ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট ২০২৫ ৪ ভাদ্র ১৪৩২
 
শিরোনাম

কোটা সংস্কারের দাবিতে‌ আজ ‘বাংলা ব্লকেড’, কি হতে যাচ্ছে আজ?

নিজস্ব প্রতিবেদক
৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:৭
নিজস্ব প্রতিবেদক
কোটা সংস্কারের দাবিতে‌ আজ ‘বাংলা ব্লকেড’, কি হতে যাচ্ছে আজ?

কোটা সংস্কার ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের জন্য ২০১৮ সালের সরকারি পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন করছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। গত ৫ জুন হাইকোর্ট ২০১৮ সালের পরিপত্রের আংশিক অবৈধ ঘোষণা করার পর আবার এই আন্দোলন শুরু হয়। এর জেরে কয়েক দিন ধরে শাহবাগ ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টের নাম ঘোষণা করছেন আন্দোলনকারীরা।

গতকাল শনিবার (৬ জুলাই) শাহবাগে 'বাংলা ব্লকেড' কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা। বাংলা ব্লকেড নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে তারা জানান, রবিবার (৭ জুলাই) সারা দেশের গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক আটকে দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া।

'বাংলা ব্লকেড' কর্মসূচির আওতায় ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক অবরোধ করবেন তারা। অবরোধ শুরু হবে বিকাল ৩টায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি থেকে জড়ো হয়ে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে গিয়ে সড়ক অবরোধ করবেন বলে জানিয়েছেন।

ঢাকায় 'বাংলা ব্লকেড'র আওতায় থাকবে শাহবাগ মোড়, সায়েন্সল্যাব, চানখাঁরপুল, নীলক্ষেত, মতিঝিল, মহাখালী, বাংলামটরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। এরপর যদি দেখা যায় কোনও জায়গায় বাইপাস দিয়ে গাড়ি যাচ্ছে, প্রয়োজনে সেগুলোও অবরোধ করবেন বলেও জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। গাড়ি আটকানোর জন্য সম্ভাব্য সব রুট অবরোধ করবেন তারা।

'বাংলা ব্লকেড' কর্মসূচি বলতে কী বোঝাচ্ছেন, জানতে চাইলে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক শারজিস আলম গণমাধ্যমে বলেন, ‘বাংলা ব্লকেড মানে হলো, সারা দেশে আমরা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট অবরোধ করবো, যাতে কোনও গাড়ি চলতে না পারে। শহরের যান চলাচল (সারা দেশ ব্লক করার জন্য আমরা সম্ভাব্য সব রুট অবরোধ করবো। যদি জানতে পারি কোনও বিকল্প রুটে বাইপাস দিয়ে গাড়ি যাচ্ছে, সেটিও অবরোধ করবো।’

প্রাসঙ্গিক
    মন্তব্য

    কোটা আন্দোলন নিয়ে কি বলছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা

    নিজস্ব প্রতিবেদক
    ৭ জুলাই, ২০২৪ ১১:১৭
    নিজস্ব প্রতিবেদক
    কোটা আন্দোলন নিয়ে কি বলছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা

    মেহরাব হোসেন, ববি প্রতিনিধিঃ ২০১৮ সালের মতো দেশে আবারও সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের আন্দোলন ছাড়িয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা দাবি করছে যে, সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহাল করতে হবে।

    ২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে মোট ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধা (পরে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনি) কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, ১০ শতাংশ জেলা কোটা এবং ৫ শতাংশ ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী কোটা। এছাড়া ১ শতাংশ পদ প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের দিয়ে পূরণের নিয়ম চালু হয়।

    প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল সরকার। কয়েক বছর ধরে সে অনুযায়ী কোটাবিহীন নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু একটি রিটের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি হাইকোর্ট কোটা বাতিলের পরিপত্রকে অবৈধ ঘোষণা করে যা প্রতিক্রিয়ায় এখন আন্দোলন আবার শুরু হয়েছে।

    সরকারী চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল চেয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে একমত পোষণ করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষকরা তারা তাদের মতামত প্রদান করেছেন। সেগুলো তুলে ধরা হলো।

