রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বুধবার টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো ‘সেনা সমাবেশের’ ঘোষণা দিয়েছেন । একইসঙ্গে ইউক্রেনের দখলকৃত অঞ্চলগুলো রাশিয়ার সঙ্গে একীভূত করার জন্য গণভোটের পরিকল্পনাকে সমর্থনও করেছেন তিনি।
পুতিনের সেই ঘোষণার ‘রাশিয়ার পক্ষ থেকে যেকোনো উস্কানি রোধে’ সেনাবাহিনীর র্যাপিড রেসপন্স ফোর্সের প্রস্তুতির মাত্রা বাড়িয়েছে লিথুয়ানিয়া। দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী অর্ভিদাস অনুসকাসের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে অর্ভিদাস অনুসকাস জানান, রাশিয়ার সেই সেনা সমাবেশ যেহেতু আমাদের পার্শ্ববর্তী কালিনিনগ্রাদেও করা হবে, তাই লিথুয়ানিয়া শুধু বিষয়টি বসে বসে দেখবে না।
প্রসঙ্গত, স্থানীয় সময় বুধবার ভোরে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পুতিন পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি হুমকি দিয়ে বলেন, আমাদের দেশের আঞ্চলিক অখণ্ডতা যদি হুমকির মধ্যে পড়ে, রাশিয়া এবং এর জনগণকে রক্ষা করার জন্য আমরা সবরকমের পদক্ষেপ নেব। এটা কোনো ধাপ্পাবাজি নয় বলেও সতর্ক করেন তিনি।
এ সময় পুতিন রাশিয়ার ২০ লাখ জনবল সম্পন্ন সামরিক রিজার্ভের আংশিক সমাবেশের ঘোষণা দেন। রাশিয়া এবং নিজের অঞ্চলগুলোকে রক্ষা করার জন্য এই ঘোষণা দেন তিনি।
এ নির্দেশনার ফলে যারা কোনো একসময় রুশ সেনাবাহিনীতে কাজ করেছেন বা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ভবিষ্যতে যে কোনো প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর জন্য সেই সব সংরক্ষিত সৈন্যদের এখন যুদ্ধ করার জন্য ডেকে পাঠানো হবে।
ভ্লাদিমির পুতিন ভাষণে বলেছেন, রাশিয়ার মাতৃভূমি, সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা আর জনগণের নিরাপত্তা রক্ষা করার তিনি সৈন্য সমাবেশের নির্দেশ দিয়েছেন। বুধবার থেকেই সেনা সমাবেশ শুরু হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, যারা পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে আমাদের ব্ল্যাকমেইল করতে চায়, তাদের জানা উচিত যে, পাল্টা বাতাস তাদের দিকেও যেতে পারে।
তিনি অভিযোগ করেন, পশ্চিমা দেশগুলো প্রমাণ করেছে যে, তারা চায় না রাশিয়া আর ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি বজায় থাকুক।
এমন সময়ে পুতিন এ ভাষণটি দিলেন, যখন মস্কো পূর্ব এবং দক্ষিণে ইউক্রেনের ভূখণ্ডের ওপর তার দখলকে সুসংহত করতে শুরু করেছে। তারা আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ায় যোগদানের জন্য ইউক্রেনের মুক্ত এলাকাগুলোতে গণভোট আয়োজনের পরিকল্পনা করছে।