একাদশে ভর্তির পঞ্চম ধাপের ফল প্রকাশ

একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির পঞ্চম ধাপের আবেদনের ফল প্রকাশ করেছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় কেন্দ্রীয় ভর্তির ওয়েবসাইটে (http://www.xiclassadmission.gov.bd/) পঞ্চম ধাপের ফল প্রকাশ করা হয়।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবক ভর্তির ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বোর্ড ও পাসের বছর দিয়ে ফল দেখা যাবে।
শিক্ষা বোর্ডগুলো জানিয়েছে, পঞ্চম পর্যায়ে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের আগামী ২৭ মার্চ থেকে ২৮ মার্চ বিকাল ৫টার মধ্যে মোবাইল ব্যাংকিং চার্জ বাদে রেজিস্ট্রেশন ফি ২২৮ টাকা (ওয়েবসাইটে উল্লেখিত অপারেটরের মাধ্যমে) জমা দিলে ভর্তির প্রাথমিক নিশ্চায়ন সম্পন্ন হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির তারিখ ২৭ মার্চ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত।
২০২১ সালের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয় গত ৩০ ডিসেম্বর। নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড মিলে এবার পাসের হার ৯৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ।
গত বছরের এসএসসি পরীক্ষা অন্য বছরের মতো হয়নি। পরীক্ষা হয় শুধু নৈর্বাচনিক বিষয়ে। আর আবশ্যিক বিষয়ে আগের পাবলিক পরীক্ষার সাবজেক্ট ম্যাপিং করে মূল্যায়নের মাধ্যমে নম্বর দেয়া হয়। কয়েক দফা ভর্তি শেষে গত ২ মার্চ থেকে একাদশ শ্রেণিতে সশরীরে ক্লাস শুরু হয়।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তো?

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে সারা দেশে ৪৫ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। এসব পদে আবেদন করেছেন ১৩ লাখ ৯ হাজার ৪৬১ প্রার্থী। সে হিসাবে ১টি পদের জন্য প্রতিযোগিতা হবে ২৯ প্রার্থীর মধ্যে। এ নিয়োগ পরীক্ষার তারিখও প্রায় চূড়ান্ত। আগামী এপ্রিলের মধ্যে পরীক্ষা নেওয়া হবে। হাতে সময় নেই বললেই চলে। তাই চাকরিপ্রত্যাশীদের শেষ সময়ে ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে।
যেহেতু সময় কম, তাই সব বিষয় না পড়ে শুধু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো পড়তে পারেন। যেসব বিষয়ে বারবার প্রশ্ন আসে, সেই বিষয়গুলোতে চোখ রাখা দরকার। বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নগুলো ব্যাখ্যাসহ সমাধান করতে হবে। বিশেষ করে ২৪-৪৩তম বিসিএসের প্রশ্নগুলোর অনুশীলন করলে পরীক্ষায় ভালো করা সম্ভব।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ২০০৮ থেকে ২০১৯ সালের প্রশ্নগুলো বারবার অনুশীলন করতে হবে। তাহলে প্রশ্নের ধরন সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যাবে। চাকরির প্রস্তুতির জন্য সহায়ক প্রথমা প্রকাশনীর মাসিক ম্যাগাজিন চলতি ঘটনা: বাংলাদেশ ও বিশ্ব থেকে প্রাথমিকে চাকরির পরীক্ষার মডেল টেস্টগুলো অনুশীলন করতে পারেন।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) পঞ্চম-দ্বাদশ বাংলা প্রথম পত্রের সাহিত্যিক পরিচিতি এবং তাঁদের লেখাগুলো পড়তে পারেন। নবম-দশম শ্রেণির নতুন ‘বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি’ অনুশীলনের প্রশ্নগুলোও একপলক দেখে নিতে পারেন। এ ছাড়া এনসিটিবির ষষ্ঠ-অষ্টম শ্রেণির ব্যাকরণ বই অনুশীলন করতে পারেন। বর্ণ বা ধ্বনি, দ্বিরুক্তি শব্দ, সন্ধি, কারক ও বিভক্তি, সমাস, প্রকৃতি ও প্রত্যয়, শব্দ, বিপরীত শব্দ, সমার্থক শব্দ, এককথায় প্রকাশ, বাগ্ধারা, প্রবাদ-প্রবচন, পদ প্রকরণ, উপসর্গ ও অনুসর্গ, যতিচিহ্ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ইংরেজির জন্য টেনস, প্রিপজিশন, পার্টস অব স্পিচ, ভয়েস, ন্যারেশন, স্পেলিং, বাক্য সংশোধনের নিয়ম ও রাইটস ফর্ম অব ভার্ব জানতে হবে। বিভিন্ন ধরনের ইংরেজি বাগ্ধারা, সমার্থক শব্দ ও বিপরীত শব্দ মুখস্থ করতে হবে। ইংরেজি থেকে বাংলা অনুবাদ আসতে পারে। সে ক্ষেত্রে নিয়মিত ইংরেজি পত্রিকা পড়তে হবে। সহায়ক বই হিসেবে এনসিটিবির ষষ্ঠ-দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ইংরেজি গ্রামার বই পড়া যেতে পারে।
