সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র
খুলনায় শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা

অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে খুলনায় রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
সোমবার (১১ আগস্ট) খুলনার সোনাডাঙ্গা থানায় মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এসআই বিধান চন্দ্র রায় বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
খুলনার সোনাডাঙ্গা মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন– খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট এমএম মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলাল উদ্দিন, শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল, এস এম কামাল হোসেন ও অ্যাডভোকেট পারভেজ আলম খান। এ ছাড়া মামলায় আরও ৩০/৪০ জনকে অজ্ঞাত পরিচয়ের আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ২২ এপ্রিল খুলনা মহানগরীর ময়লাপোতা থেকে সন্দেহজনকভাবে আটক করা হয় আওয়ামী লীগ নেতা এম এম মুজিবুর রহমানকে। তার কাছ থেকে জব্দ করা মোবাইল থেকে জানা যায় হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম ও জুম অ্যাপসের মাধ্যমে ‘তেরখাদা উপজেলা আওয়ামী লীগ’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’, ‘বিজয় একাত্তর’ ও ‘জয় বাংলা আমার প্রাণ’ গ্রুপের মাধ্যমে সরকার উৎখাতের জন্য ষড়যন্ত্র করা হয়। কেএমপি থেকে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রাষ্ট্রদ্রোহর মামলার অনুমতি চাওয়া হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। ৪ আগস্ট রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার অনুমতি পায় কেএমপি। সোমবার এ ঘটনায় সোনাডাঙ্গা থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
সাংবাদিক হত্যার প্রতিবাদে পাবিপ্রবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ

গাজীপুরে দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের রিপোর্টার সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে হত্যার বিচারসহ বাংলাদেশে সাংবাদিকদের উপর হামলা ও নির্যাতনের বিচার ও নিরাপত্তার দাবিতে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ মানববন্ধনের আয়োজন করেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব।
সোমবার (১১ আগস্ট) সকাল এগারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।
পাবিপ্রবি প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী সদস্য সাজ্জাদুল ইসলামের সঞ্চালনায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা অনতিবিলম্বে সাংবাদিক তুহিন সহ বিগত বছরগুলোতে ও গণ-অভ্যুত্থানের নিহত সাংবাদিকদের বিচারের দাবি জানান। এ সময় বক্তারা বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সাংবাদিকদের দমননীতির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান ও স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মত প্রকাশের দাবি জানান।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, 'গত বুধবার গাজীপুরে একজন সাংবাদিকদের ওপর হামলা হয়, পরদিন আরেকজন সাংবাদিককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমি ইন্টেরিমকে প্রশ্ন করতে চাই সাংবাদিকদের জীবন কি এতই তুচ্ছ হয়ে গেছে যে দিনের পর দিন হত্যা করা হচ্ছে আর কেন এর কোন বিচার হচ্ছে না? আমি বলতে চাই হামলা করে, মামলা করে সাংবাদিকদের কলম থামনো যাবে না। ক্যাম্পাসে মিছিল করে সাংবাদিকদের কলম রুখে দেওয়া যাবে না। আমরা সত্য প্রকাশ করবই। আপনি দুজনকে গ্রেফতার করেছেন আবার সাংবাদিকদের উপর হামলা হচ্ছে, আবার সাংবাদিকদের উপর নির্যাতন হচ্ছে এর শেষ কোথায়? যেই সমাজে আপনি সাংবাদিককে হত্যা করতে পারেন সেই সমাজে আপনি অনেক সত্যকে হত্যা করতে পারেন। সাংবাদিকদের ওপর প্রতিনিয়ত হামলা হচ্ছে, নির্যাতন হচ্ছে, আমরা এর বিচার চাই। সাংবাদিকদের নিরাপত্তা চাই, কাজের স্বাধীনতা চাই।'
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হুদা শিথিল বলেন, 'আপনারা জানেন গাজীপুরে দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন ভাইকে কিভাবে নির্মম ও নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই ঘটনায় আমরা পাবিপ্রবি প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাই। সাংবাদিকরা জাতির বিবেক, সত্য খুঁজে বের করে আনবে এটাই সাংবাদিকের কাজ। একটি ঘটনার ভিডিও করাকে কেন্দ্র করে সাংবাদিক তুহিন ভাইকে হত্যা করা হয়। এই ঘটনা কেবল একজন সাংবাদিকের জীবনহানিই নয়, বরং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সত্য প্রকাশের পথে একটি মারাত্মক আঘাত। এ ঘটনা সাংবাদিক সমাজের জন্য একটি গুরুতর হুমকি। সাংবাদিকদের উপর এরকম বর্বর হামলা, হেনস্থা ও হত্যার ঘটনা স্বাধীন সাংবাদিকতার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং সরকারের কাছে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি। একইসাথে, এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তির দাবি জানাচ্ছি।'
এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন, দপ্তর সম্পাদক এমরান হোসাইন তানিম, কোষাধ্যক্ষ আলফি সানি, সদস্য নকিব মাহমুদ জামী, সাবেক আহবায়ক কমিটির সদস্য নূর মোহাম্মদ।
ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন
দুর্নীতি পুরোপুরি নির্মূল সম্ভব নয়: দুদক চেয়ারম্যান

