ও বাস্তবায়নে খরচ ধরা হয়েছে ৪৯ কোটি ২১ লাখ টাকা। ২০২৪ সাল থেকে শুরু হয়ে ২০২৭ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা রয়েছে। প্রকল্পের উদ্দেশ্য—প্রবাসী ভোটারদের জন্য পোস্টাল ভোটিং (আইটি সাপোর্টেড) ব্যবস্থা গড়ে তোলা ও উন্নয়ন, দেশের অভ্যন্তরে প্রযোজ্য ভোটারদের জন্য একই ব্যবস্থা প্রবর্তন এবং অনলাইন ভোটিং পদ্ধতি তৈরি করে নিরাপত্তা, ব্যবহারযোগ্য ও নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দেশে মোট ভোটার ১২ কোটি ৩৭ লাখ, এর মধ্যে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ বিদেশে অবস্থান করছেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যা বাস্তবায়নে ইসি এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
ভোট গ্রহণ পদ্ধতি: ইসি ডাক বিভাগের সহযোগিতায় পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট নেবে। এজন্য ডিজিটাল ভোটিং প্ল্যাটফর্ম তৈরি হবে, যেখানে প্রবাসীরা মুখের ছবি ও এনআইডি যাচাই করে ভোটার হবেন। এরপর ডাকযোগে ব্যালট পাঠানো হবে এবং কিউআর কোড, ওটিপি ও নিরাপত্তা যাচাইয়ের মাধ্যমে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা থাকবে। ভোটাররা ব্যালটে পছন্দমতো প্রতীক চিহ্নিত করে ফেরত খামে ভরে হলোগ্রাম স্টিকার দিয়ে সিল করে নিকটস্থ পোস্ট অফিসে জমা দেবেন। পরে ডাক বিভাগ ব্যালটগুলো ইসিতে ফেরত পাঠাবে, সেখান থেকে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কাছে যাবে।
পরিকল্পনা কমিশনের আপত্তি: গত ৪ আগস্ট পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় প্রকল্প প্রস্তাবে অস্পষ্টতা, খরচের যৌক্তিকতা এবং আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়ের ঘাটতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সভায় সভাপতিত্ব করেন আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) ড. কাইয়ুম আরা বেগম। সিদ্ধান্ত হয়, প্রস্তাবটি সংশোধন করে পুনর্গঠন করতে হবে।
পরিকল্পনা কমিশনের সংশ্লিষ্টরা জানান, কোন দেশ থেকে ভোট গ্রহণ এবং কতজন ভোটার অন্তর্ভুক্ত হবে, তা প্রস্তাবে নেই। সময় অঞ্চলের পার্থক্য এবং ভোটের সময়সূচি নিয়েও কোনো স্পষ্টতা নেই। বিদেশে ভোটের জন্য কূটনৈতিক সমন্বয়, বিশেষ করে বিদেশি সরকারের অনুমতি ও দূতাবাসের সহযোগিতা অপরিহার্য হলেও, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা প্রস্তাবে উল্লেখ নেই। খরচের প্রাক্কলনেও অসংগতি আছে।
ইসির বক্তব্য: আর্থসামাজিক অবকাঠামো বিভাগের প্রধান (অতিরিক্ত সচিব) মো. আব্দুর রউফ বলেন, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে প্রকল্পটি আনা হয়েছে, তবে প্রস্তাবে বেশ কিছু অস্পষ্টতা আছে। পিইসি সভার আলোচনার ভিত্তিতে সংশোধন করে পাঠালে অনুমোদন বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
ইসির পরিকল্পনা উন্নয়ন ও গবেষণা বিভাগের উপপ্রধান মুহম্মদ মোস্তফা হাসান বলেন, ৫০ লাখ প্রবাসী ভোটারের ভোট গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পিইসি সভার কার্যবিবরণী পাওয়ার পর ডিপিপি সংশোধন করে পাঠানো হবে।
ইসির অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ বলেন, কতজন ভোট নেবে বা কবে ভোট হবে, তা ডিপিপির বিষয় নয়। প্রবাসীদের সচেতন করা ছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহায়তা লাগবে না, তবে প্রয়োজনীয় সমন্বয় করা হবে। পোস্টাল ব্যালট পাঠানো ও ফেরত আনার দায়িত্ব ডাক বিভাগ পালন করবে। প্রথমবার শুরু হওয়ায় অংশগ্রহণ কম হতে পারে, তবে আরপিও সংশোধনের কাজ চলছে এবং সব ঠিক থাকলে আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রবাসীরা ভোট দিতে পারবেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা সময়োপযোগী ও ইতিবাচক উদ্যোগ। তবে নিরাপত্তা, সময়মতো ব্যালট পৌঁছানো, পরিচয় যাচাই ও রাজনৈতিক স্বচ্ছতা বড় চ্যালেঞ্জ। পোস্টাল ব্যালট পাঠানো ও ফেরত আনার জন্য দীর্ঘ সময় লাগে। তাই প্রকল্প বাস্তবায়নে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তথ্যপ্রযুক্তি ও ডাক বিভাগের সমন্বয় এবং একটি পূর্ণাঙ্গ রোডম্যাপ জরুরি। একই সঙ্গে জনপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২ এবং ভোটার তালিকা আইন ২০০৯ সংশোধন প্রয়োজন হবে।