পাটিগণিত ও বীজগণিত অনুশীলনের জন্য পঞ্চম-অষ্টম শ্রেণির গণিত বোর্ড বই অনুশীলন করলে সব প্রশ্নের উত্তর সহজ হবে। জ্যামিতিক অংশে রেখা ও কোণ, ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ, বৃত্ত, ত্রিকোণমিতি ও পরিমিতি পরীক্ষায় আসে। এসব বিষয় অনুশীলনের জন্য ষষ্ঠ-নবম শ্রেণির বোর্ড বইয়ের জ্যামিতিক অংশ অনুশীলন করলে ভালো করা যায়। আর জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় আসা গণিত নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নগুলো যেকোনো টেস্ট পেপার থেকে অনুশীলন করা যেতে পারে। গণিতের জন্য ক্যালকুলেটর ছাড়া অনুশীলন করতে হবে। চলতি ঘটনার গণিতের পর্ব অনুশীলন করতে পারেন, আর বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার সমাধানসহ যা থাকে, তা অনুশীলন করতে পারেন।
সাধারণ জ্ঞানের প্রস্তুতির জন্য বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলির গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো ধরে ধরে অনুশীলন করলে ভালো করা যাবে। এ জন্য নবম-দশম শ্রেণির জন্য বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়, বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্ব সভ্যতা, ভূগোল ও পরিবেশ, অর্থনীতি, পৌরনীতির বিষয়গুলো পড়তে হবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীর জন্য অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা ও আমার দেখা নয়াচীন ভালোভাবে পড়তে হবে। আমাদের সংবিধান সম্পর্কেও পরিষ্কার ধারণা রাখতে হবে।
সাধারণ বিজ্ঞান বিষয়ের জন্য পঞ্চম-নবম শ্রেণির এনসিটিবির বিজ্ঞান বই পড়তে হবে। ষষ্ঠ-অষ্টম শ্রেণির এনসিটিবির আইসিটি বোর্ড বইটি অনুশীলন করলে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পরীক্ষার কেন্দ্রে ৩০ মিনিট আগে উপস্থিত হতে হবে। উত্তরপত্রে নিজ জেলা, উপজেলা/থানা, রোল নম্বর, সেট কোড সঠিকভাবে লিখতে হবে। ভালো পরীক্ষা দেওয়া সত্ত্বেও এসব তথ্য পূরণে ভুল হওয়ার কারণে চাকরিটা হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে।
পরীক্ষার প্রশ্নে অনেক সময়ে উত্তর ভুল অথবা না–ও থাকতে পারে, সে ক্ষেত্রে উত্তর না করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। পরীক্ষায় প্রতি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা যায়। তাই আন্দাজে উত্তর না দেওয়াই ভালো। পড়ার টেবিলে বসে অতিরিক্ত ফেসবুক, মেসেঞ্জার বা ইউটিউবে সময় দেওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। পরীক্ষার কেন্দ্রে মাথা ঠান্ডা রেখে প্রশ্ন পড়ে উত্তর দিয়ে বের হতে হবে।
শিক্ষার্থীদের ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেবে গ্রিন ইউনিভার্সিটি

আর্থিক সমস্যায় পড়া শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা চালিয়ে নিতে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ‘স্টুডেন্ট সাপোর্ট লোন’ দেবে গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ। ব্যাংক এশিয়ার সহায়তায় এই ঋণ দেওয়া হবে। অনার্স-মাস্টার্সের নিয়মিত শিক্ষার্থীরা টিউশন ফি ও বই-খাতা কেনার জন্য এ ঋণ সুবিধা পাবেন। পড়ালেখার সময় বা কর্মজীবনে গিয়ে এ শিক্ষা ঋণ পরিশোধ করা যাবে।
