ঢাকা, সোমবার, ১৮ আগস্ট ২০২৫ ৩ ভাদ্র ১৪৩২
 
শিরোনাম

নরেন্দ্র মোদিকে শেখ হাসিনার শুভেচ্ছা বার্তা শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ অঞ্চল গড়তে একসঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
২৭ জানুয়ারি, ২০২২ ১০:৩৮
নিজস্ব প্রতিবেদক
নরেন্দ্র মোদিকে শেখ হাসিনার শুভেচ্ছা বার্তা শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ অঞ্চল গড়তে একসঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ

একটি শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ অঞ্চল গড়ে তোলার অভিন্ন লক্ষ্য বাস্তবায়নে আগামী ৫০ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশ কাজ করতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাসস

শুভেচ্ছা বার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, ২০২১ সালটি বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি ঐতিহাসিক বছর। এ উপলক্ষ্যে দু’দেশের সম্পর্কের বার্ষিকী যুগান্তকারী অনুষ্ঠান ও সর্বোচ্চ পর্যায়ের সম্পৃক্ততার মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হয়েছে।’ এতে ভারতের গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার, জনগণ ও নিজের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও জনগণকে উষ্ণতম শুভেচ্ছা ও আন্তরিক অভিনন্দন জানান শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বাংলাদেশ-ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য ২০২১ সালের মার্চ মাসে নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরটি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন।

তিনি আরও বলেন, আপনার সহৃদয় উপস্থিতি এই অনুষ্ঠানগুলো উদযাপনে বাড়তি উদ্দীপনা যোগ করেছিল এবং আমাদের দু’দেশের মধ্যকার বিদ্যমান চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরো সুদৃঢ় ও জোরদার করেছে।

শেখ হাসিনা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারত সরকার ও জনগণের সমর্থনের কথা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করে বলেন, এটা দু’দেশের মধ্যে একটি অনন্য সম্পর্কের ভিত গড়ে দিয়েছে। ৬ ডিসেম্বর বিশ্বব্যাপী যৌথভাবে ‘মৈত্রী দিবস’ উদযাপন দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান এই বিশেষ সম্পর্কের বহিঃপ্রকাশ। ১৯৭১ সালের এই দিনে ভারত একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়।

কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর সময়ে বিদ্যমান ক্ষেত্রগুলো ছাড়াও অনেক নতুন নতুন সহযোগিতার ক্ষেত্র চিহ্নিত হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমাদের দু’দেশের মধ্যেকার ঘনিষ্ঠ মৈত্রী, সহযোগিতা ও আস্থার অনন্য সম্পর্ক আরো জোরদার ও সুদৃঢ় হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর উপলক্ষে ‘আজাদিকা অমৃত মহোৎসব’ উদযাপন বিশেষভাবে আনন্দপূর্ণ হয়ে উঠবে।

প্রাসঙ্গিক
    মন্তব্য

    ফেল করা শিক্ষার্থীকে টিসি নয়, রাখতে হবে আগের শ্রেণিতেই

    নিজস্ব প্রতিবেদক
    ২৬ জানুয়ারি, ২০২২ ১৮:১
    নিজস্ব প্রতিবেদক
    ফেল করা শিক্ষার্থীকে টিসি নয়, রাখতে হবে আগের শ্রেণিতেই

    পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া শিক্ষার্থীকে জোর করে টিসি দিতে পারবে না কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অকৃতকার্য শিক্ষার্থীকে আগের শ্রেণিতে রেখে তার মানোন্নয়নের ব্যবস্থা করতে হবে। শৃঙ্খলাভঙ্গকারী শিক্ষার্থীদের ছাড়পত্র (টিসি) দিতে শিক্ষা বোর্ডের অনুমতি নিতে হবে। কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনুমতি না নিলে এ বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ড জরুরি বিজ্ঞপ্তি জারিকরেছে।

    ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অকৃতকার্য বা শৃঙ্খলাভঙ্গকারী শিক্ষার্থীদের নিজ প্রতিষ্ঠান থেকে জোরপূর্বক টিসি দিচ্ছে, যা তাদের এখতিয়ারবহির্ভূত। ছাড়পত্র দেওয়ার এখতিয়ার শুধু বোর্ডের। কোনো শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হলে তাকে আগের শ্রেণিতে রেখে যথাযথ শিক্ষাদানের মাধ্যমে মানোন্নয়নের ব্যবস্থা করতে হবে।