    মুক্তিযোদ্ধার নাতির প্রতি—

    মেধা ও শ্রম দিয়ে যুদ্ধ করে প্রমাণ করো তুমি এক বীর মুক্তিযোদ্ধার নাতি। তোমার বাবা তো যুদ্ধ করেনি, যুদ্ধ করেছেন তোমার বাবার বাবা। তাহলে তুমি কোন যুক্তিতে কোটা পাবে? মুক্তিযোদ্ধার ছেলেমেয়ে পর্যন্ত কোটা মানা যায়। ওয়ারিশও তো বাবারটা ছেলেমেয়েরা পায়, দাদার কাছ থেকে নাতিরা পায় না। আমাদের দেশের মোট জনসংখ্যার যত শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা ঠিক তত শতাংশ কোটা পাওয়া উচিত শুধু মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের। প্রকৃতপক্ষে কোটা থাকা উচিত শুধু প্রতিবন্ধীদের জন্য।

    নুরুল ইসলাম মুজিব, সহকারী অধ্যাপক, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

    কোটা পদ্ধতি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান দেখানোর একমাত্র কিংবা উপযুক্ত পথ নয়। বরং যে উদ্দেশ্যে মহান মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল সেই বৈষম্য দূর করলে তাদের প্রতি যথাযথ সম্মান দেখানো হবে।

    ড. তুহিন ওয়াদুদ, অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, বাংলা বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়।

    অর্থনৈতিক মুক্তি ছাড়া চিন্তার স্বাধীনতা অর্থহীন। এভাবেই আমার দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মুক্ত চিন্তার উর্বর ভূমি হবে!

    তবে কোটা নিয়ে আমার চিন্তা অসীমের অভিমুখে ধাবমান।। এই বঙ্গ দেশে আরো কি কি এবং কোথায় কোথায় কোটা অন্তর্ভুক্ত করা যায়!!! কোটাময় হয়ে উঠুক প্রিয় স্বদেশ।

    পাব্লিক ইম্পর্টেন্স বলে যে শব্দদ্বয় আমরা আইনের বইয়ে পড়ি এগুলো রহিত করা উচিত; তাও উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তে।

    মাঝে মাঝে মনে হয় আমার অনুভূতিগুলো ভোতা হয়ে গেল। শুধুই প্রেক্ষকের ভূমিকা পালন করতে ইচ্ছে করে

    প্রত্যয় পেনশন স্কিম বাতিল এবং কোটা ব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কার এখন সময়ের দাবি।

    সাজ্জাদুল কারিম, অধ্যাপক, আইন বিভাগ, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

    আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক। আল্লাহর রহমতে যথেষ্ট প্রিভিলেজড। আমি কখনোই আমার সন্তানকে পোষ্য কোটার সুবিধা নিতে দিবনা। যে ছেলে/মেয়েটি দারিদ্রতা ও নানা প্রতিকূলতার সাথে লড়াই করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত আসে তাকে বঞ্চিত করে আমার সন্তানের মতো প্রিভিলেজড কেউ কোটা সুবিধা ভোগ করলে তা হবে ভয়ানক অনৈতিক এবং অমানবিক।

    সাদিক হাসান শুভ, সহকারী অধ্যাপক স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়।

    আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী উভয়ই রাজপথে। উভয়েরই আজ অস্তিত্ব সংকট। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে বিপ্লব ঘটবে, এটা অবশ্যম্ভাবী।

    আমরা চাই আমাদের প্রাপ্য অধিকার, নিরাপদ ভবিষ্যত; আর শিক্ষার্থীরা চায় অবাধ কোটা সুবিধার পরিবর্তে সুস্থ প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে মেধার স্বাক্ষর রাখতে। নিজেকে প্রমাণ করার অধিকার চাওয়া নিশ্চয়ই দোষের কিছু নয়!