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, সাবেক প্রধান বিচারপতি, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও বায়তুল মোকাররমের খতিব পালিয়ে গেছেন—এর পেছনে দুর্নীতিকেই মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। আমাদের মধ্যকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়েও খোঁজ নেওয়া উচিত। এমনকি আমার সম্পর্কেও তদন্ত করা যেতে পারে।
সোমবার (১১ আগস্ট) সকাল ১০টায় জয়পুরহাট জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের আয়োজনে এবং জেলা প্রশাসন ও জেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে তিনি এসব কথা বলেন।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতি পুরোপুরি নির্মূল হবে না, তবে কমিয়ে আনা সম্ভব। আমরা যদি পারস্পরিক আন্তরিক হই, তবে দুর্নীতি কমে আসবে। গণশুনানিতে আসা অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে নির্দেশ দেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, নিজের সন্তানের কাছে দুর্নীতিবাজ প্রমানিত হওয়ার চেয়ে পরিতাপের কিছু নেই বলেও মন্তব্য করেন দুদক চেয়ারম্যান।
সরকারি পরিষেবা প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ এবং সরকারি কর্মকর্তাদের মাঝে সততা, নিষ্ঠা, জবাবদিহিতা ও মূল্যবোধ বৃদ্ধি করার মাধ্যমে দেশ থেকে দুর্নীতি নির্মূল করাই এই গণশুনানির মূল উদ্দেশ্য।
অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক (যুগ্মসচিব) আফরোজা আক্তার চৌধুরীর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক আকতার হোসেন, দুদক রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আবদুল ওয়াহাব, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহা. সবুর আলী প্রমুখ।
আজ জয়পুরহাটে দুদকের গণশুনানি

“এবার আওয়াজ তুলুন” স্লোগানে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উদ্যোগে আজ ১১ আগস্ট ২০২৫ জয়পুরহাটে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে উন্মুক্ত গণশুনানি। জেলার সংক্ষুব্ধ ও বিভিন্ন সেবা পেতে হয়রানির শিকার নাগরিকদের অভিযোগ শুনবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সকাল ৯টায় জেলা শিল্পকলা অডিটরিয়ামে এ গণশুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
রোববার (১০ আগস্ট) রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়, নওগাঁর উপ-পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জয়পুরহাটের জেলা প্রশাসক আফরোজা আক্তার চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ ও গণসচেতনতা) মো. আক্তার হোসেন, রাজশাহী বিভাগের পরিচালক মো. ফজলুল হক, জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাবসহ সরকারি দপ্তরের প্রধান ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
গণশুনানিতে সরকারি সেবা প্রাপ্তিতে হয়রানি বা দুর্নীতির শিকার নাগরিকরা সরাসরি অভিযোগ তুলে ধরবেন। দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন বলেও জানানো হয়েছে।
ইতোমধ্যে প্রচার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সপ্তাহব্যাপী মাইকিং, পোস্টার, লিফলেট বিতরণ, অভিযোগ বাক্স ও বুথ স্থাপনসহ গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার চালানো হয়েছে। দুদক কর্তৃপক্ষ গণশুনানি সফল করতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার জয়পুরহাটবাসীকে উপস্থিত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ কারাগারে

রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।
এদিন তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে দুদক। পরে শুনানি শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে গত ১৮ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে কলিমুল্লাহসহ ৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও প্রকল্প পরিচালক একেএম নূর-উন-নবী, সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্যসচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, ঠিকাদার মো. আ. সালাম বাচ্চু এবং এমএম হাবিবুর রহমান।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশ, অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদিত ডিপিপি উপেক্ষা করে নকশা পরিবর্তন করেন। তারা ৩০ কোটি টাকা মূল্যের বেশি চুক্তি মন্ত্রণালয় বা বিভাগের অনুমোদন ছাড়া করেন। ঠিকাদারের রানিং বিল থেকে কেটে নেওয়া নিরাপত্তা জামানতকে এফডিআর হিসেবে ব্যাংকে জমা রাখা এবং সেই এফডিআর ঠিকাদারকে লোন দেওয়ার জন্য ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ অনুমোদন তথা গ্যারান্টার হয়ে সরকারের ৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন তারা। ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তিতে অগ্রিম অর্থ দেওয়ার কোনো আইন না থাকা সত্ত্বেও অগ্রিম বিল দেন এবং অগ্রিম দেওয়া বিল সমন্বয়ের আগেই বিলের বিপরীতে প্রদত্ত ব্যাংক গ্যারান্টিগুলো অবমুক্ত করা হয়। প্রথম পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের দেওয়া ড্রইং বা ডিজাইন না মেনে সরকারি খাতে ক্রয় পদ্ধতির বিধি বহির্ভূতভাবে দ্বিতীয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হয়।
মন্তব্য