    শৃঙ্খলাভঙ্গকারী শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে শিক্ষা বোর্ডের মাধ্যমে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে টিসির অনুমতি নিতে হবে। এসব বিষয়ে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছে ঢাকা বোর্ড।

    প্রাসঙ্গিক
      মন্তব্য

      চট্টগ্রামে শিক্ষার্থীদের টিকার প্রথম ডোজ সম্পন্ন

      নিজস্ব প্রতিবেদক
      ২৬ জানুয়ারি, ২০২২ ১৭:৫৫
      নিজস্ব প্রতিবেদক
      চট্টগ্রামে শিক্ষার্থীদের টিকার প্রথম ডোজ সম্পন্ন

      চট্টগ্রামে স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের করোনার টিকার প্রথম ডোজ শতভাগ শেষ হয়েছে। প্রাথমিক লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ১২ থেকে অনুর্ধ্ব–১৮ বছর বয়সী পৌনে ৯ লাখ শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে কেউ যদি বাদ পড়ে, তাদেরও তালিকা করে টিকা দেওয়া হবে।

      করোনা থেকে সুরক্ষায় চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলার বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীকে গত বছরের ১৬ নভেম্বর থেকে টিকাদান শুরু হয়। প্রথমে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে ১২ বছর থেকে শুরু করে ১৮ বছরের নিচের সব শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনা হয়।

      জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয় থেকে দেওয়া তালিকা অনুযায়ী নগর ও জেলার বিভিন্ন স্কুল, কমিউনিটি সেন্টারে অবস্থায় টিকাকেন্দ্র স্থাপন করে কোভিড–১৯–এর প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয় ফাইজারের টিকা। শিক্ষা কার্যালয় থেকে ৮ লাখ ৭২ হাজার শিক্ষার্থীর তালিকা দেওয়া হয়।

      জানতে চাইলে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফরিদুল আলম হোসাইনী বলেন, ‘আমরা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সহযোগিতায় শিক্ষার্থীদের শতভাগ টিকাদান সম্পন্ন করতে পেরেছি। এর বাইরে কিছু অনিবন্ধিত স্কুল এবং কিছু মাদ্রাসা রয়েছে। তাদের বলা হয়েছে আমাদের তালিকা দিতে। যদি তালিকা দেয়, তাহলে তাদেরও টিকা দেওয়া হবে। এই সংখ্যা ৫০ হাজারের মতো হবে।’

      সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ১৬ নভেম্বর থেকে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত সিটি করপোরেশন ও জেলায় মোট ৮ লাখ ৭২ হাজার ২৫৬ জন শিক্ষার্থীকে ফাইজারের প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলা পর্যায়ে ৫ লাখ ৮২ হাজার ৪২৬ জন শিক্ষার্থীকে প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া হয়। বাকি ২ লাখ ৮৯ হাজার ৮৩০ জন শিক্ষার্থী শহরের। এ ছাড়া ৩২ হাজার ৮৪ জন শিক্ষার্থীকে দ্বিতীয় ডোজের টিকাও দেওয়া হয়েছে। এখন চলছে টিকার দ্বিতীয় ডোজ প্রদান।

      জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের সবাইকে সুরক্ষিত থাকতে হবে। সরকারের নির্দেশে চট্টগ্রামে শিক্ষার্থীরাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে কোভিড-১৯ টিকার আওতায় আনার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। জেলা শিক্ষা কার্যালয় থেকে দেওয়া তালিকা অনুযায়ী প্রায় শতভাগ শিশুকে টিকা দেওয়া হয়েছে। এখন দ্বিতীয় ডোজ টিকাদান চলমান রয়েছে। কেউ বাদ যাবে না।’