    আমরা চাই শ্রেনিকক্ষে ফিরতে। আমাদের শিক্ষার্থীরা চায় নিজেদেরকে প্রস্তুত করে দেশের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে। আমাদের এই অধিকার থেকে বঞ্চিত করা না হোক।

    সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে যারা আছেন আশা করি দ্রুত বিষয়টি অনুধাবন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

    শাহানাজ পারভিন রিমি, সহকারী অধ্যাপক, দর্শন বিভাগ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়।

    প্রাসঙ্গিক
      মন্তব্য

      সরকারি চাকরিতে মেধাকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন ইবি শিক্ষকরা

      নিজস্ব প্রতিবেদক
      ৭ জুলাই, ২০২৪ ১০:৪৮
      নিজস্ব প্রতিবেদক
      সরকারি চাকরিতে মেধাকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন ইবি শিক্ষকরা

      ইবি প্রতিনিধি : সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে সারাদেশে সংঘটিত কোটা বিরোধী আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করতে শুরু করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। সেই সাথে কোটা সংস্কার ও বাতিলের পক্ষে মত দিয়েছেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পোস্টে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের দাবির পক্ষে একমত প্রকাশ করেন তারা।

      বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ জাহিদ মন্তব্য করেন, চাকুরিপ্রার্থী শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বিবেচনায় মুক্তিযোদ্ধা, নৃগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী, নারী ইত্যাদি মিলিয়ে চাকুরিতে সর্বোচ্চ ১০% কোটা থাকতে পারে, এর বেশি নয়।

      উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলাম তার ফেসবুক ওয়ালে বলেন, স্মার্ট রাষ্ট্র ও সমাজ বিনির্মাণে প্রশাসনিক সংস্কারের মতো কোটা ব্যবস্থায় সংস্কার আনা অতীব জরুরী।

      শাহবাগে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ভিডিও শেয়ার করে মার্কেটিং বিভাগের প্রভাষক রুহুল আমিন পোস্ট করেন, এ দেশের বুকে আবারো আঠারো আসুক নেমে!! সকল বৈষম্য নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক!!

      ফিন্যান্স এবং ব্যাংকিং বিভাগের প্রভাষক মিঠুন বৈরাগী তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, মেধাভিত্তিক নিয়োগ নিশ্চিত করতে কোটা পদ্ধতি অথবা কোটা সংস্কার (সর্বোচ্চ ১০%) করা অতীব জরূরী। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যৌক্তিক। তিনি বলেন, ৩৮ তম বিসিএস পরীক্ষায় কোটা পদ্ধতির জন্য আমি নিজেও ভুক্তভোগী ছিলাম।

      প্রভাষক মিথুন বৈরাগীর পোস্টে সহমত পোষণ করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন মন্তব্য করেন, এখন যেহেতু বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান চাকরির পরীক্ষায় প্রায় পাওয়ায় যায়না। সেক্ষেত্রে ১০% থাকাই শ্রেয়।

      বিশ্ববিদ্যালয় কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. আহসানুল হক তার পোস্টে বলেন, লক্ষ কোটি বেকার যুবকের স্বপ্নকে বাঁচতে দিন। মেধাবীরাই দেশকে সবচেয়ে ভালো সেবা দিতে পারবে। এদেরকে বঞ্চিত করে কী স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া সম্ভব? আপনার কি মনে হয়?

      ফার্মেসি বিভাগের প্রভাষক রেহেনুমা তানজিন মেধা তার ফেসবুক ওয়ালে বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর চাকুরীতে মেধার পরিবর্তে কোটা ব্যবহার সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। যারা ভবিষ্যতে দেশের কান্ডারী হবে তাদের যথাযথ যোগ্যতা ও আত্মসম্মান না থাকলে দেশ কিভাবে চলবে তা সহজেই অনুমেয়। ২০১৮ সালে সরাসরি কোটা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছি। তখন দাবি আদায় হলেও আবার একই কারণে ছেলেমেয়েদের রাস্তায় নামতে দেখা সত্যি দু:খজনক। বৈষম্যহীন সোনার বাংলা গড়তে প্রতিবন্ধী কোটা ব্যতিত সকল ক্ষেত্রে সকল কোটা বাতিল হোক।