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে রেজিস্ট্রার মো. সাইফুল ইসলাম ও ব্যাংক এশিয়ার পক্ষে উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিয়াউল হাসান মোল্লা চুক্তিতে সই করেন।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. গোলাম সামদানী ফকির, উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. ফায়জুর রহমান, ফাইন্যান্স অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস ডিরেক্টর মোহাম্মদ আশরাফুল আনোয়ার, ডিন, চেয়ারম্যানসহ বিভাগীয় প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
চুক্তির আওতায় আর্থিকভাবে অসচ্ছল শিক্ষার্থীরা ঋণের জন্য আবেদন করতে পারবেন। পরে তথ্য যাচাই-বাছাই ও শর্ত পূরণ সাপেক্ষে ব্যাংক তার ঋণের ব্যবস্থা করবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ঋণপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা সেমিস্টারভিত্তিক চাহিদা অনুযায়ী টাকার জন্য আবেদন করবেন। সেই চাহিদা পরিপ্রেক্ষিতেই ব্যাংক তার টিউশন ফি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টে পরিশোধ করবে। শিক্ষাজীবন চলাকালীন কিংবা শেষ হওয়ার পর এ ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
এদিকে শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি পরিশোধের প্রক্রিয়া সহজ করতে ব্যাংক এশিয়ার সঙ্গে আরেকটি চুক্তি করেছে গ্রিন ইউনিভার্সিটি। এর আওতায় ইউনিভার্সিটির সফটওয়্যারের সঙ্গে ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমের সংযোগ থাকবে। ফলে ব্যাংকে টিউশন ফি পরিশোধ করলে রিয়েল টাইম লেনদেনের সুবিধা পাবেন গ্রিনের শিক্ষার্থীরা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত সংশ্লিষ্টরা জানান, যোগ্য ও অভিজ্ঞ শিক্ষকদের সমন্বয়ে মানসম্মত শিক্ষা দেওয়ার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করছে গ্রিন ইউনিভার্সিটি। ব্যাংক এশিয়ার সহায়তায় শিক্ষার্থীদের ঋণ দেওয়ার বিষয়টি সেই কার্যক্রমকে আরও বেগবান করবে।
জাতীয় গণহত্যা দিবস আজ

আজ ভয়াল ২৫ মার্চ, জাতীয় গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে বাঙালি জাতির জীবনে এক বিভিষিকাময় রাত নেমে আসে। মধ্যরাতে বর্বর পাকিস্তানি হানানদার বাহিনী অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে কাপুরুষের মতো তাদের পূর্ব পরিকল্পিত অপারেশন সার্চলাইটের নীলনকশা অনুযায়ী আন্দোলনরত বাঙালিদের কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেয়ার ঘৃণ্য লক্ষ্যে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
তাদের উদ্দেশ্য ছিল-বাঙালিদের কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেওয়া। এভাবে রাতের আঁধারে ঘুমন্ত মানুষের ওপর অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত কোনো বাহিনীর আক্রমণের ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। অতীতে বাংলাদেশে গণহত্যার দিবসটি উপেক্ষিত হলেও বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে আসছে। জাতীয় সংসদে গৃহীত এক প্রস্তাবের প্রেক্ষাপটে ২০১৭ সাল থেকে জাতীয়ভাবে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।
যা ঘটেছিল সেদিন
১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পূর্ব পাকিস্তানে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে আওয়ামী লীগ। এরপর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খান ও জুলফিকার আলী ভুট্টো দূরভিসন্ধি করে ক্ষমতা হস্তান্তরে গড়িমসি করতে থাকে। বাঙালি তখন বুঝতে পেরেছিল- স্বাধীনতা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। পাকিস্তানিদের নিষ্পেষণ থেকে মুক্তির জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ মার্চ স্বাধীনতার নির্দেশনা দেন। এর মধ্যেই বাঙালির ওপর সামরিক হামলার নীলনকশা চূড়ান্ত করে পাকিস্তানি বাহিনী।