      এর আগে ১৬ নভেম্বর প্রথমে নগরের চারটি স্কুলে শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষে শিক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু হয়। পরে আরও একটি কেন্দ্র বাড়ানো হয়। তাতেও টিকা কার্যক্রমে গতি আসেনি। ১০ জানুয়ারি থেকে নগরের চারটি কমিউনিটি সেন্টার ও স্টেডিয়ামে একযোগে টিকাদান শুরু হয়। শিক্ষার্থীরা দলে দলে এসে সেখানে টিকা নেয়। একইভাবে উপজেলাগুলোতে বিভিন্ন শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কমিউনিটি সেন্টার ও স্কুলে টিকাদান শুরু করা হয়। ফলে দ্রুত এই কার্যক্রম শেষ করা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

      শিক্ষার্থীদের টিকাদান মনিটরিং করার জন্য তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেছিল সিভিল সার্জন কর্যালয়। ওই কমিটির সদস্য স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সুজন বড়ুয়া জানান, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দু–একজন করে শিক্ষার্থী টিকার আওতার বাইরে থাকতে পারে। এ ছাড়া কিছু অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, যারা এখনো নাম দেয়নি, তাদের নাম সংগ্রহ করা হচ্ছে। তাদেরও দ্রুততর সময়ে টিকা দেওয়া হবে।

      তবে টিকা নিলেও স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের ওপর জোর দেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক হাসান শাহরিয়ার কবীর। তিনি বলেন, টিকা দেওয়া থাকলে করোনার ঝুঁকি অনেকটা কমে যাবে। করোনা ও অমিক্রন থেকে রক্ষা পেতে হলে শুধু শিক্ষার্থী নয়, পর্যায়ক্রমে সবাইকে টিকার আওতায় আসতে হবে। তবে টিকা নিলেও মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

      প্রাসঙ্গিক
        মন্তব্য

        তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বৃত্তি

        নিজস্ব প্রতিবেদক
        ২৬ জানুয়ারি, ২০২২ ১৭:৫১
        নিজস্ব প্রতিবেদক
        তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বৃত্তি

        প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষাসহায়তা ট্রাস্টের আওতায় তিন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়। বৃত্তির জন্য এই তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে আবেদনপত্র চাওয়া হয়েছে।

        শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। তাঁদের সেশন হতে হবে ২০১৯-২০, ২০১৮-১৯ ও ২০১৭-১৮।

        আগ্রহী প্রার্থীদের অনলাইনে এই লিংকের http://estipend.pmeat.gov.bd মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আবেদন করা যাবে।

        প্রাসঙ্গিক
          মন্তব্য

          ইংল্যান্ডে কেয়ার ওয়ার্কার ভিসায় চাকরির সুযোগ

          নিজস্ব প্রতিবেদক
          ২৬ জানুয়ারি, ২০২২ ১৭:৪৩
          নিজস্ব প্রতিবেদক
          ইংল্যান্ডে কেয়ার ওয়ার্কার ভিসায় চাকরির সুযোগ

          ১. এবার ইংল্যান্ডে কেয়ার ওয়ার্কার ভিসায় আসার সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশিদের জন্য এটি একটি অভূতপূর্ব সুযোগই বলা যায়। কারণ, আমি ছোটবেলা থেকে দেখেছি, আমাদের দেশ থেকে শ্রমিকেরা প্রচুর টাকাপয়সা খরচ করে মধ্যপ্রাচ্যর দেশগুলোয় কাজ করতে যান। এখনো সেই প্রচলন আছে এবং সম্ভবত সেই প্রচলন এখন আরও বেড়েছে। মজার বিষয় হলো, আমাদের দেশ থেকে এখন অনেক নারী শ্রমিকও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে মনোনিবেশ করছেন, বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন এবং মাঝেমধ্যে এ–ও শোনা যায় যে তাঁরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। ইউটিউবে অনেকেই ভালো–মন্দ নানা রকম অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেন। কী জানি! ইউটিউবে কতজন তো সত্য–মিথ্যা কত কিছুই বলেন! তো যাঁদের বিদেশে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়, যাঁদের ভিসা নিশ্চিত হয়ে যায়, তাঁরা আবার অনেক আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুবান্ধবের ঘরে দাওয়াত পান, দাওয়াত খান। যাওয়ার আগে শরীর–স্বাস্থ্যের দিকে খোঁজখবর রাখেন। আত্মীয়রাও মজার মজার তরি–তরকারি রান্নাবান্না করে বিদেশগামী স্বজনদের আপ্যায়ন করতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েন। রীতিমতো রসনাবিলাস; আমাদের দেশের সুন্দর একটি প্রথা যদিও!

