পুতিন যুদ্ধ বন্ধে রাজি না হলে ‘গুরুতর পরিণতির’ হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রাজি না হলে তাকে “অত্যন্ত গুরুতর পরিণতি” ভোগ করতে হবে। এমন হুঁশিয়ারিই উচ্চারণ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
আলাস্কায় আসন্ন শীর্ষ বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
ওয়াশিংটন ডিসির কেনেডি সেন্টারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, “হ্যাঁ, হবে। খুবই গুরুতর পরিণতির মুখে পড়তে হবে।”
এর কয়েক ঘণ্টা আগে ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও অন্যান্য ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠককে তিনি “খুব ভালো” এবং “খুবই আন্তরিক” বলে বর্ণনা করেন।
আনাদোলু বলছে, দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের এটিই প্রথম সরাসরি বৈঠক হতে যাচ্ছে। আলাস্কার জনবহুল শহর অ্যাঙ্কোরেজে নির্ধারিত এ বৈঠক থেকে পুতিন, জেলেনস্কি ও ট্রাম্পের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের পথ খুলে যেতে পারে বলে তিনি জানান।
ট্রাম্প বলেন, “দ্বিতীয় বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা ভালোই আছে এবং তা প্রথমটির চেয়ে বেশি ফলপ্রসূ হতে পারে। প্রথম বৈঠকে আমি বুঝে নেব আমরা কোথায় আছি, কী করছি। যদি প্রথম বৈঠক ভালো হয়, তাহলে খুব দ্রুতই দ্বিতীয় বৈঠক হবে— যেটি আমি প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই করতে চাই, যদি পুতিন ও জেলেনস্কি রাজি থাকেন।”
তিনি আরও জানান, শুক্রবারের বৈঠকে “কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়” অর্জিত হতে পারে, তবে এটি মূলত সম্ভাব্য ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের ভিত্তি তৈরির জন্য। তবে ট্রাম্প এটাও স্পষ্ট করেছেন, “হয়তো দ্বিতীয় বৈঠক হবে না, যদি আমি মনে করি এটি উপযুক্ত নয় বা প্রয়োজনীয় উত্তর না পাই। সে ক্ষেত্রে দ্বিতীয় বৈঠক হবে না।”
শিগ্গিরই শুরু হতে পারে যুদ্ধ -ভারতের সেনাপ্রধান, ভারতকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার হুঁশিয়ারি শাহবাজের
উপমহাদেশে বড় যুদ্ধের পূর্বাভাস

আবারও রণ উত্তেজনায় ভারত-পাকিস্তান। রাজনৈতিক ইঙ্গিত আর সামরিক প্রস্তুতির মধ্য দিয়ে ক্ষণে ক্ষণে ফুঁসে উঠছে দেশ দুটি। ইতিহাসের কালো অধ্যায়গুলো যেন পুনরাবৃত্তি করতে চায় ভারত-পাকিস্তান। সাম্প্রতিক ধোঁয়াশা, কূটনৈতিক টানাপোড়েন এবং পালটাপালটি হুমকির বার্তা ইঙ্গিত দিচ্ছে উপমহাদেশে সম্ভাব্য ‘বড় যুদ্ধের’ ছায়া ক্রমশ ঘন হচ্ছে। ৪ আগস্ট ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী সতর্ক করে বলেছেন, দেশের পরবর্তী যুদ্ধ প্রত্যাশার চেয়েও দ্রুত শুরু হতে পারে এবং সেটি মোকাবিলায় লাগবে পুরো জাতির সম্মিলিত শক্তি। অন্যদিকে সোমবার যুক্তরাষ্ট্রে বসে ভারতের বিরুদ্ধে পারমাণবিক যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির। ফ্লোরিডায় এক নৈশভোজে বলেছেন, পাকিস্তান যদি অস্তিত্ব সংকটে পড়ে, তবে তারা বিশ্বের অর্ধেককে সঙ্গে নিয়েই ধ্বংস হবে। রয়টার্স, এনডিটিভি।
টানা ১১ বছর শক্ত শাসনের পর হঠাৎ কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দেশের ভেতরে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ বেড়েই চলেছে। নিজ দেশের জনগণই যাচ্ছেন বিপক্ষে। দুই প্রতিবেশী বাংলাদেশ ও পাকিস্তান নিয়েও স্বস্তিতে নেই দেশটি। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত শুল্ক একেবারে বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে মোদিকে। এমন ক্রান্তিকালে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে যুদ্ধকেই যেন হাতিয়ার হিসাবে বেছে নিচ্ছেন ভারতের এই প্রধানমন্ত্রীও। ঠিক যেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর মতোই। ইতোমধ্যে যুদ্ধ ঘনিয়ে আসার সতর্কবার্তাও দিয়েছেন ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী। ৪ আগস্ট আইআইটি মাদ্রাজে এক ভাষণে তিনি বলেন, দেশের পরবর্তী যুদ্ধ প্রত্যাশার চেয়েও দ্রুত শুরু হতে পারে এবং সেটি মোকাবিলায় লাগবে পুরো জাতির সম্মিলিত শক্তি। ভাষণে তিনি আরও বলেন, ‘পরেরবার এটি আরও বড় হতে পারে। এবং সেই দেশটি একা যুদ্ধ করবে নাকি অন্য কোনো দেশের সমর্থনে করবে, আমরা জানি না। তবে আমার দৃঢ়বিশ্বাস, দেশটি একা থাকবে না। এখানেই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।’