২৫ মার্চ ছিল অসহযোগ আন্দোলনের ২৪তম দিন। সেদিন সন্ধ্যায় ইয়াহিয়া গোপনে ঢাকা ত্যাগ করেন। মধ্যরাতে পাকিস্তানি সৈন্যরা সাঁজোয়া ট্যাংক নিয়ে ‘অপারেশন সার্চ লাইট’র নামে ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালিদের নির্বিচারে হত্যা করতে শুরু করে। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে গ্রেফতার করে। এর অব্যাবহিত পূর্বেই জাতির পিতা স্বাধীনতার চূড়ান্ত ঘোষণা বার্তা লিখে যান- ‘ইহাই হয়তো আমার শেষ বার্তা, আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন। চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাও’, যা প্রথমে ইপিআর এর ওয়্যারলেসের মাধ্যমে প্রচারিত হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে এ বার্তা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে।
পাকিস্তানিরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে পাকিস্তানের মিয়াওয়ালি কারাগারে বন্দি করে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। ১৩ জুন পাকিস্তানি সাংবাদিক অ্যান্থনি মাসকারেনহাস যুক্তরাজ্যের ‘দি সানডে টাইমস’ পত্রিকার প্রথম পাতায় ‘জেনোসাইড’ শিরোনামে বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানিদের নির্মম বর্বরতার বাস্তব চিত্র নির্ভর একটি বিস্তারিত নিবন্ধ প্রকাশ করলে বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্ব জনমত সৃষ্টি ত্বরান্বিত হয়। দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র যুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়, দুই লাখ মা-বোন সম্ভ্রম হারায় এবং গোটা দেশ ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়। অবশেষে ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের মাধ্যমে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
আমাদের জাতীয় রাজনীতিতে এক সময় গণহত্যার এই বিষয়টি চাপা দেওয়ার অপচেষ্টা করা হয়। ১৯৭৫ সালের পর এই অপরাজনীতিতে জড়িত ছিল সামরিক-বেসামরিক আমলা, তাদের প্রতিনিধি স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান ও তার পাকিস্তানি দোসররা। গণহত্যার বিষয়টিকে তারা খাটো করে দেখানোর চেষ্টা করে। এর উদ্দেশ্য ছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি অবলেপন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রীয়ভাবে ২৫ মার্চ ‘গণহত্যা দিবস’ পালিত হয়। ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালনের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি প্রতিরোধ করা হবে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা হবে, সর্বোপরি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মকে নারকীয় ও বর্বরোচিত এই হত্যাযজ্ঞ সম্পর্কে অবহিত করে গণহত্যাকারী ও তার দোসরদের প্রকৃত পরিচয় তুলে ধরা হবে। পাশাপাশি বাঙালি জাতি ২৫ মার্চের কালরাত্রিতে নিহত সব শহীদসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী ৩০ লাখ শহীদ ও সম্ভ্রমহারা ২ লক্ষ মা-বোনকে শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণ করবে।
গণহত্যা দিবসের কর্মসূচি
শুক্রবার (২৫ মার্চ) গণহত্যা দিবসে রাত ৯টা থেকে ৯টা ১ মিনিট পর্যন্ত সারা দেশে প্রতীকী ‘ব্ল্যাকআউট’ পালন করা হবে। তবে কেপিআই এবং জরুরি স্থাপনা এ কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে। এ রাতে সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি ভবন ও স্থাপনাগুলোতে কোনও আলোকসজ্জা করা যাবে না। তবে ২৬ মার্চ সন্ধ্যা থেকে আলোকসজ্জা করা যাবে।
গণহত্যা দিবস পালনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সকাল ১০ টায় গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়েছে। সারা দেশে গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গীতিনাট্য এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