প্রধান উপদেষ্টা মালয়েশিয়া যাচ্ছেন কাল, সই হবে ৫ সমঝোতা স্মারক ও তিন এক্সচেঞ্জ নোট

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের আমন্ত্রণে আগামীকাল সোমবার তিন দিনের দ্বিপক্ষীয় সফরে মালয়েশিয়া যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দুই দেশের সরকারপ্রধান পর্যায়ের বৈঠক আগামী মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান উপদেষ্টা এ সফরে দুই দেশের মধ্যে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক ও তিনটি এক্সচেঞ্জ নোট সই হবে।
আগামীকাল দুপুরে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে প্রধান উপদেষ্টার। তাঁর সঙ্গে এ সফরে যোগ দেবেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন; বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন।
দুই দেশের মধ্যে সম্ভাব্য যে সমঝোতা স্মারকগুলো সই হবে তা হলো– প্রতিরক্ষাবিষয়ক সহযোগিতা; এলএনজি ও পেট্রোলিয়াম সরবরাহ ও অবকাঠামো নির্মাণসহ জ্বালানি সহযোগিতা; বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) ও ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ মালয়েশিয়া (আইএসআইএস); বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিএমসিসিআই) ও চিপ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান মিমোস (এমআইএমওএস) এর ভেতর সহযোগিতা এবং বাংলাদেশের শীর্ষ ব্যবসায়িক চেম্বার এফবিসিসিআইর সঙ্গে মালয়েশিয়ার ব্যবসায়িক চেম্বারের মধ্যে সমঝোতা।
সম্ভাব্য এক্সচেঞ্জ নোটগুলো হলো– হালাল ইকোসিস্টেম, দুই দেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমি এবং উচ্চ শিক্ষা খাতে সহযোগিতাবিষয়ক নথি সই।
গত সোমবার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছিলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে কাজে লাগানোর চেষ্টা করবে বাংলাদেশ। ড. ইউনূসের মালয়েশিয়া সফরে শ্রমবিষয়ক চুক্তি সই নিয়ে তিনি বলেন, চুক্তি সই হবে কিনা– এটা এখন বলা কঠিন। তবে অনেক অস্বস্তি বাংলাদেশ দূর করতে পারবে বলে আশাবাদী।
২০২৪ সালের ৮ আগস্ট অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর কোনো দেশের সরকারপ্রধান হিসেবে সর্বপ্রথম বাংলাদেশ সফর করেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। গত অক্টোবরে প্রায় এক দশক পর মালয়েশিয়ার সরকারপ্রধান বাংলাদেশ সফর করেন।
আনোয়ার ইব্রাহিমের আমন্ত্রণে আগামীকাল রাতে মালয়েশিয়ায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে ড. ইউনূসের। এদিন রাতে হোটেলেই অবস্থান করবেন তিনি। মঙ্গলবার সকালে সফরের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। এ দিন সকালে পুত্রজায়ায় আনুষ্ঠানিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসবেন ড. ইউনূস ও আনোয়ার ইব্রাহিম। দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে দুই দেশের মধ্যে সম্ভাব্য সমঝোতা স্মারক ও এক্সচেঞ্জ নোটগুলো সই হবে। এরপর দুই সরকারপ্রধান গণমাধ্যমে কথা বলবেন। এ দিন দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার সৌজন্য মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেছে মালয়েশিয়ার সরকারপ্রধান।