অন্যদিকে সোমবার যুক্তরাষ্ট্রে বসে ভারতের বিরুদ্ধে পারমাণবিক যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির। ফ্লোরিডায় এক নৈশভোজে বলেছেন, পাকিস্তান যদি অস্তিত্ব সংকটে পড়ে, তবে তারা বিশ্বের অর্ধেককে সঙ্গে নিয়েই ধ্বংস হবে। ইতিহাসের কালো অধ্যায়গুলোর যেন পুনরাবৃত্তি করতে চায় ভারত-পাকিস্তান। সাম্প্রতিক ধোঁয়াশা, কূটনৈতিক টানাপোড়েন এবং পালটাপালটি হুমকির বার্তা ইঙ্গিত দিচ্ছে-উপমহাদেশে সম্ভাব্য ‘বড় যুদ্ধের’ ছায়া ক্রমশ ঘন হচ্ছে।
উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেছেন, ‘আমরা যে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি, সেটা হয়তো খুব শিগ্গিরই হতে পারে। এবার আমাদের সবাইকে একসঙ্গে লড়তে হবে। যদিও কোনো দেশের নাম নেননি তিনি। সেনাপ্রধান আরও বলেছেন, ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনার পরপরই এই পরিকল্পনা শুরু হয়। এর কিছুদিন পর সোমবার আসিম মুনির বলেছেন, ‘আমরা পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। যদি আমাদের মনে হয় আমরা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছি, তাহলে আমাদের সঙ্গে বিশ্বের অর্ধেককে নিয়েই ধ্বংস হব।’ এছাড়া ভারতের সিন্ধুনদীর ওপর বাঁধ বা অন্য কোনো অবকাঠামো নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে মুনির বলেছেন, এমন কিছু হলে সেটি ধ্বংস করতে দ্বিধা করবে না পাকিস্তান। তিনি জানিয়েছেন, ‘আমরা অপেক্ষা করব, ভারত বাঁধ তৈরি করুক। আর তৈরি করলেই সেটি মিসাইল দিয়ে ধ্বংস করব। সিন্ধুনদী ভারতীয়দের পারিবারিক সম্পত্তি নয়, আমাদের মিসাইলের কোনো অভাব নেই, আলহামদুল্লিাহ।’ মুনির আরও বলেছেন, ভারতের আগ্রাসনের কারণে অঞ্চলটি বিপজ্জনকভাবে যুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে। যেখানে কোনো ভুল হিসাবনিকাশও বড় বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। আসিম মুনিরের পর ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফও। সিন্ধুনদীর পানি স্থায়ীভাবে আটকে রাখার পরিকল্পনা করলে ভারতকে উচিত শিক্ষা দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষ্যে ইসলামাবাদে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শাহবাজ বলেন, ‘আমি শত্রুদের পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, যদি আপনারা আমাদের পানি আটকে রাখার পরিকল্পনা করে থাকেন এবং এ সংক্রান্ত কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেন, সেক্ষেত্রে আপনাদের উচিত শিক্ষা দেব। এমন শিক্ষা দেব, কখনো তা ভুলবেন না।’
এদিকে মুনিরের পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ভারত। দেশটির অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্র যখনই পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সমর্থন দেয়, তখনই এই বাহিনী তাদের আসল রূপ দেখায়। সোমবার ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, পারমাণবিক হুমকি দেওয়া পাকিস্তানের পুরোনো অভ্যাস, যা আবারও দেখা গেল। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নিজেরাই বুঝতে পারবে, এমন মন্তব্য কতটা দায়িত্বজ্ঞানহীন। নয়াদিল্লি কোনোভাবেই পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইলের কাছে নতি স্বীকার করবে না এবং জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় সব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া অব্যাহত রাখবে বলেও জানিয়েছে ভারতের মন্ত্রণালয়।
দ্য টাইমস অব ইসরায়েলের প্রতিবেদন
মিশর-জর্ডান নিয়ে ‘গ্রেটার ইসরায়েল’ চান নেতানিয়াহু