          আমি যেসব কারণে মধ্যপ্রাচ্যর দেশগুলোয় যাওয়ার বিষয়ে খুবই সতর্ক এবং উদাসীন, সেগুলোর অন্যতম হলো ওসব দেশে ন্যূনতম অথবা শুন্য মানবাধিকার। এসব দেশে মানুষের জীবনের কোনো মূল্যায়ন নেই, যেসব মানবিক অধিকার জাতিসংঘ ও ইউরোপের দেশগুলো নিশ্চিত করেছে, সেগুলো আরব বিশ্বে দৃষ্টিগোচর হয় না। শ্রমিকদের কোনো মানবাধিকার নেই বললেই চলে। সেখানে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয় এবং উপার্জনও সে রকম নয়। তা ছাড়া শ্রমিকদের নিরাপত্তা এসব দেশে যে যৎসামান্য, তা নিরাপত্তার সহিত বলা যায়। তারপরও আমাদের দেশ থেকে লাখো পুরুষ ও নারী শ্রমিক মধ্যপ্রাচ্যর দেশগুলোয় পাড়ি জমান। একটি বিষয় লক্ষণীয় যে সেসব দেশে যদি আপনি আপনার জীবনের অধিকাংশ সময় থাকেন (২০–২৫ বছর কোনো বিষয় নয়!) এবং গাধার মতো খাটুনি খাটেন, তারপরও কিন্ত কাউকে তারা সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ দেবে না। নাগরিকত্ব তো দূরের কথা। কোনো পেনশনের ব্যবস্থা আছে বলে মনে হয় না। একজন মানুষ যদি তাঁর জীবনের একটি বড় অংশ একটি দেশে ব্যয় করেন, তারপর তাঁকে সেখান থেকে বের করে দেওয়াকে অমানবিক বলে আমি মনে করি। ইংল্যান্ডে তা হবে না।

          ২. ইউরোপীয় দেশগুলোসহ বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশে মানুষের (সে যে শ্রেণির মানুষই হোক না কেন!) ন্যূনতম অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। সেসব অধিকারের অন্যতম হলো কাজের অধিকার, ন্যূনতম বেতন, যা না হলে সংসার চলে না, কথা বলার অধিকার, রাজনীতি করার অধিকার, চিন্তা করার অধিকার, নিজস্ব ধর্ম পালনের অধিকার এবং স্থায়ীভাবে বসবাসের নিশ্চিত অধিকার। এ কারণে যাঁরা এখানে কাজ করতে অথবা পড়াশোনা করতে আসবেন, তাঁরা কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য অথবা কাজের অভাবে কষ্ট করবেন না, না খেয়ে মারা যাবেন না। এখানে নারীরা কোনো ধরনের নির্যাতনের স্বীকার হবেন না। এখানে প্রত্যেক মানুষের রাতে ও দিনে নির্ভয়ে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করার এবং নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। এখানে যদি আপনি বৈধভাবে কাজ করেন, তাহলে পাঁচ বছর পর স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পাবেন এবং কোনো অপরাধের সঙ্গে নিজেকে না জড়ালে এ দেশের নাগরিকত্ব পেয়ে যাবেন। আবার এ দেশের নাগরিকত্ব পেলেও আপনি আপনার দেশের, মানে জন্মভূমির নাগরিকত্ব হারাবেন না।