এরপর হোটেলে ফিরে একটি ব্যবসায়িক সেমিনারে অংশ নেবেন প্রধান উপদেষ্টা। এ সেমিনার শেষে হোটেলে মালয়েশিয়ার শীর্ষ ব্যবসায়ীর কয়েকজন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলাদা সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এরপর মঙ্গলবার বিকেলে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন ড. ইউনূস। রাতে মালয়েশিয়ার মন্ত্রী, নাগরিক সমাজ, শীর্ষ ব্যবসায়ী, আমলাদের সঙ্গে নৈশভোজে অংশগ্রহণ করবেন তিনি।
দেশটির ইউনিভার্সিটি কেবাংসান মালয়েশিয়া প্রধান উপদেষ্টাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দেবে। এর জন্য বিশেষ সমাবর্তনের আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। বুধবার সকালে সে সমাবর্তনে যোগ দেবেন ড. ইউনূস। সমাবর্তন অনুষ্ঠান শেষে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টিতে একটি বক্তৃতায় অংশ নেবেন। দুপুরে হোটেলে ফিরে দেশটির কয়েকজন শীর্ষ ব্যবসায়ীর সঙ্গে পৃথক সৌজন্য সাক্ষাতের কথা রয়েছে। এ ছাড়া দুপুরে প্রধান উপদেষ্টা মালয়েশিয়ার একটি গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেবেন। বুধবার সন্ধ্যায় মালয়েশিয়া ছাড়ার কথা রয়েছে তাঁর।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ব্যক্তিগত সম্পর্ক অনেক বছর ধরেই রয়েছে। ফলে দুই দেশের সম্পর্কে বড় পরিবর্তন আশা করা হচ্ছে। বিশেষ করে দেশটির শ্রমবাজারে বাংলাদেশিদের সমস্যাগুলো দূর করা এবং আরও শ্রমিক নেওয়ার মতো বিষয়গুলো দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে গুরুত্ব পাবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরেই আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হওয়ার চেষ্টা করছে। আর এ সংগঠনটির বর্তমান সভাপতি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী। ফলে এ ক্ষেত্রে ইতিবাচক ফল আশা করছে ঢাকা।
সফরে প্রধান উপদেষ্টার যতগুলো সৌজন্য সাক্ষাৎ রয়েছে, তার বেশির ভাগই দেশটির শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। ফলে আগামীতে বাংলাদেশে মালয়েশিয়ার বিনিয়োগ বাড়ার আশা করা যায়। এ ছাড়া দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে সম্পর্কের সার্বিক বিষয়গুলোর পাশাপাশি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতি নিয়েও আলোচনা হবে।
‘জিরো রিটার্ন’ জমা দিলে ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড: এনবিআর

‘জিরো রিটার্ন’ জমাদানকারী করদাতার পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে। এমনটি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
রোববার (১০ আগস্ট) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় সংস্থাটি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, করদাতার প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় প্রদর্শন না করে এর কোনো একটি শূন্য অথবা সবকটি তথ্য শূন্য হিসেবে প্রদর্শন করা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং এটি একটি ফৌজদারি অপরাধ।
করদাতার জমা দেওয়া আয়কর রিটার্নে তার আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় সম্পর্কিত সঠিক তথ্য প্রদর্শন না করে মিথ্যা বা অসত্য তথ্য দিলে বর্তমান আয়কর আইনের ৩১২ ও ৩১৩ ধারা অনুসারে করদাতাকে পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
একই সঙ্গে, আয়কর আইন অনুসারে ‘জিরো রিটার্ন’ নামে কোনো প্রকার রিটার্ন দাখিলের বিধান নেই বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
আয়কর আইন অনুসারে, একজন করদাতাকে তার প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় অবশ্যই সঠিকভাবে আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন করতে হবে বলে জানানো হয়েছে।
প্রতি বছর ১ জুলাই থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ব্যক্তিশ্রেণির করদাতারা বার্ষিক আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমা দেন। সেখানে সারা বছরের আয়-ব্যয়ের তথ্য দিতে হয়
মন্তব্য