পুরো ফিলিস্তিনসহ মিশর ও জর্ডানের একাংশ নিয়ে এক ‘গ্রেটার ইসরায়েল’ প্রতিষ্ঠা করতে চান প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি এ বৃহত্তর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ভিশনের সঙ্গে যুক্ত ‘এক ঐতিহাসিক ও আধ্যাত্মিক মিশনে’ সংযুক্ত বলে জানিয়েছেন। গত মঙ্গলবার দেশটির সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, নেতানিয়াহু আই-২৪ চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ দর্শনের মধ্যে বর্তমান ইসরায়েল রাষ্ট্র, ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের জন্য নির্ধারিত এলাকা এবং বর্তমান জর্ডান ও মিশরের কিছু অংশও অন্তর্ভুক্ত। সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী শ্যারন গাল স্বল্প সময়ের জন্য ইসরায়েলি পার্লামেন্ট নেসেটের ডানপন্থি সদস্য ছিলেন। তিনি সাক্ষাৎকারের সময় নেতানিয়াহুকে একটি তাবিজ উপহার দেন। তাবিজটিতে ‘প্রতিশ্রুত ভূমির মানচিত্র’ তথা বৃহত্তর ইসরায়েলের মানচিত্র ছিল বলেও উল্লেখ করেন গাল।
বৃহত্তর ইসরায়েল ‘দর্শনের’ প্রতি তিনি কোনো সংযোগ অনুভব করেন কি না জানতে চাওয়া হলে নেতানিয়াহু উত্তর দেন, ‘অনেক বেশি।’ বৃহত্তর ইসরায়েল বলতে, ১৯৬৭ সালের জুনের ৬ দিনের যুদ্ধের পর ইসরায়েল ও দেশটির সদ্য দখল করা এলাকা—পূর্ব জেরুজালেম, পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা, সিনাই উপদ্বীপ এবং গোলান মালভূমিকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।
নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টির অগ্রদূত জে’ইভ জাবোতিনস্কিসহ শুরুর দিকের নেতৃস্থানীয় জায়নবাদীদের কেউ কেউ বর্তমান ইসরায়েল, গাজা, পশ্চিম তীর এবং বর্তমান জর্ডানকে বোঝাতেও এ শব্দটি ব্যবহার করতেন। গাল নেতানিয়াহুকে প্রশ্ন করেন যে, তিনি ইহুদি জনগণের পক্ষ থেকে কোনো মিশনে আছেন বলে মনে করেন কি না? এর পরই তিনি বৃহত্তর ইসরায়েল নিয়ে প্রশ্নটি করেন। নেতানিয়াহু উত্তরে বলেন, তিনি ‘প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এক মিশনে আছেন—বহু প্রজন্ম ধরে ইহুদিরা এখানে আসার স্বপ্ন দেখেছে এবং আমাদের পরেও অনেক প্রজন্ম আসবে একই স্বপ্ন নিয়ে।’ নেতানিয়াহু বলেন, ‘সুতরাং, আপনি যদি জিজ্ঞাসা করেন যে ঐতিহাসিকভাবে এবং আধ্যাত্মিকভাবে আমার মধ্যে কোনো মিশন বা চেতনা কাজ করে কি না, তার উত্তর হলো হ্যাঁ।’
দখলদার ইসরায়েল দুই বছর ধরে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা, দক্ষিণ লেবানন এবং দক্ষিণ সিরিয়ায় বর্বরতা চালাচ্ছে। ইসরায়েলের লক্ষ্য এসব দেশের অংশ নিয়ে বৃহৎ ইসরায়েল প্রতিষ্ঠা করা। গত বছর ইসরায়েলি অর্থমন্ত্রী বাজায়েল স্মোরিচ বৃহৎ ইসরায়েল নিয়ে মন্তব্য করেন। এ দখলদার বলেন, তারা সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক পর্যন্ত ইসরায়েলের পরিধি বাড়াবেন।
বাংলাদেশ সীমান্তে ‘অপারেশন অ্যালার্ট’ শুরু করেছে বিএসএফ

ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় মেঘালয় রাজ্যের বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় ‘অপারেশন অ্যালার্ট’ শুরু করেছে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। ভারতের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতে এই অভিযান আগামী ১৬ আগস্ট পর্যন্ত চলবে বলে জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার এক বিবৃবিতে বিএসএফ বলছে, মেঘালয় রাজ্য পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ে এই অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
অভিযানের অংশ হিসেবে সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় অতিরিক্ত সৈন্য মোতায়েন করেছে বিএসএফ। বিএসএফের সদর দপ্তর ও সেক্টর সদর দপ্তরের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা সীমান্তে উপস্থিত হয়ে সরাসরি এই অভিযানের তদারকি করছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিএসএফের ‘অপারেশন অ্যালার্ট’ অভিযানে সীমান্তে ২৪ ঘণ্টা টহল, আকস্মিক তল্লাশি ও নৌপথে টহল জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া গবাদি পশু পাচার, চোরাচালান ও অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। নাইট ভিশন সরঞ্জাম ও ভ্রাম্যমান টহল দলের সহায়তায় সমন্বিত স্থল ও নৌপথ টহলের মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ স্থল ও নৌপথ সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখা হচ্ছে।