          ৩. বিভিন্নভাবে ইংল্যান্ডে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আসার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কিছুদিন আগেও সেই সুযোগ ছিল না। তাহলে কী এমন ঘটনা যে কারণে ইংল্যান্ড বহির্বিশ্বের শ্রমিকদের জন্য তাদের সীমান্ত উন্মুক্ত করে দিল? ইহা অনিবার্য ছিল যে ইংল্যান্ডসহ ইউরোপের দেশগুলো বাইরে থেকে লোক নিয়ে আসবেই। তাদের দেশগুলো শ্রমিকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার কোনো বিকল্প ছিল না। এখানে জনসংখ্যা দিন দিন হ্রাস পেতে শুরু করছিল দীর্ঘদিন ধরে। সমাজবিজ্ঞানীরা যদিও কারণগুলো তন্ন তন্ন করে দেখছিলেন। তবে এ রকম মনে করার কোনো কারণ নেই যে এখানে বিপরীত লিঙ্গের মানুষেরা একে অপরের সঙ্গে মেলামেশা বন্ধ করে দিয়েছিলেন অথবা এখানে নারীরা বিশ্বের যেকোনো দেশের নারীদের চেয়ে ভিন্ন। না, সে রকম কিছু নয়। তারপরও জনসংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে দিন দিন। জনসংখ্যা হ্রাস পাওয়ার অন্যতম কারণ হলো, এখানে মেয়েদের মধ্যে গর্ভধারণের প্রবণতা কম। ক্যারিয়ারের প্রতি অধিক হারে ঝুঁকে পড়া, স্বাধীনভাবে চলাফেরা, মেয়েদের মধ্যে বহির্গামী মনোভাব অধিক হারে বৃদ্ধি পাওয়া, ব্যয়বহুল জীবনসহ নানান কারণে নারীরা সন্তান নিতে অনাগ্রহী হয়ে পড়েন। একটি সন্তান নেওয়া মানে সেই সন্তানকে লালন–পালন করা এবং দেখভাল করা চাট্টিখানি বিষয় নয়। এক সন্তান নেওয়া মানে জীবনে ১৫–১৬ বছরের জন্য একজন নারীর বন্দী হয়ে যাওয়া। সুতরাং নারীরা স্বাভাবিকভাবেই সন্তান নিতে অনীহা পোষণ করতে শুরু করেন। ফলে তাদের জনসংখ্যা হ্রাস পেতে থাকে। সেই সমস্যা লাঘবে প্রথমে ইংল্যান্ড ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দেশগুলোর জনগণদের তাদের দেশে অবাধে আসা এবং চলাফেরা করার সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। ফলে রোমানিয়া, পোল্যান্ড, হাঙ্গেরিসহ ইউরোপের দেশগুলো থেকে প্রচুর লোক এখানে আসতে শুরু করেন। কিন্তু ইংল্যান্ডের জন্য বড় সমস্যা ছিল, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দেশগুলোর শ্রমিকেরা এখানে এসে কাজ করার চেয়ে ইংল্যান্ডের সুবিধাদি নেওয়ার প্রতি অধিক আগ্রহী হয়ে পড়ে। তাদের ঘরভাড়াসহ চলাফেরা করা এবং খাবারদাবারের খরচ ব্রিটিশ সরকারকেই বহন করতে হতো। তা ছাড়া এখানে চুরিচামারি দিন দিন বাড়তে থাকে। তাই ব্রিটিশ জনগণ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের জনগণের প্রতি ক্রমেই অসহিষ্ণু হয়ে পড়ে। এরপরের ঘটনা—অনেকগুলো কারণে ইংল্যান্ড ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে এখানে বিভিন্ন খাত শ্রমিকসংকটে পড়ে। লরিচালক, চিকিৎসক, নার্স, হেলথ কেয়ার ওয়ার্কার, রেস্তোরাঁ কর্মচারী ইত্যাদি খাতে কর্মীসংকট পরিলক্ষিত। যার কারণে, কনজারভেটিভ পার্টির বরিস জনসনের সরকার যদিও অভিবাসীদের নিয়ে এসে ব্রিটেনকে মানুষে মানুষে টইটম্বুর করে ফেলতে অনাগ্রহী, তবু তাদের সীমান্ত অভিবাসীদের জন্য বিনা শর্তে উন্মুক্ত করে দিতে বাধ্য হয়। এ সুবিধা বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য একটি সুবর্ণ সুযোগ বলা চলে।