      ট্যুরিজম ও হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রভাষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ইয়ামিন মাসুম বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলব, আপনারা মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের সন্তানদের নিয়ে কটুক্তি করবেন না। আশা করি মহামান্য আদালত এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষ আপনাদের মতামতকে বিবেচনা করবেন। আমি ছাত্রদের অভিভাবক হিসেবে ব্যক্তিগতভাবে কোটা প্রথা বাতিল নয় তবে কোটা সংস্কারের পক্ষে। মুক্তিযোদ্ধা কোটা কমিয়ে ১০% এবং অন্যান্য কোটা ৫% রাখা যেতে পারে। হোক পরিবর্তন।

      ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. শিবলী ফতেহ আলী চৌধুরী তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেন, গণতান্ত্রিক দেশের যেকোনো ধরনের আন্দোলন এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা গণতান্ত্রিক চেতনার সাথে যায়না। আমিও গণমানুষের চাওয়ার প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমার মতে, কোটা যদি সরকার রাখতেই চায়, তাহুএ মুক্তিযোদ্ধা কোটা সহ সব ধরনের কোটা মিলে তা অবশ্যই মোট পদের ১০ শতাংশের বেশি হওয়া উচিত নয়।

      কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক হাফিজুর রহমান তার ফেসবুক ওয়ালে লেখেন, উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণ হবে মেধাবী ও যোগ্যদের দিয়ে। কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সফল হোক, বৈষম্য নিপাত যাক।

      বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু হেনা মোস্তফা জামাল তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বিস্তারিত পোস্টে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় সমুহ ২ টি কারনে অচল এক কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে আন্দোলন আর অন্যটি হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের পেনশন স্কীম নিয়ে। এই ২ টিই হচ্ছে অপরিকল্পিত ও তাড়াহুড়ো করে নেওয়া সিদ্ধান্তের কারনে। সরকারী চাকুরিতে কোটা পদ্ধতি নিয়ে আন্দোলনের মুখে সরকার ১ম শ্রেনীর চাকুরীতে কোটা সম্পূর্ন বাতিল করে দেন। এটা একটু সময় নিয়ে জনজরিপ করে সকলের অধিকার বা সংবিধানের আলোকে করা উচিত ছিল। আর এই কোটা ক্রটিপূর্ন এই কারনে যে মোট পদের বড় অংশ চলে যায় কোটায় , কারো কারো হিসেবে সেটা ৭০%। এটা কিভাবে সম্ভব! মোট চাকুরির সর্বোচ্চ ১৫% কোটা হতে পারে আমার মতে সেটা ১০% হওয়া উচিত। এই ১০% এর মধ্যে যারা কোটা পাবার যোগ্য তাদের মধ্যে দিতে হবে । যেমন ধরুন মোট আসন ১০০ টি , এর মধ্যে ১০ টি থাকবে কোটায় , এই ১০ টির ৩০% মানে ৩ টি এক কোটায় , ২০% মানে ২ টি আর এক কোটায় থকতে পারে। আর একটি বিষয় একজন মুক্তিযোদ্ধার মেধাবী , প্রতিষ্ঠিত ও যোগ্য সন্তান হিসেবে বলতে চাই, কোনভাবেই এই কোটা আন্দোলনে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের যেন অসন্মান করা না হয়।

      ট্যুরিজম ও হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম তার ফেসবুক ওয়ালে বলেন, রাষ্ট্রের উচিত মেধাবীদের মূল্যয়নের মাধ্যমে বুদ্ধিদীপ্ত জাতি গঠনে অধিকতর মনোযোগী হওয়া।

      অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা তার পোস্টে বলেন, আমার ব্যক্তিগত মত ১ম ও ২য় শ্রেণির চাকরিতে কোন ধরণের কোটা থাকা উচিত নয়, এক্ষেত্রে পরিপূর্ণ মেধার অধিকার থাকা উচিত। কোটা একধরনের সুবিধা, সুবিধারও মাত্রাজ্ঞান থাকতে হবে। জাতির সূর্যসন্তান, নমস্য বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নির্ধারিত পদের (সকল শ্রেণির চাকরিতে) অতিরিক্ত ১০% বা যুক্তিসঙ্গত পদ সংরক্ষিত রাখা যেতে পারে। অন্যান্য পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীসহ প্রতিবন্ধীদের জন্য ৩য় বা ৪র্থ শ্রেণির চাকরির কোটা রাখা যায়। কারণ ১ম ও ২য় শ্রেণির চাকরিতে মেধার ভিত্তিতে সকলের সমান সুযোগ উন্মুক্ত।

      এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ আজাদ, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. বাকি বিল্লাহ, বিবিএ অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীন সহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ বিনির্মানে কোটা সংস্কারের পক্ষে নিজেদের অবস্থান ব্যক্ত করেন।

      প্রাসঙ্গিক
        মন্তব্য

        বেরোবি ছাত্রলীগ সভাপতি কে ভুয়া বললেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা

        নিজস্ব প্রতিবেদক
        ৬ জুলাই, ২০২৪ ২৩:১২
        নিজস্ব প্রতিবেদক
        বেরোবি ছাত্রলীগ সভাপতি কে ভুয়া বললেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা

        নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের আন্দোলনে বক্তব্য দিতে আসলে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি পোমেল বড়ুয়াকে কে ভুয়া বললেন কোটা সংস্কারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

        শনিবার (৬ জুলাই) দুপুর ১২ টা থেকে রংপুরের মর্ডান মোড়ে মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বেলা সোয়া ১ টার দিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মাঝে বক্তব্য দিতে আসেন বেরোবি ছাত্রলীগ সভাপতি পোমেল বড়ুয়া। তিনি কথা বলা শুরু করলে শিক্ষার্থীরা ভুয়া ভুয়া বলে শ্লোগান দিতে থাকে।

        পোমেল বড়ুয়া বলেন, আপনারা রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করছেন এতে মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।…….. এ সময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা চারপাশ থেকে ‘ভুয়া’ ‘ভুয়া’ শ্লোগান দেন। পরে তিনি সেখান থেকে চলে যান।

        দুপুর পৌনে ২ টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলে। এরপর দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে ক্যাম্পাসে ফিরে যায় শিক্ষার্থীরা।

        এরআগে দুপুর ১২ টায় রংপুরের মর্ডান মোড়ে মহাসড়ক অবরোধ করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। দেড় ঘন্টা অবরোধ শেষে দুপুর পৌনে ২ টায় অবরোধ তুলে নেয়।

        আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, এই বৈষম্যমূলক কোটা প্রথা মানি না। কোটার কারণে মেধাবীরা সঠিক মূল্যায়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কোনো মেধাবী শিক্ষার্থী পরীক্ষায় ৮০ পেয়েও চাকরি পাবে না, আর কোটাধারীরা সহজেই চাকরি পাবে, এই বৈষম্য সংবিধান পরিপন্থি।

        শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের ছেলে-মেয়ে পর্যন্ত কোটা ঠিক ছিল। নাতি-নাতনি বিষয়টা অযৌক্তিক। এক শতাংশ প্রতিবন্ধী বাদে সব কোটা বাতিল করতে হবে।

        রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, আন্দোলনকারীরা রাস্তায় বিক্ষোভ করেছিলেন কিছু সময়ের জন্য। পরে তারা আবার রাস্তা ছেড়ে চলে গেছেন।

        আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবিসমূহ-

        **২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে;

        ** ২০১৮ এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে;

        ** সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে;

        ** দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

        প্রাসঙ্গিক
          মন্তব্য

          কোটা পুনর্বহালের রায় বাতিলের দাবিতে খুবি শিক্ষার্থীদের শিববাড়ি অবরোধ

          নিজস্ব প্রতিবেদক
          ৬ জুলাই, ২০২৪ ২২:৫৬
          নিজস্ব প্রতিবেদক
          কোটা পুনর্বহালের রায় বাতিলের দাবিতে খুবি শিক্ষার্থীদের শিববাড়ি অবরোধ