বিএসএফ শিলং ফ্রন্টিয়ার সদর দপ্তরের পরিদর্শক জেনারেল ওপি উপাধ্যায় বর্তমানে সীমান্তে অবস্থান করছেন। দেশটির বার্তা সংস্থা এএনআইকে তিনি বলেছেন, আগামী ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতাদিবসের উৎসব চলাকালীন জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা ও শত্রুপক্ষের যেকোনও বিঘ্ন সৃষ্টির প্রচেষ্টা ঠেকাতে অপারেশন অ্যালার্ট শুরু করা হয়েছে। ১৬ আগস্ট পর্যন্ত এই অভিযান চলবে এবং পুরো মেঘালয় সীমান্তজুড়ে শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা বজায় থাকবে।
এদিকে, চলতি বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক (২৫ এপ্রিল-২৫ জুলাই) সময়ে উচ্চ সতর্কতা ও কার্যকর অভিযানে মেঘালয় সীমান্তে মোট ৩৩টি গুরুত্বপূর্ণ জব্দের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে বিএসএফ।
এ সময় ২৩ ভারতীয় ও ১২ বাংলাদেশি নাগরিক আটক করা হয়। এছাড়া ৩৯ লাখের বেশি রুপির মূল্যের পণ্যও জব্দ করেছে দেশটির এই সীমান্তরক্ষী বাহিনী। সম্প্রতি মেঘালয় সীমান্তের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৩১ লাখ রুপির বেশি মূল্যের মোবাইল ডিসপ্লে জব্দ করেছে বিএসএফ। মোবাইল ডিসপ্লে জব্দের এই ঘটনাকে চোরাচালানের নতুন প্রবণতা বলছে ভারতীয় এই সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
একই সময়ে মেঘালয় সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ ও চোরাচালানে জড়িত অভিযোগে ১১৬ বাংলাদেশি ও ৩৪ ভারতীয় নাগরিককে আটক করেছে বিএসএফ।
সূত্র: এএনআই
ইসরাইলের গুরুত্বপূর্ণ চার স্থাপনায় হুথিদের হামলা

ইসরাইলের গুরুত্বপূর্ণ চার স্থাপনায় বড় ধরনের হামলার দাবি করেছে ইয়েমেনের হুথি সশস্ত্র গোষ্ঠি। তাদের ভাষ্য— গাজায় চলমান ইসরাইলি অভিযান এবং নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো ‘নৃশংসতা’র জবাবে তারা এই হামলা চালিয়েছে।
হুথিদের সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি জানিয়েছেন, হামলাটি চালানো হয়েছে ইসরাইলের চারটি স্থাপনা হচ্ছে— হাইফা বন্দর, নেগেভ, উম্ম আল-রশরাশ (আইলাত) ও বিরসেবা।
তিনি দাবি করেন, এই অভিযানে ছয়টি ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে এবং সবগুলোই নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুতে সফলভাবে আঘাত হেনেছে।
সামরিক মুখপাত্র আরও বলেন, গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসন থামানো না হলে, এবং অবরোধ তুলে না নেওয়া পর্যন্ত আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
তবে হুথিদের এই হামলার বিষয়ে এখন পর্যন্ত ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
হুথিদের হামলার প্রেক্ষাপট তৈরির পেছনে গাজায় ইসরাইলি হামলা ও অবরোধ বড় কারণ বলে দাবি করা হচ্ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলের হামলায় অন্তত ৭৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৩১ জন ছিলেন ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা মানুষ। এই সময়ের মধ্যে আহত হয়েছেন আরও ৫১৩ জন।
এছাড়া অনাহারের কারণেও গাজায় মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। মন্ত্রণালয় জানায়, খাবারের অভাবে আরও পাঁচজন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের মধ্যে দুটি শিশু রয়েছে। এ নিয়ে গাজায় অনাহারে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২৭ জনে, যার মধ্যে ১০৩ জনই শিশু।
হুথিরা গত কয়েক মাসে তারা প্রায় নিয়মিতভাবে ইসরাইল অভিমুখে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে। তবে হাইফা বন্দরের মতো কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ স্থানে হামলার দাবি এবারই অন্যতম বড় ঘটনা।
সূত্র: আলজাজিরা
মন্তব্য