          ৪. কিন্তু প্রশ্ন হলো, কীভাবে বাংলাদেশ থেকে আসবেন এবং কারা আসতে পারবেন! এ জন্য বাস্তবধর্মী পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত। অযথা সাগরে সাঁতার কাটার মতো কোনো পরিকল্পনা ছাড়া দৌড়াদৌড়ি করলে কাজ আসবে বলে আমি মনে করি না। এটি একটি কাজের ভিসা। সঙ্গত কারণে আপনাকে কোনো এমপ্লয়ার নিয়োগ করতে হবে। এখানে এসে যদি অবৈধ হয়ে পড়েন, তবে আপনার এখানে থাকা–খাওয়ার অর্থ উপার্জন করা অসম্ভব হয়ে পড়তে পারে। আর এমপ্লয়মেন্ট এজেন্সি যে টাকা আপনার কাছে দাবি করছে, আপনি যদি কিছু বিচার–বিবেচনা না করে সেই পরিমাণ টাকাই তাদের দেন, তাহলে কয়েকটি বিপদ সংক্ষেত দিয়ে রাখি।

          *এখানে আসতে পারবেন না। কারণ, ইতিমধ্যে এ দেশের সরকার কেয়ার হোমগুলোকে সতর্ক করে দিয়েছে যে এমপ্লয়মেন্ট এজেন্সি নিয়োগ করা যাবে না অথবা এমপ্লয়মেন্ট এজেন্সি যদি কোনো লোক দিয়ে থাকে, তাহলে তাঁদের নিয়ে আসা যাবে না। সরকার চায়, কেয়ার হোমগুলো নিজেরা সাক্ষাৎকার নিয়ে লোক নিয়োগ দেবে।

          *যদি আপনি কোনো এজেন্সিকে টাকা দিয়ে আসেনও এবং সেই এজেন্সি এমপ্লয়ারদের সঙ্গে যোগসাজশে আপনাকে নিয়ে এসে কাজ না দেয় এবং কেবল নিয়ে আসার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়, তাহলে এখানে এসে আপনার মানবেতর জীবন যাপন করার সম্ভাবনা বেশি। কারণ, এখানে জীবনযাপনের ব্যয় অনেক বেশি এবং বৈধ চাকরি না থাকলে তা অর্জন করা অনেক কঠিন হবে।

          *যদি আপনি চাকরিদাতার সঙ্গে চুক্তি না করে আসেন, যেমন কত টাকা আপনার বেতন হবে, কত দিন আপনাকে বাৎসরিক ছুটি দেবে, আপনি অসুস্থ হলে কী কী সুবিধা দেবে; এসব চুক্তি না থাকলে আপনাকে গর্তের ভেতর ফেলে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

          *সর্বোপরি দালালেরা আপনার কাছ থেকে প্রথম কিস্তিতে যে টাকা নিল, সেই টাকাও আর ফিরিয়ে না দিতে পারে এবং হয়তো প্রতিশ্রুতিমতো আপনাকে নিয়ে আসতে পারবে না।

          তারপরও যদি কোনো এজেন্সি আপনাকে নিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দেয়, আমার পরামর্শ হবে আপনি নিজেও আপনার এমপ্লয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। ই–মেইল করবেন, কথা বলবেন। দেখে নেবেন যে এমপ্লয়ার বিশ্বাসযোগ্য কি না!

          কারা আসবেন ছেলে/মেয়ে, পুরুষ/ নারী (বয়স ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে)। এ দেশে পুরুষ ও নারী সবাই নিরাপত্তা পাবেন। তাই যদি কোনো নারী আসতে চান, আপনার কোনো আত্মীয় বা বন্ধুবান্ধব এ দেশে থাকা জরুরি নয়। এখানে কোনো ধরনের হয়রানি হওয়ার আশঙ্কা নাই। হেলথ কেয়ার সেক্টরের অধিকাংশ চাকরির জন্য কোনো যোগ্যতা থাকতে হবে না। তবে মনে রাখবেন, এখানে এসে আপনি ইংরেজিতে কথা বলা লোকেদের সঙ্গে কাজ করবেন। তাই তাঁদের কথাবার্তা কিছুটা হলেও বুঝতে হবে আপনাকে। সরকার নির্ধারণ করে দিয়েছে যে আপনার আইইএলটিএস স্কোর ৪ (প্রতিটি বিষয়ে চার—স্পিকিং, লিসেনিং, রাইটিং, রিডিং) হবে আইইএলটিএস (জেনারেল) ইউকেভিআই। এই একটি যোগ্যতা আপাতত। স্কিমটি ১২ মাস পর্যন্ত খোলা আছে, তাই তাড়াতাড়ি এ কোর্সটি এবং স্কোর করে নেন। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় ন্যূনতম বেতন নিশ্চিত নয়। কিন্তু এখানে এ কাজে আপনাকে ২০ হাজার ৪৮০ পাউন্ড বাৎসরিক বেতন নিশ্চিত। আমি যে এমপ্লয়ারদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, তারা আমাকে বলেছে যে তারা পছন্দ করেন, প্রার্থীরা নিজেরা দরখাস্ত লিখবেন এবং নিজেরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। তারা বলেছেন, তারা বাসস্থানের ব্যবস্থাও করবেন।