এছাড়া স্কুল, কলেজ এবং মাদ্রাসাসহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কণ্ঠে ২৫ মার্চ গণহত্যার স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকাসহ সব সিটি করপোরেশন গণহত্যার ওপর দুর্লভ আলোকচিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র প্রচার করা হবে।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে এদিন বাদ জোহর দেশের সব মসজিদে বিশেষ মোনাজাত এবং অন্যান্য উপাসনালয়গুলোতে সুবিধাজনক সময়ে প্রার্থনা করা হবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসেও দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে অনুরূপ কর্মসূচি পালন করা হবে।
দিনটি যথাযোগ্য মার্যাদায় পালনে আওয়ামী লীগ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। দলটি শুক্রবার বিকেল ৩টায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা করবে। এতে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখবেন।
ভর্তি পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণে উপাচার্যদের সভা ৮ এপ্রিল

২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ নিয়ে আগামী ৮ এপ্রিল উপাচার্যদের সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় কোন বিশ্ববিদ্যালয় কবে তাদের ভর্তি পরীক্ষা নিতে চায় সে বিষয়টি অবহিত করবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৮ এপ্রিল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিকেল ৩টায় এই সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি ও ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান।
জানতে চাইলে ডুয়েট উপাচার্য বলেন, ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে আগামী ৮ এপ্রিল আমাদের সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভার বিষয়ে পরবর্তীতে সাংবাদিকদের জানিয়ে দেয়া হবে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের একটি সূত্র জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষার তারিখ সমন্বয় করতে মূলত এই সভা আয়োজন করা হয়। যেন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার তারিখের সাথে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তারিখ মিলে না যায়। সভায় কোন বিশ্ববিদ্যালয় কবে তাদের ভর্তি পরীক্ষা নিতে চায় সে বিষয়ে একটি সম্ভাব্য সময় সকলকে জানিয়ে দেবেন।
এ প্রসঙ্গে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ৮ এপ্রিল আমাদের একটি সভা রয়েছে। সভায় ভর্তি পরীক্ষার তারিখ নিয়ে আলোচনা করা হবে।
এদিকে আগামী জুন মাসের মধ্যে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শেষ করা কথা জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আর মে মাসের শেষে অথবা জুন মাসের শুরুতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)।
ঢাবির ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে জানতে চাইলে ঢাবির বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. সামাদ বলেন, আশা করছি আগামী জুনের মধ্যে সব ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। মেডিকেল ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সঙ্গে সমন্বয় করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ইউনিটের পরীক্ষার দিনক্ষণ চূড়ান্ত করা হবে।
বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষারে তারিখ সম্পর্কে বুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, আগামী মে মাসের শেষ দিকে অথবা জুনের শুরুতে আমাদের ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করা হতে পারে।
মন্তব্য