          খুবি প্রতিনিধি: সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বাহলের রায় বাতিল ও কোটাপদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মত বিক্ষোভ সমাবেশ ও সড়ক অবরোধ করেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থীরা। শনিবার বিকেল ৫টায় খুলনা মহানগরীর শিববাড়ি মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।

          এদিন দুপুর ৩টা থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটের সামনে জড়ো হতে থাকেন। কোটা সংস্কারের দাবিতে তাঁরা মিছিল করছেন। প্ল্যাকার্ড, ব্যানার হাতে স্লোগান দিচ্ছেন। কোটা পুনর্বহালের রায় বাতিল ও কোটা সংস্কারের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত দাবিতে অনড় তাঁরা।

          এ দাবিতে মহানগরীর শিববাড়ি অবস্থান নিলে সেখানে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। সড়ক অবরোধ করে সেখানে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন কয়েকশ শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশী। মহানগরীতে তীব্র যানজট সৃষ্টির ফলে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ জনগণ।

          আগে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের হাদি চত্বরে শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়। দুপুর ৩টার দিকে কয়েক শত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাতে প্লাকার্ড নিয়ে নগরের গল্লামারী, নিরালা ও ময়লাপোতা মোড়ে বিক্ষোভ করেন এবং ময়লাপোতা মোড় হয়ে শিববাড়ি অবস্থান নেয়। এসময় তাঁদের হাতে জাতীয় পতাকা, ঢোল, প্ল্যাকার্ডসহ বিভিন্ন ব্যানার ছিল। এ সময় পুরো খুলনা শহরের যান চলাচল কার্যত অচল হয়ে যায়। পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। পরবর্তীতে এ সমাবেশে খুলনার সরকারি-বেসরকারি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও যোগ দেয়।

          এসময় শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে মহানগরীর শিববাড়ি মোড়। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা 'খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় নেমেছে, রাজপথ কেপেছে,' 'লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে,' 'অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন,' 'ছাত্রসমাজের অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন,' 'কোটা না মেধা, মেধা মেধা', 'জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে', 'সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে', '৭১ এর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার,' 'কোটা প্রথা নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক', 'আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই', '১৮ এর হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার' এমন নানান স্লোগান দেন।

          বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, বঙ্গবন্ধুর বাংলায় কোটার কোনো স্থান নাই। কোটা বাতিল করে মেধার মূল্যায়ণ করতে হবে সব জায়গায়। নাইলে ছাত্রসমাজ বসে থাকবেনা। আমরা চাই অতিদ্রুত কোটা পদ্ধতি সংস্কার করে মেধার মূল্যায়ণ করা হোক সবখানে। বৈষম্যমূলজ কোটা পদ্ধতি বাতিল না হলে বাংলার রাজপথে আগুন জ্বলবে।

          সমাবেশে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জহুরুল ইসলাম বলেন, 'বর্তমানে দেশে অনেক শিক্ষার্থী চাকরি না পেয়ে হতাশায় ভুগছেন। তার মধ্যে এই বৈষম্যমূলক কোটা পুনর্বহাল করে মেধাবীদের সাথে অন্যায় করা হচ্ছে। আমরা এটা কোনোভাবেই মেনে নেবো না। আমরা চাই অতি দ্রুত কোটা পুনর্বাহলের রায় বাতিল করা হোক এবং মেধাবীদের মূল্যায়ণ করা হোক।'

          আরেক শিক্ষার্থী সাজ্জাদুল ইসলাম আজাদ বলেন, 'মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করেছিলো কি আজকের এই দিন দেখার জন্য? দেশটা কি এখন শুধু মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, নাতিপুতিদের? এই প্রহসনমূলক কোটা পুনর্বহালের মাধ্যমে আমাদের সাথে অবিচার করা হচ্ছে। এই রায় বাতিল না করলে আমরা কঠোর আন্দোলনে নামবো। কোটা বাতিল না করে রাজপথ ছাড়বো না আমরা।'

          উল্লেখ্য, গত ৫ জুন প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে, মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্য কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্ট। এরপরই দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামে।

          প্রাসঙ্গিক
            মন্তব্য
            সর্বশেষ সংবাদ
              সর্বাধিক পঠিত