          ইউরোপের অন্যান্য দেশ নয়, কেন ইংল্যান্ড?

          আপনারা হয়তো দেখেছেন, সাঁতার কেটে সাগর পাড়ি দিয়ে মানুষ এখানে চলে আসতে চান। বিভিন্ন কারণে সাঁতার কেটে এখানে আসা যদিও নিরাপদ নয়। যেমন জার্মানি থেকে ফ্রান্সে এসে তারপর সাগর পাড়ি দিতে অনেকে ডিঙি নৌকা ব্যবহার করেন এবং তা ডুবে গেলে সাঁতার কেটে এসে পৌঁছাতে চান। কিন্তু তা সহজ নয়। অনেকেই মারা যান। আর যদি কেউ এসেও থাকেন, তবে বৈধ হওয়ার সুযোগ নেই বললেই চলে। এসব ঝুঁকি গ্রহণকারীদের নিরুৎসাহিত করতে সরকার বৈধ পথে আসার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। মানুষ কেন ইংল্যান্ডে আসতে চান? তাঁরা তো জার্মানিসহ ইউরোপে থাকতে চান না। শুধু ইংল্যান্ডে চলে আসতে চান। এ বিষয়ে পরে লিখব।

          কোন কোন পোস্টে লোক নেবে কেয়ার অ্যাসিস্ট্যান্ট, কেয়ার ওয়ার্কার, কেয়ারার, হোম কেয়ার অ্যাসিস্ট্যান্ট, হোম কেয়ারার ও সাপোর্ট ওয়ার্কার (নার্সিং হোম)। এসব পোস্টের জন্য কর্ম খালি খুঁজলে করলে মিলবে নানান উত্তর।

          কীভাবে চাকরি খুঁজবেন এবং দরখাস্ত করবেন গুগলে এসব নাম লিখে কর্ম খালি খুঁজলে আপনারা কীভাবে দরখাস্ত করবেন, তা বিস্তারিত পেয়ে যাবেন। মূলত একটি জীবনবৃত্তান্ত তৈরি করে এবং একটি সাহায্যকারী চিঠি সঙ্গে যুক্ত করে এমপ্লয়ারদের নির্ধারিত ই–মেইলে পাঠিয়ে দেবেন।

          কোথায় কোথায় এই চাকরির কর্মখালির খোঁজ পাবেন? linkedin, Indeed, Reed, carehome, jobsite, homecare, totaljob, agencycentral ageuk jobcommunityg এসব সাইটে গিয়ে পোস্টগুলোয় কর্ম খালি খুঁজতে পারেন। দরখাস্তের সঙ্গে কী কী জমা দিতে হয়? যদি কোনো স্পন্সর আপনাকে কাজ দিয়ে দেয়, তাহলে কী কী জিনিস জমা দেবেন? ১. দরখাস্ত ২. পাসপোর্ট ৩. সার্টিফিকেট অব স্পনসর (এমপ্লয়ার দেবে) ৪. এমপ্লয়ারের সঙ্গে চুক্তি ৫. অ্যাপ্লিকেশন ফি (২৩২ পাউন্ড ৩ বছরের ভিসা ফি) ৬. এনএইচফি (লাগবে না) ৭. টিবি টেস্ট সার্টিফিকেট ৮. আইইএলটিএস সার্টিফিকেট ৯. এক মাসের ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট ১২৭০ পাউন্ড থাকবে, মেইনটেইন্যান্স ফান্ড।

          প্রাসঙ্গিক
            মন্তব্য
            সর্বশেষ সংবাদ
              সর্বাধিক পঠিত